নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
(১)
কেউ একজন ভাবতো, তার বউটাই দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী। এই ভেবে সে খুব আত্মতৃপ্তিতে ভুগতো, আনন্দ পেতো, গর্বে বুকটা ভরে যেতো। বউ নিয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে সবাই তার বউয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতো। তখন সে নিজেই নিজেকে সাবাসী দিতো। সে বউ একটা পেয়েছে, রূপে গুণে এই এলাকার সেরা।
.
বউ তার নিয়মিত অন্য দেশের ও এলাকার মেয়েদের রূপচর্চা টিভিতে দেখে ও পত্রিকায় পড়ে, সেইমতে সেজেগুজে ঘুরতে বের হয়। এই গোপন কথাটি সবার অজানা।
.
একদিন সেই এলাকায় দূরের এলাকা থেকে নতুন এক পরিবার এলো। সেই পরিবারের বউ তার বউয়ের চেয়েও অনেক গুণ বেশি সুন্দরী। তাই রাস্তায় বের হলে এখন আর কেউ তার বউয়ের দিকে আগের মতো তাকিয়ে থাকে না। বন্ধু-বান্ধব আর বলে না 'তুই অনেক ভাগ্যবান রে!' সবাই তাকিয়ে থাকে নতুন আগত সেই বউটির দিকে। লোকটি লক্ষ্য করে, এই মেয়েটিকে টিভিতে দেখেই তার অনুকরণে এতোদিন সেজে মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে তার বউ। কিন্তু এবার সেই মেয়েটি স্বয়ং এখানে এসে হাজির, তাই বুঝতে পেরে কেউ আর এখন ওর বউকে দাম দেয় না। লোকমুখে পরের বউয়ের প্রশংসা শুনে গা জ্বলে যায় তার। বউয়েরও একই দশা, হিংসায় গা পুড়ে যায়।
.
অনেক চেষ্টা করেও আর আগের মতো কদর না পেয়ে ক্ষমতার জোরে তখন সেই লোকটা তার সাঙ্গপাঙ্গো নিয়ে আন্দোলনের ডাক দিলো। আন্দোলনের প্রথম দাবি, এই এলাকায় অন্য এলাকার সুন্দরী বউ নিয়ে এসে কেউ বসতি স্থাপন করতে পারবে না। এমনকি ঘুরতেও আসা চলবে না।
.
আমাদের কিছু নির্মাতার অবস্থা হয়েছে সেরকম।
(২)
'মে সুপার গার্ল ফ্রম চায়না' আর 'আমি ডানাকাটা পরী' গানদুটোর মধ্যে যদি কোনো সচেতন দর্শক অজান্তেই কোনো মিল খুঁজে পান এবং তারপর যদি দেখেন দুটোর নির্মাণে রয়েছে অনেকটাই পার্থক্য, তখন স্বভাবতই নিরপেক্ষ মন থেকে যেটা বেশি ভালো লাগবে সেটাই দেখতে চাইবেন। 'ডানাকাটা পরী' আপনি তাকে জোর করে গেলাতে পারলেন না বলে অভিমান করে দাবি করে বসলেন 'বিদেশী চ্যানেল বন্ধ করে দাও', হলো কথাটা?
অনুকরণ করাটাও একটা আর্ট। অনেক সময় মূলটির চেয়েও নকলটি বেশি ভালো হয়ে যায়। সারা বিশ্বেই কমবেশি নকল চলছে। হলিউড থেকে হরদম নকল হচ্ছে। বলিউডের তো অনেক হিট ছবিই তামিল ছবির রিমেক। আবার ইন্টারনেটেও হিন্দী ডাবিং করা বা সাবটাইটেল দিয়ে তামিল ছবি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। আবার বলিউড বা তামিল ছবি থেকে অনুকরণ করে কলকাতায় বানানো হচ্ছে ছবি, অবশ্যই অনুমতি নিয়ে। রিমেক করা ছবিটিও কিন্তু দারুণ ব্যবসাসফল হচ্ছে। নতুন কিছু সৃষ্টি করতে না পারলে, রিমেক বা নকল করতে হলে আপনিও এমনটাই করুন।
বিশ্বায়নের এই যুগে দরজা বন্ধ করে আপনি ঘরে অক্সিজেনের প্রবাহ থামাতে পারবেন না। আজকের হলিউড বলিউড টালিউড একদিনে আজকের জায়গায় আসেনি। শুরুতে তাদেরও নির্মাণের অর্থ সুযোগ-সুবিধার ঘাটতি ছিল। সেখান থেকে তারা এই জায়গায় আসতে পারলে আমরা কেন নয়? টাকা আর মামা-চাচা ভাই পরিচয়ের বাইরে প্রকৃত মেধাবিদের এবং যোগ্যদের মূল্যায়ন জরুরি। সেটা করতে পারলে আমরাও পারবো। সত্যজিৎ রায় তারেক মাসুদ পেরেছেন, সুভাষ দত্ত পেরেছেন, ইচ্ছা থাকলে সম্ভব। কিন্তু তাই বলে শুধু ভাত খেয়েঈ থাকতে হবে, চাইনিজ খাওয়া যাবে না-- এমন দাবি তোলাটা ভালো দেখায় না। আপনি নতুন ভালো কোনো রেসিপি বানান, জনগণ অবশ্যই গোগ্রাসে গিলবে।
-দেব দুলাল গুহ (দেবু ফরিদী)
(একান্তই ব্যাক্তিগত মতামত, কোনো প্রতিষ্ঠানের নয়)
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০০
...নিপুণ কথন... বলেছেন: আমি এতোটা হতাশ নই। তরুণ প্রজন্ম এখনও হলে গিয়ে 'আয়নাবাজি'র মতো ভালো ছবি পেলে দলবেঁধে দেখে।
২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯
অপ্সরা বলেছেন: আমি ভেবেছিলাম এখানেও আমার মত কোনো রেসিপি দেওয়া হয়েছে তারপর দেখি সিনেমা নিয়ে আলোচনা।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৫৮
...নিপুণ কথন... বলেছেন: শুধু রেসিপি বানিয়ে ব্লগে পোস্ট দিলেই হবে, দাওয়াত দিয়ে খাওয়াতে হবে না?
৩| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৯
এই আমি রবীন বলেছেন: @অপ্সরা
আমিও তাই, বিরাট ধরা খাইয়া গেলাম।
৪| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৮
অপ্সরা বলেছেন: জানতাম রবীনভাইয়া তুমি রেসিপির গন্ধ পেলেই ছুটো!!!!!!!!!!
৫| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০২
এই আমি রবীন বলেছেন: রবীনভাইয়ার নামে অপবাদ,
মানি না, মানব না।
৬| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৩
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: একমত।
৭| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:১৩
এই আমি রবীন বলেছেন: আমি হতাশার কথা বলিনাই, বাস্তবতার কথা বললাম।
একটা "থার্ড পার্সন সিঙ্গুলার নামবার", "টেলিভিশন", "আয়নাবাজি" কয়বছর পর পর হয়? হল মালিকরা বাকী সময় কি করবে ?
আর দায়িত্বের পতাকাটা তরুন প্রজন্মকে দিয়ে বাকিরা সরে পড়লে হবে ?
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১১
এই আমি রবীন বলেছেন: আমাদের দেশে তরুণ-জোয়ানদের ও সিনেমা দেখা দেখা ভাল চোখে দেখে না, সে ভাল ছবি হলেও হোক ।
বিদেশে অনেকে নাতি পতি নিয়ে ছবি দেখতে গেলে বা নিদেন পক্ষে বুড়া বুড়ী ছবি দেখতে গেলে কেউ আর চোখে তাকাবে না। ভাববে এই তাদের অবসর কাটানোর একটা মাধ্যম।
কিন্তু আমাদের দেশে বুড়া বুড়ী ছবি দেখতে গেলে ভাবুন কি অবস্থায় পড়বে।
আড় চোখে তো তাকাবেই ভাব করবে (সামনে পিছনে মন্তব্যও করতে পারে ) এই মাত্র যেন ঐ বুড়া-বুড়ী জাহান্নামের টিকেট কনফার্ম করে আসল।
৮০-৯০ দশকে সিনেমা করা হারাম, অভিনয় করা হারাম এই ওয়াজের সাথে সাথে হুজুরেরা নায়ক-নায়িকার নাম ধরে জাহান্নামে আগুনে পোড়ানোর এমন বর্ননা দিত শ্রোতারা ওদের আগুনে পোড়ানোর দৃশ্য নিজ চোখেই দেখতে যেন, স্লোমোশানে ।
পাকিস্থানেও চির দুশমন ভারতের ছবি যাচাই বাছাই করে ছাড় পত্র দেয়, ওদের হলে চলতো এই সেদিন পর্যন্ত । কিন্তু আমাদের দেশে দেশীয় শিল্প রক্ষার নামে ভারতীয় ছবি বন্ধ হয়েছে সেই কবে। কয়টা হল এর পর নতুন খুলল, কয় শত হল এর পরে বন্ধ হল?
সিনেমা বানাতে বিশাল অর্থের দরকার। লাভ দুরে থাক, সেগুলু রিকভার হবে কিভাবে যদি সিনেমা হলই না থাকে ?