নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ফেসবুকে যুক্ত হোনঃ www.facebook.com/dev.d.nipun

...নিপুণ কথন...

সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।

...নিপুণ কথন... › বিস্তারিত পোস্টঃ

শোনার কেউ নেই, তবু বলে বলে ব্যাথা করি গলা!

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১৬

সৈয়দ আবুল মকসুদ আজ প্রথম আলো সম্পাদকীয়তে লিখেছেন বন্ধু জগলুল এ চৌধুরী হারানোর বেদনার কথা। শেষে আক্ষেপ করে জানিয়েছেন, "কিন্তু দরকার যা তাহল সড়কে হত্যাযজ্ঞ কমানো। তা আমাদের মতো অক্ষমদের কাজ নয়।" হ্যাঁ, তিনি ঠিকই বলেছেন। গত ২৩ নভেম্বর আমিও একটি লেখা লিখেছিলাম ইত্তেফাকে, শিরোনাম ছিল "আমরা কেন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছি?" (লিংক Click This Link)

নিজেকে অক্ষম বলে স্বীকার করতে আমারো আপত্তি নেই। কারণ, আমরা অক্ষম বলেই শুধু লিখে আর চিল্লাপাল্লা করে হাত-গলা ব্যাথা করি। কাজের কাজ কিছুই হয় না। যাদের শোনার কথা, তাঁরা শোনেন না। কিছুদিন লোক দেখানো তৎপরতা চলে, অত:পর যা-তাই। ক্ষমতাবানদের চোখে দামী কালো চশমা থাকে, অক্ষমদের লেখালেখি তাঁদের নজরে আসে না।



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলের পাশে সড়ক দূর্ঘটনা কমাতে সচেতনতা বাড়াতে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনিরের স্মৃতি রক্ষায় একটি ভাষ্কর্য নির্মিত ও সম্প্রতি সবার জন্য উন্মুক্ত হয়েছে। অবস্থানগত কারণে প্রতিদিন আমাকে এই স্থাপনার সামনে দিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। প্রতিবার মনটা কেঁদে ওঠে আমার। তারেক মাসুদ আমার মামার বাড়ির পাশের গ্রামের মানুষ, একই জেলা আমাদের, আমার অসম্ভব ভালো লাগে তাঁর কাজ। ফরিদপুরে একটি শিল্পগোষ্ঠী আমার বাবা কবি বাবু ফরিদী ও তারেক মাসুদের স্মৃতি রক্ষায় পদক দেয়। মরে যাবার পরে আমরা মেধাবিদের সম্মানিত করি, কিন্তু বেঁচে থাকতে তাঁদের কথা ভাবি না। এটা আমাদের অনেক বড় দোষ।



এই স্থাপনার সামনে দিয়ে আমি শাহবাগ যাই, গাড়িতে চড়তে আমার ভয় হয়। পারত:পক্ষে পায়ে হেটেই কাছাকাছি দূরত্ব পার হই। দূরে গেলে খুব সাবধানে বাসে ওঠা-নামা করি। রাস্তার মাঝখানে পাল্লা দিয়ে বাসগুলো যাত্রী ওঠায়। আমরা উঠতে বাধ্য, কারণ ওরা বাস সাইড করে না। সিগনাল মেনে জেব্রা ক্রসিং এ গাড়ি থামে না। আমরা যত্রতত্র রাস্তা পার হতে গিয়ে বিপদে পড়ি। বাসে যাত্রী ওঠার আগেই বাস টান দেয়, দেয় নামার আগেও। জগলুল আহমেদের বয়স হয়েছিল, তিনি অভ্যস্ত নন। মারা গেলেন। বেশ কিছুক্ষণ রাস্তায় পড়ে থাকার পর এত লোকের মাঝে একজন মানুষ পাওয়া গেল, তিনি তাঁকে নিয়ে কাছের হাসপাতালে গেলেন। অগ্রিম টাকা দেয়া হবে না বলে তাঁকে ভর্তিই করা হল না! অথচ, উন্নত দেশে আগে চিকিৎসা, পরে টাকা। আমরা এখানেও অক্ষম। লিখছি, হাত ব্যাথা করছি। শোনার কেউ নেই।



ফেরার পথে ঐ স্থাপনার সামনে আমার আবার মন খারাপ হয়, যখন দেখি হাসিমুখে সেখানে শিক্ষার্থীরা ঘুরছে, বসে আড্ডা দিচ্ছে। ক্যাম্পাসের বাইরের অনেকে সেখানে হাসিমুখে ছবিও তুলছে! অতীতের মতো আবার জায়গাটি "ডেটিংস্পট" এ রূপ না নেয়, আমি আশংকায় আছি।



-দেব দুলাল গুহ (দেবু ফরিদী)।

২ ডিসেম্বর ২০১৪

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.