![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাজার যাতায়ত আমার কাছে নিত্য না হলেও গা সওয়া । তো গত সন্ধ্যায় অন্নের টানাটানি আর পেটের তাপাতাপিতে ছুটলাম বাজারে । অবশ্য এই বাজার সওদা শুধুমাত্র এই দুই বস্তু বা ভাবের উপরই এককভাবে নির্ভরশীল নয় । এখানে তৃতীয় এক শর্তও বিদ্যমান । সেই তৃতীয় শর্ত খালার (রান্না করার লোক) কাছ থেকে যখন নিশ্চয়তা পেলাম তখন বাজার যাতায়তে আমার দ্বি-কোন বাধা থাকলো না । তো বাজারে গেলাম এবং দর কষাকষির এক পর্যায়ে একখানা রুইমাছ খরিদ করে ফেললাম । মাছওয়ালা মাছ কাটছে আর আমি চারিপাশে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করছি । পাশেই এক ভদ্রলোক ইলিশের দরদাম করছে । জাটকা ইলিশের হালি চারশত শুনে একটু ইতস্তঃত বোধ করলাম । এই ইতস্তঃতা আতংকের পর্যায়ের পৌঁছল যখন জানলাম আমার শুনাতে আগাগোড়াই গন্ডগোল ছিল । মাছওয়ালা একখানা জাটকা ইলিশের দামই চেয়েছেন চারশত টাকা । আমি ভাল করে চারপাশে তাকালাম । আমি নিশ্চিত হতে চাইছি আমি বাংলাদেশেই আছি’তো । নাকি জিম্বাবুয়েতে চলে এসেছি । শুনেছি একসময়ে সে দেশে বস্তা ভরে বাজারে টাকাপয়সা নিয়ে যেত হতো আর ব্যাগের তলিতে সওদাকে আশ্রয় দিয়ে বাড়িতে ফিরতে হতো । হাঁটা শুরু করেছিলাম মদিনা মসজিদের কাছ থেকে । যাব ট্যানারীর মোড়ের কাঁচাবাজারে । আমাকে নিছক সূর্যের বেগে আশ্রয় করে জিম্বাবুয়েতে নিয়ে আসেনি’তো । পরে নিশ্চিত হলাম সূর্যের কৃপা এখনো অতদূর পৌঁছায়নি ।
মাছওয়ালা ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম ভাই মন খারাপ না বাড়িতে ঝগড়াঝাটিতে সুবিধা করতে পারেন নাই । এইটুকুন জাটকা ইলিশের দাম চারশত টাকা কোন তরিকায় হাঁকলেন । মাছওয়ালা বলল, আরে ভাই বাজারে’তো ইলিশ মাছই নাই । সামনে পহেলা বৈশাখ । এই জাটকাই আটশত দিয়ে কিনতে হবে ।
আমি জাটকা ইলিশের দামের মাজেজা বুঝলাম । জগতে সকল কিছুর দাম ওজন, আয়তন আর সাইজে নির্ধারন করার বোকামী হয়তো আমার মতো পুরোদস্তুর বেকুবকেই মানায় । তাছাড়া বঙ্গ দিনপঞ্জিকা সম্বন্ধে যার এতবড় উদাসীনতা তারমতো মানুষের ইলিশের দামের প্রতি কান দেওয়াই মস্ত অপরাধ । তার উপর যদি কানের এন্টেনায় নেটওয়ার্কের ঝামেলা থাকে তবে’তো কথাই নেই ।
আগামী বৈশাখের আগেই কানের ডাক্তারের কাছে যাবো । পাশাপাশি এই সময়টাতে ইলিশ সম্প্রদায়ের মূল্য জিজ্ঞেস করে বাঙ্গালী বৈশাখ সম্প্রদায়কে বিব্রত করবো না । আল্লাহ আমার হোন ।
……………..নিঃশব্দ নাগরিক ।
©somewhere in net ltd.