![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
IF YOUR ACTIONS INSPIRE OTHERS TO DREAM MORE, LEARN MORE, DO MORE AND BECOME MORE-YOU ARE A LEADER
শোনা গেলো লাশকাটা ঘরে
নিয়ে গেছে তারে;
কাল রাতে - ফাল্গুনের রাতের আঁধারে
যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ
মরিবার হলো তার সাধ।
বধূ শুয়ে ছিলো পাশে - শিশুটিও ছিলো;
প্রেম ছিলো, আশা ছিলো - জোৎস্নায়, - তবু
সে দেখিল
কোন ভূত? ঘুম কেন ভেঙে গেলো তার?
অথবা হয়নি ঘুম বহুকাল -
লাশকাটা ঘরে শুয়ে ঘুমায় এবার।
এই ঘুম চেয়েছিলো বুঝি !
রক্তফেনামাখা মুখে মড়কের ইঁদুরের মতো ঘাড়
গুঁজি
আঁধার ঘুজির বুকে ঘুমায় এবার;
কোনোদিন জাগিবে না আর।
‘কোনোদিন জাগিবে না আর
জানিবার গাঢ় বেদনার
অবিরাম - অবিরাম ভার
সহিবে না আর - ‘
এই কথা বলেছিলো তারে
চাঁদ ডুবে চলে গেলে - অদ্ভুত আঁধারে
যেন তার জানালার ধারে
উটের গ্রীবার মতো কোনো-এক
নিস্তব্ধতা এসে।
তবুও তো প্যাঁচা জাগে;
গলিত স্থবির ব্যাং আরো দুই মুহূর্তের
ভিক্ষা মাগে
আরেকটি প্রভাতের ইশারায় - অনুমেয় উষ্ণ
অনুরাগে।
টের পাই যূথচারী আঁধারের গাঢ় নিরুদ্দেশে
চারিদিকে মশারির ক্ষমাহীন বিরুদ্ধতা;
মশা তার অন্ধকার
সঙ্ঘারামে জেগে থেকে জীবনের স্রোত
ভালোবাসে।
রক্ত ক্লেদ বসা থেকে রৌদ্রে ফের উড়ে যায়
মাছি;
সোনালি রোদের ঢেউয়ে উড়ন্ত কীটের
খেলা কতো দেখিয়াছি।
ঘনিষ্ঠ আকাশ যেন - যেন কোন বিকীর্ণ জীবন
অধিকার করে আছে ইহাদের মন;
দূরন্ত শিশুর হাতে ফড়িঙের ঘন শিহরণ
মরণের সাথে লড়িয়াছে;
চাঁদ ডুবে গেলে পর প্রধান আঁধারে তুমি অশ্বথের
কাছে
এক গাছা দড়ি হাতে গিয়েছিলে তবু একা - একা;
যে জীবন ফড়িঙের, দোয়েলের - মানুষের
সাথে তার হয় নাকো দেখা
এই জেনে।
অশ্বথের শাখা
করেনি কি প্রতিবাদ? জোনাকির ভিড়
এসে সোনালি ফুলের স্নিগ্ধ ঝাঁকে
করেনি কি মাখামাখি?
থুরথুরে অন্ধ প্যাঁচা এসে
বলেনি কি : ‘বুড়ি চাঁদ
গেছে বুঝি বেনো জলে ভেসে?
চমৎকার! -
ধরা যাক দু -একটা ইঁদুর এবার!’
জানায়নি প্যাঁচা এসে এ তুমুল গাঢ় সমাচার?
জীবনের এই স্বাদ - সুপক্ব যবের ঘ্রাণ
হেমন্তের বিকেলের -
তোমার অসহ্য বোধ হলো;
মর্গে কি হৃদয় জুড়োলো
মর্গে - গুমোটে
থ্যাঁতা ইঁদুরের মতো রক্তমাখা ঠোঁটে!
শোনো
তবু এ মৃতের গল্প; - কোনো
নারীর প্রণয়ে ব্যর্থ হয় নাই;
বিবাহিত জীবনের সাধ
কোথাও রাখে নি কোন খাদ,
সময়ের উর্ধ্বতনে উঠে এসে বধূ
মধু - আর মননের মধু
দিয়েছে জানিতে;
হাড়হাভাতের গ্লানি বেদনার শীতে
এ জীবন কোনোদিন কেঁপে ওঠে নাই;
তাই
লাশকাটা ঘরে
চিৎ হয়ে শুয়ে আছে টেবিলের’পরে।
জানি - তবু জানি
নারীর হৃদয় - প্রেম - শিশু - গৃহ - নয় সবখানি;
অর্থ নয়, কীর্তি নয়, স্বচ্ছলতা নয় -
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
ক্লান্ত - ক্লান্ত করে;
লাশকাটা ঘরে
সেই ক্লান্তি নাই;
তাই
লাশকাটা ঘরে
চিৎ হয়ে শুয়ে আছে টেবিলের ‘পরে।
তবু রোজ রাতে আমি চেয়ে দেখি, আহা,
থুরথুরে অন্ধ পেঁচা অশ্বথের ডালে বসে এসে,
চোখ পালটায়ে কয় : ‘বুড়ি চাঁদ
গেছে বুঝি বেনো জলে ভেসে?
চমৎকার !
ধরা যাক দু - একটা ইঁদুর এবার -’
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজও চমৎকার?
আমিও তোমার মতো বুড়ো হব -
বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব
কালীদহে বেনো জলে পার;
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের
প্রচুর ভাঁড়ার।
©somewhere in net ltd.