নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদের পাঁচদিন বয়সী কন্যা মাসুমা বাবার লাশ বুঝে নিতে মর্গে এসেছে। তার বাবার অপরাধ, সে নাকি ছাত্র-জনতার 'গণআন্দোলনের বিরুদ্ধে' অবস্থান নিয়েছিলো, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা হয়ে সে তার শেখ হাসিনা আপার ডাকে সাড়া না দিয়ে ঘরে বসে থাকতে পারে নাই। আপা-ভাইয়েরা পালায়ে বাঁচলেও মাসুদ বাঁচতে পারে নাই। কারণ সে টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজিতে ক্যারিয়ার না গড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরই চাকরিতে যোগ দিয়েছিলো, তার আয় থেকেই তার সংসার চলতো। আন্দোলনের সময় তাই দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিলো, পালায়ে যায় নাই।
একটা ভিডিওতে দেখলাম তাকে বস্তাবন্দী করে বেধড়ক পেটানোর পর থানার মেঝেতে শুইয়ে রাখছে,খালি গায়ে, প্যান্ট খুলে যায় যায়। পা একটা আগে থেকেই নাই, ওরা ১০ বছর আগে কেটে নিয়ে গেছে। বারবার সে বলছিল, ভাই আমি ছাত্রলীগ ছেড়ে দিছি অনেক আগে, আমিতো আমার মেয়ের জন্য ঔষধ কিনতে আসছি... উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নাই, কারণ তার একটা পা নাই। কৃত্রিম পা খুলে নেয়া হয়েছে।
মাত্র ৫ দিন আগেই কন্যাসন্তানের পিতা হয়েছেন মাসুদ। ফেসবুকে এ খবর জানিয়েছেন তিনি ২৪ ঘণ্টার হয় নাই, এর মাঝেই তাকে মেরে ফেলা হলো। বেধড়ক মাইরের কারণে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় বলে জানা যায়।
নিহতর পরিবার ও স্বজনরা বলছে, যারা পিটিয়েছে তারাই নাকি আবার তাকে থানা ও হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এমনকি তারা নাকি আবার প্রকাশ্যে টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকারও দিয়েছে, ধর্ষণ কেস বলে চালিয়েছে। পাহীন, সদ্য বাবা হওয়া একটা ছেলে নাকি ধর্ষণ করেছে! যদি করেও থাকে, তবু কি তাকে পিটায়ে মেরে ফেলতে হবে? সারাদেশে প্রকাশ্যে এমন হতাহতের অনেক ঘটনা সামনে আসছে। পুলিশ কার্যত এখনও থানার বাইরে যাচ্ছে না। সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে, তার মাঝেও অরাজকতা থামানো যাচ্ছে না।
প্রতিটি বিচারবহির্ভুত হত্যাই অপরাধ। তা হোক তথাকথিত ক্রসফায়ারে মৃত্যু কিংবা গণধোলাইয়ে মৃত্যু। অপরাধীকে ধরে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। কিছুতেই আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া যাবে না। মাসুদ-উৎসবকে মেরে আপনারা কেন অপরাধ করছেন? তারা অপরাধী হলে আইনের মাধ্যমেই তাদের বিচার করুন। এখন তো আর তথাকথিত স্বৈরাচার ক্ষমতায় নেই, এখন আপনাদের সরকার ক্ষমতায়। তাহলে কি বুঝতে হবে, এই সরকারের প্রতিও আপনাদের আস্থা নেই, তাই আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন? 'স্বৈরাচারী' সরকার আর আপনার মাঝে তাহলে পার্থক্য থাকলো কোথায়? আপনারা না একটা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চান?
অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই 'দ্বিতীয় স্বাধীনতা'কে এভাবে বৃথা যেতে দিয়েন না প্লিজ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০
...নিপুণ কথন... বলেছেন:
আমরা বিশ্বাস রাখতে চাই।