নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
ছোটবেলায় খুব আদর আর শাসনের মাঝে ছিলাম বলে পড়ালেখার বাইরেও যে একটা লাইফ থাকে সেটা নিজের মতো করে উপভোগ করতে পারিনি । বন্ধুরা মিলে অনেকক্ষণ ধরে আড্ডাবাজি কিংবা ঘুরতে যাওয়া তেমন একটা হতো না । এর প্রধান কারণ ছিল, আমি যেখানে থাকতাম সেই জায়গাটা শহর থেকে একটু দূরে এবং সেখানে মেশার মতো তেমন কেউ ছিল না । অন্তত স্কুলের বন্ধুবান্ধব তো নয়ই । বিকেলের সময়টা ভালো কাটাতে আর সংস্কৃতির চর্চা করতে "ফুলকিতে" যেতাম । আমার আবার ছোট থেকেই অল্পতেই ঠাণ্ডা লাগে যায় । তাই, চাইলেও বৃষ্টিতে ভিজতে পারতাম না । জিলা স্কুলে যাওয়া আসার পথে অনেক সময় বাধ্য হয়েই ভিজতে হতো । তবে বেশিরভাগ সময়েই আকাশের ভাব দেখে বাবা ছাতা দিয়ে দিত, একরকম জোর করেই । মনে পড়ে স্কুলের মাঠে বৃষ্টি ভিজে ফুটবল খেলার কথা । মূলত আমাদের ইমিডীয়েট সিনিয়র ব্যাচের প্লাবনদা, শান্তনুদা, প্রদীপদা-দের সাথেই বেশী খেলা হতো । আমি থাকতাম গোলকিপার! আমাকে "ফুলাতে"-ই হোক (যাতে আরও উৎসাহ নিয়ে খেলি, ভালো খেলি) আর সত্যিই হোক, অনেকেই বলতো আমি নাকি খুব ভালো গোলকিপার ছিলাম । ফুটবল না থাকলে ভলিবল মাঠে টেনিস বল অথবা নারিকেলের ছোট দাব দিয়েই খেলা চলতো! কতদিন যে খেলতে খেলতে বৃষ্টিতে ভিজেছি তার ঠিক নেই । ভিজলেই বাসায় গিয়ে ধরা খেয়ে যেতাম আর পরেরদিনই ঠাণ্ডা লেগে যেত!
এখন আর ঠাণ্ডা লাগে না । কলেজ আর ভার্সিটি লাইফে নিজেকে সব পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিয়েছি । মনে পড়ে নটরডেমে থাকতেও একিভাবে বৃষ্টিতে ভিজতাম । আমি তখন সদ্য স্বাধীনতা পেয়েছি বলা যায় । কলেজ ও হোস্টেলের হাজারটা নিয়মকানুনের মাঝেতা চাইলেই নিজের মতো করে অনেক কিছু করতে পারতাম । এই যেমন বৃষ্টিতে ভিজে ঠাণ্ডা লাগিয়ে বসলে বাবা দেখত না । মনে আছে সহপাঠী বন্ধুদের সাথে কলেজের মাঠে ফুটবল খেলার কথা । খুব মনে পড়ে মিশনের মহারাজের চোখ ফাকি দিয়ে হোস্টেল থেকে চার/পাঁচজন করে বের হওয়া আর ইত্তেফাকের মোড় থেকে অভয়দাস লেন, রেললাইনের পাত ধরে বৃষ্টিতে ভিজে হেটে চলা । মনে পড়ে সেই চায়ের দোকান । গায়ে বৃষ্টির ঠাণ্ডা আর হাতে গরম চা - এ এক অন্যরকম অনুভূতি, ভিন্নরকম ভালোলাগা ।
কলেজ লাইফ শেষ । ভার্সিটি লাইফটাও শেষ করে ফেললাম একরকম । হয়তো আরও করেক বছর থাকবো । যেদিন চলে যাবো, সেদিন এই কার্জন হলের রাস্তা ধরে বৃষ্টিতে ভিজে হেটে চলা খুব মিস করবো । আর মিস করবো প্রিয় টিএসসি, আড্ডাবাজি, জগন্নাথ হল আর রাত জাগার সাথী পলাশীর মোড় । বৃষ্টি তখনও থাকবে । ভিজিয়ে যাবে আমাকে । ভেজাবে আমাদেরকে । বৃষ্টিকে নিয়ে আমি আবার লিখতে বসবো । আবেগ আর স্মৃতির ঘোরে কেটে যাবে কিছু সময় একদম এভাবেই...
©somewhere in net ltd.