নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ফেসবুকে যুক্ত হোনঃ www.facebook.com/dev.d.nipun (DEV DULAL GUHO)

...নিপুণ কথন...

সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।

...নিপুণ কথন... › বিস্তারিত পোস্টঃ

সম্পর্ক থাকবে, নাকি থাকবে না?

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০৮



স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি খুব স্পষ্ট। বাংলাদেশ সবার সাথে বন্ধুত্ব এবং কারো সাথে শত্রুতা নয়- এই নীতিতে বিশ্বাসী। বাংলাদেশ অন্য কোন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেনা এবং অন্য কোন দেশও বাংলাদেশের একান্তই নিজস্ব বিষয়গুলোতে অযথা নাক না গলাক -এমনটাই বাংলাদেশের কামনা। আমরা শত্রুতা নয়, বন্ধুত্বে বিশ্বাসী। যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই।


কিন্তু, আমরা শান্তি চাইলে কি হবে? গায়ে পরে কেউ ঝগড়া করতে এলে, সমুচিত জবাব দেয়াটা তখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসে লাল কালির দাগে লেখা আছে একটি দেশের নাম। এই দেশটির অংশ ছিলাম একসময় আমরা, ভাবতেই ঘৃণা হয়।


অনেকভাবেই একাত্তর-পূর্ব সময়ে ওরা দাবিয়ে রাখতে চেয়েছে আমাদের। এমনকি সংখ্যায় আমরা বেশি হলেও, আমাদের অধিকার ওরা রক্ষা করেনি, বঞ্চিত করেছে সকল ক্ষেত্রে। দমন-নিপীড়ন-শোষণ ছিলো আমাদের নিত্য সহচর। এমনকি নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করলেও আমাদের সরকার গঠন করতে দেয়নি। ২৫ মার্চ চালিয়েছে গণহত্যা। বীর বাঙালি অস্ত্র ধরে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে ঠিকই, কিন্তু ওদের হিংসা, আমাদের এগিয়ে যাওয়া দেখে ভেতরে ভেতরে জ্বলে-পুড়ে মরা এখনও কমেনি। আমরা যখন এগিয়ে যাচ্ছি, দিনকে দিন সকল ক্ষেত্রে ওদেরকে ছাড়িয়ে যাচ্ছি, তখন ওদের দেশে এখনও স্কুলের নিরীহ শিশুদের ওপর জঙ্গী হামলা হয়। আমাদের এই উন্নতি ওদের সহ্য হয়না। একাত্তরে ওদের দালালদের আমরা শাস্তি দেই -এটাও ওদের ভালো লাগেনা।


লাগবে না, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, এটা একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ট্রাইব্যুনালের বিচারের রায়ের বাস্তবায়ন। এ নিয়ে অন্য কারও কোন ধরণের উস্কানিমূলক মন্তব্য গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসার সামিল। শুধু কি তাই? বাংলাদেশে পাকিস্তানের হাইকমিশনের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এদেশে জঙ্গী মদদদানের এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টার প্রমাণ মিলেছে। সাহসী ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশ তাকে সেদেশে ফেরতও পাঠিয়েছে। পাকিস্তান অতীত ভুলে নতুন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইলে বিষয়টিকে ভালোভাবে নিতো। কিন্তু তারা উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখলো। বাংলাদেশেরও এক কর্মকর্তাকে বিনা কারণে অব্যাহতির জন্য বললো। কূটনৈতিক স্বার্থে আমরা সে দাবি মেনে নিয়ে তাঁকে অন্যত্র সরিয়ে নিলাম। কিন্তু সম্প্রতি দুই দেশের হাইকমিশনের কর্মীদের পাল্টাপাল্টি আটক ও পরে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্ক একদম তলানিতে এসে ঠেকেছে। পাকিস্তানে অনুষ্টিতব্য সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের যোগদানের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। অন্যদিকে, ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকও এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।


এখানে 'সম্পর্ক' কথাটা কোন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, তা বুঝতে হবে। দুই ধরণের সম্পর্ক হয়- ভালো অথবা খারাপ। নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, এতকিছুর পরেও কি পাকিস্তানের সাথে আমাদের সম্পর্ক না রাখলেই নয়? পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিচক্ষণ জবাব দিয়েছেন। তিনি আপাতত সম্পর্কচ্ছেদের কথা ভাবছেন না জানিয়ে তিনি যুক্তি দিয়েছেন, এমনকি যুদ্ধের সময়েও দুটি দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক টিকে থাকে। চিরপ্রতিদ্বন্দী ভারতও পাকিস্তানের সাথে ‘সম্পর্ক’ টিকিয়ে রেখেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রজ্ঞাবান ও বিচক্ষণ ব্যক্তি। কূটনৈতিক সমস্যা তিনি কূটনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করবেন বলে বিশ্বাস করি। যদিও পাকিস্তানের মতো ব্যার্থ রাষ্ট্রে দূতাবাস না থাকলেও হয়তো কিছু যায় আসে না, তবুও ‘সম্পর্ক’টা আপাতত রাখা যায়। একাত্তরের গণহত্যার জন্য ওরা আজও ক্ষমা চায়নি। একাত্তর এবং তার পূর্বের সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের যে পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি ওরা করেছে, তার কিছুই এখনো পরিশোধ করেনি। ‘সম্পর্ক’ না থাকলে এর কোনটাই আদায় করা
সম্ভব হবে না। তাই, আমি মনে করি, ‘সম্পর্ক’ অবশ্যই থাকবে। ক্ষতিপূরণ আদায় এবং ওদের ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টি নিয়ে আমরা আরও এগিয়ে যাবো। সম্ভব হলে যুদ্ধাপরাধীর মতো হানাদারদের বিচারও করা হবে, হোক সেটা প্রতীকি। তবে, ‘সম্পর্ক’ এর ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকা চাই।

-দেব দুলাল গুহ (দেবু ফরিদী)।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.