নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিন্তা প্রসবের বেদনা মগজব্যাপী স্থায়ী হওয়ার আগেই কলম ধরতে হতো। মাথার মধ্যে জমে থাকা ভয়ংকর সব চিন্তাগুলোকে পরিণতি দেয়া মত শব্দ কোনো কালেই ছিল না।তারপরও সেই সব গল্প লেখতেই হতো,যেগুলো লেখার পর শান্তিতে ঘুমানো যায়।

নির্বাক স্বপ্ন

নির্বাক স্বপ্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'ঘুরিয়ে গলার বাঁক ওঠো বুনো হংসিনী আমার/ পালক উদাম করে দাও উষ্ণ অঙ্গের আরাম\'

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৩

১.
বিয়ের সময় বাপ ভাইয়ের থেকে আশীর্বাদ, গায়ে হলুদ, বিয়ে,বৌভাত থেকে শুরু করে প্রি ওয়েডিং পোস্ট ওয়েডিংয়ের নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিবো।বলবো,টাকা দাও।প্রীত রেজাকে দিয়ে ভিডিও বানাবো,চারু ডায়েরী থেকে বিয়ের এস্থেটিক ভিডিও বানিয়ে অনলাইনে ভাইরাল হয়ে যাবো।এছাড়া ও জীবনে বিয়ে তো একবার ই করবো তাই না?মায়ের,বউমনির স্বর্ণালংকার বিক্রি করে হলেও টাকা দাও।আমি তো ঘরের ছোট ছেলে।এইটুকু আবদার তো করতেই পারি।আর ভিডিওতে তো তোমাদেরও দেখাবে।সাক্ষাৎকার নিবে।সবাই বলবে বরের ফ্যামিলিও তো দারুণ!
বাজেটে চাপ থাকলে দুটো মানুষ না হয় কম ই নেমন্তন্ন করলে।দাদার বৌভাতে তো দেখলেই কতো খাওয়া বেঁচে গেলো।খরচ কমাতে না হয় শুধু মুরগীর মাংশই করলে?খাসি না হয় বাদ ই গেলে।চলন/ বউ বরণের সময় ও গাড়ীতে না-ই চড়লাম,পিসিমণির বাড়ি থেকে হেঁটে হেঁটে ঘরে এলাম।নতুন বউ ঘোড়ার গাড়িতে না চড়ে দশ মিনিট হাটঁলে তো আর তোমাদের সন্মান খোঁয়া যাবে না।তাই না?

২.
ইনিয়ে বিনিয়ে এমন শত শত কথা বলে ওয়েডিং ভিডিওর নামে লাখ খানেক টাকা হাতিয়ে নিবো।কিন্তু ভিডিওটা করাবো এলাকার বাদশা ভাইকে দিয়ে।বাদশা ভাই আশির দশকের বড়ো সাইজের ক্যামেরা নিয়ে আসবে।সাথে থাকবে এসিস্ট্যান্ট। খাওয়ার ভিডিও করবে।জুম করে মুখের সামনে ক্যামেরা ধরে রাখবে।মাসি পিসিদের নাক চুলকানো আর কান চুলকানোর ভিডিও করবে।সামান্য সময়ের জন্যে জামাই বউ ও থাকবে সেই ভিডিওতে।ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকবে 'সাজান সাজান' গানটা।বাদশা ভাইকে বিয়ের ভিডিওর জন্যে একেবারেই যৎসামান্য টাকা দিয়ে বলবো,আমি আপনার এলাকার ছোট ভাই।টাকার টানিটানি চলছে।আপাতত এইটুকু দিয়ে কাজ চালান।দরকার হয় আমি আপনাকে আরো দু চারটা বিয়ে খ্যাপ এনে দিবো নে।তখন পুষিয়ে নিয়েন।

৩.
ওয়েডিং ফটোগ্রাফি - ভিডিওগ্রাফির নাম করে যেই টাকা হাতিয়ে নিয়েছি,তার অর্ধেক দিয়ে বই কিনবো।সত্যজিৎ রায় রচনাবলী,মানিক বন্দোপাধ্যায় রচনা সমগ্র, গ্রামসীর উনতিরিশ খন্ডের প্রিজন নোটবুকস,আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বের হওয়া অর্মত্য সেনের সব অনুবাদ।
আর বাকি অর্ধেক টাকা দিয়ে জামাই বউ মিলে উঠবো সদর ঘাট থেকে কমলা রকেটে নামের শতবর্ষী পুরানো স্টীমারে।নদীর নাব্যতার জন্যে কমলা রকেট যদি আমাদের নেহায়েতই খুলনা পৌঁছাতে অপারগ হয়, তবে না হয় বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জেই নামবো।স্টিমারে কোন কঠিন বই নিবো না।শুধু থাকবে কবিতার বই।আল মাহমুদ,রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, হুমায়ুন আজাদ, সুনীল গাঙ্গুলি।বউ কে বলবো,যাত্রা পথের সাতাইশ ঘন্টা হয় চুমু খাও নইলে গান শুনাও।আল মাহমুদের সোনালী কাবিন শোনাও।এই যাত্রায় তোমার কোনো বিশ্রাম নেই।'ঘুরিয়ে গলার বাঁক ওঠো বুনো হংসিনী আমার/ পালক উদাম করে দাও উষ্ণ অঙ্গের আরাম'।ও হ্যা, রবীন্দ্রনাথে ছিন্নপত্র বইটাও থাকবে।ইচ্ছে হলে সেখানে আমিও তোতলাতে তোতলাতে ক লাইন শুনিয়ে দিলাম।
বাকি টাকা নিয়ে চলে যাবো কুষ্টিয়া।যে করেই হোক রবীন্দ্রনাথের মত একটা বজরা ভাড়া করবো।না পেলে ছই সহ বড়ো সাইজের একটা নৌকা।সেই নৌকায় বউ থাকবে।বই থাকবে।ব্ল্যাক কফি থাকবে। একটা অন্তত আকাশ থাকবে।সেই আকাশে তারা থাকবে।নয়তো বৃষ্টি থাকবে।মিথ্যে বলে ওয়েডিং ফটোগ্রাফি- ভিডিওগ্রাফির টাকা দিয়ে মাঝ রাতে বৃষ্টিতে নৌকার মধ্যে দাঁড়িয়ে বউয়ের ঠোঁটে জোর করে চুমু খাওয়া যায় তবে মন্দ কি?

পুনশ্চ ১-
ভালো কথা এসব গুলোই আমার প্রস্তাব।কোনোটাই বউয়ের উপর চাপিয়ে দেয়া হবে না।স্টিমারের জায়গায় কোনো আন্তঃনগর ট্রেন হতে পারে,পদ্মা নদীর জায়গায় নরসুন্দা, গোমতী,সোমেশ্বরী কিংবা কংশ হতেই পারে।বইও পরিবর্তন হতে পারে, তবে সেখানে বউকে যথেষ্ট যুক্তিবাদী হতে হবে এবং সে বইগুলো আমার না পড়া বই হতে হবে।

পুনশ্চ ২ -
রবীন্দ্র রচনাবলী যৌতুক হিসেবে যে নিবো,সেটা আগে বহু লেখাতে বলেছি।তাই আলাদা করে মূল লেখাতে আনি নি।

পুনশ্চ ৩ -
শাড়ি, আলতা,নীল কালো টিপ,নুপুরের কথা বলতে ভুলে গেছি।বউ কে এসবও নিতে হবে।প্রথমে আদর সোহাগ করে নিতে বলবো।না মানলে বকা দিয়ে জোর করে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: আজকাল এটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে- ব্যের অনুষ্ঠানে ৫০ হাজার বা ১ লাখ টাকা দিয়ে ভিডিও করা হয়। নাম দেয় সিনেমোটোগ্রাফী। ফাজলামো।

২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৮

নির্বাক স্বপ্ন বলেছেন: আর সেটাই মূখ্য হয়ে দাঁড়ায়।এক বন্ধুর বিয়েতে গিয়ে দেখলাম - তারা কাপল ছবি তুলছে।আমাদের সাথে কথা বলার ই ফুরসৎ পেলো না।কি অদ্ভুত!আগে ছবি কম ছিল কিন্তু গল্প ছিল বেশি।কিন্তু ছবি বেড়েছে,ছবির পেছনের গল্প হারিয়ে গেছে।

৩| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৫৫

ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: আপনি আবার লিখছেন তো? খুব কম লেখা দেখতে পাচ্ছি। বহুত দিন পর কোন লেখা দেখে মুখ থেকে একটা শব্দ অজান্তে বের হলো,"ওয়াও"। ক্যামেরার জন্য ঠিক করে রাখা হাসির মতো কুতসিত জিনিস আর হয়না। বিশ্রী রকমের মেকি। মেকিরই যুগ।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৫৬

নির্বাক স্বপ্ন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে সময় নিয়ে পড়ার জন্যে! লেখার অভ্যেসটা চলেই গেছে প্রায়।দোয়া করবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.