নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
(১১)
স্টুডিও থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নামলো ওরা। রিকশা ডেকে তাতে উঠে বসলো দুজন। হুড তুলে দিলো রিকশাওয়ালা। শ্রাবণ ওর হাত ঐশীর পেছন দিকে দিয়ে জায়গাসল্পতার কারণে যে চাপাচাপিটা হচ্ছিলো এতক্ষণ, তা একটু কমাতে চাইলো। কিন্তু তাতে কাজ হলো না। ঐশী উল্টো ওর বুকের সাথে মিশে গেলো।
রিকশা সামনের দিকে চললো।
ঐশী বললো- আজ বহুরূপীর নাটক আছে। দেখবো।
-কোনটা? লাল শাড়ি?
-হ্যাঁ, ওটাই। ওরা পশ্চিমবঙ্গ যাচ্ছে, শো করতে।
-আজ বিশেষ শো। সব ক’জন শিল্পীই মেয়ে। সম্ভবত দেশে এই প্রথম!
-না, আমি যাবো না। ফিরতে রাত হবে। খালা বকবেন।
-খালাকে আমি ম্যানেজ করবো।
-তা হয় না। খালা অন্য কিছু ভাববেন। তাছাড়া বহুরূপীর ছেলেরা আমার চেনা-জানা। ওরা তোমাকে-আমাকে এভাবে দেখলে ইয়ার্কি-ফাজলামি করতে পারে।
-করুক। আপনি নাহয় বলবেন- আমি আপনার ‘ইয়ে’! দেখবেন ওরা হা-পিত্যেশ করবে। খুব মজা হবে।
-অত ছেলেমি আমার দ্বারা হবে না।
-ওরে আমার বুড়ো রে! কেবল ভার্সিটিতে পড়ে, তাতেই এই! বয়স সত্যি সত্যি বাড়লে যে কী করবেন!
অগত্যা রাজি হয় শ্রাবণ। কিছুদূর যেতেই রাস্তার পাশে রিকশার অপেক্ষায় ঐশীর বান্ধবী জয়াকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রিকশাওয়ালাকে থামতে বলে ঐশী।
রিকশা থেমে যায়। ভেতরে বসেই ঐশী জয়ার উদ্দেশে প্রশ্ন ছোড়ে- কি রে জয়া, কোথাও যাচ্ছিস?
-হ্যাঁ, রে। নাটক দেখতে যাচ্ছিলাম। রিকশা পাচ্ছি না। যেটাও পাই, বলে ওদিকে যাবে না।
-বহুরূপীর নাটক বুঝি?
-হ্যাঁ।
-তবে আর চিন্তা কী, আমাদের সাথে চল।
রিকশা থেকে নেমে পড়ে ঐশী। হুডটা রিকশাওয়ালাকে ভেঙ্গে দিতে বলে। রিকশাওয়ালা প্যাডেল থেকে নেমে তাই করে। ঐশী শ্রাবণকে সিটের ওপর বসতে অনুরোধ করে। শ্রাবণ তাই করে। ঐশী শ্রাবণের দুই থোড়ার চাপে সিটের উপর বসে জয়াকে পাশের সিটে বসতে বলে। জয়া ওর সিট করে নেয়।
রিকশাওয়ালা আপন মনে রিকশা চালায়। এদিকে শ্রাবণ খুব অস্বস্তিবোধ করে। এমনিতেই এবড়ো-থেবড়ো রাস্তার ঝাঁকুনি। হেলেদুলে এগুচ্ছে রিকশা। তার উপর ঐশীর মতো একজন স্মার্ট সুন্দরী টিন-এজার ওর রানের চিপার মধ্যে। শ্রাবণ নিজেকে ঐশীর শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন রাখবার প্রাণান্ত চেষ্টা করছে। কিন্তু রিকশার ঝাঁকুনি সামলাতে ঐশী বারবার শ্রাবণের শরীরে সিঁধে যাচ্ছে। শত চেষ্টাতেও শ্রাবণের আর পেছানো সম্ভব হয় না। ঐশী ডানহাতে শ্রাবণের হাঁটু চেপে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে।
শ্রাবণের শরীর অসাড় হয়ে পড়ে। ঐশীর শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হবার সব চেষ্টা ওর পৌরুষের কাছে হার মানে। স্বাভাবিক হয়ে থাকে ও। যৌবনের জয় হয়। প্রকৃতি ও বাস্তবতায় ওদের বিবেকবুদ্ধি রহিত হয়। এক ধরণের ভালোলাগার আমেজে ওরা সামনের দিকে এগোয়।
(চলবে)
উপন্যাসঃ নির্জনতার সমুদ্রে অবগাহন,
লেখকঃ বাবু ফরিদী।
©somewhere in net ltd.