নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ফেসবুকে যুক্ত হোনঃ www.facebook.com/dev.d.nipun

...নিপুণ কথন...

সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।

...নিপুণ কথন... › বিস্তারিত পোস্টঃ

উপন্যাসঃ ভালোবাসা শুধু যে কাঁদায় / বাবু ফরিদী

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৬

আমার ছোটছেলে নিপুণের জন্মদিন আজ।
.
আজ একুশে এপ্রিল। জন্মদিনের উৎসবে বিরাটির ফরিদপুর পল্লীবাসী প্রায় সকলেই এসেছিল। সবাই উৎসব করছিলো, অথচ তারা জানতো না ঐ মুহূর্তেই, ঠিক ঐ মুহূর্তেই যখন ও ঘরে ক্যাসেটে গান হচ্ছিলো, গল্প-গুজব, হাসি-আনন্দে ভরপুর ছিল সমগ্র পরিবেশ-- তখন আমি এখান থেকে চলে গিয়েছিলাম বাংলাদেশে। সময়ের প্রবাহ, একুশে এপ্রিল একাত্তর এবং তৎপরবর্তী ঘটনা আমার মনের ভেতর উত্তাল, আমাকে তা নাড়াচ্ছিল, নাড়াচ্ছিল একাত্তরে-- বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের দিনগুলোয়।
.
এখন মধ্যরাত, হয়তো বারোটার কিছু বেশি-- আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছি, আর ভাবছি কমলের কথা। কমলের শখ ছিল বৃষ্টিতে ভেজা। আমি ভিজছি আর ভাবছি, বৃষ্টিতে ভিজলে কমলের কেমন লাগত। কমলের এ শখ শুনে মেয়েরা হাসত, বলত এটা তো মেয়েলি শখ!
.
এখান থেকে সম্পূর্ণ আকাশটাই দেখা যায়। সপ্তর্ষিমন্ডল প্রশ্নবোধক চিহ্নের মতো আমার মুখোমুখি। আমার মনের প্রশ্নগুলো একত্রে জড়ো হয়ে হয়তো একটা বড় প্রশ্ন হয়ে আকাশে ঝুলছে। এখন আমাকে উত্তর দিতে হবে আকাশের উদারতা নিয়ে-- যে প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আমি কখনও ভাবিনি। বলা যায় ভাববার কোনো অবকাশ পাইনি।
.
আমার জীবনটা কেন এমন হয়ে গেল? আমার তো সবই আছে, সবই ছিল-- তবে আবার এই সাঁইত্রিশ বছরের জীবনে কেন এতসব প্রশ্ন-উত্তর পর্বের অবতারণা? না তো, এ তো প্রশ্ন-উত্তর পর্ব নয়, এ যেন নিজের কাছে নিজের কৈফিয়ত! শত আনন্দের মাঝেও সামান্য কষ্ট খুঁজতে অতীতকে হাতড়ে ফেরা।
.
আকাশের তারাগুলি উজ্জ্বল। কত প্রেমিক-প্রেমিকার কত আনন্দঘন মুহূর্তের সাক্ষী ওরা। ওদের কোনো বর্ডার নেই, ওরা পাসপোর্টের ধার ধারে না। সব দেশেই ওদের পদচারণা, ওদেএ কাছে সবাই সমান-- কি ডায়না কি চায়না, কি রাজরানী কি ঘুঁটেকুড়ানী। আমার মন ঐ আকাশটা টানছে-- যেখানে গেলে দেখা যাবে জয় বাংলা, দেখা যাবে কমলকে।
.
শোবার ঘরে আমার ভারতমাতার বয়েসী স্বামী নাক ডাকছেন। কী নিঃসংশয় আমার সম্বন্ধে, আমাকে উনি জানতেও চাননি কোনোদিন, অথচ আমার উপর কী নির্ভরতা তার! কিন্তু উনিই যে আমার সব নয় একথা উনি নিজেও জানেন, তবু তাতে ওর কোনো ক্ষোভ নেই। নিজের বয়েসী অক্ষমতার পাশাপাশি আমার সামান্য দুর্বলতা আমাদের কম্প্রোমাইজড প্রোপার্টির রক্তে এতদিনে মিশে গেছে। এখন আমাদের কারো ওপরই আর কোনো অভিযোগ নেই। দুজনেই সুখী। আমরা একজন আজ অন্যজনের জন্য। তবু কাল থেকে অন্য কোনো সুখানুভূতি আমার জীবনকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। কী দারুণ অনুভব, আমার সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যমলা জীবনে তালমিশ্রীর আঁচলের মতো বিছিয়ে গেল-- যার নিচে ঢাকা পড়েছে আমার বিবাহিত জীবনের বাইশটি বছর এবং বিশ্বস্ত ভালোবাসারা।
.
আমার বড়মেয়ে দেবিকা, পাশের ঘরে যে অঘোরে ঘুমাচ্ছে তার দশ মাসের পুত্র অয়নকে নিয়ে-- কাল সকালে সে যখন আমার কাছে আসবে, তখন তার জন্য তার সন্তানের জন্য, আমার স্বামীর জন্য, পুত্র নিপুণের জন্য থাকবে আমার নানাবিধ কর্তব্যকর্ম, থাকবে সজীব সবুজ কোমল স্পর্শকাতরতা। তবু এর ওপর গরম ভ্যাপসা বাতাস বইছে কেন, আমাকে অস্থির করে তুলছে কেন? না না, এ শুধু ভ্যাপসা গরমই নয়; তারপরেই এক পশলা বৃষ্টি, সে তো শান্তির বারিধারা! হিমেল হাওয়ার পূর্বাভাস। এও তো মূল্যহীন নয়! আমি জানি আমার সুখানুভূতিগুলো আমাকে জ্বালাবে, পোড়াবে। তবু আমি শেষ হব না, আমি খাঁটি সোনার মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠব পুনর্বার।

[চলবে]

'ভালোবাসা শুধু যে কাঁদায়'
কবি বাবু ফরিদী

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
পড়ছি।
দেখি কেমন বুঝতে পারি।

২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: চলুক।

৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৪

মোঃ ফখরুল ইসলাম ফখরুল বলেছেন: কাঁদায় |-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.