নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

♣ ♣ ♣ নিশনামা ♣ ♣ ♣

নিশাত শাহরিয়ার

আমি এক অতি সাধারণ একটা ছেলে যে স্বপ্ন দেখে অসাধারণ কিছু করার। কবিতা লিখি মনের খোরাকের জন্য , কবি হওয়ার জন্য না,তাই ছাপাবার সাহস পাই না ।সময় পেলে প্রচুর বই পড়ি।পড়তেই বেশী পছন্দ করি।নিজের ওয়েবসাইট https://www.nishnama.com/ তে এখন নিয়মিত লেখালেখি করছি। বন্ধু হতে এবং বানাতে পছন্দ করি। © নিশাত শাহরিয়ার এই ব্লগের সব লেখার (সংগ্রহীত ক্যাটাগরি ছাড়া ) সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ব্যাতিত কোন লেখার সম্পুর্ণ অথবা অংশ বিশেষ পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন অথবা সম্পাদনা করে কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। তবে সোশ্যাল মিডিয়াতে লিংক শেয়ার করা যাবে ।

নিশাত শাহরিয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

৭ ই নভেম্বর নিয়ে একটি নির্মোহ আলোচনা [অবশ্যই পড়বেন এবং একটু নিজের মাথা খাটিয়ে চিন্তাও করবেন]

০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৫৭

৭ ই নভেম্বর নিয়ে একটি নির্মোহ আলোচনা ।

=============================================

একজন বন্ধুর ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে Munir Rahman ভাইয়ের কমেন্ট গুলো তুলে ধরলাম আপনাদের সামনে। একটু সময় নিয়ে পড়ে দেখবেন ।



=============================================

১.

বাংলাদেশের ইতিহাসের এই "ঘোলাটে" দিনটি নিয়ে সবার আগ্রহ দেখে খুবই খুশি হলাম| স্বল্প কথায় কিছুটা জানাতে পারি- বিস্তারিত'ও বলা যাবে, অন্য কোনও সুযোগে, যদি আগ্রহ থাকে আর কি| এর অনেক কিছুই হয়তো অনেকেরই জানা আছে|



৭৫'এর আগস্টের হত্যাযজ্ঞের পর সেনাবাহিনীর তৎকালীন সিজিএস [অপারেশনাল+(সেনা আভ্যন্তরীণ)ইন্টেলিজেন্স প্রধান- বলা যেতে পারে] ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ (বীর উত্তম) এর নেতৃত্বে একটি অভ্যুত্থান ঘটে ২'রা নভেম্বর দিবাগত রাতে, তৎকালীন খোন্দকার মোশতাকের পুতুল সরকারের বিরুদ্ধে (পুতুল সরকার বললাম, কারণ তখন ক্ষমতার মূল স্তম্ভ/উৎস ছিলো মেজর ডালিম, মেজর রশীদ প্রমূখের কাছে)|



এই অভ্যুত্থানের সময় ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ (বীর উত্তম) তখনকার সেনাপ্রধান এবং উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক মেজর-জেনারেল জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম)কে সেনানিবাসে বন্দী করে রাখেন| কিন্তু, এই অভ্যুত্থান ঘটানোর পরেও খালেদ মোশারফ (বীর উত্তম)এর পক্ষ হতে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেশবাসীকে দেয়া হয়নি| বস্তুতঃ ৩রা নভেম্বর থেকে ৭ই নভেম্বর পর্যন্ত দেশে কোনও সরকার আছে কিংবা আদৌ কোনো সরকার আছে কিনা- পুরো দেশ অজ্ঞাত ছিলো|



জেনারেল জিয়া(বীর উত্তম)এর প্রভাব ও গ্রহণযোগ্যতা তখন সাধারণ সেনাসদস্যদের মাঝে অনেক বেশি ছিল| ৩রা নভেম্বর থেকে যখন দেশে কার্যত কোন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি; এরমাঝে জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)এর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে এবং নাজুক ও ঘোলাটে পরিস্থিতির বিবেচনায় জাসদ'এর বেশ কিছু সদস্য এবং সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটা ঢাকাস্থ ইউনিটের অফিসার নন, এমন নিম্ন -পদবী'র সদস্যগণ ব্রিগেডিয়ার খালেদ (বীর উত্তম)এর বিরুদ্ধে পাল্টা অভ্যুত্থান করে কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)'এর নেতৃত্বে... সেই পালটা অভ্যুত্থান হয় ৭ই নভেম্বর... আর, এর মাধ্যমে জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)'কে মুক্ত করা হয় বন্দীদশা থেকে... এতে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ (বীর উত্তম) নিহত'ও হন...



অর্থাৎ, মোদ্দা কথা হলো, ২রা নভেম্বর হতে ৭ই নভেম্বর পর্যন্ত জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম) বন্দী এবং নিহত হবার হুমকীর মাঝে ছিলেন; আর, কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)এর নেতৃত্বে তাঁকে উদ্ধার করা হয় এবং সেনাপ্রধান'ও হন তিনি এর ধারাবাহিকতায়| আর, জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম) সেনাপ্রধান (এনং কার্যত রাষ্ট্রপ্রধান) হয়ে কিছুদিনের মাঝেই কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)কে সেই অভ্যুত্থান ঘটানোর জন্য ফাঁসীতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন, যেই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি জীবিতাবস্থায় মুক্ত হয়েছিলেন|



এখন ভাই , তুমি নিজেই ভেবে দেখো, এখানে কেউ "ভিলেন" আছে কি না, অন্তত এই কয়েকদিনের ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে? আমি এখানে বিস্তারিত বর্ণনা, ঘটনার কারন/উদ্দেশ্য সমূহ একদমই বাদ দিয়ে গেছি...



২.

>>>৭ই নভেম্বর থেকে কর্নেল তাহেরের মৃত্যুদণ্ড প্রদান এর মাঝের এই অল্প কিছুদিনে কি এমন ঘটেছিলো যে জেনারেল জিয়া এমনটা করলেন??



কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)এর বিরুদ্ধে 'আনুষ্ঠানিক" অভিযোগ ছিলো রাষ্ট্রদ্রোহিতা, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র, সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ইত্যাদি...



৭ই নভেম্বরের অভ্যুত্থানটি নিয়মিত/কর্মরত সেনা-কর্মকর্তাগণ দ্বারা পরিচালিত হয়নি... সৈনিক হতে সুবেদার-মেজর পর্যন্ত যেসব নন/জুনিয়র-কমশিন্ড পদিবীর সদস্য ছিলেন তাঁদের সাথে জাসদ'এর "গণবাহিনী" নামক অংশটি এটা সংঘটিত করেছিলো, কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম) এর নেতৃত্বে...



আর, এই গণবাহিনী'র বেশকিছু দাবী-ছিলো, যেগুলো তৎকালীন প্রচলিত সেনা-কায়দা'র সাথে সাংঘর্ষিক, যেমন এর একটি ছিলো- ব্যাটম্যান (অফিসার'দের ব্যাক্তিগত নানাবিধ কাজের সহায়তা করার জন্যে একজন করে সৈনিক) প্রথা বিলুপ্তি- মূলত এই দাবীটিকে কেন্দ্র করেই সৈনিকদের বেশি প্রলুব্ধ করা হয়েছিলো জাসদ'এর গণবাহিনীর পক্ষে...

আরেকটি দাবী ছিলো- এই অভ্যুত্থানের উদ্দেশ্য হিসেবে- বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে একটি "গণবাহিনী"তে রূপান্তর করা... যাতে অফিসার-শৈনিক ভেদাভেদ থাকবেনা; সেনাবাহিনী থাকবে উৎপাদনশীল কাজে নিয়োজিত- এমন কিছু আর কি...

তো, অভ্যুত্থানের একদম পরবর্তী মুহুর্তে সদ্যমুক্ত জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)কে কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম) এইসব শর্তের কথা বলেছিলেন এবং তখনকার মতো রাজীও করিয়েছিলেন...



কিন্তু, প্রকৃত বাস্তবতায় এসব দাবী মেনে নেয়ার কোন কারণ জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম) দেখেননি এবং সংগত কারনেই এসব দাবী হতে তিনি সরে আসেন... এটা নিয়ে কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম) বিক্ষুব্ধ ছিলেন স্বাভাবিকভাবেই এবং যেটুকু সম্ভব চাপ প্রয়গ করছিলেন... কিন্তু, অভ্যুত্থানের পরে জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)এর ব্যাক্তিগত ইমেজ, ক্যারিশমা এবং দৃঢ় পদক্ষেপ'এর কারনে সেনাবাহিনীতেই তাঁর [জিয়া (বীর উত্তম)] প্রভাব একদম সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় খুব তাড়াতাড়িই... এবং পুরো ঘটনা প্রবাহ কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)এর হাতছাড়া হয়ে যায়... আরো একটা কারণ ছিলো- তখনকার সেনাবাহিনীর সাধারণ সমস্ত কর্মকর্তা-সৈনিক সবাই চাচ্ছিলেন বিশৃংখলার অবসান ঘটুক... তাই, জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)এর পক্ষে সেনা নিয়ত্রণ [চেইন-অফ-কম্যান্ড] পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা আরো সহজ হয়েছিলো... এবং, এটা করতে তিনি ব্যার্থ হলে তা তাঁর নিজের বিরুদ্ধেই যেতো পরবর্তিতে...



কিন্তু, এই কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম) এবং তাঁর অনুসারীগণ একটা বাঁধা হিসেবেই ছিলেন... আর, এর মূল হোতা হিসেবে কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)কে অপসারণ করা জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)এর জন্য সবচেয়ে সহজসাধ্য, কিন্তু দরকারী ও কার্যকরী সিদ্ধান্ত ছিলো... আর, মৃত্যুর মাধ্যমে সেটা করলে তা যেমন একদম স্থায়ী সমাধান দিতো, সেই সাথে পুরো দেশ/সেনাবাহিনীতে জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)র দৃঢ়তা আরো প্রতিষ্ঠিত হতো... [যেটা হয়েছেও]...



জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)র সামনে জলজ্যান্ত উদাহরণ ছিলেন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ (বীর উত্তম)... তিনি ৩রা নভেম্বর অভ্যুত্থান করেও নিজের ভূমিকা এবং প্রভাব প্রতিষ্ঠা করতে ব্যার্থ হয়েছিলেন শুধুমাত্র সিদ্ধান্তহীনতায় ভূগে... তিনি এটুকু পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি তাঁর পদবী ব্রিগেডিয়ার হতে মেজর-জেনারেল'এ উন্নীত করবেন কি না... রেডিও/টিভি'তে কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা/দাবী/নির্দেশনা দেননি তিনি... যেই জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম)এর বিরুদ্ধে তিনি অভ্যুত্থান করলেন, সেই জিয়া (বীর উত্তম)কেই তিনি প্রায় বহাল-তবিয়তে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরেওই রেখেছিলেন গৃহবন্দী করে... আর, এর খেসারৎ তাঁকে দিতে হয় নিজের জীবন দিয়ে...



অতএব, কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)কে সরিয়ে দিয়ে জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম) তখনকার বিবেচয়া অন্তত নিজের জন্যে "সাম্ভাব্য" বিপদের একটি মূল নিশ্চিহ্ন করেছিলেন...



সেনাবাহিনীতে "মৃত্যু" খুব বেশি অপ্রত্যাশিত ঘটনা নয়- বলাই বাহুল্য...



# এখানে কে ভালো করেছে আর কে খারাপ করেছে- তেমন কিছুই বলছিনা আমি... এগুলো শুধুমাত্র নিখাদ বাস্তবতা, কারো পক্ষে গিয়েছে; কারো বিপক্ষে... #



৩.



>>>তাহলে কি বলতেই পারি যে মেঃ জিয়া মোটামুটি নিরাপত্তার স্বার্থেই তাহের কে খুন করেছেন?



এটা আসলেই যার-যার ব্যাক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ভিন্নভিন্ন ভাবে বলা যায়, ..



যেমন, আমি ব্যাক্তিগতভাবে যদি জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)'এর অনুসারী হই, তবে আমি বলবো- হ্যা, তিনি এটা "নিরাপত্তা'র স্বার্থেই করেছেন, হোক সেটা তাঁর ব্যাক্তিগত/জীবনের নিরাপত্তা, কারণ সেটা তৎকালীন প্রেক্ষিতে অনিবার্য ও অপরিহার্য ছিলো...



আবার তাঁর বিপক্ষের অনুসারী হলে বলবো- তিনি এটা করেছেন তাঁর ক্ষমতায় আরোহণ এবং পাকাপোক্ত করার পথের "বাঁধা" নির্মূল করতে...



এখন, কারো "ব্যাক্তিগত" মতের প্রসঙ্গ আসে এজন্যেই- যে কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)কে হত্যা করা জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)এর একদম নিজস্ব সিদ্ধান্তে ও নির্দেশে হয়েছিলো... আর, আমরা যারা বাকি জনগণ, তারা শুধু এর বহিঃপ্রকাশটুকুই দেখেছি; জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)'এর অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য কারো পক্ষে জানা সম্ভব নয়... তাই, ঘটনার বাস্তবতায় তাঁর পক্ষে এবং বিপক্ষের দুটো "ধারণা"ই সঠিক, এমনকি একইসাথে সঠিক হতে পারে...



তখনকার দেশের সামরিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক বেশিরকম অস্থির ও ঘোলাটে ছিলো, তাই তার প্রেক্ষিতে অনেক সিদ্ধান্ত ও কাজ অন্যায় বলে আপাত ধারণা হলেও তখন সেগুলোর ব্যাখ্যা ও অবস্থান ভিন্নতর ছিলো... আসলে, এই ব্যাপারগুলোর ক্ষেত্রে মোটাদাগে পক্ষ-বিপক্ষ কিংবা ভালো হয়েছে-খারাপ হয়েছে- এমন কিছু বলা বর্তমান বাস্তবতায় সম্ভব না, সমীচীনও নয়...



তবে, এমনিতে আমার নিজস্ব কথা যদি বলতে হয়- সাদা চোখে আর কি, দরকার/দরকার নয়- এ'মতের ঊর্ধে ওঠে - জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)এর হাতে কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)এর হত্যা একপ্রকার কৃতঘ্নতার কাজ... কিন্তু, রাজনৈতিক পথপরিক্রমায় এধরণের "রিস্ক" জিইয়ে রাখলে হয়তো জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম) বিপদেই (তৎক্ষণাৎ) পরতেন- কে জানে...?



কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তাঁকেও প্রাণ দিতে হয়েছে এই সেনাবাহিনীর হাতেই; অথচ এর আগের অন্ত ৮০'র আগে পর্যন্ত দেশে প্রায় হাজারখানেক সেনা ও বিমানবাহিনী কর্মকর্তা/সৈনিককে হত্যা করা হয়েছিলো বিভিন্ন অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অভিযোগে... তবে, এগুলো ভিন্ন প্রসঙ্গ; এখানে এখন না'ই বলি...



আসলে, রাজনৈতিক খেলায় প্রচুর পাঠা বলি দিতে হয়- এটাই নির্মম বাস্তবতা... যুগের পরিবর্তনে হয়তো "সংখ্যা"র কম-বেশি হয়...



৪.

এটা যেমন ঠিক, কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম) এবং তাঁর অনুসারীগণের উদ্দেশ্য ছিলো দেশে প্রচলিত সেনাবাহিনীর বাইরে ভিন্ন কিছু প্রতিষ্ঠা করা, এবং প্রকারন্তরে ক্ষমতায় আসা/থাকা... আর এ'জন্যে জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)এর "কাঁধ" ব্যাবহার করা ছাড়া খুব বেশি কোনও উপায় ছিলোনা...



এখন, যত কথাই বলা হোক, ৭ই নভেম্বর জাসদ/গণবাহিনীর পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থান না হলে জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)এর জীবনভাগ্য ভিন্নতর হওয়ার দিকেই যাচ্ছিলো... তাঁকে হত্যা করার 'সময়" হয়তো পার হয়ে গিয়েছিলো [৩রা নভেম্বর ক্যু হলো, আর তিনি ৭ই নভেম্বর পর্যন্ত যখন জীবিত ছিলেন, ধরে নেয়া যায় তাঁকে অন্তত গুলি করে হত্যা করা হতো না; হয়তো নির্বাসন জাতীয় কিছু দেয়া হতো]... আর, কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)এর অনুসারীগণের নিজস্ব উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যেই জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)ক মুক্ত করার ব্যাবস্থা নেয়া হয়েছিলো...



তবে, তিন যুগেরও বেশি পরে একটা জিনিষ দিয়ে ব্যাপারগুলোর রূপকতা দেয়া যায়- ফুটবল খেলা... বেশ কয়েকজন স্ট্রাইকার থাকেন, কখনও তাদের মাঝে কারো পায়ে বল চলে এসে গোল হয়ে যায়, তিনি হয়ে যান হিরো... কখনও আবার, গোল প্রায় দিয়েই দিচ্ছে নিশ্চিত এমন স্ট্রাইকারকে ফাউল করে পেনাল্টি পেয়ে সেই পেনাল্টি থেকে গোল করেন আরেকজন... আবার, মাঝেমাঝে আত্মঘাতি গোল'ও হয়ে যায়, তখন তিনি হয়ে যান জিরো...

মূল ব্যাপারটা হলো- "সময়-সুযোগ-অবস্থান" এবং এটাকে চেনা ও প্রয়োগ করতে পারা... তখনকার বাস্তবতায় যখন এটা জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)এর দিকে ফিরেছিলো- তখন তিনি ঠিক সেসব কাজ করেছেন, যেগুলো তাঁর নিজের জন্যে করা উচিৎ ছিলো (সেটা দেশের কাজে লেগেছে কতটুকু কিংবা কি- সেটা আবার অন্য প্রসঙ্গ/দৃষ্টিভঙ্গি)... আর, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ (বীর উত্তম) ও কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)এর দিকে যখন সময় ছিলো- তখন তাঁরা এটাকে নিজেদের মতো করে ব্যাবহার করতে ব্যার্থ হয়েছিলেন...



অনেক দীর্ঘ কথা বলা যায় আসলে এসব নিয়ে... কিন্তু, খুব বেশি কোনও "একলাইনের" উপসংহারে আসা যায়না... -_-



৫.



তবে, একটা ব্যাপার কি- "ব্যাখ্যা" ব্যাপারটা বেশ ঘোলাটে... যেমন, ৭ই নভেম্বরের ঘটনায় কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম) পন্থী যাঁরা আছেন, কিংবা জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম) বিরোধী- তাঁরা বলবেন- কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)এর উদ্দেশ্য তাঁদের নিজস্ব পরিকল্পনার মাধ্যমে সফল হলে সেটা দেশের জন্যে কল্যাণ বয়ে আনতো, আর সেতাকে ধ্বংস করে জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম) হঠকারীতা করেছেন...

আবার, উপরোক্ত ভাবধারার বিরোধীরা বলবেন- কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)এর নেতৃত্বে তখনকার পরিকল্পনা সফল হলে দেশ ধ্বংস হয়ে যেতো...

আমি যে চিন্তাধারায় বিশ্বাস করবো- সেটার ভিত্তিতেই ভালো/খারাপ; ন্যায়/অন্যায় ইত্যাদি বিশ্লেষণ করবো...



তবে, এখানে আবারো একটু কথা থেকে যায়, "হয়তো" যারা সময়ের সদ্ব্যাবহার করেছে, তাদের হাতেই ইতিহাস বিকৃতির "সুযোগ(!)"টা রয়ে যায় বেশি... ঐ যে কথা আছে না- ইতিহাস বিজয়ীর হাতে লিখিত হয়...



যেমন, ভালো নাকি খারাপ- সে প্রসঙ্গে না গিয়েও বলতে পারি- এই যে ৭ই নভেম্বরের দিনটিকে "জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস" হিসেবে রাষ্ট্রীয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়েছে '৭৬-থেকে '৯৫, পরে আবারো ২০০১-থেকে ২০০৭/৮ পর্যন্ত; আমরা স্কুলে ছুটি পেতাম নিয়মিত; কিন্তু দেশের কজন মানুষ এটা নিয়ে প্রকৃত ঘটনাবলী জানতো.? মানে, ইদানীং নানাবিধ কারনে দিনটিএ নিয়ে যেতুকু আমরা জানি, ১০/১৫ বছর আগে কিন্তু সেসব কিছুই জানতো না দেশের সাধারণ ছাত্র-জনতা... তা সেটা দিবসের পক্ষেই হোক; কিংবা বিপক্ষে...



অথচ প্রবক্তা দল হিসেবে বিএনপি'র উচিৎ ছিলো এটা নিয়ে ব্যাপক প্রচার, কারণ তাঁরা দিনটিকে একটি বিশেষ মর্যাদায় দেখেন... এখন, এইদিনের মাহাত্ম যদি সাবার সামনে আসতো- তবে আর যা'ই হোক, অন্ততঃ ঘোলাটে অবস্থা হতোনা... সবচেয়ে কষ্টকর হলো- খোদ বিএনপি নেতা-কর্মীদেরও যখন দিবসটিকে নিয়ে জিজ্ঞেস করতাম, তখন তাঁরা এব্যাপারে অজ্ঞানতাসুলভ ইতস্ততা করতেন... এটা কি একটা দল/গোষ্ঠীর জন্য অনেক বিব্রতকর নয়.?



যেমন, ৭৫'এ মুজিব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা মোটামুটি সবাই জানে অন্তত কি ঘটেছিলো... হয়তো কেউ এটার পক্ষে আছেন, কেউ বিপক্ষে, আবার কেউ কেউ এতো নৃশংসতার নিন্দা করেও ঘটনাটিকে কিঞ্চিৎ অনিবার্যই বলেন... কিন্তু, মোট কথা- দেশের মানুষ জানে অন্তত কি ঘটেছিলো...



ঠিক, সেভাবেই উচিৎ ছিলো ৭ই নভেম্বর নিয়ে দায়িত্বশীল মহলের আরো খোলাসা করা অবস্থান...



৭.

তবে, হ্যা, দেশের অনেক ঘটনাই আছে, যেগুলোকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কিংবা অন্য কোনও স্বার্থে গোপন রাখা হয়... কিন্তু, সেসব ক্ষেত্রে তো সেসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতীয় দিবস পালিত হয়না...



আসলে দল গুলো ইতিহাস নিয়ে ব্যাবসা করে , তাই জনগণ আসল ইতিহাস থেকে বঞ্চিত থাকে,আমাদের দেশের বাস্তবতায় একেবারেই নিদারুণ সত্য...

=============================================

[ভাল লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আর আপনাদের কাছে অনুরোধ একটু দলীয় আনুগত্যের উরধে গিয়ে নিজের মগজ খাটিয়ে চিন্তা করুন । দেশ টাকে নিয়ে ভাবুন। মনে রাখবেন দলীয় চামচামি নেতাদের পকেট ভারি করে , কিন্তু ক্ষতি যা হয় তা আমজনতার । ধন্যবাদ । ]

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:০৯

পাগলামৃদুল বলেছেন: ভালো লিখেছেন। অনেক যুক্তিপূর্ন লেখা।

০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:১৮

নিশাত শাহরিয়ার বলেছেন: আমার ফেসবুক বন্ধু মুনির রহমান ভাই লিখেছেন :)

আমার খুব ভাল লেগেছে।

সবাই যাতে একটু হলেও চিন্তা করে তাই ব্লগে তুলে ধরলাম :)

২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:২০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আসলে দল গুলো ইতিহাস নিয়ে ব্যাবসা করে , তাই জনগণ আসল ইতিহাস থেকে বঞ্চিত থাকে,আমাদের দেশের বাস্তবতায় একেবারেই নিদারুণ সত্য. ... বিশেষত চেতনা এবং আবেগের এ খেলায় আওয়ামীলিগ চ্যাম্পিয়ানতো বটেই.. আরও বেশী কিছু!!

ডু অর ডাই ক্রুশিয়াল মোমেন্টে যে জিতে সেই জিতে। হয়তো, যদি দিয়ে আবেগ প্রতিষ্ঠা করা যায়, বাস্তবতা নয়।
++

০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৫৪

নিশাত শাহরিয়ার বলেছেন: ঠিক বলেছেন :)

৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩১

যুক্তিপ্রাজ্ঞ বলেছেন: ৭ ই নভেম্বর নিয়ে নির্মোহ আলোচনা বটে. ভাল লাগল. প্রিয়তে.

০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৫৫

নিশাত শাহরিয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩৭

মরূেবল বলেছেন: প্রিয়তে.+++++

০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৫৫

নিশাত শাহরিয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৪৭

ওবায়েদুল আকবর বলেছেন: আমারও সেইম মত। সেসময় কাউকে না কাউকে যেতেই হত।

০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৫৫

নিশাত শাহরিয়ার বলেছেন: হ্যা সেটাই :)

৬| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:৫২

রাহমান মাহবুব বলেছেন: ২-৭ নভেম্ভর বাংলাদেশের ইতিহাসের কলঙ্কজনক ঘটনা।এর সঠিক ইতিহাস আমরা জানব না এটাই স্বাভাবিক কারন এর কুশীলব ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ (বীর উত্তম)জেনারেল জিয়া (বীর উত্তম)কর্ণেল তাহের (বীর উত্তম)এরা সবাই নিজেদের স্বার্থের জন্য নাটক টি মঞ্চস্থ করেচেন।দুই জন খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফল ভোগ করেচেন আর একজন একটু দেরীতে ফল ভোগ করেচেন।আর জেনারেল উসমানির নীরব আভিনয় প্রশ্নাতীত।একমাত্র উসমানি সরব হলে এ ঘটনাগুলু ঘটত না।উনি সবাইকে সা্য দিয়েছেন।আর সবার সাথে তত্বের আদান প্রদান করেছেন ডালিম রশিদ সহ ১৫ আগস্টের সব খুনীরা।

০৯ ই নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০৯

নিশাত শাহরিয়ার বলেছেন: এই সব ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে । :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.