![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ভবদেশকে মাঝে মাঝে মামুর দেশ মনে হয় । যার যা ইচ্ছা কি অবলীলায় মামুর কাছে আমরা সব আবদার করে বসি । ব্যাটা মামুও অপাপ ভাইগনাদের সকল আবদার পূরনে যে নিরলস চেষ্টা করে যায় তাতে চক্ষুকোনে জল নামবার যোগাড় । গতরে কাপড় আর পকেটে রুমাল আছে বলে রক্ষা । না হয় কবে জাতি কৃতজ্ঞ জলে ভেসে যেত ।
এই রঙ্গদেশে মানুষের রোগ ব্যারামের যে কিচকিচ অবস্হা তাতে ফি বছর যে কতজন ডাক্তার তৈরী হয় তার আশায় বসে থাকলে আজরাঈল ব্যাটার কাছে নিখরচায় জান তুলে দেওয়া ছাড়া কোন গত্যন্তর থাকবে না । ডাক্তার মহাশয়রা বিস্তর ব্যস্ত । লম্বা সিরিয়াল । সময় অল্প ,ফর্দ (প্রেসক্রিপশন) বড় । ভিজিট অর্ধ হাজারের কম নয় । এসব কিছু জোগাড় করে ফার্মেসী পর্যন্ত যেতে যেতেই আজরাঈল ব্যাটার সময় শেষ । তাই রাষ্ট্র আরো কিছু ডাক্তার (বেসরকারি মেডিকেল কলেজের) পয়দা দিয়ে জাতির সেবায় একেবারে গদগদ ।
জাতির কল্যানে হোমড়া চোমড়া’রা নানান ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর (বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়) খুলে আমাদের জাগতিক ইত্যকার সেবা দিয়ে চলছেন । তাই তাদের কিছু আহ্লাদ আবদার থাকতেই পারে । গত বছর বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য সর্বনিম্ম নম্বর ছিল ১২০ । এই অন্যায্য নম্বরের ষড়যন্ত্রে তাদের নাকি ২৫%-৩০% আসন ফাঁকা থেকে গেছে । ফলে জাতির জন্য আরো কিছু ডাক্তার(!)পয়দা করা সম্ভব হয়নি । এই ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদও করেছিলেন । ভর্তির সর্বনিম্ম নম্বর ১১০ এ নির্ধারন করার জন্য আবদার করেছিলেন । কিন্তু রাষ্ট্র মামুর কৃপা তারা পাননি । তাই গত বছরের ঘাটতি পুষিয়ে নিতে নতুন আবদার নিয়ে তারা হাজির হয়েছেন । পরীক্ষায় কোন পাস মার্ক রাখা যাবে না । একেবারে অন্যায় দাবী করেছেন একথা বলা যাবে না । তারা একপাক্ষিক সেবা দিয়ে যাবেন আর আমরা তাদের দায় দাবীর প্রতি কোন খেয়াল রাখব না এটা হয় না । তাছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ভর্তি পরীক্ষায় পাস মার্ক ৪০ নির্ধারন জাতির সেবা প্রদানে বিরাট অন্তরায় । এ অন্যায় কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না ।
এবার একটু যোগ-বিয়োগে আসি । সৃষ্টিকর্তার দান প্রান । আর শিক্ষামন্ত্রীর দান এ প্লাস । তাতে বছরে (এসএসসি ও এইচএসসি) ডাবল এ প্লাস আসে মাত্র ৫০-৬০ হাজারের মতো । এইসব ডাবল এ প্লাসে ভর্তি পরীক্ষার আগেই জাতির সূর্য সন্তানদের অর্জন এক্কেবারে একশ’তে একশ । ৫.০০*৮ (S.S.C)+৫.০০*১২ (H.S.C)=১০০.০০ । একশ যখন পকেটে তখন আর বিশ নম্বর নিয়ে কেন টানাটানি । এবার’তো চল্লিশ ।
*** যেখানে প্রত্যেকটা বিষয়ে কমপক্ষে ৮০ পেয়েছে, সেখানে ভর্তি পরীক্ষায় ২০ বা ৪০ নম্বর নিয়ে তারা কেন শংকিত আল্লাহ জানে ।
ছোটবেলায় জানতাম যারা ক্লাসের ভাল ছাত্র তারাই ডাক্তার ইন্জিনিয়ার হয় । বাবা মা তাই বলতো । আমার ছেলেকে আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না । তাছাড়া ছেলের প্রশ্নে বিব্রত হওয়ার একটা লজ্জাও আছে । তাই ভাবছি কিছুটা ঐক্যমত্যের বুলি তাকে শুনাবো । বলবো ডাক্তার ইন্জিনিয়ার তারাই হয় যারা খুবই মেধাবী অথবা যাদের বাবার কাড়িকাড়ি টাকা আছে ।
সময়ের সাথে মানুষকে আপোষ করে নিতে হয় । কেননা সময়ের কাছে মানুষ বড় অসহায় । তাই ক্লাসের চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্রকে ডাক্তার সাব বলতে আমাদের লজ্জা ঠেকে না । অবশ্য এই লজ্জার কথাই অবান্তর । যেখানে রাষ্ট্রের কোন লজ্জা ঠেকে না এমন ছাত্রদের ডাক্তার বানাতে সেখানে আমার মতো মানুষের লজ্জিত হওয়াই বরং বড় লজ্জার । মাঝে মাঝে শুধু এটুকু মনে হয় এমন ছাত্ররা নিজেকে গর্বের সহিত ডাক্তার দাবি করতে পারে তো ?
রাষ্ট্র মামুর কাছে আমার একখানা আরজি আছে । মামু ডাক্তার বানাচ্ছ, বানাও । শুধূ অমন ডাক্তারদের কিছুমাত্র আলাদা যাতে করতে পারি এমন সুযোগ রেখো । যেমন সার্টিফিকেট বা কার্ডের (সবকিছুতে) সাথে যাতে PVT. কথাটা লিখা থাকে । আমি গরীব মানুষ । নিত্য টানাটানিতে থাকি । তাই বারবার অমন ডাক্তার মহাশয়দের দর্শন ব্যয় আমার উপর জুলুম হয়ে যাবে ।
…………….নিঃশব্দ নাগরিক ।
©somewhere in net ltd.