নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে নিয়ে বলার কিছু পাই না

আবু নাসের মোহম্মদ রেজা

"এই শহর জানে আমার প্রথম সবকিছু । পালাতে চাই, তবু সে আসে পিছু পিছু...... "

আবু নাসের মোহম্মদ রেজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

যাত্রবাড়ী পাসপোর্ট অফিস - ভোগান্তির অপর নাম /:)

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২১



বাচ্চার পাসপোর্ট করার জন্য আজকে যাত্রবাড়ী পাসপোর্ট অফিসে যেয়ে মনে হলো জীবনে বড় কোন পাপের ফলাফল হিসেবে পাপ মোচন করতে বিধাতা পাঠাইছে আমাকে এখানে। সিএনজিওয়ালারে হাতে পায়ে ধরে রাজি করিয়ে প্রায় দুই ঘন্টা সময় জ্যামে কাটিয়ে সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়ী, দনিয়া, শনির আখরা পার করে বায়েরবাগের এক চিপা গলির ভিতরে আবিষ্কার করলাম "ঢাকা সিটি কর্পোরেশেনের” আমাদের মতো অভাগাদের জন্য বানানো “পাসপোর্ট অফিস”! যাইহোক, যাওয়া মাত্রই আবিষ্কার করলাম মূল অফিস থেকে ৩০/৪০ গজ দূরে এক বাড়ীর নিচে আর্মির পোশাক পরা এক লোক মানুষ জনরে নাম ধইরা ডাকাডাকি করছে। জানলাম এটা হচ্ছে যাচাই বাছাই কৃত পাসপোর্ট ফর্মের (যা নিয়ে পরবর্তীতে ছবি তুলতে যেতে হবে আরেক লাইনে) এবং পাসর্পোট ডেলিভারী দেয়ার সিস্টেম !! যাইহোক গেলাম প্রথম ধাপে পূরণকৃত ফর্ম আর সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে। রোদের মধ্য শত শত মানুষ দাড়ানো… আল্লাহের অশেষ মেহেরবানী যে আর্মির এক লোক আমার কোলে আমার ছেলেকে দেখে আমাকে লাইন ছাড়াই ফর্ম জমা দেয়ার সুযোগ করে দিল। এরপর তো অপেক্ষার পালা আর শেষ হয় না। একটু বসার জায়গা নাই অফিসের কোথাও.. মানুষজন এলাকার বিভিন্ন বাড়ির সামনের সিড়িগুলোতে বসে ঘামছে সমানে.. আমার দেড় বছরের ছেলেটাকে নিয়ে আমি না পারি কোথাও বসতে, না পারি চিপা রাস্তায় একটু ছেড়ে দিতে (এই চিপা রাস্তার মাঝেই, শত শত মানুষের মাঝখান দিয়েই হুস হাস করে চলে যাচ্ছে ব্যাটারী গাড়ী, সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা)। গরমে কাহিল হয়ে যাওয়া ছেলেটার দিকে তাকাতে পারছিলাম না..কান্না করছে একটু পর পর.. কিছু দেখিয়ে ওকে একটু ভালো রাখার প্রানন্ত চেষ্টা ওর মায়ের। এভাবে থাকার প্রায় চার ঘন্টা পরে আমরা পেলাম সেই যাচাই কৃত ফর্ম। এরপর ছবি তোলার পালা এবং সেই রুমের সামনে আবার লম্বা লাইন, ছোট্ট রুমের মাঝে গাদা গাদি করে ৪০ এর বেশি মানুষ বিভিন্ন রুমের সামনে লাইনে দাড়ানো।বাচ্চাটা সমানে কাদছে, অসহ্য গরম আর ক্ষুদায় । ছবি তোলার জন্য সিরিয়াল আসতে আসতে বাচ্চাটা ঘুমিয়ে পড়লো আমার কাধে চুড়ান্ত রকমের ক্লান্ত হয়ে। ছবি আর তোলা গেল না, স্ক্যান করা ছবি দিয়েই কাজ চালানো হলো । সেখান থেকে আবার আর এক রুমে যেয়ে আরও প্রায় ২০ মিনিট বসে থেকে রিসিট হাতে পেলাম।



গরীব দেশে হাজারে সমস্যা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। এমন না যে আমি কখনো কোন লাইনে দাড়াইনি… কিন্তু আজকের মতো এত কষ্ট আমি কখনো পাইনি, কারন আজকে আমার ছোট্ট বাবাটাকে তার ছোট্ট জীবনে সবচেয়ে বেশি কষ্টের মাঝে ফেললাম।

আমরা তো ফ্রি তে পাসপোর্ট করাচ্ছি না..নুন্যতম ৩০০০ টাকা দেই বলে আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছেঃ



- সিটি করর্পোরেশনের পাসপোর্ট অফিসের মতো একটা গুরুত্বপূর্ন অফিসের লোকেশান কি করে আবাসিক এলাকার এত ভিতরে হতে পারে???

- যেখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়ত সেখানে কেন ওয়েটিং রুম থাকবে না? রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে কেন আমাদের সার্ভিস নিতে যেতে হবে???

- শিশুদের জন্য কেন আলাদা সেল থাকবে না ??? একটা পূর্ণ বয়স্ক মানুষের লাইনে দাড়িয়ে থাকা আর একটা অবুঝ শিশুর লাইনে দাড়িয়ে থাকা এ্ক কথা নয়, এই সামান্য কথা পাসপোর্ট অফিসের কর্মকতারা কি বোঝার চেষ্টাও করেন না ???

- জমা দেয়া এবং সংগ্রহ করার প্রসেসটা কি আরও সুন্দর করা যায় না ? নাম ধরে ডেকে লাইনে দাড় করানো মূল অফিসের থেকে আরও দূরে, তারপর বলা এখন লাইন ধরে আসেন আমার পিছনে .. এটা কেমন প্রসেস ??



সামনে আরও বাকি পুলিশ ভেরিফিকেশান … জানি না কত টাকায় রফা হবে সেটা …



নষ্ট একটা দেশে বাস করছি আমরা..নষ্ট একটা পরিবেশে বড় হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যত..

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২১

আমিনুর রহমান বলেছেন:


সবাই বুঝে আর জানে এসব দুর্ভোগের কথা কিন্তু কারো স্বদিচ্ছা নাই এসব দিকে নজর দেয়ার। আপনি দালাল কে ১০০০/১৫০০ টাকা দিতেন দেখতে লাইন-ফাইন লাগতো না ২০/৩০ মিনিটের মধ্যে আপনার সব কাজ শেষ করে দিতো।

এই হলো আমার দেশ।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭

আবু নাসের মোহম্মদ রেজা বলেছেন: সেটাই এই হলো আমাদের দেশ ... সব জায়গায় দালাল দিয়ে ভরা...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.