নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
দূর থেকে ভেসে আসা বৃষ্টির শোঁ শোঁ শব্দের বেগে চলছে বাস । ডানপাশে জানালা ঘেঁষে শ্রাবণ । জানালার কাঁচটা একটু পেছনে ঠেলে কনুইটা ঠেস দিয়ে বাইরে নিষ্পলক তাকিয়ে আছে সে । দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ মাঠ, ধানী জমি- দৌড়াচ্ছে পেছনে । বাতাস ছিদ্র করে এগিয়ে চলে যন্ত্রদানব । বাতাসের ক্ষিপ্রতা তার চুলগুলো অবিন্যস্ত করে দেয় । দিনের ক্লান্ত সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়েছে । প্রকৃতিতে এখন পানসে রঙের দিন ।
একটু পরেই গোধূলি লগ্ন- বিষণ্ণ বিকেলের এ মুহূর্তে শ্রাবণের প্রিয়জনের কথা মনে পড়ে । মায়ের মুখটি ভেসে ওঠে প্রথমে- “বাজান, তুই আমারে ছাড়া থাকপার পারবি, বাজান?” তারপর বাবা, ছোট বোন, ছোট ভাই- সবার কথাই মনে ভাসে । মনের জানালায় উঁকি দেয় কলির মুখাবয়ব । দুষ্টু মেয়ে, ভীষণ জ্বালাতন করেছে দুষ্টুটা । আসার পথে কতগুলো ঢেঁপের মোয়া হাতে শ্রাবণের পথ রোধ করে দাঁড়ালো । হাতের ব্যাগটার চেইন খুলে ভেতরে পুরে দিয়ে বলল- আমারে ভুইলা যাবা নাতো? চোখদুটো জলে ভরে উঠেছিল ওর । তারপর পাঞ্জার পেছন দিয়ে মুছে সরে দাঁড়াল পথ থেকে । যতদূর দেখা যায়- উদাস মনে ততদূর দেখেছিল পিছন থেকে । ওর চোখেমুখে ফুটে উঠেছিল ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ রাতের থমথমে ভাব । যে মেয়ে ইয়ার্কি-ফাজলামোতে ছিল অদ্বিতীয়- দিনরাত অভিভাবকদের উদ্বেগের কারণ হয়ে থাকতো, খেত বকাঝকা- সে কিনা এমন নিস্তব্ধ পাথর হয়ে গেল?
মেয়েটি ওর কে? কেনই বা শ্রাবণের কাছে তার এতটা সমর্পণ? কী চায় শ্রাবণের কাছে সে? একই গ্রামের মেয়ে । পড়ত একই সাথে । বন্ধু-বান্ধব, ভাই-বোন যেমন হয় তেমনি ভেবেছে তাকে শ্রাবণ । মেয়েটি কি অন্যরকম কিছু আশা করে ওর কাছ থেকে? শ্রাবণও কি এমনভাবে ভেবেছে কোনোদিন? তবে সে যে ধোয়া তুলসির পাতা, তা-ও নয় ।
ফসলি জমির দিকে তাকায় শ্রাবণ । এই শস্য-ফসল কৃষকের কত না পরিশ্রমের! অথচ বাংলার কৃষক অবহেলিত । মৌসুম শেষে বাজারে নিলে নামমাত্র মূল্য । কৃষকের গোলা শূন্য করে যখন মজুদদার মুনাফাখোরদের হাতে পড়ে তখন এই ফসল চড়া দামে কৃষককে কিনতে হয় । বাঙ্গালি জাতটা আসলে হাল ছাড়া নৌকার মতো । আর হবেই বা- না কেন? যারা কিছু জানেনা, তারাই পলিটিক্স করে । আর তাদের হাতেই যায় ক্ষমতা । পলসি মেকারও (নীতিনির্ধারক) তারা । তাদের মেকার ওই কৃষক, শ্রমিক মেহনতি মানুষ । ফিকির আর বিড়ি-চাতে যারা ভোট বিক্রি করে ।
-কি রে শ্রাবণ? কী ভাবছিস?
নয়নের কথায় মুখ ফেরায় শ্রাবণ- ভাবছি আমাদের দেশটার কথা । মনে হয় আমরা কত অসহায় । পরিচিত গণ্ডিতে থেকে যা ভাবতে পারিনি, এ মুহূর্তে অপরিচিত পরিবেশের কথা মনে পড়তেই নিজের গাঁয়ের মানুষের জন্য মনটা কেমন জানি করছে ।
-আমারও । মনে হয় ফিরে যাই । কিন্তু যখন ভাবি- প্রতিটি দিনেই মানুষ নবজন্ম লাভ করে, তখন নতুন অভিজ্ঞতার মোহে পড়ি ।
হ্যাঁ, প্রতিদিনই মানুষের পরীক্ষা । তারিখ থাকে না । নাম-ক্ষণ থাকে না । মাথার মধ্যে এবং তলপেটে একটু কেমন কেমন তো করবেই । আমরা গ্রাম ছেড়ে শহরে পড়তে যাচ্ছি । গ্রামে থাকে মোড়ল আর শহরে এলিটস্ । এলিটসরা মিথ্যেবাদী আর স্বার্থপর হয় । আর মোড়লরা তো আবহমান বাংলার নটরাজ । আমরাই শহর-গ্রামের সেতুবন্ধন । আমরাই ভার্সিটি থেকে ডিগ্রি নিয়ে চোখে আদর্শ আর দেশের জন্য কিছু করার সাথে- নিজের জন্য কিছু করার মানসিকতা নিয়ে চাকরীতে ঢুকি । দুবছর যেতে-না-যেতেই ঐ এলিটসদের খপ্পরে পড়ে গতানুগতিকতার স্রোতে গা ভাসাই । এভাবেই অথর্ব হয়ে যাচ্ছে আমাদের নতুন প্রজন্ম- অবহেলিত থাকছে আমাদের গ্রাম, আমাদের কৃষক ।
এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার । ঐসব চমৎকার বদমাশের পিঠ চাপড়ানো হাসিতে না ভুলে, স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা আজ দেশবাসীকে বোঝানো দরকার । গর্তে, ডোবা, নালা-নর্দমায় পড়ে হাবুডুবু খাওয়া মানুষগুলোকে ভাসিয়ে দিতে হবে । যাতে তারা একাত্তরের মতো আবার পুকুরের সাথে- নদীর সাথে মিশে, ভাসিয়ে দিতে পারে দেশ ।
-ভেসে যাওয়া পুকুরও একদিন গর্তে ফিরে যায় । আমাদের সমস্যাটা কী জানিস? আমাদের দেশের সবচেয়ে গরিবঘরের ছেলেরাই অবস্থার পরিবর্তন হলে সবচেয়ে বেশি ক্রূর, দুর্মর এবং নিষ্ঠুর বুর্জোয়া চরিত্রের হয় । নব্য এলিটসদের দেখছিস না? একাত্তরের আগে যাদের পিঠের নিচে ছারপোকাপোষা ভোটা কাঁথা থাকতো, এখন গুলশান-বনানীর মালিক তো তারাই!
(চলবে)
উপন্যাসঃ নির্জনতার সমুদ্রে অবগাহন
লেখকঃ কবি বাবু ফরিদী
২| ২৬ শে মে, ২০১৬ রাত ১:০৯
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: [প্রথম ১০ পর্ব পড়ার পর]
বেশি ছোট ছোট করে পর্ব হয়ে যাচ্ছে। আপনি হয়তো পোস্ট করার সুবিধার্থে এভাবে করছেন, কিন্তু তাতে প্রভাব পড়ছে সম্পূর্ণ উপন্যাসে।
উপন্যাসে এপিসোডিক গ্যাপ আসবে ফ্লো অনুসারে, কিন্তু যতটা বেশি গ্যাপ, ততটা কঠিন পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখা। আরেকটু গুছিয়ে আনুন, সংলাপে একঘেয়েমি চলে আসছে, সেটা দেখুন পরিবর্তন করা যায় কিনা। বর্ণনার ধরণ ভাল লেগেছে আমার। শব্দচয়ন ভাল।
আর পর্বগুলো লিঙ্ক দিয়ে ইন্টারকানেক্টেড করে দিন। খুঁজে পেতে সুবিধে হবে পাঠকের।
২৬ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:০৮
...নিপুণ কথন... বলেছেন: প্রথম কথা, উপন্যাসটি আমার না। এটা আমার বাবার লেখা এবং আজ থেকে ১১ বছর আগে বই আকারে প্রকাশিত। এখন আর পরিবর্তন করা ঠিক হবে না, কারন তিনি বেঁচে নেই। লিংকের ব্যাপারে যা বলেছেন, তা ভালো। তবে সময় এবং সুযোগের অভাবে হয়ে উঠছে না নিয়মিত গুছিয়ে দেয়া। তবে আমি চেষ্টা করছি। আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
৩| ২৯ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১১
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ওঃ, তাহলে আমার কথায় কান দেবার দরকার নেই আপনার বাবার জন্যে শ্রদ্ধা রইল অনেক অনেক।
০৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:০৯
...নিপুণ কথন... বলেছেন: পড়বেন আশা করি।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:০৯
শরনার্থী বলেছেন: আপডেটঃ
জার্মান প্রবাসে- 1305
অগ্নি সারথির ব্লগ- 217
ইস্টিশন ব্লগ- 147
প্রবীর বিধানের ব্লগ- 57
ইতুর ব্লগ- 23
অসম ব্যবধান শুরু হয়েছে মোটামুটি। প্রাতিষ্ঠানিক ব্লগের সাথে লড়াই করে যাওয়াটা বেশ দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে দিনের পর দিন। আবারো আপনাদের ভোট দেবার অনুরোধ করছি। প্লিজ আপনারা ভোট দিন।
ভোট দিতে যা করতে হবেঃ
প্রথমে https://thebobs.com/bengali/ এই ঠিকানায় যেতে হবে। এরপর আপনার ফেসবুক আইডি দিয়ে লগইন করুন। লগইন হয়ে গেলে বাছাই করুন অংশে ক্লিক করুন। ক্লিক করে ইউজার অ্যাওয়ার্ড বাংলা সিলেক্ট করুন। এরপর মনোনীতদের একজনকে বেছে নিন অংশে ক্লিক করে, অগ্নি সারথির ব্লগ সিলেক্ট করুন। এরপর ভোট দিন বাটনে ক্লিক করে কনফার্মেশন পেয়ে গেলেই আপনি সফল ভাবে আমাকে ভোট প্রদান করে ফেলেছেন। এভাবে ২৪ ঘন্টা পরপর মে ২, ২০১৬ পর্যন্ত ভোট দেয়া যাবে।