নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

।হই আমি বীর অথবা হই আমি ধীর,আমি শুধু বাংলাদেশের নয়,আমি সমগ্র পৃথিরীর ।।হই আমি বীর অথবা হই আমি ধীর,আমি শুধু বাংলাদেশের নয়,আমি সমগ্র পৃথিরীর ।

মো: নিজাম গাজী

আমি ঐ সৃষ্টিকর্তারই সৃষ্টি,আমি তারই বান্দা, আমি শুধু বাংলাদেশের নয় আমি সমগ্র পৃথিবীর বাসিন্দা। গাজী পরিবারে আমি জন্মগ্রহন করেছি বলে আমি শুধু গাজী পরিবারের নয়, আমার জন্ম এই পৃথিবীর সর্বময়। শুধুমাত্র সোনাখালী গ্রামে আমার জন্ম নয়, আমার জন্ম পৃথিবীর সর্বময়। এই গ্রাম এই দেশের নয় আমি শুধুমাত্র, আমি এই সারা দুনিয়ারই ছাত্র। শুধুমাত্র একটি মহল্লায় আমার আগমন নয়, আমার আগমন বিশ্বময়। হই আমি ধীর হই আমি মহাবীর, আমি শুধু বাংলাদেশের নয় আমি সমগ্র পৃথিবীর।

মো: নিজাম গাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিয়ের জন্য পাগল [নাটক]

১৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১৬


মহসিন তালুকদার,আফজাল চৌধুরী ও খোকা মিয়া তিন বন্ধু । এরা তিনজন ছোটকাল থেকেই বন্ধু । এরা প্রত্যেকেই অশিক্ষিত । মহসিন তালুকদারের এক ছেলে ও এক মেয়ে । মেয়ের নাম মিথিলা । তার ছেলে সুমন বিয়েও করেছে । সুমন এর একটি ৮ বছরের মেয়ে আছে নাম টুনি । অপরদিকে আফজাল চৌধুরীর একমাত্র ছেলে নয়ন । নয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাষ্টার্স শেষ করেছে । মহসিন তালুকদার ও আফজাল চৌধুরী খুব ধনী । অপরদিকে খোকা মিয়া খুব গরিব । সে একজন দিনমজুর । তার একটি মাত্র মেয়ে নাম মৌমি । মৌমি বরিশালের বিএম কলেজে অনার্স ১ম বর্ষে পড়ে ।
১ম দৃশ্য
মিথিলাঃ- ওই টুনি মোর লগে ল ।
ভাবিঃ- এই দুহাইররা হালে আবার টুনিরে লইয়া কই যাবি মিথিলা?
মিথিলাঃ- ভাবি ঐ সাইডের পতে বড় আম গাছে ঘুঘুতে ডিম পারছে দেহি ছাও অইচে নাহি,হেইয়া মুই টুনিরে লইয়া দ্যাখতে যামু ।
টুনিঃ- লও ফুপজান কি মজা ছাও দ্যখতে যামু । মার লগে আর কতা কওয়া লাগবে না ।
মিথিলাঃ- হ টুনি ল জলদি ল ।
ভাবিঃ- যেরম ফুপু,হেইরম ভাইজি ।
[এখান থেকে উভয়ের প্রস্থান]
২য় দৃশ্য
[ঘুঘুর ছানা নামানোর জন্য মিথিলা আর টুনি যাচ্ছে]
মিথিলাঃ- জানিনা আল্লাহ মুই যে কবে বিয়া হরমু,
মোনের মোতো পোলা যে মুই কই খুইজ্জা পামু ।
যামু মুই হেই পোলার ঘরে যামু ।(মিথিলা একটু পাগলের মত দোলবে দোলবে আর গানের সুরে এই কথাগুলো বলবে)
টুনিঃ- ওহ ফুপজান তুমি কি কও?
মিথিলাঃ-বুঝবিনা তুই । তুই এইহানে খারা টুনি । মুই গাছে উইড্ডা দেহি ছাও কতো বড়ো অইচে ।(এই বলে মিথিলা গাছে উঠে গেল)
টুনিঃ- ঠিকাছে ফুপজান ।(টুনি নিচে দাড়িয়ে আছে)
৩য় দৃশ্য
[এদিকে আফজাল চৌধুরীর ছেলে নয়ন চৌধুরী ঢাকা থেকে গ্রামের পথ দিয়ে আসছে । তার ঘাড়ে একটা ঝুলানো ব্যাগ]
জনৈক বুড়ো ব্যক্তিঃ- কিরে নয়ন বাবাজি ঢাহা থেইক্কা আইছো নাহি?
নয়নঃ- জ্বি চাচা আসসালামু আলাইকুম । কেমন আছেন?
জনৈক বুড়ো ব্যক্তিঃ- এইতো আল্লায় তোমাগো দোয়ায় ভালো রাখছে । তয় যাও বাড়ি যাও,কতদিন পর ঢাহাইদ্যা আইচো ।
নয়নঃ- জ্বি চাচা যাচ্ছি ।
[জনৈক বুড়ো ব্যক্তির প্রস্থান]
নয়নঃ- কিরে টুনি মামুনি তুমি এইখানে কি করো ।
টুনিঃ- চাচা আমহে আইচেন? ফুপজানে না গাছে ওড়চে ছাও নামাবে ।(টুনি ওর আঙ্গুল গাছের দিকে দিয়ে বলতেছে)
নয়নঃ- কি বলো মিথিলা গাছে?
মিথিলাঃ- হালার ছাও দ্যখতে আছিনা,বড় অইয়া উইররা গেছে মোনে অয় ।
নয়নঃ- ঐ মিথিলা ঐ গাছ থেকে নাম ।
মিথিলাঃ- নয়ন ভাই নাহি?নামতে আচি ।(মিথিলা গাছ থেকে নামলো)
নয়নঃ- এ তুই শুধু গায় গাতরে বড় হইচো,বুদ্ধি তোর হয় নায় । এত বড় একটা মেয়ে কখনও গাছে ওঠে? তো্র মধ্যেতো সেই ছোটকালের মত পাগলামি এখনও আছে ।
মিথিলাঃ- নয়ন ভাই মুই না ঘুঘুর ছাও নামাইতে ওঠছালাম ।
নয়নঃ- ইস তোর জন্য ছাও বসে থাকবে আনে । এখন বল তুই কেমন আছো?
মিথিলাঃ- ভালো ছেলাম,তয় মুই এহন আরো ভালো ।
নয়নঃ-কেনো তুই এখন আরো ভালো কেনো?
মিথিলাঃ-নয়ন ভাই তোমার লগে দ্যাহা অইচেনা হেইয়ার জিন্নে । ওরে মোনের মোতো পোলা মুই খুইজ্জা পাইয়া গেচি । এই পোলারে আল্লাহ মুই বিয়া হরমুরে ।
নয়নঃ- এ তুই কি বলো মিথিলা?মাথা ঠিক আছেতো তোর?যা এখন টুনিরে নিয়া বাড়ি যা । পাগল যেনো কোথাকার
মিথিলাঃ- হ ভাই মুই তোমার জিন্নে পাগল ।
[সকলের প্রস্থান]
৪র্থ দৃশ্য
[মোখলেছ মিয়ার দোকানে আড্ডা,তিন বন্ধু আসছে সকালে চা খেতে]
মহসিন তালুকদারঃ- এ মোখলেইচ্চা মোগো তিনজনারে তিনডা চা দে । চিনি কোম দিস ।
মোখলেছঃ-আমহেরা বয়েন চাচা,মুই চা দেতে আচি ।
খোকা মিয়াঃ- এ মোখলেইচ্চা মোরে এট্টা পান দিস ।
মহসিন তালুকদারঃ- কিরে আবজাল তোর পোলা আইচে বোলে বাড়ি?
আফজাল চৌধুরীঃ- হয় মোর পোলা কাইলগো বিয়ালে বাড়ি আইচে ।
মোখলেছঃ- চাচা আমহের পোলা বোলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিয়া বড় ডিগ্রিী লইয়া আইছে?(এই ন্যান আমহেরা চা পান ন্যান)
খোকা মিয়াঃ- হয় হোনলাম তোর পোলা লেহাপড়া শ্যস কইররা দ্যাশে আইচে । গ্রামের মানসের জিন্নে কি জানি কাম হরবে?
আফজাল চৌধুরীঃ- হয় তোরা ঠিকই হোনছো । এ খোকা তোর মাইয়াডারে বিয়া দ্যাওনা ক্যা?আর লেহাইয়া পড়াইয়া হইরবি কি?
খোকা মিয়াঃ- না মোর মাইয়ারে মুই এতো হহালে বিয়া দিমুনা । লেহাপড়া শ্যাস অবে হেইর পর বিয়া দিমু ।
মোখলেছঃ-হয় চাচা ঠিক কতা কইচেন । মুই ফাইব পর্যন্ত পইরছি মুইতো ল্যাহাপড়ার মর্ম কিচুডা বুঝি । পরে বিয়া দ্যান মৌমি আফারে । আর মহসিন চাচার মাইয়া ডারেতো একদোম পড়াইলেনা ।
মহসিন তালুকদারঃ- হোন মোখলেইচ্চা তুই দোহানদার,দোহানদারের মোতো থাক । বেশি কতা কইসনা । কয় টাহা অইচে এই নে ।
আফজাল চৌধুরীঃ- এ খোকা কাইল কিন্তু মোর বাড়ি একদম বেইন্নাহালে যাবি । মোর ক্ষ্যতে কাম হরতে অবে । মুই কিন্তু থাকতে পারমু নানে । মোর বেইন্নাহালে দক্ষিনপাড়ায় এট্টা শালিসি আচে ।
খোকা মিয়াঃ- ঠিকাছে দোস্ত যামু আনে । মোখলেইচ্চা পানে যে সুবারি দেচে হ্য একদম ট্যাংগার আডির মতো । দাত এক্কালে ভাইঙ্গা যায় ।(খোকা্ মিয়া পান চাবাচ্ছে আর বলতেছে)
মোখলেছঃ- চাচা মোর দোস কি? সুবারি কি মুই পয়দা হরি?
মহসিন তালুকদারঃ- এ ল মোরা এহন যাই ।
[সকলের প্রস্থান]
৫ম দৃশ্য
মিথিলাঃ- ভাবি মুই বিয়া হরমু । তুমি এট্টু ভাইরে বুঝাইয়া কইও । ভাই জানি বাপজানরে আর মায়রে বুঝায় ।
ভাবিঃ- তুই কারে বিয়া হইরবি? তোরে আবার বিয়া হরবে কেডা?
টুনিঃ- কি মজা ফুপজানের বিয়া,ফুপুজানের বিয়া,হে হে ।
মিথিলাঃ- ভাবি মুই নয়ন ভাইরে বিয়া হরমু ।
ভাবিঃ- এহ কাম আছেতো নয়নের মত এট্টা শিক্ষিত পোলা তোর মোতো মাইয়ারে বিয়া হরবে আনে । ল্যাহাপড়া তো কিচ্ছুই জানোনা । স্কুলের চৌকাডা তামাইত ড্যাংগাও নাই ।
মিথিলাঃ-ভাবি দ্যাহো এই সোমস্ত কতা কইলে কিন্তু মুই বিষ খাইয়া মইররা যামূ । নয়ন ভাইরে ছারা মুই বাঁচমুনা । হ্যারে মোর ভালো লাইগগ্যা গ্যাচে ।
ভাবিঃ- পাগল জানি কোতারগো । ঠিকাছে রাইতে মুই তোর ভাইরে বুঝাইয়া কমু আনে ।
মিথিলাঃ- উম্মাহ । ঠিকাছে ভাবি ।(ভাবিকে একটা চুমা দিল মিথিলা)
[সকলের প্রস্থান]
৬ষ্ঠ দৃশ্য
[রাতে মিথিলার ভাবি আর মিথিলার ভাইয়ের সাথে কথোপকথন]
মিথিলার ভাবিঃ- এই হোনচো মোগো মিথিলা তো নয়নরে বিয়া হরতে চায় । তুমি এট্টু তোমার মা বাপরে খুইল্লা কও ।
মিথিলার ভাইঃ- মিখিলার লগে কি তোমার ও মাথা খারাপ ওইচে নাহি?
মিথিলার ভাবিঃ- ক্যা কি অইচে?
মিথিলার ভাইঃ- নয়ন অইচে উচ্চ ল্যাহাপড়া । আর মোগো মিথিলা কি ক কইয়া খ কইতে পারে,যে ও নয়নরে বিয়া হরতে চায় । নয়ন কি জীবনে অরে বিয়া হরবে? মুই এ কতা মা বাপরে কইতে পারমু না সামনে আর এইসব কতা মোর ধারে কবা না । এহন ঘুমাও ।
৭ম দৃশ্য
[পথ থেকে খোকা মিয়ার শিক্ষিতা মেয়ে মৌমি আসছে,অপর দিক থেকে নয়ন আসছে]
নয়নঃ- এই তুমি মৌমি না?
মৌমিঃ- জ্বি নয়ন ভাই আমি মৌমি । আপনি গ্রামে কবে আসলেন? শুনলাম আপনি নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া কমপ্লিট করেছেন?
নয়নঃ- হ্যা মৌমি । তুমি এখন কিসে পড়ো?
মৌমিঃ- নয়ন ভাই আমি বরিশাল বিএম কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ি ।
নয়নঃ- ওহ ভালো,ভালো । এগিয়ে যাও । খোকা চাচায় কেমন আছে?
মৌমিঃ- জ্বি ভালো আছে । আপনার পরিবারের সবাই ভালো আছেতো?
নয়নঃ- হ্যা মৌমি সবাই ভালো আছে । আচ্ছা ঠিকাছে তুমি এখন কলেজে যাও ।
মৌমিঃ- ঠিকাছে নয়ন ভাই । আপনার সাথে কথা বলে বেশ ভালো লাগলো ।
[উভয়ের প্রস্থান]
৮ম দৃশ্য
[ফুল বাগানে মিথিলা ফুল ছিড়তে আসছে]
নয়নঃ- এই মিথিলা তুমি কি করো এইখানে?
মিথিলাঃ-ওহ নয়ন ভাই আমহে । মুই না এইহানে ফুল ছেড়তে আইছি ।
নয়নঃ-হাহা ফুল দিয়া কি করবা?
মিথিলাঃ-নয়ন ভাই আমহেরে দিমু কিন্তু আমহে তো হ্যার আগে চইল্লা আইচেন ।
নয়নঃ- কেনো আমাকে ফুল দিয়া কি করবা?
মিথিলাঃ- নয়ন ভাই মুই আমহেরে ভালোবাইস্সা হালাইচি । মুই আমহেরেই বিয়া হরতে চাই ।
নয়নঃ- ছ্বি মিথিলা তুমি এই ধরনের কথা বলতে পারলে? আমি তো তোমাকে আমার আপন ছোটবোনের মত দেখি ।
মিথিলাঃ- নয়ন ভাই মুই আমহেরে ছারা বাঁচমুনা । মুই আমহেরেই বিয়া হরমু । এডা মোর চ্যলেন(চ্যলেঞ্জ) ।
নয়নঃ-পাগল মেয়ে যেনো কোথাকার যাও এখন বাড়ি যাও ।
মিথিলাঃ- আমহেরে মুই দেইক্কা লমু,দেহি মোগো বিয়া ঠ্যাহায় কেডা হুম ।(মুখ ভেংচি দিয়া)
[নয়ন চলে গেলো]
৯ম দৃশ্য
নয়নঃ-চাচা কেমন আছেন?
খোকা মিয়াঃ- এইতো বাপজান ভালো আছি । তুমি কি রোহম আচো ।
নয়নঃ- জ্বি চাচা ভালো । আপনার কাজকর্ম কেমন চলছে?
খোকা মিয়াঃ- এইতো আল্লায় দেলে ভালো তোমাগো দোয়ায় । দিন আনি দিন খাই । হেইয়ার উপার আবার মা মরা মাইয়াডারে পরান লাগে ।
নয়নঃ- চাচা একটু কষ্ট হলেও আপনি মৌমিকে পড়িয়ে যান । দরকার হইলে আমি হেল্প করবো ।
খোকা মিয়াঃ- ঠিাকাছে বাপজান । মোগো বাড়ি বেড়াইতে যাইও ।
নয়নঃ- আচ্ছা চাচা সময় হইলে যাবো ।
[উভয়ের প্রস্থান]
১০ম দৃশ্য
মিথিলাঃ- ভাবি তুমি ভাইজানরে বিয়ার কতা কইচো?
ভাবিঃ-কইচি । কিন্তু তোর ভাই তোর মা বাপরে এই কতা কইতে পারবে না ।
মিথিলাঃ-ভাবি তুমি কি কও । যাউক মুই নিজেই আইজগো বাপজানরে আর মায়রে কমু । নয়ন ভাইরে মুই বিয়া হরমুই হরমু ।
ভাবিঃ- তোর য্য ইচ্চা হেইয়া হর ।
[মিথিলার বাবা মায়ের রুমে মিথিলার আগমন । মহসিন তালুকদারকে তার স্ত্রী অর্থাৎ মিথিলার মা পান বানিয়ে দিচ্ছে আর মহসিন তালুকদার খাচ্ছে]
মিথিলাঃ-বাপজান মোরে বিয়া দিয়া দ্যও মুই নয়ন ভাইরে বিয়া হরমু ।
মিথিলার বাবাঃ- বামন অইয়া চান্দের গায় হাত দেতে চাও । তোরে জিবনে নয়নের মোতে এট্টা শিক্ষাতো পোলায় বিয়া হরবে? পাগলি মাইয়া জানি মোর কোতার ।
মিথিলার মাঃ- মাইয়াডারে নষ্ট হরার গোড়ায় সব আমহে । ল্যাহা পড়া হিহাইলেন্না । এক্কালে মাইয়াডা আল্লাদে ব্যাড়া বাইয়া গ্যাছে । নয়নের মোতো পোলায় অরে বিয়া হরবে আনে । খাইয়া বইয়াতো আর কোনো কাম নাই । হারাদিন খালি মাইয়াডা লাফালাফি হরতে থাহে । যা এহাইন্দা যা তুই ।
মিথিলাঃ- দ্যাহো তোমরা আমারে যদি নয়ন ভাইর লগে বিয়া না দ্যাও হেলে কিন্তু মুই গলায় দড়ি দিয়া মরমু ।
মিথিলার বাবাঃ- হাহা পাগলি মাইয়া মোর আয় মোর বোহে আয় মা,এ কতা কয় না ।
মিথিলার মাঃ- সব নষ্টের গোড়ায় আমহে ।
[মিথিলা রাগ করে চলে গেলো]
১১তম দৃশ্য
এলাকায় এক উদ্ভট টাইপের ছেলে আছে নাম উজ্জল । ছেলেটি খুব বখাটে । দুই হাতে বেসলাইট সহ অনেক কিছু পরা । চুল বড় বড় । খুব স্টাইল দেখাইয়া হাটে সে ।
উজ্জলঃ-মিথিলা এই ফুলটি নাও । আই লাভ ইউ জান ।
মিথিলাঃ- উজ্জল ভাই আমহে কিন্তু লিমিট ছাড়াইয়া গ্যাছেন একদম ।
উজ্জলঃ- মিথিলা আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবোনা । আমি তোমাকেই বিয়া করবো জান ।
মিথিলাঃ- এই ব্যাদব তুই জানোনা মুই নয়ন ভাইরে বিয়া হরমু? নয়ন ভাইরে ছারা মুই বাঁচমুনা ।
উজ্জলঃ- হাহাহা নয়ন কি তোমাকে জীবনে বিবাহ করবে?করবে না । আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবোনা । চলো আজই তোমাকে আমি বিয়া করমু ।(মিথিলার হাত টান দিয়ে উজ্জল এই কথা বললো)
মিথিলাঃ-ব্যাদব ।(ঠাস করে উজ্জলকে মিথিলা একটা চড় মেরে দিল)
উজ্জলঃ- মিথিলা তুমি কাজটি ভালো করনি । আমি তোমাকে বিয়ে করেই ছাড়বো ।
[উভয়ের প্রস্থান]
১২তম দৃশ্য
[মোখলেছের চায়ের দোকানে নয়ন ও নয়নের বন্ধু রনির আগমন]
নয়নঃ-মোখলেছ ভাই কেমন কি আছেন?আমাদের দুইটা চা দেনতো ।
মোখলেছঃ- এই আল্লায় দেলে ভালই আছি । তা ভাইজান আমহে বোলে এলাকার কি জানি উন্নয়ন করবেন । ঢাকাইদ্দা তো বড় শিক্ষা লইয়া আইছেন আমহে ।(এই ন্যান ভাইজান আমহেগো চা)
নয়নঃ- হ্যা মোখলেছ ভাই এলাকার উন্নয়ন করবো বলেই এলাকায় এসেছি । রনি দোস্ত তুই আমার কথাগুলো খেয়াল করে সুনিশ ।
রনিঃ- আচ্ছা ঠিকাছে নয়ন তুই বল ।(উভয় বন্ধু চা খাচ্ছে,মোখলেছ পান চাবাচ্ছে)
নয়নঃ- শোন আমি চাচ্ছি এলাকার উন্নয়ন করতে,যেমন বাল্যবিবাহ,বহুবিবাহ,যৌতুক,আত্মহত্যা,কুসংস্কার ইত্যাদি দূর করতে ।
মোখলেছঃ- হ ভাইজান এডা খুব ভালো কাম অবে ।
রনিঃ- দোস্ত তোর উদ্দেশ্য খুব ভালো । তবে এ কাজে আরো লোক দরকার ।
নয়নঃ- হ্যা লোকতো লাগবেই । কেনো জসিম,রিয়াজ,সাব্বির,ফয়সাল ওদের সকলকেই আমি এ ব্যপারে বলবো ।
মোখলেছঃ- ভাইজান ঐ যে আমহের আব্বার বন্ধু খোকা চাচার মেয়ে মৌমি আপায় কিন্তু অনেক ভালো এট্টা মাইয়া । জ্ঞান,বুদ্ধি,শিক্ষা দিক্ষা আল্লায় দেলে সব আচে । মৌমি আপারে কিন্তু এই কামে খাডাইতে পারেন ।
নয়নঃ- মোখলেছ ভাই আপনি ঠিক কথা বলছেন । দেখি আমি এখনই ওদের বাড়ি যাবো এ বিষয়ে কথা বলতে ।তাছাড়া খোকা চাচায় ও আমাকে তাদের বাড়ি যেতে বলছে । এই রনি চল ।
[উভয়ের প্রস্থান]
১৩ তম দৃশ্য
রনিঃ- দোস্ত তুই যা,আমার বাড়িতে একটু কাজ আছে ।
নয়নঃ- আচ্ছা ঠিকাছে ।
[মৌমিদের বাড়িতে নয়নের আগমন]
নয়নঃ- মৌমি বাড়ি আছো নাকি?
মৌমিঃ- কে? ও নয়ন ভাই! এতো গরিবের বাড়ি হাতির পারা । বসেন ভাই ।(মৌমি একটা চেয়ার টেনে দিল)
নয়নঃ- কি সব কথা বলছো । শোনো মেৌমি আমি চাই এলাকা থেকে,বাল্য বিবাহ,বহুবিবাহ,যৌতুক,আত্মহত্যা,কুসংস্কার ইত্যাদি দূর করতে । আর আমাদের সাথে তোমার কাজ করতে হবে ।
মৌমিঃ-ওহ এটিতো নয়ন ভাই খুব ভালো একটি উদ্দোগ । আমি আছি আপনার পাশে ।
নয়নঃ- ধন্যবাদ । চাচায় কোথায়?
মৌমিঃ- আব্বা কাজে গেছে ঐ কান্দায় নয়ন ভাই ।
নয়নঃ- আরে তুমি বারবার আমাকে ভাই ভাই বলছো কেনো মৌমি? নাম ধরে ডাকোনা ।
মৌমিঃ- কি বলেন ভাই আপনিতো আমার বড় ।
নয়নঃ- দেখো মৌমি তোমাকে আমি সেই ছোটকাল হতেই পচন্দ করি । তাছাড়া তোমার আলাপচারিতা,কথাবার্তা আমাকে দারুনভাবে মুগ্ধ করেছে । ঢাকা থেকে আসার পর তোমাকে প্রথম দিন দেখে আমি সারা রাত ঘুমাতে পারিনি । actually আমি তোমাকে ভালো বেসে ফেলেছি ।
মৌমিঃ- আমিতো মেয়ে মানুষ তাই বুক ফাটেতো মুখ ফাটেনা । আমিও তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি । কিন্তু লজ্জায় বলতে পারি নাই । তাছাড়া তোমার ফ্যমিলি অনেক ধনি । আর আমরাতো খুব গরিব ।
নয়নঃ-দেখো মৌমি ভালোবাসায় গরিব ধনী বলে কোনো কথা নাই । আমি তোমাকে ভালোবাসি এটাই শেষ কথা । আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই । তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না মৌমি ।(এই কথা বলে দুজন দুজনাকে কেঁদে দিয়ে জড়িয়ে ধরলো)
নয়নঃ- মৌমি তোমার জন্য আমি একটা ফোন নিয়ে এসেছি । এই ফোনটি নাও আমি এটাতেই ফোন দিয়ে তোমার সাথে কথা বলবো ।
মৌমিঃ- না তুমি আবার ফোন আনছো কেনো?এটা আমার লাগবেনা ।
নয়নঃ- আরে ধরো মৌমি ।(মৌমি ফোনটা নিল)
[খোকা মিয়ার আগমন]
খোকা মিয়াঃ- মৌমি মা এই বাজারডা নে ।(হাতে তার একটা লাউ ও ব্যগে বাজার)
মৌমিঃ- বাবা রাখো এইখানে ।
নয়নঃ- চাচা আসসালামুআলাইকুম ।
খোকা মিয়াঃ- কিরে বাবাজি তুমি কহন আইলা? এ মৌমি বাবাজিরে খাইতে কিছু দেছো?
নয়নঃ- না চাচা কিছু দিতে হবেনা ।
মৌমিঃ- আপনারা বসেন । আমি মুড়ি আর গুড় নিয়া আসছি ।
(মৌমি মুড়ি আর গুড় নিয়া আসলো,নয়ন আর খোকা মিয়া খাইলো)
নয়নঃ- চাচা আমি এখন বাড়িতে যাচ্ছি ।
খোকা মিয়াঃ- কি কও বাবা খাইয়া দাইয়া যাবা ।
মৌমিঃ- হ্যা তাই ।
নয়নঃ- না চাচা আমি এখন যাই অন্য এক সময় আসবো । মৌমি থাকো ।
[নয়নের প্রস্থান]
১৪ তম দৃশ্য
মিথিলাঃ-নয়নরে আমি বিয়া হইররা ই ছাড়মু । ঐ মৌমি কই যাও?এদিকে আয় ।(একটা গাছের নিচে বসে বসে বলতেছে)
মৌমিঃ- ওহ মিথিলা তুই এখানে কি করো? আমি কলেজে যাচ্ছি ।
মিথিলাঃ- তুই এইহানে বহ,এট্টু কতা কই তোর লগে ।(মিথিলার তখন চোখ পরলো মৌমির মোবাইলের দিকে)
মৌমিঃ- জ্বি বল তুই কেমন আছো?
মিথিলাঃ- এ তুই মোবাইল পাইলি কোতায়? তোরাতো জম্মের গরিব । টাহা দেছে কেডা?
মৌমিঃ- আমি এ মোবাইলটা কিনি নাই । এটা নয়ন আমাকে দিছে ।
মিথিলাঃ- কি কইলি তুই? তুই নয়নের লগে প্রিত জোড়াইছো নাহি?(এই কথা বলে মিথিলা মৌমিরে হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে এক আচাড় দিয়ে ভেঙ্গে ফেললো)
[মৌমি কোনো কথা না বলে মুখ কালো করে চলে গেল]
১৫ তম দৃশ্য
এদিকে নয়ন,নয়নের বাবা আফজাল চৌধুরী ও নয়নের মা ডাইনিং টেবিলে খেতে বসছে ।
নয়নের বাবা(আফজাল চৌধুরী)ঃ- কই পোলাডারে বড় ঐ মাছের মাথাডা দ্যও । কতদিন পর পোলাডায় বাড়ি আইচে ।
নয়নের মাঃ- হ দেতে আচি । পোলাডায় এতদিন কি খাইচে না,না খাইচে ।
নয়নঃ- না মা আমাকে দিতে হবেনা । তুমি মাছের মাথাটা আব্বাকে দাও ।
[এর মধ্যে নয়নের বাড়িতে মিথিলার আগমন]
মিথিলাঃ- নয়ন ভাই কও তুমি আমারেই বিয়া হরবা । আমি তোমারে বিয়া হরার জিন্নে পাগল অইয়া গেছি ।(নয়নের পা জড়িয়ে ধরে)

নয়নঃ- এ তুই আসলেই পাগল হইয়া গোছো,ছাড় আমার পা ছাড় ।
নয়নের মা+বাবাঃ- এ আবার কি ঘঢনা ।
মিথিলাঃ- নয়ন ভাই আমারে তুমি বিয়া হরবা কবে হেইয়া কও?
নয়নঃ- শোন হাত পা যাই ধরো হবেনা কোনো কাজ,
তোর তো দেখছি মিথিলা নাই কোনো লাজ ।
ছার আমার পা ছার ।(এই কথা বলে নয়ন ভাত পুরোপুরি না খেয়ে ধাক্কা দিয়ে ওর পা ছাড়িয়ে ওর রুমে চলে গেলো)
মিথিলাঃ- নয়ন ভাই মোরে তুমি পাগল বানাইয়া দেলা,মুই তোমারে বিয়া হইররাই ছারমু ।
নয়নের মাঃ- ইস আইছে অর মত এট্টা অশিক্ষিত মাইয়ারে মোর শিক্ষিত পোলা বিয়া হরবে আনে । খাইয়া বইয়া কাম আচে তো । যা এহন ।(ঝাড়ি দিয়ে)
[মিথিলা কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলো]
১৬ তম দৃশ্য
এদিকে মিথিলার খাওয়া দাওয়া একবারে বন্ধ ।
মিথিলাঃ- বিয়া মুই নয়নরে হইররাই ছারমু । নয়নরে ছারা মুই বাঁচমুনা ।
টুনিঃ- ও ফুপজান তুমি হারাদিন কি কও । লও মায় ভাত খাইতে ভোলায় ।
মিথিলাঃ- না মুই ভাত খামুনা ।
মিথিলার ভাবিঃ- এ তুই ভাত খাবিনা? ল ভাত খাইতে ল ।
মিথিলাঃ- ভাবি তুমি এট্টু আব্বারে কও নয়ন ভাইর লগে মোরে বিয়া দেতে ।
ভাবিঃ- মুই পারমুনা । তোর যদি বিয়ার খাউজ থাহে তয় তুই যাইয়া আব্বারে ক ।
[মিথিলা কান্না করতে করতে ওর বাবার রুমে প্রবেশ করলো]
মিথিলার বাবাঃ- কি অইচে তোর মা?কান্দো ক্যা?
টুনিঃ- দাদা জানো ফুপজানে হারাদিন কিচ্ছু খায়নায়,আর খালি কান্দে ।
মিথিলাঃ- বাবা মোরে নয়ন ভাইর লগে বিয়া দিয়া দ্যাও নায় কিন্তু মুই বাঁচমুনা ।
মিথিলার বাবাঃ- কি কও মা নয়ন অইচে কত উচ্চ শিক্ষিত । নয়ন কি তোর মতো এট্টা অশিক্ষিত মাইয়ারে বিয়া হরবে মা?
মিথিলার মাঃ- সব আমহের আল্লাদ । মাইয়াডা এহন আল্লাদে ব্যাড়া বাইয়া গেছে ।
মিথিলাঃ- বাবা তুমি তোমার বন্ধুরে এট্টু বুঝাইয়া কও । না কইলে কিন্তু আমি বিষ খামু ।
মিথিলার বাবাঃ- কি কও তুই মা । আইচ্চা কান্দিসনা তুই,মু্ই কাইলগোই আবজালের বাড়ি যামু ।
(এ কথা শুনে মিথিলা খুব খুঁশি,চোঁখের জল মূছলো)
[মিথিলার প্রস্থান]
১৭ তম দৃশ্য
নয়নঃ- মৌমি তোমার মোবাইল বন্ধ পাই কেনো?
মৌমিঃ- মোবাইলটা মিখিলা ভেঙ্গে ফেলছে ।
নয়নঃ- কেনো?
মৌমিঃ- তুমি আমাকে মোবাইলটা দিছো তাই । তোমার নাম শোনার সাথে সাথেই রাগ করে ভেঙ্গে ফেলছে ।
নয়নঃ- যাক কিছু মনে করোনা জান । মিথিলা একটু পাগল টাইপের । এখন শোনো আমি চাচ্ছি তোমাকে বিয়ে করতে ।
মৌমিঃ- তোমার মা বাবা কি এ বিয়ে মেনে নিবে?
নয়নঃ- শোনো মৌমি সব আমি দেখবো তুমি শুধু তোমার বাবাকে প্রস্তাব নিয়া আমার বাবার কাছে যেতে বলবে ।
মৌমিঃ- আচ্ছা ঠিকাছে জান । আমি বাবাকে সব বুঝিয়ে বলবো ।
[উভয়ের প্রস্থান]
১৮ তম দৃশ্য
[আফজাল চৌধুরীর বাড়িতে অর্থাৎ নয়নদের বাড়িতে মিথিলার বাবা মহসিন তালুকদারের আগমন]
আফজাল চৌধুরীঃ- কিরে মহসিন তুই এই বেইন্নাহালে মোর বাড়ি?
মহসিন তালুকদারঃ- আইচি এট্টা কতার কাম কইতে ।
আফজাল চৌধুরীঃ- কি আবার তোর কতার কাম?
মহসিন তালুকদারঃ-তোর পোলা নয়নের লগে মোর মাইয়ার মিথিলার বিয়া দেতে চাই ।
আফজাল চৌধুরীঃ- ইস মগের মুল্লুক পাইচে । অর অশিক্ষিত পাগলা মাইয়ার লগে মোর উচ্চ শিক্ষিত পোলারে বিয়া দিমু আনে ।
নয়নঃ- চাচা আপনি এটা কি বলেন আমিতো মিথিলাকে আমার আপন ছোট বোনের মত দেখি । ওরে বিয়া করবো কিভাবে বলেন?
মহসিন তালুকদারঃ- দ্যাহো বাপজান মাইয়াডা আমার তোমারে বিয়া হরার জিন্নে একদম খাওয়া দাওয়া,নাওয়া সব ছাইররা দেছে । তোমারে বিয়া হরার জিন্নে পাগল অইয়া গেছে ।
আফজাল চৌধুরীঃ- পাগল অয় অউক,হেইর জিন্নে মোর পোলার লগে মুই জিবনেও তোর মাইয়ারে বিয়া দিমুনা ।
মহসিন তালুকদারঃ- দ্যাখ দোস্ত মোর মাইয়াডারে বাঁচা তুই । আল্লারস্তে বিয়াডা দিয়া দে তুই ।
আফজাল চৌধুরীঃ- জীবনেও না । তুই এহন হহালে যা । নায় কিন্তু মুই বন্দু টন্দু কিছু দেকমুনা । যা এহন যা ।(চিৎকার দিয়ে)
[মহসিন তালুকদার মন খারাপ করে অপমানিত হয়ে চলে আসলো]
১৯ তম দৃশ্য
মৌমি ঘরের এক কোনে মন খারাপ করে বসে আছে ।
খোকা মিয়াঃ- কি মা তোর অইচে কি? মুখ কালা ক্যা?
মৌমিঃ- বাবা আমি নয়নকে ভালবাসি । নয়নও আমাকে ভালবাসে । নয়ন আমাকে বিয়ে করতে চায় । নয়ন তোমাকে প্রস্তাব নিয়া ওর বাবার কাছে যেতে বলছে ।
খোকা মিয়াঃ-দ্যাখ মা গরিবের সব আশা কোনোদিন পুরন অয়না । নয়নরা কত ধনী । আবজাল এডা কোনোদিনও মাইন্না নেবেনা ।
মৌমিঃ-দ্যাখো বাবা তুমি প্রস্তাব নিয়া যাও । নয়ন বলছে সব ও ম্যানেজ করে নিবে । বাবা আমি নয়নরে ছাড়া বাঁচবোনা ।(কেঁদে দিয়ে)
খোকা মিয়াঃ- ঠিকাচে মুই হেলে কাইলগো তোর বিয়ার প্রস্তাব লইয়া যামু । এহন মোরে ভাত দে মা । তোর কষ্ট মুই বুঝি । তোর বাপ মা সব ইতো মুই । হেই তোর ৩ বচ্ছর বয়সের সোমায় তোর মায় মইররা গেছে । যামু মুই কাইলগোই যামু ।
মৌমিঃ- আচ্ছা ঠিকাছে বাবা । আসো ভাত খেতে আসো ।(একটু হাসি মুখে)
২০ তম দৃশ্য
এদিকে মহসিন তালুকদার আফজাল চৌধুরীর বাড়ি থেকে অপমানিত হয়ে রাগে ঘরের মধ্যে গম গম করে ঢুকতেছে ।
মিথিলাঃ- বাপজান কি খবর মোরে নয়ন ভাই বিয়া হরবে?
মিথিলার বাবাঃ- একদম তুই কোনো কতা কবিনা । তোর মতো অশিক্ষিত মাইয়ারে নয়ন বিয়া হরবে না । আমারে আবজাল অপমান হরচে ।
মিথিলাঃ-বাপজান তুমি কি কও?(কেঁদে দিয়ে)
মিথিলার ভাবিঃ- মিথিলা আয় ভাত খাইতে আয় ।
মিথিলাঃ- ভাবি তুমি যাও মুই ভাত খামুনা । ও আল্লা তুমি এ কি খবর হুনাইলা ।
মিথিলার ভাইঃ- দ্যাখচো তোর জিন্নে আইজ বাপজান কতো অপমানিত অইলো । বাপজানের এলাকায় এট্টা সম্মান আছে । বাপজানে সবজাগা শালিশি মালিশি হরে ।
মিথিলাঃ- নয়ন তুই আমারে বিয়া না হরলে তোর খবর আচে নয়ন ।( মিথিলা এক কথা বারবার বলতেছে আর কাঁদতেছে)
২১ তম দৃশ্য
[আফজাল তালুকদারের বাড়িতে খোকা মিয়া আগমন]
আফজাল তালুকদারঃ- কিরে খোকা খবর কি তোর?
খোকা মিয়াঃ- খবরতো এট্টা আছে দোস,কিন্তু মোর কইতে ভয় হরতে আছে ।
আফজাল তালুকদারঃ- আরে ক তুই ।
খোকা মিয়াঃ- তোর পোলা নয়ন আর মোর মাইয়া মৌমি একজন আরাক জনারে পচন্দ হরে । মুই আইছি তোর পোলার লগে মোর মাইয়ার বিয়ার প্রস্তাব লইয়া ।
[নয়ন আড়ালে থেকে সব শুনতেছে]
আফজাল তালুকদারঃ- এহ বামন অইয়া চান্দের গায় আত(হাত) দেতে চাও । ব্যাডা তুইতো খয়রাতি তোর মোতো খয়রাতির মাইয়ারে মুই মোর ঘরে আনমু,খাইয়া বইয়া কাম আচে তো মোর ।
[নয়নের আগমন]
নয়নঃ- দেখো বাবা তুমি চাচাকে অপমান করবে না । চাচাতো তোমার বন্ধু । আমি মৌমিকে ভালবাসি । তাছাড়া মৌমি খুব ভালো একটা শিক্ষিতা মেয়ে । ভালবাসার ক্ষেত্রে ধনী গরিব নাই বাবা ।
নয়নের মাঃ- হ মৌমি খুব ভালো মাইয়া । মোগা নয়নের লগে অরে ভালো মানাবে । মুই মৌমিরে মোর পুতের বউ হিসাবে ঘরে আনতে চাই । তুমি মাইন্না ন্যাও নয়নের বাপ ।
আফজাল চৌধুরীঃ-ঠিকাচে তোমরা হক্কলে যহন কও মুই রাজি । আর সত্যিই মৌমি ভালো এট্টা মাইয়া । তাইলে খোকা তুই বিয়া কবে হালাইতে চাও?
খোকা মিয়াঃ- মাশাল্লাহ । বিয়াডা মুই সামনের শুক্রুরবার হালাইতে চাই ।
আফজাল চৌধুরীঃ- ঠিকাছে টাহা পয়সা লাগলে মোর ধাইরদা নিস । তুই বিয়ার আয়োজন হর । এই নে কিছু টাহা । বিয়ার কাড ছপাইস । বোঝনা মোর এট্টা মানিজ্জাত আচেনা ।
খোকা মিয়াঃ- ঠিকাছে কাড ছাপামু আনে ।
[খোকা মিয়ার প্রস্থান]
২২ তম দৃশ্য
[এদিকে মৌমি,নয়ন খুব খুঁশি । খোকা মিয়া সবার বাড়ি বিয়ার কার্ড় বিতরন করতেছে]
[বিয়ের কার্ড নিয়ে খোকা মিয়ার মিথিলার বাবা মহসিন তালুকদারের বাড়িতে আগমন]
মহসিন তালুকদারঃ- কি খবর খোকা?
খোকা মিয়াঃ- আরে তালুকদার সুখবর আচে । মোর মাইয়ার লগে এই সামনের শুক্রুরবার আবজালের পোলা নয়নের লগে বিয়া । আর এইডা অইচে হেই বিয়ার কাড ।
মহসিন তালুকদারঃ- কি এই নাহি ঘঢনা ।(চিৎকার দিয়ে)
মিথিলাঃ- নয়ইন্না মোর লগে বেইমানি হরছে । মুই নয়ন আর মৌমি দোনোডারে খুন হরমু । এ দাহান কই?(এই বলে মিথিলা দা হাতে নিল)
মিথিলার ভাবিঃ- এ থো থো দাহান থো ।
মিথিলাঃ- নয়ইন্না মোরে বিয়া না হইররা মৌমিরে বিয়া হরবে,মুই এট্টারেও বাঁচামুনা ।
খোকা মিয়াঃ- এ অরে থামাও মুই গেলাম ।
[খোকা মিয়ার প্রস্থান]
২৩ তম ও শেষ দৃশ্য
শুক্রবার এসে গেল । খোকা মিয়ার বাড়ি বিয়ের আয়োজন হলো । বরযাত্রিও এসে গেছে । কিন্তু বিয়েতে মহসিন তালুকদার আসেনি ।
আফজাল চৌধুরীঃ- খোকা মেয়া কাজী সাহেবরে বিয়া পরাইতে কও ।
খোকা মিয়াঃ- হয় ও কাজী সাব বিয়া পরান ।
কাজীঃ- আচ্ছা পড়াইতেছি ।
এদিকে এই বিয়ের খবর শুনে মিথিলার খুব খারাপ অবস্থা । সে সারাদিন না খাওয়া । সে শুধু বলতেছে মুউ নয়ইন্নারেই বিয়া হরমু,সবগুলারে খুন হরমু । এইসব বলতে বলতে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেললো ।
মিথিলার ভাবিঃ- এ কেডা কোতায় আচেন । মিথিলা বিউশ(বেহুশ) অইয়া গ্যাছে ।
মিথিলার ভাইঃ- বাপজান মিথিলার খুব খারাপ অবস্থা । ধরেন অরে হাসপাতালে লইয়া যাইতে অবে ।
মিথিলার বাবাঃ- কি অইচে মোর মাইয়ার? এ তোরা ধর অরে ভ্যনে হইররা হাসপাতালে লইয়া যাইতে অবে ।
অবশেষে মিথিলাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় । মিথিলার জ্ঞান বাবরবার আসে আবার যায় । মিথিলা শুধু আবোল তাবোল বকতে থাকে ।
মিথিলার মাথায় সিটি স্ক্যান টেষ্ট করানো হয় ।
ডাক্তারঃ- মহসিন সাব আপনার মেয়ে পাগল হয়ে গেছে । ওকে পাগলা গারদে ভর্তি করতে হবে ।
মিথিলার বাবাঃ- কি কন ডাক্তার ভাই ।(কেঁদে দিয়ে)
এদিকে নয়ন আর মৌমির বিয়ে হয়ে গেছে । আর বিয়ের জন্য পাগল মেয়ে মিথিলা বর্তমানে পাগলা গারদে ভর্তি আছে । অবশেষে পরাজয় ঘটলো বিয়ের জন্য পাগল মেয়েটির ।
[সমাপ্ত]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.