![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনকে আগে নিজের লেখা আমার প্রথম একটি ছোট গল্প। এক বন্ধুকে দিয়ে এই সামুতেই পোষ্ট করিয়েছিলাম। তখন আমার সুযোগ ছিল না নিজের ব্লগ লেখার। এখন যখন সুযোগ পেয়েছি, তাই এবার নিজের ব্লগে লেখার লোভটি আর সামলাতে পারলাম না।
অনিশ্চিত ভালোবাসা
ওর সাথে পরিচয় মোবাইলের বদৌলতে। মোবাইলে বন্ধত্বের কথা শুনেছি অনেক। কিন্তু ভাবতাম সবই নাটক বা সিনেমার গল্প। বাস্তব জীবনে কখনো এ সব সম্ভব বিশ্বাসই করতাম না। কিন্তু বাস্তবেও মোবাইলের মাধ্যমে বন্ধুত্ব হয়। আমারও হয়েছে।
তখন ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি। দেশের বিভিন্ন সিম কোম্পানীগুলো ব্যবসার প্রসারের জন্য বিভিন্ন চটকদার অফার দিচ্ছে। তার মধ্যে একটি অন্যতম অফার ছিল মোবাইল চ্যাট। এর সাহায্যে অচেনা মানুষদের সাথে বন্ধুত্ব তৈরী করা যায়। এক কথায় বলা যায় অচেনা বন্ধু-কে চেনা করে নেয়া আরকি। তখন বয়স কম। চোখে যা দেখি সব রঙ্গিন লাগে। আমিও বা পিছিয়ে থাকব কেন? অফারটা জানার সাথে সাথে লুফে নিলাম। রেজিস্ট্রেশন করলাম চ্যাটিং এর জন্য। রেজিস্ট্রেশন করার পর আমার বয়স অনুযায়ী বন্ধুর খোঁজে সার্চ দিলাম। কিশোর বয়স!!! স্বাভাবিকভাবেই মেয়েদের নাম সার্চ দিয়েছিলাম। অনেকগুলো নাম আসল। প্রথম যে নামটা আসল তাকেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালাম। এরকম বেছে বেছে দুই কি তিনটি রিকোয়েস্ট পাঠালাম। ভাবিওনি কেউ রিকোয়েস্ট গ্রহণ করবে কি না। পরদিন সকালে মোবাইলের SMS চেক করতে গিয়ে দেখি ওমা! একজন রিকোয়েস্ট গ্রহণ করেছে। আমি তো অবাক! এও সম্ভব! তবুও গ্রহণ যেহেতু করেছে, ভাবলাম কথা বলা যাক। যেই ভাবা সেই কাজ। "ভাল বন্ধু হতে চাই" লিখে SMS পাঠিয়ে দিলাম। এখানে বলা দরকার যে চ্যাট করা যাবে নির্দিষ্ট আইডি থেকে। কিন্তু কেউ কারো মোবাইল নাম্বার জানতে পারবে না। যা বলছিলাম। ওপাশ থেকে যা উত্তর এল বুঝলাম মেয়েটা ভাল হতে পারে। অবশ্য যাচাই করার কোন যোগ্যতাই আমার তখন ছিল না। কেননা এসব বিষয়ে আমি বরাবরই অজ্ঞ। তাছাড়া কোনদিন কারও সাথে এই রকম চ্যাট করিনি। উত্তর পেয়ে মেয়েটিকে ভালো লেগে গেল। আমিও তার SMS এর উত্তর দিলাম। হয়ে গেলাম একজন আরেকজনের বন্ধু। সেইসব মুহুর্তগুলো কেমন কাটছিল বলে বোঝাতে পারব না। এভাবে চলল প্রায় ছয় কি সাত মাস। এর মাঝে দু'জন দু'জনাকে চিনতে থাকলাম, জানতে থাকলাম, বুঝতে থাকলাম। মোটামুটি ভালো বন্ধুত্ব গড়ে উঠল আমাদের। একদিন চিন্তা করলাম এভাবে আর কতদিন SMS আর SMS? কথা বলা দরকার। যেই ভাবা সেই কাজ। একদিন ওকে SMS করলাম, "তোমার মোবাইল নাম্বারটা কি দেয়া যাবে?" ভেবেছিলাম শহরের মেয়ে চালাক বা কিছুটা সন্দেহ প্রবণ হবে। মোবাইল নাম্বার দিবে না। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে ওর নাম্বারটা আমাকে পাঠিয়ে দিল। আমার অবস্থাটা যে কি নিজেই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। অবাক হব না খুশি হব নিজেই বুঝতে পারছিলাম না। থাক সেসব কথা। মোবাইল নাম্বার পাওয়ার পর আবার শুরু হল SMS চালাচালি। এবার নাম্বার টু নাম্বার SMS। এর মাঝে একদিন দেখলাম ফ্রি মিনিট পেয়েছি। হঠাৎ করে মাথায় আসল ওর কথা। ও বলতে ভুলে গেছি; মোবাইল নাম্বার লেনদেন হলেও কেউ কাউকে এ পর্যন্ত কল করিনি। ওর কথা মাথায় আসতে দিলাম ফোন ওকে। বুক কিছুটা ঢিবঢিব করছিল। উত্তেজনা না ভয়ে কে জানে। ওপাশে রিং এর সাথে নিজের বুকের ঢিবঢিবের অন্তমিল খুজে পেলাম। ওপাশ থেকে 'হ্যালো' বলা হল। আমিও উত্তর দিলাম। কথা বললাম দু'জনে অনেকক্ষণ। এরপর থেকে প্রায়ই ফোন দিতাম। কথা বলতাম দু'জনে দীর্ঘসময় ধরে। আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব গাঢ় হতে লাগল। একজন আরেকজনকে গভীরভাবে চিনতে লাগলাম, জানতে লাগলাম। তখন আমি ফেইসবুকের নতুন ইউজার। ভবলাম কেননা ওকে আমার ফ্রেন্ড লিস্টে অ্যাড করে নেই। জিজ্ঞেস করলাম ওর ফেইসবুক আইডি আছে কি না। বলল আছে। চাইলাম আইডি। দিল। আমারটাও চাইল আমিও দিলাম। ও রিকোয়েস্ট পাঠালো। Accept করলাম। রিকোয়েস্ট Accept করার সময় মনের ভেতর একটি চাপা উত্তেজনা কাজ করছিল তা ঠিকই টের পাচ্ছিলাম। মাথার ভেতর একটা কথাই বার বার বাড়ি মারছিল, "প্রথম মোবাইল ফ্রেন্ড কেমন হবে দেখতে কে জানে!!!" প্রোফাইলের ছবিটি ওপেন করার পর ছবিটির দিকে তাকিয়ে রইলাম ২ মিনিট। ওর স্নিগ্ধ চোখ দুটো ওর পবিত্রতা ঘোষণা করে যাচ্ছিল সগৌরবে। তৎক্ষণাৎ মন মন্দিরে ঘন্টা বেজে উঠল। মন ঘোষণা দিল, "হে কিশোর! তুমি তোমার মনের মত বন্ধুটি পেয়ে গেছ।" এরপর থেকে নিয়মিত ফেইসবুক চ্যাট করতাম দু'জনে। ধীরে ধীরে ওর প্রতি আকর্ষণ বাড়তে লাগল। মন চাইছিল বন্ধুত্ব নয় এর চেয়েও বেশি কিছু হতে। ওর কথাবার্তার সাবলীলতা, শিশুসুলভ আচরণ যেন আস্তে আস্তে ফুলের সৌরভের মত আমাকে ছেয়ে ফেলতে শুরু করল। মনটা যে প্রেমে পড়তে শুরু করেছে টের পাচ্ছিলাম ঠিকই। তবুও মনকে বাঁধা দেই নি। দিলেই বা কী!!! মন কি আর কারও বাঁধা মানে? একদিন বুঝলাম মন এবার পুরোপুরিভাবে ওর কাছে বিলীন হয়ে গেছে। কিছু করার নেই। অগত্যা মনের পিছু পিছু ছুটলাম। বুঝলাম তাকে ভালোবেসে ফেলেছি। তাকে ছাড়া এখন এক মুহুর্ত ভাবতে পারি না। মাঝে মাঝে ভাবি তাকে বলি, "তোমাকে ভালোবাসি" কিন্তু পারিপাশ্বিক অবস্থা বাধ্য করে পিছু হটতে।
তাকে কী কোনদিন বলতে পারব নিজের মনের আকুল আবেদন? বলতে কি পারব তাকে ভালোবেসেছি নিজের জীবনের চেয়েও বেশী? জানাতে কি পারব তাকে, এ হৃদয় ঘরের বিশাল এক জায়গায় তার বসবাস? পারব তাকে চিৎকার করে বলতে কোনদিন এ হৃদয় নিংড়ানো পবিত্রতম ভালোবাসার কথা?
জানি না পারব কিনা। হয়তো পারব, হয়তো পারবো না। হয়তো বা ও শুনে হাসবে অথবা বলবে এটা সম্ভব নয়। বললেই বা কী! আমিতো তাকে ভালোবাসি। সে ভালোবাসায় কোন খাদ নেই। সে ভালোবাসা পবিত্র। আর কিছু না হোক তাকে ভালোবেসে যাব চিরদিন নিজের মনের মত করে।
"এ পৃথিবীতে সেটাই বা কজন পারে???"
২৪ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:২৭
নীরব কবি বলেছেন: আপনার কমেন্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:০৫
লিন্কল্ন বলেছেন: মানুষ ভালবাসে ছেকা খাওয়ার জন্য।
২৭ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৪২
নীরব কবি বলেছেন: সঠিক বলেছেন।
৩| ১৩ ই মে, ২০১৪ রাত ১:০৮
আমিজমিদার বলেছেন: হেহে, মজা পাইলাম।
১৫ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:১০
নীরব কবি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার কমেন্টের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:০২
বটবৃক্ষ~ বলেছেন:

সুন্দর!!