নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
ফরিদপুরের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়কে কি আমরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করি নাই? আমরা কি তাঁর পর? কবি বাবু ফরিদী কি তাঁর শত্রু ছিলেন? তাঁর বিধবা স্ত্রী যে গত ১০ বছর ধরে কী অমানসিক যন্ত্রণায় আর অত্যাচারের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, তা কি তিনি জানেন? তার বাড়িঘর যে দখল করার চক্রান্ত চলছে, কিছুটা হয়েছেও, তাঁর একমাত্র সন্তান দেবুকে যে মেরে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে, সেটা কি তিনি জানেন? তাঁর কানে কি কেউ এসব কথা দেয়? বাবু ফরিদীর পরিবারকে কেন মন্ত্রী মহোদয়কে একবার সালাম জানাতেও দেওয়া হয় না?
.
বাবা মারা গেছে ২০০৮ সালে। তার পরের বছর থেকেই ক্ষমতায় মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়। তিনি এমপি ও মন্ত্রী হওয়ার পর ফরিদপুরের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এই কথা সবাই একবাক্যে স্বীকার করে। প্রথম কয়েক বছর মন্ত্রী মহোদয়ের নাম করে একটি নাম্বার থেকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে এসএমএস আসতো। ভাবতাম, পড়ালেখাটা শেষ করে তাঁর কাছে যাবো একদিন। খুব কষ্ট করে পড়ালেখা করেছি খেয়ে না খেয়ে, ছাত্র রাজনীতি করেছি, টিউশন করেছি, আবার ফরিদপুরে মায়ের খেয়ালও রেখেছি। এরই মধ্যে আমার বসতবাড়ির জায়গাটুকু বেদখল হতে লাগলো আমার অনুপস্থিতিতে। মা বাধা দিলেও শোনেনি, কাঁদলেও কেউ এগিয়ে এসে ওদের থামায়নি। আমাদেরকে ওখান থেকে ওঠানোর জন্য নানাভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হয়েছে। ১৮ বছর শ্রীঅঙ্গনের দাতব্য চিকিৎসালয়ে মাত্র ৫০০ টাকা মাসিক বেতনে ডাক্তারি করার পর আমার মা ডা. কৃষ্ণা মিত্রর চেম্বার ভেঙে ফেলা হয়েছে, ওষুধের আলমারি খুলে ভেঙে ওষুধ লুট হয়েছে। নানাভাবে অপমান করা হয়েছে। মা আমার আমাকে কিছুই বলেনি আগে, সব নিরবে সহ্য করেছে।
.
ছাত্রাবস্থায় মিন্টো রোডের কলতানে গিয়েছি। সত্যজিতদাকে বলতাম, মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে একটু পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি বলতেন চাকরির ভাইভার আগে এসো, এখন দেখা করে লাভ নাই। এরপর ছাত্রাবস্থাতেই সাংবাদিকতায় ঢুকি, লেখালেখি করি। কিন্তু কোনোদিন পত্রিকায় মন্ত্রী মহোদয় সম্পর্কে বাজে কথা লিখিনি । স্থানীয় নিউজ করা স্থানীয় জেলা প্রতিনিধির কাজ। তবুও একটা স্বার্থান্বেষী মহল আমার সম্পর্কে তাঁদের কাছে ভুল তথ্য দিয়েছে। ছাত্রাবস্থায় এরপর ঢাবি থেকে ফিজিক্সে প্রথম শ্রেণিতে অনার্স মাস্টার্স করার পর প্রথম বিসিএসেই শিক্ষা ক্যাডারে জয়েন করি। ভাইভার আগেও মন্ত্রী মহোদয় সম্পর্কে ভুল ধারণা দিয়ে ভয় দেখিয়ে আমাকে বলা হয়, 'গেলে হীতে বিপরীতও হতে পারে'। এরপর সুপারিশ ছাড়াই চাকরি হয়, পোস্টিং হয় ফরিদপুরে। প্রশাসনের সমর্থনে নকলমুক্ত পরীক্ষার হল গঠনে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করি। আরও অনেক শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করি, কিন্তু বাবু ফরিদী মারা যাওয়ার পরেও তাঁর ছেলের এভাবে কঠোর পরিশ্রম করে উঠে আসাটা অনেকের পছন্দ হলো না, হিংসায় তারা খুঁত বের করতে চেষ্টা করলেন। কিছু না পেয়ে শেষে নানাভাবে বড় বড় জায়গায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে রটিয়ে দিলেন, কেউ নাকি দেবুকে দেখতে পারে না!
.
দেবুকে নাকি ডিমোশন দিয়ে একটা স্কুলে পাঠানো হয়েছে! এমন আরও অনেক মিথ্যা রটনা রটানো হয় সারা শহরে, ভয় দেখানো হয়, যার ফলে সবাই দেবুদের এড়িয়ে যাওয়া শুরু করে। অসুস্থ মাকে রেখে দেবুকে ১০০ কিলো দূরে পাঠানো হয়, চেষ্টা ছিলো আরও বড় ক্ষতি করার। এরপর প্রথমে ৬ মাস আর পরে ৩ মাসের পয়সা আটকে দেওয়া হয়। এসব সহ্য করেও দুটি প্রাণী বাঁচার চেষ্টা করছে অনেকটাই একঘরে হয়ে। কিন্তু এই কথাগুলো লিখে জানালেও দোষ! নিষেধাজ্ঞা আসে বারবার! দেবু গেলো তিনদিন সচিবালয়ে ও কলতানে, কিন্তু তাকে একবার মন্ত্রী মহোদয়কে সালাম জানাতেও দেওয়া হলো না!
.
আজ জন্মাষ্টমী ছিলো। শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গনে বড় করে অনুষ্ঠান হয়েছে, ঢাকায় বসে শুনেছি। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের আর্থিক ও সার্বিক সমর্থন না পেলে যা সম্ভব হতো না। কিন্তু মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে যাতে আমার মা যেতে না পারে সেজন্য চালা হলো বিশাল এক কটূচাল! এলাকায় সব বাসায় গিয়ে স্থানীয় সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর মন্ত্রী প্রোগ্রামে থাকতে বললেও বাবু ফরিদীর ঘরে বলেননি। বাবু ফরিদী(অ্যাডভোকেট কমল কৃষ্ণ গুহ) এর বিধবা স্ত্রী লাল শাড়ি পরতে পারবেন না জেনেই মন্ত্রী মহোদয়কে যারা ফুলের শুভেচ্ছা জানাবেন, তাদের লাল শাড়ি পরানো হয়। আমার মা সেখানে দাঁড়ালে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়, কারণ তিনি বিধবা, লাল শাড়ি পরতে পারবেন না। তবুও মা মন্ত্রী মহোদয়কে সালাম জানাতে সক্ষম হন। মন্ত্রী মহোদয় সালামের জবাব দিয়ে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থেকে চিনতে পেরে ইশারায় মাকে উপরে ডাকেন। কিন্তু মা মঞ্চে উঠতে গেলে, সুকেশ সাহা, অ্যাডভোকেট অনিমেষ রায়সহ আরও একজন তাঁকে উঠতে দেননি।
.
বিষয়টা আমি জানলাম একটু আগে। কারণ সারাদিনই আজ আমার ব্যস্ত শিডিউল ছিলো। মায়ের মনটা খুব খারাপ, বলার অপেক্ষা রাখে না। সুকেশ সাহার সঙ্গে আমি কথা বলি না সঙ্গত কারণে। অনিমেষ কাকাকে ফোন দিলে তিনি বললেন, আজ নাকি মন্ত্রী মহোদয় খুব রেগে ছিলেন। তাই মা গেলে তিনি রেগে গিয়ে কিছু বলে বসলে বিব্রতকর অবস্থা হতো বলেই নাকি উঠতে দেননি!
.
কী দারুণ! আমার মা ডিএইচএমএস ডাক্তার এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষক। তিনি পৌরসভার ওয়ার্ড কমিটিতে ছিলেন। তিনি গোয়ালচামট শান্তি শৃংখলা উন্নয়ন সংস্থার মহিলা সম্পাদিকা। তিনি জান্দি মিত্রবাড়ির মেয়ে। তিনি দেব দুলাল গুহর মা। তার চেয়ে বড় পরিচয় তিনি বাবু ফরিদীর সহধর্মীনী। তাঁর কি যোগ্যতা নেই মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে দেখা করে কথা বলার? স্থানীয় এমপির কাছে নিজের কষ্টের কথা বলার অধিকার বা দাবি কি তাঁর নেই?
.
(এই লেখাটার পর যদি আমার বা আমার মায়ের কোনো ক্ষতি হয়, তাহলে তার দায় সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর।)
২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৫১
রাফা বলেছেন: আশা করি আপনার মায়ের কোন ক্ষতি হবেনা।ফরিদপুরের মন্ত্রী হয়তো নিজেকে মহামন্ত্রী মনে করেন নিজেকে।তাই কারো কথা শুনার সময় তার নাই।
৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২৫
আশাবাদী অধম বলেছেন: পৃথিবীটা এমনই। সবলরা দুর্বলদের ওপর নির্যাতন চালায়। অনেক সময় প্রতিবাদে হিতে বিপরীত হয়। আপনার দুঃখে সমব্যাথী হলাম।