নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
মেয়েটি, ওর এক বান্ধবির সাথে গল্প করছিল টিএসসির ভেতরে বসে। পড়নে গাঢ় নীল রঙের জামা আর একদম এটোসেটো জিন্স, যেটা হালকা নীল। ওড়নার যতটুকু সদ্ব্যবহার করা উচিৎ, করেছে। গায়ের বর্ণ কেমন? আমি বলব হলদে ফর্সা। দূর থেকে দেখেই প্রেমে পড়ে যাওয়ার মতো মেয়ে। উচ্চতাও ভালোই।
মেয়েটাকে আমি দেখলাম টিএসসির ভেতর একবার চক্কর দেবারও অনেকটা সময় পরে। ক্যাফেটেরিয়ায় গরম গরম সিঙ্গারা খাওয়ার লোভেই ভেতরে ঢোকা, আজ যে শনিবার -সেকথা মনেই ছিল না। বিফল মনোরথে ফিরে যাব, এমন সময় মনে হল একটু বসে যাই। বহুদিন পর আসা হল এখানে। ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পর থেকে এতগুলো দিন প্রাণের টিএসসিকে দূরে রেখে থাকিনি আর । তো, একটা চেয়ারে বসে মাঠের দিকে চোখ বুলালাম, আরও কিছুটা এদিক-সেদিক। প্রাণচঞ্চল টিএসসির থেকে মাঝে মাঝে এভাবেই আমি প্রাণ ধার নিতে আসি, ফিরে পাই উন্মাদনা। দেখতে দেখতে যতদূর ডানে চেয়ার না সরিয়ে দেখা যায় দেখলাম। সেখানেই, একদম শেষ সীমায়, সেই নীলবসনা-হলুদিয়া পাখির বাস।
ওর হাসি যেন বাঁধ মানছিল না। হেসেই কুটিকুটি। আমি কিছুক্ষণ আড়চোখে তাকালাম। চোখ সরাতে পারছিলাম না। যতক্ষণ পর্যন্ত মেয়েটি খেয়াল করলো না, আমি ততক্ষণ তাকিয়ে রইলাম। তা কম করে ১০ সেকেন্ড তো হবেই। এরপর মেয়েটি আমার দিকে তাকালো, আমি চোখ সরিয়ে নিলাম। এমন একটা ভাব ধরলাম, যেন ওকে নয়, আমি দেখছি সবাইকেই, বিশেষ করে প্রকৃতিকে। সুন্দরী মেয়েদের এই একটা প্রতিভা। যেকোন স্থানে, যেকোন পরিস্থিতিতে, কোন ছেলে তার দিকে কতক্ষণ ধরে তাকিয়ে রইল, ওরা যেন কিভাবে সেটা টের পেয়ে যায়। শুধু পায় না, পেয়ে আত্মিতৃপ্তিবোধ করে। আজকের মেয়েটিও বেশ মজা নিচ্ছিল। আমি বেশি না, দু-তিনবার তাকালাম এভাবে। ততক্ষণে চেয়ারটাও একটু ঘুরিয়ে নিয়েছি। এখন আগের মতো অতটা অসুবিধে হচ্ছে না। তবুও আমি ওর আশেপাশে এগিয়ে গেলাম না, বরং দূরে থেকেই দেখে গেলাম। আমার এই গোবেচারা অ্যাটিচুড দেখে, মেয়েটি ওর বান্ধবিকে নিয়ে এগিয়ে এলো! আমার সামনে দিয়ে কিছুটা দূর গেলো। আমি খুব সাহস করে আরেকবার ওর দিকে তাকালাম। আমাকে অবাক করে দিয়ে আবার ফিরে এলো। এবার ওরা দুজন বসলো আমার দৃষ্টিসীমার একদম সামনে, আমার থেকে মাত্র ৬/৭ ফুট দূরে। মেয়েটি বসলো আমার দিকে আড়াআড়ি পিঠ রেখে, আর ওর বান্ধবি সরাসরি আমার দিকে তাকিয়ে। যাতে আমি মেয়েটির দিকে তাকালে, ওর গুপ্তচর বান্ধবিটি সেটা ওকে বলে দিতে পারে সাথে সাথেই।
আমার আর বুঝতে বাকি রইল না, মেয়েটি আমার সাথে কথা বলতে চায়। চাইতো আমিও। কিন্তু যে কাজ গত ৫ বছর হলো না, সেটা আজ কি করে হয়? আমি তো শুধু দূর থেকেই সুন্দরের পূজা করে যাই! আজও সেটাই হলো। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর, বন্ধুর ফোন পেয়ে টিএসসির বাইরে চলে এলাম। আমার তখন অনেক কাজ। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া, যাতে প্রাধন্য পাবে কাজের প্রসঙ্গ, লেখালেখি, সাম্প্রতিক বিষয়াবলী, এমনকি আমার জীবনের প্রস্তুতিহীন প্রথম বিসিএস কেমন হল সেটা ওদের সাথে আলোচনা করা, আয়েশ করে চা পান করা... আরও কত কী!
©somewhere in net ltd.