নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
অনেক মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে জীবনের অন্যতম স্মরণীয় একটি জন্মদিন কাটালাম । জন্মদিনের শেষ সময়টায় আমাদের হলের প্রভোস্ট, আমাদের অভিভাবক শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক ডঃ অজয় কুমার দাস স্যারের আশীর্বাদ নিতে প্রভোস্ট বাংলোয় গেলাম । স্যারকে ও কাকিমাকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম । কাকিমা মিষ্টিমুখ করালেন, স্যার আশীর্বাদসহ একটি ডায়েরি গিফট করলেন এবং তারিখসহ প্রতিদিনের লেখা তাতে লিখতে বললেন । স্যারের থেকে পাওয়া এই জন্মদিনের উপহারটি আমার এবারের জন্মদিনের সেরা প্রাপ্তি । বাবা-মা কাছে নেই, আমাদের হলের অভিভাবক হিসেবে স্যারের এরূপ আশীর্বাদ ও আদর পেয়ে চোখে জল আটকে রাখতে পারলাম না । বোধ করি, এতটা আদরের যোগ্য আমি নই ।
গতকাল রাত ১২ টা ২ মিনিটে জন্মদিনের প্রথম শুভেচ্ছাটি পাই বন্ধু অনিন্দ্যর ( Oboshese Anindya ) থেকে, উপহারও পাই । ওর সবচেয়ে বড় পরিচয় ও আমার খুব ভালো বন্ধু । ওর আরেকটি পরিচয় ও আমাদের হলের প্রভোস্ট স্যারের ছেলে । ওর সাথে কথা বলতে বলতেই রুমমেট সজলদা ( Diponkar Mondal Dip ) রুমে এসে হাজির । দাদা বয়সে আমার অনেক বড় এবং আপন বড় ভাইয়ের মতোই । চট করে পায়ে প্রণাম করে বসলাম দাদাকে । আজ আমার জন্মদিন জানতেই আমাকে সেইরকম এক ঝারি দিলেন! আমার দোষঃ আমি কেন আগে তাঁকে জানাইনি যে আজ আমার জন্মদিন! জানালে নিশ্চয়ই কেক, মোমবাতি এনে একটা আয়োজন করতেন! বড় ভাই মনে করি, অথচ কেন বড় ভাইয়ের মতো তাকে বলিনি, কেন কিছু চাইনি! আমি তো বিনয়ের সঙ্গেই জানালাম যে আমি এমনি, কোনদিন বাবা-মায়ের কাছেও কিছু চাইতে পারিনি! দাদা কোন কথাই শুনলেন না । ওই অবস্থাতেই আমাকে নিয়ে আবার পলাশীর মোড়ে গেলেন এবং খায়িয়ে তবেই ছাড়লেন!
সারাদিন হলে অনেকেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে । ডিপার্টমেন্টে যাইনি, তবুও অনেক বন্ধু ও ক্লাসমেটের ফোন পেয়েছি । এস,এম,এস গুলর জবাব এখনও দেয়া হয়নি । ফেসবুকের আমার ওয়াল এবং মেসেজ ইনবক্স ভরে গেছে অগণিত জন্মদিনের শুভেচ্ছায় । এত মানুষের ভালবাসার যোগ্য আমি কিনা, সেটা আমার কাছে আসলেই একটা প্রশ্ন । শুভেচ্ছা পেয়েছি খুব কাছের কিছু মানুষের থেকে যেমন প্রথম আলোর ডেপুটি ফিচার সম্পাদক জাহিদ রেজা নূর ভাইয়ের থেকে, পেয়েছি ফরিদপুরের অনেক বিশিষ্টজনের থেকে, তাদের মাঝে শিপ্রা আন্টী অন্যতম, যিনি আমাকে নিজের ছেলে বলেই পরিচয় দেন ।
তবে আজকের দিনে কাজের কাজ বলতে গেলে করেছি একটাই । সন্ধ্যায় পলাশীর মোড়ে চিতই পিঠা খাচ্ছিলাম । কিছুটা দূরে দেখলাম দুটি পথশিশু খেলা করছে । ইচ্ছে হল আজকের বিশেষ দিনে ওদেরকেও পিঠা খাওয়াই । আমার মতে, মন্দিরে গিয়ে ঠাকুরকে কিছু নিবেদন করার চেয়ে এই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরকে খাওয়ানোটা মোটেই কম পুণ্যের কাজ নয় । আসলে পাপ-পুণ্য বিচারে নয়, মন থেকে চেয়েছিলাম বলেই ওদেরকে ডেকে ওদের ইচ্ছামতো ভাপা পিঠা খাওয়ালাম । ওদের মুখের হাসি দেখে মনে হল- আমার জন্মদিনটা যেন শতভাগ পূর্ণ হল!
এভাবেই বিশেষ দিনটি অনেক চেয়েও সাধারণ রাখতে পারলাম না । অসাধারণ কিছু প্রাপ্তি দিয়েই শেষ হল । সবশেষে আমার সেইসব কাছের বন্ধু, ছোটভাই, বোন, প্রিয়জন, গুরুজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী যারা আমাকে অনেক অনেক ভালবাসা দিয়ে জন্মদিনের দিনটি সার্থক করে তুলেছেন, তাদের সবাইকে আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে অনেক অনেক প্রণাম ও ভালবাসা । আশা করি জীবনের আগামী দিনগুলোতেও আপনারা/ তোমরা আমার পাশে থাকবেন/ থাকবে ।
©somewhere in net ltd.