নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়ন দলের পিচ্চি পিচ্চি মেয়েগুলো আমাদের এমন গৌরব এনে দিয়েছে, যা পারেনি আমাদের উন্নত সুবিধা পাওয়া ছেলেদের জাতীয় দল। প্রতিটি দলকেই আমাদের মেয়েরা গোলের বন্যায় ভাসিয়েছে। কই আমরা তাদেরকে কাছে ডেকে একটু আদর দেবো, উৎসাহ দেবো, নতুন বুট-ফুটবল অন্যান্য সুবিধাদি দেবো, তা না, গুণী মেয়েদেরকে বাসায় ফিরতে হলো লোকাল বাসে! শুধু কি তাই, বাসের ভেতর ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হলো তাদের। কলসিন্দুরের এক শিক্ষক এই দলের এক মেয়ের বাবাকে অপদস্ত করে বরখাস্ত হলেন!
.
কথায় আছে-- 'যেই দেশে গুণীর কদর নেই, সে দেশে গুণীর জন্ম হয় না'। গেলো রিও অলিম্পিকে ভারতের কোন স্বর্ণ নেই। সবেধন নীলামণি মেডেলজয়ীদের কী পরিমাণ আর্থিক এবং সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে ফেরার পর, তা আর না বলি। ক্রিকেট লিজেন্ড শচীন টেন্ডুলকার নিজে তাদের এবং তাদের প্রশিক্ষকদের দামি বিএমডব্লিউ গাড়ি দিয়ে উৎসাহিত করেছেন। আর আমরা কী করলাম? রিওতে পদক জেতার সাথে এই প্রাপ্তির পার্থক্য আছে মানলাম, তবুও একবার মিলিয়ে দেখেন। একটু আগে বিসিবি সভাপতি পাপন ভাই ঘোষণা দিয়েছেন, ঈদের পর এই মেয়েদেরকে সংবর্ধনা দেয়া হবে, প্রত্যেকে পাবে ১ লাখ করে টাকা। এই গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মেয়েগুলো এমন কাজ করে দেখিয়েছে, যা অন্য অনেক দেশের উচ্চ সুবিধাপ্রাপ্ত মেয়েরা পারেনি। টাকা সবারই দরকার, কিন্তু তার চেয়েও বেশি দরকার উপযুক্ত সম্মান। সম্মান নিয়ে মলিন পোষাকেও ভালো থাকা যায়। এই মূল্যায়ন কেনো আরেকটু আগে করা গেলো না? কেনো সেই ইভটিজারদের ধরা গেলো না?
.
এই মেয়েগুলোর দোষটা কী? মানুষের বাড়িতে কাজ না করে, অল্প বয়সে বিয়ে করে বোঝা না হয়ে এরা খেলার প্রতি ভালোবাসা থেকে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে চেয়েছে, হাফপ্যান্ট পড়ে ফুটবল খেলেছে, এটাই দোষ?
.
পোষাকের বিষয়ে আজই সিদ্ধান্তে আসুন। প্রগতিশীল সেক্যুলার সরকার যদি আপনি হন, তবে সেই পথে চলতে যারা বাধা দেয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। নইলে অলিম্পিকে অনেক ইভেন্টে মেয়েরা অংশই নিতে পারবে না, পদক জয় 'দূর কী বাত'। কৃষ্ণা রানি সরকার যোগ্য গুণী মেয়ে বলেই তাকে এই দলের অধিনায়ক করা হয়েছে। শুধুমাত্র ধর্মের জন্য এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধের মানুষদেরকেও চিনে রাখা জরুরি। এরা দেশকে পিছিয়ে দিতে চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধুলিস্যাৎ করতে চায়।
.
আগেও বলেছি, আবারও বলি। এই পিচ্চি মেয়েগুলোর মাঝে দেশকে দেবার মতো অনেক কিছু আছে। এদের দায়িত্ব নিতে হবে সরকারেকেই, এখনই। ছোট থেকেই নার্সার করে গড়ে তুলতে হবে ভবিষ্যতের জন্য। এই মেয়েরা আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার। এরাই গড়বে স্বপ্নের সোনার বাংলা। সরকারের ওপর আস্থা রাখছি, অপেক্ষায় থাকছি সুদিনের।
-দেব দুলাল গুহ
©somewhere in net ltd.