নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"যুদ্ধ ছাড়া কোনো জাতিকে ধ্বংস করে দিতে চাও, তবে ঐ জাতির তরুণদের মাঝে অশ্লীলতা বেহায়াপনা ছড়িয়ে দাও।\" সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবী (রহ:)

সামিউল ইসলাম বাবু

যেটুকু পাও ছোট্ট সময়/কাজ করে যাও রবের তরে/ক্ষনিক সময় বিস্রাম নিও/ঘুমিও না তুমি অলসতা ভরে//

সামিউল ইসলাম বাবু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুক রিভিউঃ মুজিবনামা কবি সায়ীদ আবুবকর

০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:১৮

কবি সায়ীদ আবুবকরের আরেকটি মহাকাব্যের রিভিউ...

বই : মুজিবনামা (১ম মহাকাব্য)
লেখক : কবি সায়ীদ আবুবকর
ধরণ : মহাকাব্য
প্রকাশক: ইনভেলাপ পাবলিকেশন্স
প্রকাশ কাল : ২০১৮ সাল
পাওয়া যাচ্ছে: দেশের অভিজাত লাইব্রেরি এবং রকমারি ডটকমে
মহাকাব্যটি আসলে এমন ভাবে লেখা, যেনো বাস্তব ইতিহাস চোখের সামনে উঠে এসেছে। কবির সবচেয়ে ভালোলাগার বিষয় হলো সহজ এবং সাবলীল উপস্থাপনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে অনেকে বিভিন্ন লেখা প্রকাশ করেছেন। এটা নিসন্দেহে তার মধ্যে অনিন্দ্য প্রকাশ।
'বাংলার মানুষ মুক্তি চায়; বাংলার
মানুষ বাঁচতে চায়; বাংলার মানুষ
অধিকার চায়'- বলে সিংহের কণ্ঠে
যে-বীর ছাড়লো লোল বজ্রের হুংকার
উনিশ শ একাত্তরে,-----------------------
সমস্ত বাঙালি একসাথে মহোল্লাসে
স্বাগত জানালো তাঁকে আনত মস্তকে
মহুর্মুহু করতালি ও আগুনঝরা
শ্লোগানে শ্লোগানে। অতঃপর কণ্ঠে তাঁর
গেথে দিলো পুষ্পমাল্য, আর লিখে দিলো
প্রশস্ত ললাটে স্বর্ণনাম-বঙ্গবন্ধু।'

একাদশ সর্গ এর কিছু অংশ

পনেরো আগস্ট শেষ রাতে, নেমে এলো
আসমান থেকে ফেরেস্তা আজরাইল
সৌম্যমূর্তি ধরে। হাতে ফুল, শুভ্র কেশ;
এসে কি-বিনম্র পায়ে করতে লাগলো
হাঁটাহাঁটি ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরে,
২৭ মিন্টো রোডে আর শেখ ফজলুল
হক মনির ধানমন্ডির বাসস্থানে;
তিন জায়গায় একসাথে এক রূপে
হাঁটতে লাগলো তাঁর অলৌকিক পায়ে।
চিন্তামগ্ন হাঁটছে সে একা, ঘুরে ঘুরে;
হাতে বাঁধা সোনার ঘড়ির দিকে তীক্ষ্ন
চোখে তাকাচ্ছে বারংবার; থেকে থেকে
ঘুমন্ত বাড়ির সবগুলো জানলা দিয়ে
মারছে কৌতূহলে ঊঁকি-ঝুঁকি। তাই দেখে
থরথর করে, যেন বাতাসে বটের
পাতা, কাঁপছে বঙ্গমাতা বেগম মুজিব।
কাঁপছে হাত-পা তাঁর। ঘামছে কপাল।
শুকিয়ে আসছে গলা। ভীষণ তৃষ্ণায়
এক গ্লাস পানির উদ্দেশে ছুটলেন
তিনি হাজেরার মতো, ডাইনিং রুমে।
জগগুলো পড়ে আছে খালি। কলসিতে
পানি নেই। ট্যাপগুলো শুকিয়ে আমড়া-
কাঠ। এক ফোঁটা পানি নেই কোনোখানে,
যেন কারবালা হঠাৎ এ বাড়ি। তিনি
ডাকলেন উচ্চৈঃস্বরে “কামাল! কামাল!”
বলে কতবার, এলো না উত্তর। সব
ঘুমাচ্ছে মড়ার মতো সারা বাড়ি। নেই
সাড়াশব্দ কারো, কোনোখানে। উবে গেল
তৃষ্ণা তাঁর আস্তে আস্তে, কর্পূরের মতো।

ধীর পায়ে তিনি, অসীম সাহস বুকে
নিয়ে, দাঁড়ালেন এসে জানলার কাছে;
“এই যে, শোনেন” বলে ডাকলেন, একা
পায়চারি করা লোকটাকে। তাঁকে দেখে
লুকালো সে অন্ধকারে, কারো উপস্থিতি
টের পেয়ে যেভাবে লুকায় তস্কর। ‘হা-
খোদা, সর্বশক্তিমান; শ্রেষ্ঠ রক্ষাকারী!’
ঘামতে ঘামতে তিনি ফিরলেন বেডে;
এক নজর দেখলেন চেয়ে-মহামান্য
প্রেসিডেন্ট বাংলার, বঙ্গবন্ধু, তাঁর
স্বামী, শুয়ে আছে কি-শান্তিতে, তাঁর পাশে!
‘লা-হাওলা অলা কুয়াতা’ বলে মারলেন
ছুঁড়ে থুঁতু শয়তানের উদ্দেশে তাঁর
শিয়রের বাম দিকে; তিন বার করে
কলেমা তৈয়েবা ও কলেমা শাহাদাত
করলেন পাঠ মনে মনে; অতঃপর
বুজলেন চোখ কেবলার দিকে ফিরে।

গভীর নিদ্রায় ডুবে আছে লোকজন
তিন বাড়ি। ছিলো মেতে আনন্দ-আহ্লাদে
সারা সন্ধ্যা শেখ মুজিবের সাথে। তিনি
মহান বিপ্লবী নেতা বাংলার; সেই
সাথে প্রিয় পিতাও যে তিনি তিন পুত্র
শেখ কামাল, জামাল আর রাসেলের;
শেখ নাসেরের প্রিয় ভ্রাতা; ফজলুল
হক মনির দরদী মামা; আবদুর
রব সেরনাবিয়াতের প্রিয় ভগ্নিপতি;
সুলতানা কামাল ও রোজি জামালের
স্নেহার্দ্র শ্বশুর। কত দাবি সকলের,
আর কত শত আবদার! কি-গভীর
ভক্তি-শ্রদ্ধা-ভালবাসা নিয়ে তারা সব
ঘোরে তাঁর চারদিকে। কি-স্বর্গীয় সুখ
এইসবে! প্রিয় পত্নী ফজিলাতুন্নেছা;
আকাশের মতো তাঁর বিশাল হৃদয়;
সে-হৃদয় দিয়ে তিনি মাতিয়ে রাখেন
সারা বাড়ি, যত্ন আত্তিতে। যে-আসে তাঁর
কাছে, সে আর চায় না যেতে দূরে, পর
কি আপন। খানাপিনা, গল্প-আড্ডা শেষে
কি-শান্তিতে শুয়ে আছে সব! চোখ জুড়ে
শুধু সুখ, শুধু স্বপ্ন। এপাশ ওপাশ
করছেন শুয়ে শেখ নাসের। অনেক
দিন হলো, এসেছেন তিনি। খুব ভোরে
হয়েছিলেন রওনা খুলনার উদ্দেশে
ভাইকে না বলে। লোক দিয়ে রাস্তা থেকে
ফিরিয়ে আনেন বঙ্গবন্ধু। হেসে দিয়ে
বলেন, “আমাকে ফাঁকি দিয়ে, চেয়েছিলি
পালাতে তো? পারলি না। ধরা পড়ে গেলি।”
বাংলার শাসক তিনি; তবু একবারও
ভোলেন না ডুবিয়ে রাখতে স্নেহাদরে
প্রাণের এ ভাইটিকে। জানে না এখনো
তাঁরা, অদৃষ্ট তাঁদের বেঁধেছে কি শক্ত
অমর বন্ধনে। খানাপিনা শেষে ফিরে
গেছে সেরনিয়াবত ২৭ মিন্টো রোডে
নিজের নিবাস আর ধানমন্ডি শেখ
মনি তাঁর শান্তি-নীড়ে। স্ত্রী আরজু মনি
অন্তঃসত্বা। পেটের সন্তান রাত্রিদিন
নিচ্ছে পৃথিবীর মুখ দেখার প্রস্তুতি;
যখন সয় না তর, তুলতুলে পায়ে
জোড়ে লাথি; বার বার জাগে তার মাতা
মধুর ব্যথায় সারা রাত। আজও রাতে
যথারীতি জেগে উঠে, শিশুর পিতার
পাশে বসে কল্পনায় দেখতে দেখতে
অনাগত সন্তানের কচি মুখ, ফের
ঢলে পড়ে পরম শান্তিতে মহাঘুমে।
শেষ রাতে মারামারি, কাটাকাটি আর
গোলাগুলির দুঃস্বপ্ন দেখে, ধড়পড়
করে উঠলো সে জেগে ফের। উঠে “মা! মা!”
বলে কাতরালো একবার, দুইবার।
তারপর পুনরায় ঢলে পড়লো অথৈ
ঘুমের ভেতর। আজরাইল এসে ফের
করতে লাগলো হাঁটাহাঁটি। তার ভারী
পায়ের আওয়াজে ভেঙে গেলে কাঁচা ঘুম,
আতঁকে উঠলো বেবি সেরনাবিয়াত;
ঠোঁট ফুলিয়ে সে কাঁদলো কয়েকবার;
তারপর ঘুমিয়ে পড়লো একা একা।
দুধ দেয়া অবলা গাভীটা হাম্বা হাম্বা
রবে ডেকে উঠলো তিনবার; তার ডাক
ভাঙাতে পারলো না কারো ঘুম; অতঃপর
সে নিশ্চুপ হয়ে গেল। প্রহরী অবাক
হলো হাম্বা হাম্বা ডাক শুনে এত রাতে।
হয়তো সৌখিন গাভী মশার কামড়ে
হয়েছে উত্যক্ত, ভাবলো সে। তারপর
কান খাড়া করে শুনতে লাগলো চুপচাপ
মহাকাল-তরঙ্গের কলকল ধ্বনি।

মুজিবনামা মহাকাব্যের ‘ম্যাসাকার পর্ব’; নাম ‘একাদশ সর্গ’।


বই আলোচনা

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৩৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এই বইটির খবর আগে কোথাও পড়েছি মনে হচ্ছে।

০৭ ই জুলাই, ২০২১ ভোর ৫:৩১

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: মিয়া ভাই এইতো এখানে দেখেছেন, মনে হয়...

২| ০৭ ই জুলাই, ২০২১ ভোর ৫:৩৬

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: হয়তো এখানে দেখেছেন প্রথম। মহাকাব্য মুজিব নামার সংবাদ অথবা বুক রিভিউ এইতো এখানে দেখেছেন, মনে হয়...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.