নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
১৯২১ সালে যে তিনটি হল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা শুরু হয়েছিল, জগন্নাথ হল সেগুলোর একটি। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটাল হয়ে ওঠার অভিযাত্রায় জগন্নাথ হলে চালু হলো কম্পিউটার ল্যাব। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এই প্রথম ছেলেদের কোনো হলে কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হলো।
শোককে শক্তিতে পরিণত করে
১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর জগন্নাথ হলের টিভি রুমের ছাদ ভেঙে পড়ে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। অক্টোবর স্মৃতি ভবন তাঁদের স্মৃতি রক্ষার উদ্দেশ্যেই নির্মিত। এই ভবনের নিচতলায় এক পাশে হতাহতদের স্মৃতি জাদুঘরের সামনের একটি কক্ষেই বসানো হয়েছে কম্পিউটার ল্যাবটি। শোক যেন শক্তিতে পরিণত হলো।
কম্পিউটার ল্যাবের উদ্বোধন
৯ সেপ্টেম্বর ল্যাবটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শুধু গ্রন্থের সাক্ষরতাই যথেষ্ট নয়, চাই জীবনের সাক্ষরতাও। কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষ হয়ে তথ্যের সাক্ষরতার সঙ্গে জীবনের সাক্ষরতা অর্জনও সম্ভব। প্রতিটি হলে যদি আমরা ছাত্রছাত্রীদের কম্পিউটার সুবিধা দিতে পারি, তাহলে তারা জ্ঞান-বিজ্ঞান-শিল্পের জগতে নিজেদের আরও বেশি সংযুক্ত করতে পারবে। ছেলেদের হলগুলোর মধ্যে জগন্নাথ হল দিয়ে শুরু হলো, পর্যায়ক্রমে এই সুবিধা অন্য হলগুলোতেও সম্প্রসারিত হবে।’ বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম সরকার।
যেসব সুবিধা থাকছে
জগন্নাথ হলের কম্পিউটার ল্যাবটিতে প্রাথমিকভাবে থাকছে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগসহ ২৫টি কম্পিউটার। ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানালেন হলের প্রাধ্যক্ষ। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘরটিতে ঢুকতে হলে লাগবে ই-কার্ড। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চালু থাকবে এই ল্যাব। অর্থায়ন করেছে সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড। হলের ছাত্র শুভ দত্ত পড়ছেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষে। তিনি বললেন, ‘আমাদের অনেকেরই কম্পিউটার প্রোগ্রামিং কোর্স রয়েছে, কিন্তু নিজের কম্পিউটার না থাকায় খুব অসুবিধায় পড়তে হয়। ল্যাবটি চালু হওয়ায় আশা করি আমাদের এই কষ্ট কমবে।’
সংস্কৃতি ও প্রযুক্তির মেলবন্ধন
বাংলা ১৩৩২ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে এসেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ছাত্রদের অনুরোধে তাঁদের প্রকাশিত বাসন্তিকা পত্রিকার জন্য ৩ ফাল্গুন কবিগুরু লিখেছিলেন, ‘এই কথাটি মনে রেখো,/ তোমাদের এই হাসি খেলায়...’। এবার তাঁর নামে এই হলে একটি ২০ তলা অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানালেন হল প্রাধ্যক্ষ, যার নাম হবে ‘রবীন্দ্র ভবন’। বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবনটি নির্মাণের কাজ বাস্তবায়ন করবে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া সমগ্র হল তারহীন ওয়াই-ফাই ইন্টারনেটের আওতায় আনার কাজ শুরু হয়েছে, যার অর্থায়নে থাকছে ভারতীয় দূতাবাস। বর্তমানে হলের দুটি নির্দিষ্ট স্থানে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করা যায়। হলের নবনির্মিত সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের তিনতলায় একটি অত্যাধুনিক ই-লাইব্রেরি স্থাপনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
-দেব দুলাল গুহ
সূত্র: প্রজন্ম ডটকম,
প্রথম আলো।
©somewhere in net ltd.