নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
আজ আমার জন্মদিন, আর সবার মত আমারও প্রিয় একটি দিন । "জন্মদিন" নিয়ে ভাবতে গেলে সবার আগে যে জিনিসগুলো মাথায় আসে তা হল- বাবার মুখে শোনা আমার জন্মগ্রহণের মুহূর্তের গল্প, শৈশবের কিছু ফ্রেমবন্দী ছবি আর এ যাবৎ পালিত সকল জন্মদিনের স্মৃতি । এখনও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না । কিছুটা শেয়ার করি-
আমি যে রাতে জন্মগ্রহণ করি সেই রাতটি ছিল মাঘ মাসের কনকনে শীতের রাত । (রাতে জন্ম বলেই হয়তো রাত আমার এতটা প্রিয়; সম্ভবত এ কারণেই আমি রাত জাগতে পছন্দ করি!) তখন ফরিদপুর পানি ওয়াপদার (পানি উন্নয়ন বোর্ড) বিল্ডিং কন্সট্রাকশনের কাজ চলছিল আর আমাদের বাড়িটি ছিল তার একদম পিছেই । রাত ৩টার দিকে মার প্রসব বেদনা শুরু হল, ফলে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা হল । যে রিক্সায় করে মাকে নেয়ার কথা ছিল, সেটি অপেক্ষা করছিল ওয়াপদার কন্সট্রাকশনের জন্য এনে রাখা বালি আর খোয়ার (ইটের টুকরোর সমাবেশ) ঠিক পাশেই । আমি আর ত্বর সইতে পারলাম না । ভাবটা এমন যেন পৃথিবীর আলো আমাকে এখনি দেখতে হবে! কাজেই, মাকে রিক্সায় ওঠার সুযোগ না দিয়েই এক লাফে পৃথিবীতে এসে পরলাম । পরলাম তো পরলাম একেবারে খোয়ার ওপর! একে তো মাঘ মাসের শীত, তারপরে আবার চোখা চোখা খোয়া- অবস্থাটা কী হতে পারে বুঝতেই পারছেন! পরেই তো আমার আর কোন সাড়া-শব্দ নাই! কান্নাকাটির রেশমাত্রও নাই! কিন্তু আমাকে যে কাঁদতেই হবে! নিজে থেকে না কাঁদলে কাঁদাতে হবে । সবাই চিন্তায় পড়ে গেলেন- ছেলে কাঁদে না ক্যান? আমার দাদু ছিলেন ফরিদপুরের বিখ্যাত হোমিও চিকিৎসক( ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে আমার মা-ও দাতব্য চিকিৎসালয়ে হোমিও চিকিৎসা করেন) । তিনি তাঁর গায়ের খদ্দরের চাদরটা দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরেই দিলেন জোরে কয়েকটা ঝাঁকি । বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টার পর- "উঙ্গা......" অবশেষে আমাকে কাঁদানো গেলো, আর সবার মুখে ফুটল হাসি! বাবা বলতো, যে অবস্থা হয়েছিল তাতে নাকি আমার বাঁচার কথা ছিল না । বাবা বলতো,"নিশ্চয়ই তুই বড় কিছু হবি; হয় খুব ভালো, অথবা খুব খারাপ । নাহলে যে অবস্থা হয়েছিল তাতে তোর বাঁচার আশাই ছিলনা! নিশ্চয়ই তোকে বাঁচিয়ে রাখার পিছে ভগবানের কোন উদ্দেশ্য আছে।"
সেদিন থেকে বাবা যতদিন জীবিত ছিল ততদিন পর্যন্ত (২০০৮ সাল) প্রতিবার আমার জন্মদিন খুব ঘটা করে পালিত হয়েছে । একজন ক্ষুদ্র সামর্থ্যবান, অথচ বিশাল মনের মানুষের একমাত্র আদরের দুলাল বলে কথা! আমার জন্মদিন পালন ছিল একটু ভিন্ন ধরনের । খাঁটি বাঙ্গালিয়ানা বললে ভুল হবে না । আমার সব বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে নিমন্ত্রণ করা হতো । নিমন্ত্রণের চিঠির কিছু কপি এখনও বাসায় সযত্নে সংরক্ষিত আছে । চিঠির নিচে আমাকে দিয়ে লেখানো হতোঃ "লৌকিকতা বর্জনীয়।" অর্থাৎ, কেউ যাতে কোন উপহার নিয়ে না আসেন, বিনীতভাবে সেই অনুরোধটা চিঠিতেই করে দেয়া হতো । বাবার চাওয়া ছিল তাঁর ছেলের জন্য শুধুই আশীর্বাদ, আর কিছু নয় । কেউ যাতে জন্মদিনের নিমন্ত্রণ খেয়ে গিয়ে খাবার মনমতো নাহলে মনে মনে বলতে না পারেঃ "এত টাকা দিয়ে উপহার আনলাম, কি খাওয়াইল! আমার পুরো টাকাটাই জলে গেলো!" কেউ যদি কিছু উপহারসামগ্রি নিয়েও আসতো, তাঁকে বিনীতভাবে বুঝিয়ে বলে তাঁর উপহার ফিরিয়ে নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হতো । শুধুমাত্র শিক্ষার উপকরণ আনলে ফেরানোর উপায় ছিল না বলে খুব অনুরোধের পর কখনো কখনো কলম, বই রেখে দিতাম । আর রাখতাম ফুল । আমার মনের মধ্যে যাতে এজন্য কোন ক্ষোভ বা কষ্ট না থাকে সেজন্য আমাকে বুঝিয়ে আমার হাতেই লেখানো হতো- "লৌকিকতা বর্জনীয়" । খাবারের মেন্যুতে ছিল খাঁটি বাঙ্গালিয়ানা । জানুয়ারি মাসে আমাদের বাড়িতে দুটি অনুষ্ঠান হতো । একটি হতো জানুয়ারি মাসের প্রথম মঙ্গলবার (ঠাকুরমার দিবসীতে বাসায় শ্যামা পূজা হতো, এখনও হয়), আরেকটি ১৭ তারিখ আমার জন্মদিনে ।
বাবা সত্যিকার অর্থেই একজন সৎ মানুষ ছিলেন, তাই তাঁর রোজগার ছিল সীমিত । সেই সীমাবদ্ধতার মাঝেই যেবার যেমন সামর্থ্য থাকত সেবার তেমন মেন্যু থাকত জন্মদিনের "বাল্যভোজে" ( বাল্যভোজ বলা হচ্ছে এ কারণে যে, এতে মূলত পাড়ার সব ছোট শিশু-কিশোরদেরকে তাদের মা-সহ নিমন্ত্রণ করা হতো ।) । যেবার বাবার আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভাল থাকতো সেবার পোলাও-মাংস, আর যেবার কিছুটা হাত টানাটানি চলতো সেবার সব্জি-খিচুরি-পায়েস খাওয়ানো হতো । কখনই কেক কাটা হতো না । বাবা কবি ছিলেন এবং বাঙ্গালিয়ানায় উৎসব উদযাপন পছন্দ করতেন । তাই হয়তো বিদেশী রীতিতে কেক কাটা তাঁর পছন্দ ছিল না । বিশাল বিশাল পাতিল আর কড়াইতে হতো রান্নার কাজ । পাড়ার কাকিমা আর দিদার বয়েসীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতেন এই কাজে । বাড়ির সামনের মাঠটিতে গোল করে আসন পেতে দেয়া হতো । সেখানেই সবাই গোল হয়ে বসতো । বাড়ির ভেতরে জায়গা সংকুলান হতো না । এসবই করা হতো বাবার সামান্য বেতনের টাকায় । বেশিরভাগ সময়েই ধার-দেনা করতে হতো, মাঝে মাঝে আমার পাওয়া বৃত্তির টাকাও এই কাজে ব্যায় হতো( আমি বৃত্তির টাকা হাতে পেয়েই পুরোটা বাবার হাতে তুলে দিতাম।) । কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে মানুষের যে আশীর্বাদ আর ভালবাসা পেতাম, তা লাখ টাকায়ও মেলে না । বলতে গেলে, সবার চোখের মনি ছিলাম আমি ।
আজ বাবা নেই, মা ফরিদপুরের বাড়িতে । আমি ঢাকায় একা । তাই জন্মদিনকে ঘিরে কোন উৎসাহ নেই, নেই কোন আয়োজন । দিন দিন বয়স বেড়ে যাচ্ছে । ঘাড়ে এসে পড়ছে নিত্য-নতুন দায়িত্ব । এভাবেই বড় হয়ে যেতে হয় একদিন । আমিও বড় হচ্ছি । চলার পথে কারো সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করে থাকলে ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা ও দোয়া/আশীর্বাদ চাই । মানুষের মতো মানুষ হতে চাই । বাবার স্বপ্নগুলোর বাস্তব রূপ দিতে চাই, মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে চাই ।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৪
...নিপুণ কথন... বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:৩০
আশিক মাসুম বলেছেন: HaPPy জন্ম দিন, শুভ BiRth DaY
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৫
...নিপুণ কথন... বলেছেন: হাহা ... বাংলিশ! ধন্যবাদ আপনাকে ।
৩| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:৩৩
জেনারেশন সুপারস্টার বলেছেন: শুভ জন্মদিন.........কেক কাটেন জলদি
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৬
...নিপুণ কথন... বলেছেন: ওকে, কাটছি । কেটে নিজেই খেয়ে ফেলছি কেমন? আপনি উপহার নিয়ে আসেন! :p
৪| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:৪৪
আদিম পুরুষ বলেছেন: শুভ জন্মদিন।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৬
...নিপুণ কথন... বলেছেন: ধন্যবাদ
৫| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:০৬
শফিউল আলম চৌধূরী বলেছেন: শুভ জন্মদিন।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭
...নিপুণ কথন... বলেছেন: ধন্যবাদ
৬| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:১১
আনন্দক্ষন বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার জন্মলগ্নের অন্য রকম বর্নণা শুনে।
ভাবুন তো কোন পেইণ কিলার ছাড়া আপনার মায়ের কত কষ্ট হয়েছিল, সেই মুহুর্তে। গত বছর এক বন্ধুর বৌ এর কিছু সমস্যা থাকায় হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল এক রাত, বন্ধুটিকে মানুসিক ভাবে সাহায্য করার আশায়। নিজেও জানতাম না, উপকারটা আমারই বেশি হয়েছিল সে রাতে। শ্রদ্ধা আর ভক্তিতে নত জানু আমি আজ কেবল সেই মুহুর্তের জন্য হলেও কৃতজ্ঞ, সব কিছুর শোধ হয়তো করা যায় কিন্তু সেই কষ্টের কোন তুলনা করা যায় না।
পারলে, মাকে সময় দেবার চেষ্টা করবেন, এই প্রত্যাশায়- শুভ জন্মদিন।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১৬
...নিপুণ কথন... বলেছেন: চেষ্টা করি । কিন্তু এই মুহূর্তে মাকে ঢাকায় নিয়ে আসা সম্ভব না বিধায় পারছি না সময় দিতে । আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন । ভালো থাকবেন । শুভকামনা রইল । ধন্যবাদ ।
৭| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:০৭
খালেদ পাভেল বলেছেন: আমার জন্মদিন
আমি কি কফিন থেকে তোমাদের ডেকে বলব কবে
আমার জন্মদিন,
তোমরা কেউ না কেউ আমার হাতে একটা গোলাপ ফুল দাও
কেউ না কেউ আমার জন্য চারুকলার সামনে এসে
একটু দাঁড়াও,
কারো না কারো হাতে থাকুক, র্যাপিং পেপারে
মোড়ানো একটা বাক্স;
আজকের দিনে অন্তত কেউ একজন আমার মুখে
একটা মিষ্টি তুলে দিক
কেউ আমাকে হাতপাখার একটু বাতাস করুক
পাশে বসুক,
কেউ আমার টেবিলে গোপনে দু-চারটি বেলীফুল
এটুকু অন্তত চাইতে পারি।
তোমাদের এত তারিখ মনে থাকে, ডায়েরিতে জ্বলজ্বল
করে এত বারের নাম
সপ্তাহে কবে, কোথায় পার্টি, কখন বাণিজ্যমেলা, কবে
ফুড ফেস্টিভ্যাল
তোমাদের সবার ক্যালেন্ডারই কি কেবল এই একটি তারিখ
ছাপতে ভুলে গেছে?
আমি কি কফিন থেকেও চিত্কার করে বলব কবে
আমার জন্মদিন
আমি যেই হই, একটা পিঁপড়ারও তো জন্মদিন আছে
তোমাদের এত কিছু মনে থাকে, মোটামোটা বই,
কত কাহিনি, কত বিবরণ
শুধু এই একটা তারিখ তোমাদের কারো মনে নেই?
তোমারও না?
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৭
...নিপুণ কথন... বলেছেন: কার কবিতা এটা? অনেক সুন্দর । শেয়ার করেছি ।
৮| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:১৮
মাথা ঠান্ডা বলেছেন: শুভ জন্মদিন।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৮
...নিপুণ কথন... বলেছেন: ধন্যবাদ
৯| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:১৯
এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল স্বর্ণা বলেছেন:
শুভ জন্মদিন।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৮
...নিপুণ কথন... বলেছেন: ধন্যবাদ
১০| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১১
ইখতামিন বলেছেন: আশিক মাসুম বলেছেন: HaPPy জন্ম দিন, শুভ BiRth DaY
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০১
...নিপুণ কথন... বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:২৮
ভিয়েনাস বলেছেন: শুভ জন্মদিন