![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাসিখুশি জীবন।সুন্দর জীবন।নিজে হাসুন,অন্যকে হাসিখুশি রাখুন।
১৪ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস, অন্য কিছু । একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক ভূখণ্ডের জন্য এ জনপদের মানুষ না।বারবার অকাতরে প্রাণ দিয়েছে। যুগে যুগে সামরিক-বেসামরিক ছদ্মবেশে স্বৈরাচারীরা ক্ষমতা দখল করেছে। জনগণ প্রতিবাদ করলে জুটেছে বেয়নেট, বুট, গুলি, টিয়ারশেল। এরকমই ১৪ মার্চ ১৯৮২ সালে সামরিক আইন জারি করে ক্ষমতা দখল করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সামরিক আইন জারি করে সংবিধান ও মৌলিক অধিকার স্থগিত করা, রাজনৈতিক নেতাদের ধড়পাকড় শুরু করা_এসব বিভিন্ন কারণে তাঁর এ ক্ষমতা দখলকে কোনো রাজনৈতিক দল শক্তভাবে প্রতিরোধ করতে পারেনি। তবে ছাত্ররা প্রথম থেকেই এরশাদের শাসনক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন। শুরু হয় প্রতিরোধ আন্দোলন। স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্রদের প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রথম শহীদের নাম জয়নাল দিপালী কাঞ্চন। এরপর থেকেই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন জোরদার হয়ে ওঠে। পশ্চিম থেকে আগত ভ্যালেন্টাইনের জোয়ারে ভেসে গেছে রক্তের অক্ষরে লেখা, এ প্রজন্ম ভুলে যাচ্ছে সেই সব শহীদের নাম।
এরশাদের ক্ষমতা দখল
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ লে. জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এক রক্তপাতহীন অভুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন। রাজনৈতিক দলগুলো এরশাদের এভাবে ক্ষমতা দখলকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে অনেকটাই নীরবে মিলিটারি স্বৈরশাসন মেনে নিতে বাধ্য হয়। রাজনৈতিক দলগুলো মেনে নিলেও ছাত্ররা মেনে নেননি এই সামরিক অভ্যুত্থান। সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বৈরাচার এরশাদ ক্ষমতায় ছিল আট বছর ২৫৬ দিন। এ সময় দেশের হাজার হাজার মানুষ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবরণ করেছে। হত্যা-গুমের শিকার হয়েছে অসংখ্য নারী-পুরুষ। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিশেষত ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মিছিলে পুলিশের গুলিতে ছাত্র নিহত হওয়ার পর থেকেই দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে ওঠে।
রক্তাক্ত ১৪ ফেব্রুয়ারির প্রেক্ষাপট
এরশাদের সামরিক শাসন জারির প্রথম দিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেন। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্টার লাগাতে গিয়ে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর তিন সদস্য গ্রেপ্তার হন। কলাভবনে ২৪ মার্চ সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে পোস্টার লাগাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া এই ছাত্রনেতারা হলেন শিবলী কাইয়ুম, হাবিব ও আ. আলী। পরে সংক্ষিপ্ত সামরিক আদালতে তাঁদের সাত বছরের কারাদণ্ড হয়। সেই থেকে শুরু হয় সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রদের আপসহীন লড়াইয়ের দিনগুলো।
বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা ২৬ মার্চের স্বাধীনতা দিবসে সাভারের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে গিয়ে শহীদ বেদিতেই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। মিছিলের খবর শুনে সাভার সেনানিবাস থেকে সেনাবাহিনী চলে আসে, স্মৃতিসৌধে ছাত্রদের ওপর চলে নির্মম নির্যাতন।
সরকারি ফরমান ও তৎপরতার কারণে সে সময় সরাসরি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়লেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে লাল-কালো অক্ষরে এরশাদের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে দেয়াল লিখন অব্যাহত থাকে। ছাত্রদের দেয়াল লিখন সমানে মুছতে থাকে সামরিক সরকারের তল্পিবাহক পুলিশ বাহিনী। পুলিশ যত দেয়াল সাদা চুন টেনে মুছে ফেলে, ছাত্ররা ততই দেয়াল লিখন চালিয়ে যেতে থাকে। এভাবেই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে চলছিল দীর্ঘমেয়াদি সংগ্রামের প্রাথমিক প্রস্তুতি।
এ সময় ছাত্রনেতারা একটি সর্বাত্দক গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছিলেন। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে বিবৃতি প্রদান করা হয়। সেটাই ছিল সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম লিখিত প্রতিবাদ।
মজিদ খান শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন দানা বাঁধে
পাকিস্তান পর্বে পূর্ববাংলার ছাত্রদের প্রধান দাবি ছিল একটি অবৈতনিক একই ধারার বৈষম্যহীন শিক্ষানীতি। এ সময় পূর্ব পাকিস্তান সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ দেশের আপামর জনগণের উদ্দেশে ১১ দফা প্রণয়ন করেছিল। এরশাদ ক্ষমতায় আসার পরপরই তাঁর শিক্ষামন্ত্রী মজিদ খান নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেন। এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণের শুরুতেই ইসলাম ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। শিক্ষানীতিতেও সে প্রতিফলন ঘটে। একই সঙ্গে শিক্ষার ব্যাপক বাণিজ্যিকীকরণ করা হয়। ছাত্ররা এ শিক্ষানীতির ব্যাপক বিরোধিতা করেন। ১৭ সেপ্টেম্বরের শিক্ষা দিবসে এই শিক্ষানীতি বাতিল করার পক্ষে ছাত্র সংগঠনগুলো একমত হয়।
১৯৮২ সালের ২১ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে গণসাক্ষরতা অভিযান চলে। ছাত্র সংগ্রামের নেতৃত্বে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মজিদ খান শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। ছাত্রদের এই সংগ্রামকে প্রতিরোধ করতে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি খন্দকার মোহাম্মদ ফারুককে গ্রেপ্তার করলে ছাত্ররা আরো ফুঁসে ওঠেন। তাঁর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি সারা দেশে ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। এবার ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি হাতে নেয়। দিনটি ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩। কে জানত বসন্তের আগুনরাঙা রঙের সঙ্গে মিশে যাবে মানুষের রক্ত।
প্রতিরোধ-রক্ত আর ভালোবাসার ১৪ ফেব্রুয়ারি
ভালোবাসার রং কী? প্রশ্ন একটি, উত্তর ভিন্ন ভিন্ন। রক্তের স্রোত, বুট, টিয়ারশেল আর গুলির তীব্র ঝাঁজালো বারুদের গন্ধ এমন ভাবে ভালোবেসে সবাইকে ঋণী করে যাবে, তা মিছিলের কেউ বুঝতে পারেনি। সেদিন মিছিলে অংশ নেওয়া ছাত্রনেতা মোস্তাক হোসেনের বর্ণনা মতে, ‘১৪ ফেব্রুয়ারি আরো সুশৃঙ্খল, আরো দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে ছাত্ররা কর্মসূচিতে যোগ দেন। মিছিলের প্রথমে শতাধিক ছাত্রীর অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করার মতো। খুবই শান্তিপূর্ণ মিছিল ছিল, উৎসবের মতো অনেকটা। ব্যারিকেডের সামনে যখন মিছিল যায় হাইকোর্টের গেট ও কার্জন হল-সংলগ্ন এলাকায়, তখন মেয়েরা ব্যারিকেডের সামনে বসে পড়েন। নেতারা তারকাঁটার ওপর উঠে বক্তৃতা দিতে শুরু করেন। মিছিলটি ছিল হাইকোর্টের গেট থেকে বাংলা একাডেমী পর্যন্ত। কিন্তু কোনো উসকানি ছাড়াই তারকাঁটার একদিক কিছুটা সরিয়ে রায়ট কার ঢুকিয়ে রঙিন গরম পানি ছিটাতে শুরু করে পুলিশ। এরপর ভেতরে ঢুকে বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করে। সাধারণ ছাত্ররা তখন এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করে পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। পুলিশ তখন ছাত্রদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন জয়নাল। সেদিন জয়নালকে গুলিবিদ্ধ করেই ক্ষান্ত হয়নি, তাঁর শরীর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে পুলিশ। বেয়নেট ফলা আর জয়নালের শরীর থেকে চুইয়েপড়া রক্ত বাংলার পথ-প্রান্তর ভাসিয়ে দেয়। শুধু জয়নাল নয়, ছাত্রদের ওপর পুলিশি তাণ্ডবের সময় শিশু একাডেমীতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা দিপালী নামের এক শিশু গুলিবিদ্ধ হয়। তবে দিপালীর লাশ পুলিশ গুম করে ফেলে। জয়নাল পড়েছিলেন কার্জন হলের মধ্যে। তাঁকে ধরে ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে যেসব ছাত্র সকালে মিছিলে আসেননি, তাঁরা বিকেলে জয়নালের জানাজায় বটতলায় উপস্থিত হন। হাজার হাজার সাধারণ মানুষও উপস্থিত হয়। তাৎকালীন অনেক জাতীয় নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন।’
পুলিশ সেদিন শুধু হত্যা করেই স্থির থাকেনি, বিকেলে ক্যাম্পাসে একটি যুদ্ধ-পরিস্থিতি তৈরি করে সেনাবাহিনী। তার সঙ্গে যোগ দেয় বিডিআর-পুলিশ। শাহবাগ, টিএসসি চত্বর, কলাভবনের সামনে, নীলক্ষেত, কাঁটাবনের রাস্তা ধরে পুরো অঞ্চল ঘেরাও করে ফেলে তারা। অপরাজেয় বাংলার সমাবেশে পুলিশ অতর্কিত লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় বহু ছাত্রনেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢুকে পুলিশ ছাত্রছাত্রীদের মেরে হাত-পা ভেঙে ট্রাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে তৎকালীন উপাচার্য পদত্যাগ করেন। কলাভবনের ভেতরে ঢুকে পুলিশ ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক যাঁকে পেয়েছে তাঁকেই নির্যাতন করেছে। ওখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খ ম জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে। ওই বিভীষিকাময় দিনের বর্ণনা করেছেন স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্রনেতা মোস্তাক হোসেন, ‘আমরা জয়নালের লাশ লুকিয়ে ফেলেছিলাম মুহসীন হলের ডাইনিংয়ে। লাশের খোঁজে পুলিশ চারুকলায় ঢুকে ছাত্রদের নির্যাতন ও গ্রেপ্তার করে। পুলিশ খুঁজে খুঁজে পোশাকে রঙিন গরম পানির চিহ্ন দেখে দেখে গ্রেপ্তার করে। অবশেষে মুহসীন হলের ডাইনিংয়ে লাশ পাওয়া গেলে অন্যান্য হলে লাশের তল্লাশি বন্ধ করা হয়।’ কিন্তু গ্রেপ্তার করে দুই সহস্রাধিক ছাত্র-জনতাকে। সরকারি হিসাব মতে এক হাজার ৩৩১ জন। সবাইকে গ্রেপ্তার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় শাহবাগের পুলিশ কন্ট্রোল রুমে। এরপর তাঁদের তুলে দেওয়া হয় আর্মির হাতে। বন্দি ছাত্র-জনতার ওপর চলে প্রথমে পুলিশ ও পরে আর্মির নিষ্ঠুর নির্যাতন। মেয়েদের গ্রেপ্তার করে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রবল চাপের কারণে তাঁদের ১৫-১৬ তারিখের মধ্যে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
মিছিল পূর্ব ছাত্রজমায়েত, কলাভবন
বাধা দিতে প্রস্তুত পুলিশ
এগিয়ে চলছে মিছিল
অর্দ্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্দ্ধেক তার নর
মিছিল যাতে যেতে না পারে শিক্ষা ভবনে, রাস্তায় ব্যারিকেড
বাধা দিলে বাধবে লড়াই, এই লড়াইয়ে জিততে হবে
পুলিশ জনতা মুখোমুখি
ব্যারিকেড ভেঙ্গে মিছিল এগিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি
বাজা তোর প্রলয় বীষাণ ধ্বংশ নিশান উড়ুক প্রাচী'র প্রাচীর ভেদী
মিছিলে পুলিশ গুলি চালাচ্ছে
গুলিতে নিহত সতীর্থের লাশ
এ লাশ আমরা কোথায় রাখবো?
রক্তের অক্ষরে লেখা শহীদের নাম ভেসে গেছে ভ্যালেন্টাইনের জোয়ারে
স্বৈরাচারী এরশাদের পতনের দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের পত্তন ঘটে। সেই গণতন্ত্রে জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটেনি। কারণ ১৯৯০ সালে সামরিক স্বৈরাচারের স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয় সংসদীয় স্বৈরাচার। জনগণের আত্মদানের ফসল ঘরে তোলে সামন্তবাদের রক্ষক ও সাম্রাজ্যবাদের সেবক-দালাল রাজনৈতিক দলগুলোই। জনগণের আন্দোলন, সংগ্রাম ও আত্মদানের ফসল শাসক শ্রেণীর কাজে লাগানো বা শাসনক্ষমতা শ্রেণী বিশেষের বিকাশের স্বার্থে ব্যবহার নজির বাংলাদেশ এবং বিশ্বের ইতিহাসে ভূরি ভূরি পাওয়া যায়। স্বার্থসিদ্ধি হয়ে গেলে ক্ষমতাসীন শ্রেণীই জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে জনগণের ওপর চালু করে নতুন শোষণমূলক ব্যবস্থা। শোষণ টিকিয়ে রাখতে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য আইন, প্রথা, ভাষা, সংস্কৃতি এবং শিক্ষা ব্যবস্থাকে শোষণের অনুকূলে প্রবাহিত করতে তৎপর হয়েছে। তেমনি ১৯৯০-উত্তর ক্ষমতাসীন শাসক গোষ্ঠী তার সংসদীয় স্বৈরাচার অটুট রাখতে স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে জনগণের অর্জনগুলোকে আড়াল করার চেষ্টা করে। তারই অংশ হিসেবে এদেশে আমদানি করা হয় বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইনস ডে। কথাটা হয়তো অনেকের কাছে নির্মম লাগতে পারে। কিন্তু এ সত্যকে আমরা এড়াতে পারি না। আন্দোলনের দুই যুগ পার হতে না-হতেই জনগণের কাছে বিস্মৃতি হতে চলেছে জয়নাল-দিপালীদের নাম। ১৯৯২ সালেই এর আমদানি ও বাজারজাতকরণের কাজ শুরু হয়। এই অবিস্মরণীয় বিপ্লব এবং বিজয়কে বহুবছর পরে ভালোবাসা দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে এগিয়ে আসেন শফিক রেহমান নামক একজন সাংবাদিক। লাল গোলাপ হাতে তিনি বিপ্লব ভুলে ভালোবাসার জয়গানে দেশবাসীকে মাতোয়ারা হতে আহ্বান জানান। দেশে ঢুকে যায় আর্চিস হলমার্ক। আমি তুমি টাইপের ব্যক্তির ভালোবাসায় পরিণত হয়েছে স্বৈরাচার-প্রতিরোধ দিবস। ১৯৯২ সাল পর্যন্ত দিনটিতে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ স্বৈরাচার-প্রতিরোধ দিবস হিসেবেই পালন করে আসছিল। নব্বই-পরবর্তী মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রবল জোয়ারে দিন পরিণত হয়েছে বহুজাতিক কম্পানির পণ্য বিক্রির দিন হিসেবে। রক্তের অক্ষরে যাঁরা আমাদের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়ে গেলেন, তাঁদের জন্য অবহেলা ছাড়া আমরা কিছুই দিতে পারিনি।
আসুন ১৪ ফেব্রুয়ারী স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করি। ভালোবাসা-বাসিও হবে, তবে তা কোনভাবেই শরীরবৃত্তীয় না, এই ভালোবাসা প্রতিরোধের জন্য ভালোবাসা। এই প্রতিরোধ আর ভালোবাসার দিনে তরুণ-তরুণীরা হাত ধরাধরি করে রাস্তায় আসুক, প্রতিবাদ করুক।
ঋণঃ
এই লেখাটি একটি সম্পাদনা। গণ সচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে আপলোড করা এই লেখায় নিম্নোক্ত লেখকের লেখা থেকে সরাসরি তুলে দেয়া হয়েছে।
* প্রগতির পরিব্রাজক দল
* মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান তুহিন ও আজিজ হাসান
* নজরুল ইসলাম
* খোমেনী এহসান
আমার বন্ধু ইমন দাশগুপ্তের সৌজন্যে।
২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:২২
রমিত বলেছেন: খুব সময়োপযোগী ও সুন্দর পোস্ট দিয়েছেন। এরশাদ শাসনামলের ভয়াবহতা এখনো আমার চোখে ভাসে। আপনার উপরের ছবির মিছিলগুলোতে আমার বড় ভাই ও বোনেরা ছিল।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে এরশাদের আগমণ ছিল একটি দুষ্ট গ্রহের আগমণ।
আমিও ঐ স্বৈরাচার সম্পর্কে গল্পের মাধ্যমে কিছু লিখছি।
Click This Link
এরশাদ ও তার ভয়াবহ শাসন সম্পর্কে জনগণ জানুক।
৩| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৩৫
রমিত বলেছেন: দুঃখজনকভাবে কিছু কিছু রাজনৈতিক দল এরশাদকে স্বাগত জানিয়েছিল। একটি সাপ্তাহিক এরশাদকে নিয়ে করেছিল প্রচ্ছদ কাহিনী, 'বছরের আলিচিত চরিত্র'।
৪| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৪০
রমিত বলেছেন: দুঃখজনকভাবে কিছু কিছু রাজনৈতিক দল এরশাদকে স্বাগত জানিয়েছিল। একটি সাপ্তাহিক এরশাদকে নিয়ে করেছিল প্রচ্ছদ কাহিনী, 'বছরের আলোচিত চরিত্র'।
৫| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৩
হাসান রেজভী বলেছেন: ফেসবুকে একটা নোট লিখে ফেল ...... বেশি মানুষের চোখে পড়বে
++++
৬| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৮
আশরাফ উদ্দিন বলেছেন: আমার ব্লগে ঘুরে আসতে পারেন, নতুন বিষয় সংযোজন করা হয়েছে।
৭| ২১ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:১৭
নতুন যাযাবর বলেছেন: ভাই আপনায় ফোন নাম্বার আমার প্রয়োজন।
২৪ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৩:৩৬
নিভৃত নয়ন বলেছেন: কি বিষয়ে তা জানতে পারি কি?
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৮
Palol বলেছেন: এমন একটি হিরন্ময় দিনের মহাত্বকে ঢেকে দিয়ে ভালবাসা দিবস পালনের ঘৃণ্য প্রচেষ্টা রুখে দাড়ানো এখনি সময়।