নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ফেসবুকে যুক্ত হোনঃ www.facebook.com/dev.d.nipun

...নিপুণ কথন...

সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।

...নিপুণ কথন... › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেয়েরা এখন রিক্সাচালকের দ্বারাও নিগৃহীত হয়!

০১ লা মে, ২০১৫ ভোর ৪:১০

টিএসসি থেকে শামসুন নাহার হলের দূরত্ব কতটুকু? একটা মেয়ে শাহবাগ থেকে টিএসসি যাবে বলে রিক্সায় উঠেছে, এতটুকু পথে ১০টাকার বেশি ভাড়া হওয়া উচিৎ না, সেখানে সে ২০টাকা ভাড়া ঠিক করে উঠেছে। উঠে টিএসসি আসার পর হয়তো মনে হয়েছে, নাহ, টিএসসিতে এখন আর বসব না, দুপুর হয়ে গেছে, একচোটে হলে গিয়ে খেয়ে বিশ্রাম নিয়ে বিকেলেই বের হই। রিক্সাচালককে সে অনুরোধ করেছে, তাকে যেন আরেকটু এগিয়ে শামসুন নাহার হলের গেটে নামিয়ে দেয়। তারপর চালক গেটে এসেই অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া শুরু করে দিলো। টিএসসির পাশেই তো হল, এটুকুর জন্য বাড়তি ভাড়া কেন দিতে হবে -একথা জানতে চাওয়ায়, সেই রিক্সাচালক (যুবক) মেয়েটিকে এমন এমন কিছু কথা শোনালো আর তর্ক জুড়ে দিলো, যে মেয়েটির দুচোখ বেয়ে জলের ধারা নেমে এলো!

আমি তখন সেই হলের সামনে দিয়েই ফিরছিলাম। উচ্চবাচ্যের শব্দ শুনে এগিয়ে গিয়ে দেখি, সাদা ধবধবে পোষাক পরিহিতা মেয়েটি সমানে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে, চোখ-মুখ-নাক লাল হয়ে গেছে। চোখের কোণে তখনও বিন্দু বিন্দু জল। রিক্সাওয়ালাকে থামালাম। জানতে চাইলাম, সে এমন কি করলো বা বললো যে মেয়েটি এভাবে কাঁদছে? সে মেয়েটির দিকে ইশারা করে বললো, তারেই জিগান! আশেপাশের লোক, যারা এতক্ষণ দূরে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন, এগিয়ে এলেন। বললেন, এতক্ষণ অনেক খারাপ খারাপ কথা বলেছে সে মেয়েটিকে। কারণ জানতে চাইলে মেয়েটি জানালো, টিএসসিতে না নেমে কেন হলের গেটে নেমেছে সে, এজন্য রিক্সাচালক অতিরিক্ত ১০টাকা দাবি করেছে! তার মানে দাঁড়ায়, শাহবাগ থেকে টিএসসি তথা শামসুন নাহার হলের গেইটে রিক্সাভাড়া ৩০টাকা? এমনিতেই গরম, মাথাটা আরও বিগড়ে গেলো। রিক্সাচালক এখনো তর্ক চালিয়ে যাচ্ছে, এখন আমাদের সাথে। হল গেটের পাহারাদার দুজনকে ডাকালাম। জানতে চাইলাম, আপনারা থাকতে আপনাদের হলের একটা মেয়েকে এসব বলার ও কাঁদানোর সাহস একটা রিক্সাচালক কিভাবে পায়? তাদের উত্তর মনঃপুত হলো না। আরেকজন মুরুব্বি রিক্সাচালক অবস্থা বেগতিক দেখে ওর পাশে এসে দাঁড়িয়ে মাথায় আঙ্গুল দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করলো, ঐ রিক্সাচালকের মাথায় সমস্যা আছে। এটা সত্যি নয়, বিপদ দেখলে সেই বিপদ থেকে উত্তরণের দারুণ একটা পথ ওদের এটা। ও যদি পাগলই হবে, তো ও রিক্সা চালাবে কেন? যদি গাড়ির তলে ফেলে দেয়? এটা তো আরও মেনে নেয়া যায়না। তো, এখন রিক্সাচালকের কি করা উচিৎ? ওকে পিটিয়ে এলাকাছড়া করব? মানুষ বলবে নিরীহ রিক্সাচালককে পেটায়! কিন্তু এখানে নিরীহ তো সে না, মেয়েটি নিরীহ। ওকে একা পেয়েই রিক্সাচালক এতটা সাহস পেয়েছে। মেয়েটা রিক্সার হুড তোলা অবস্থাতেই সিটে বসে কাঁদছে আর ওর কথার প্রতিবাদ করছে। অনেক মেয়েই এমন পরিস্থিতিতে টাকা যা চায় দিয়ে নিজের সম্মান রক্ষা করার চেষ্টা করে। এই মেয়েটি তা করেনি, প্রতিবাদ করেছে। আমরা তাই ওর পাশে দাঁড়ালাম। প্রতিবাদ করলাম, ভালোভাবেই বুঝালে কাজ হলো না, শেষে সবাই মিলে খুবই অল্প গণধোলাই দিলাম। আর বলে দিলাম, ফের যেন এই ক্যাম্পাসে আমার বান্ধবি-বোনদের সাথে কখনও এমন ব্যবহার না করে।

ব্যাপারটা খেয়াল করেছেন? মেয়েরা এখন রিক্সাচালকের দ্বারাও নিগৃহীত হয়! ব্যাপারটা মোটেও অনাকাঙ্ক্ষিত নয়, বরং এমনটাই হবার ছিল। এমনটাই হবে, যদি একের পর এক ঘটনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেও দোষীদের বিচার নাহয়। যখন বিচার নাহয়, তখন কেউ আর ভয় পায় না। এমনটা চলতেই থাকে তখন। সমাজ অবক্ষয়ের চরম পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। সমাজটাকে বাঁচাতে চাইলে, আমাদের এখনই কিছু করতে হবে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৭

নক্‌শী কাঁথার মাঠ বলেছেন: ভালো করেছেন, কান বরাবর সামান্য চটকানা না দিলে ও এই কাজ আবারো করতো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.