নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তিমির রাত্রিতে নিঃসঙ্গ পথিক

নিশি মানব

রাতের আধারে ঘুরে বেড়াই নিরবে নিভৃতে

নিশি মানব › বিস্তারিত পোস্টঃ

কয়েকটি অস্ত্রের গল্প ও একটি সংকল্প ।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৩

খুব বেশী দিন নয়। মাত্র বছর কয়েক আগের।

পুরাতন ঢাকার এক বন্ধু ফোন দিলো,তার সাথে যেতে হবে। কোথায় যেতে হবে জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দিলোনা।শুধু এতটুকু বলল,গেলেই দেখবি।

যেখানে গেলাম সেটা এক আলিশান বাড়ি। পুরাতন ঢাকার সকল বাড়ির ভেতরে এ ধরনের দৃশ্য বিরল । বাড়ির কারুকার্য আর সাজানোর দক্ষতা দেখে মুগ্ধ হলাম।

বাড়িটা ক্ষমতাহীন রাজনৈতিক দলের এক স্থানীয় নেতার। আমাকে এখানে আনার উদ্দেশ্য হচ্ছে ওনার লের যেন যোগ দেওয়া।

তার দিন কয়েক আগের কথা। নিউ মার্কেটের পিলখানার সামনে। একটা গাড়ির সাথে আরেকটা রিক্সার এক্সিডেন্ট ঘটেছিল তখন। সে সময় গাড়ির ড্রাইভারে কাছে এর প্রতিবাদ করেছিলাম। আমার প্রতিবাদের ধরনটা গাড়ির মালিককে তখন মুগ্ধ করেছিল। আর সেই গাড়ির মালিকটা ছিল সেই নেতা। যার সামনে আমি এখন বসে আছি । সাধারন কেউ কোন নেতার বাসায় গেলে নেতা সেই আগান্তুক বা অতিথিকে কোন কারন ছাড়াই দীর্ঘক্ষন বসিয়ে রাখেন। নেতাটি আমার সাথে সেরকম কিছু করলেন না । খুব সম্মান দিলেন । অনেক কুশল বিনিময় জিজ্ঞাসা করলেন । এটা ওটা খেতে দিলেন।

সব শেষে তিনি বললেন,

দেখ দেশে আজ যেই করুন হাল । এ থেকে উত্তরন পেতে হলে তোমার মত কিছু তরুন ছেলে আজ প্র্য়োজন । যারা সম্মুখ থেকে দেশকে এগিয়ে নেবে । নেতৃত্ব দেবে । কোন ভয় তাকে আটকাবেনা।

...........................।।

আমি চাই যে,তুমি আমার দলে যোগ দাও। তমার জন্য আমি একটা সম্মান জনক পদ দেখব । তুমি শুধু আমার সাথেই থাকবা । কোন সমস্যা হলে আমাকে বলবা।

নেতার প্রস্তাবটা বিনীতভাবে প্রত্যাখান করলাম । বললাম,ভাইয়া আসলে আমি রাজনীতি তেমন পছন্দ করিনা। আমার অভিভাবকরা চাননা যে আমি কোন রাজনৈতিক দলে জড়াই।

এক কথা দুই কথা থেকে অনেক ছল-বল,কৌশল কাজে লাগাতে না পেরে সেই নেতা একটা মেশিন এনে আমার সামনে রাখলেন । বললেন,তুমি কি জান এটা কি জিনিস? এটা হচ্ছে বাল-ছাল,হ্যান-দ্যান । নেড়ি কুত্তার দুই ঠ্যাং । এটা সাথে থাকলে কেউ কিছুই করতে পারবেনা তোমাকে। সবাই তোমাকে ভয় পাবে।

যাই হোক আমার অনাগ্রহের কারনে সেদিনের ঘটনা সেখানেই সমাপ্ত। ঘটনা আর দূর গড়ায় নাই। আসার সময় নেতা শুধু এতটুকু বল্লেন,যে আমার এ দরজা তোমার জন্য সব সময় খোলা।



আমার বন্ধু রবিন । মিরপুরে একটা রুম ভাড়া নিয়ে থাকে । তার সাথে পরিচয়টা হঠাৎ করেই। যথা সম্ভব তাকে এড়িয়ে চলতাম । পারত পক্ষে মুখমুখি হতামনা। কোন এক শীর্ষ সন্তাসী সম্ভবত শাহাদাত হবে তার দলের লোক সে । বেশীর ভাগ খুন খারাপীতে থাকতো ।

একদিন বারবিকিউর দাওয়ায়াত দিলো আমাকে । গেলাম । খাওয়া দাওয়ার এক ফাকে কোমর থেকে ২টা মেশিন বের করে দিলো আমাকে। অনুরোধ করলেন তার মেশীন ২টা যেন কিছূ দিনের জন্য রেখে দেই আমার কাছে । তার এক বস তাকে দিয়েছে এটা । সে সময় বাথরুমের কথা বলে তার কাছ থেকে সরে এসেছিলাম। পরবর্তীতে আর দেখা হয় নাই তার সাথে।ভুলেও তার মুখো হই নাই।



^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^

২০০৬ সালের দিকে ঘটনা । ডিবির এক অফিসারের সাথে পরিচয় ছিল । বেশীর ভাগ তিনি জেলায় জেলায় থাকতেন । তার একটা কাহিনী বললেন আমাকে । এক চাচার সম্পত্তি অবৈধ ভাবে নেয়ার জন্য ভাতিজা তাকে ধরছেন । তিনি হিলি নাকি কোথায় থেকে যেন একটা মেশিন কিনে এনেছিলেন । এখন সেটা ভাতিজা কে দেবেন । আর ভাতিজা কৌশলে চাচার কাছে রেখে আসবে সে মেশিনটা । সংকেত পেলে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে তিনি চাচাকে গ্রেফতার করে আইনের মুখোমুখি করবেন । চাচা যেন আগামী ৩টা বছর কোন ভাবেই জেল থেকে বের হতে না পারে সে চেষ্টা করবেন তিনি । সেটা আর করা হয় নাই । তার আগেই চাচা রোড এক্সিডেন্টে মারায় গেলেন।



^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^



ছোট আপুর এক বান্ধবীর ভাই। এলাকায় নাম করা সন্ত্রাসী। কোমরে সব সময় একটা লাল মেশিন পরে থাকতো । কারনে-অকারনে মানুষকে সেটা দিয়ে ভয় দেখাতো । কয়েকটা মার্ডার কেস আছে ওনার নামে । আমাকে খুব স্নেহ করতেন। মাঝে মাঝে সেই মেশিনটা দেখতে ও ধরতে দিতেন । আর বলতেন,তুই বড় হ আগে । তোকে আমি এরকম একটা মেশিন কিনে দেব ।দেখবি সবাই তখন তোকে ভয় পাবে । কেউ ফাপর নিলে লগে লগে তারে হালায়া দিবি।



^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^



উপরোল্লিখিত যাদের কথা বললাম,এদের কারোর সাথে আমার এখন আর কোন যোগাযোগ নাই। দেখা সাক্ষাত নাই। কে কথায় আছে জানিনা। সবাই কে হন্য হয়ে খুজতেছি আমি । এদেরকে আমার খুব দরকার । হ্যা একটা মেশিন আমার খুব দরকার।

এদের সাথে দেখা হলে বলতাম,ভাই আমার একটা মেশিন খুব দরকার । দিবেন আমাকে । আপনি যাকেই বলবেন,হ্যারেই আমি হালাইয়া দিমু । তারপর আমাকে একটা মেশিন দেন ভাই । দরকার হলে আপনারে ট্যাকা দিমু। প্লিজ ভাই আমারে একটা মেশিন দেন।



পত্র-পত্রিকায় ক্রাইম রিপোর্টে দেখি,আজকাল হাজার বিশেক টাকা হইলে মোটামুটি ভাল মানের একটা মেশিন পাওয়া যায় । আর পঞ্জাশ হাজার টাকা হইলেতো কোন কথাই নাই । উন্নত মানের সাইলেন্সের একটা পিস্তল/মেশিন পাওয়া যায়। কিন্তু এগুলো যে কই পাওয়া যায় জানিনা । কোন রেফারেন্স নেই আমার কাছে।



অনেক রাজনৈতিক ব্যাক্তিরা আছেন তারা প্রতিপক্ষদের সাইজ করার জন্যে তার দলের লোকদেরকে হাতে মেশিনটা তুলে দেন । কোন কিলারকে ভাড়া করেন । এমন লোক কি নাই যে আমার হাতে একটু হলেও একটা মেশিন তুলে দেবেন দেশের স্বার্থে।

মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় রাস্তা দিয়ে হেটে যাওয়া পুলিশ/র্যা বের কোমর থেকে মেশিনটা ছিনিয়ে নিয়ে যাই । লুট করি সেটা । তারপর সে মেশিন দিয়ে হত্যা করে আসি কাদের মোল্লা । গোলাম আযম । নিজামী-সাইদীদেরকে।



সরকার যখন তাদেরকে ফাসীতে ঝুলিয়ে দিতে ফাসীর রায় দিতে এতই ভয় পায় । তখন আমাদের হাতে একটা মেশিন তুলে দিক । আমরা তাদের সাথে সে বোঝাপরা করবো । জেলের ভেতরে নয় আদালত প্রাঙ্গনে তাদেরকে পাখীর মত গুলি করে মারবো । যেভাবে মেরেছিল ওরা একাত্তরে অশায় বাঙ্গালীদেরকে ।



এক কাদের মোল্লা,সাইদীর হাতে অসংখ্য মানুষ খুন হয়েছিলো । তাদের জন্য না হয় আমি খুন হবো শিবিরের কোন আততায়ীর হাতে । কিংবা স্বাধীনতার বিরোধীদের হত্যা করার দায়ে দেশের ন্যায় বিচারালয়ে আমার ফাসির রায় হবে । আর ফাসি হবে দেশের অইতিহ্যবাহী কারাগারে । যেখানে হত্যা করা হয়েছিল কর্নেল তাহের সহ জাতীয় চার নেতাকে।



তুরস্ক,ফিলিস্তিন,সউদী আরব নাকি সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছে যে জামাত নেতাদের ফাসী হলে সেটা তারা মেনে নেবেননা । সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করে দিতে পারেন তারা । এ নিয়ে সরকার বেশ চিন্তিত। কারন সরকারের রেমিটেন্স বেশীর ভাগ আসে এসব দেশের হয়েই । আর সউদী আরব আমাদের বিপক্ষে গেলে আমেরিকা ক্ষেপে যাবে । এম্নিতেই টিফা,বিশ্বব্যাংক,ডঃইউনুস ইস্যুতে আমেরিকা আমাদের উপর খুব খ্যাপা । তার অপর স্বাধীনতা বিরোধীদের ফাসির রায় মড়ার অপর খাড়ার খা হয়ে দাড়ায় যদি । এ নিয়ে সরকার এক পা আগায় দুই পা পিছায়।

একবার সিদ্ধান্ত নেন,দুইবার মত পাল্টান ।



ঠিক আছে সরকারের যদি এতই সমস্যা থাকে তাহলে তার কোন মন্ত্রী বা এমপি আমার হাতে একটা মেশীন তুলে দিক । কিংবা কিনতে আমাকে সহায়তা করুক । তারপর দেখুক আমি কি করি।



এরপর সরকার বিশ্ব বাসীকে এ বলে বোঝাতে পারবে যে,এখানে আমাদের কোন দোষ নাই । আসামীদের যাতে ফাসীর রায় না হয় সে ব্যাপারে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলাম । কিন্তু এক উম্মাতক রক্ত গররম তরুনের কারনে সেটা আর হলোনা । আপানারা চিন্তা করবেন না । সেই তরুন কে আমরা প্রয়োজনে সর্ববোচ্চ শাস্তি দেব । প্রয়োজনে সৌদি আরবের উত্তপ্ত মরুভূর মাঝে তাকে উলঙ্গ বসিয়ে শিরচ্ছদ করে দেব।





আমার একটা জীবনের বিনিময়ে যদি বাঙ্গালী জাতি কলঙ্ক মুক্ত হয় । দেশ যদি পরিপূর্ণ স্বাধীনতার স্বাদ পায়। তাহলে নিজ জীবনটা বিলিয়ে দিতে আমার কোন আপত্তি নাই । আমি হাসি মুখে সয়ে নেব সব কিছু।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪০

হিমূ বলেছেন: জয় বাংলা

০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ২:২৫

নিশি মানব বলেছেন: বাংলার জয়!

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪

এক্সপেরিয়া বলেছেন: কেবল একটা মেশিন পাইলেই..................

০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ২:২৬

নিশি মানব বলেছেন: শুয়ায়ে দিমু।

৩| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:০১

খান মেহেদী ইমাম বলেছেন: ভালো লাগলো।

০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ২:২৮

নিশি মানব বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.