![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের শাক-সবজি, তরিতরকারি এবং ফলফলাদি ইত্যাদি উদ্বৃত্ত হয় যেমন, তেমনি ঘাটতিও আছে। মৌসুমে শাক-সবজি তরিতরকারি এবং ফলফলাদি ইত্যাদি যে পরিমাণ উৎপন্ন হয় তা দেশের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকে বিপুল পরিমাণ; যা সাধারণভাবে চিন্তা করা অত্যন্ত কঠিন। অন্যান্য তরিতরকারি শাক-সবজির ৮০ ভাগই উৎপাদিত হয় শীত মৌসুমে। শীতকালের অল্প সময়ের মধ্যে বিভিন্ন সবজি এত অধিক উৎপন্ন হয় যে, শেষ পর্যন্ত সেগুলো কেনার লোক থাকে না। বিপুল উদ্বৃত্ত এবং ক্রেতার অভাবে তখন সেগুলো বিক্রি হয় পানির দরে। অনেক ক্ষেত্রে কৃষকের পরিবহন খরচও উঠে আসে না। উৎপাদন বেশি হলে শাক-সবজি পচে নষ্ট হয়। এর কারণ আমাদের দেশে শাক-সবজি সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই। দেশে উৎপাদিত পিঁয়াজের অর্ধেক নষ্ট হয় সংরক্ষণের অভাবে। মূলত দেশে হিমাগারের ভয়াবহ সঙ্কট। অথচ ফলমূল, শাক-সবজি, তরিতরকারি সংরক্ষণের যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হলে একদিকে যেমন চাষী লাভবান হবে তেমনি সাধারণ নাগরিকও অনেক কমদামে সবকিছু খেতে পারবে। এ শীত মৌসুমে শুধু আলুই উৎপাদন হয়েছে আড়াই কোটি টনের অনেক বেশি।
দেশের প্রায় প্রতিটি থানায় যদি হিমাগার তৈরি করে তরিতরকারি, ফলফলাদি ও শাকসবজি ইত্যাদি সংরক্ষণ করা যায় তবে এ সংরক্ষণের দ্বারা একদিকে যেমন দেশের চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে; পাশাপাশি তা বিদেশে রফতানি করে হাজার হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব মতে, দেশে এখন ছোট-বড় ৩৮৮টি হিমাগার রয়েছে। নির্মাণাধীন আছে আরও ১০টির মতো হিমাগার।
সমিতির তথ্য অনুযায়ী, দেশের হিমাগারগুলোতে যত সবজি ও ফল সংরক্ষণ করা হয়, এর ৯০ থেকে ৯২ শতাংশই হচ্ছে আলু। চলতি মৌসুমে ৩৮০টি হিমাগারে প্রায় ৪০ লাখ টন আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮ থেকে ১০ লাখ টন বীজ আলু। বাকি ৮ থেকে ১০ শতাংশ হচ্ছে সবজি ও ফল। এর মধ্যে রয়েছে আপেল, মালটা, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচা মরিচ ও শুকনো মরিচ, তরমুজ। মূলত শহরকেন্দ্রিক কিছু হিমাগারেই সবজি ও ফল এবং নাটোর ও রাজশাহীর কিছু হিমাগারে আম, আমের জুস ও লিচুর জুস সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
বাস্তবে আরো হিমাগার থাকা প্রয়োজন হলেও তা নির্মাণ করা হচ্ছে না। সরকারের উচিত দেশের প্রায় প্রতিটি থানায়ই সরকারি অর্থায়নে আপাতত কমপক্ষে দুই লাখ টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন হিমাগার তৈরি করা।
দুই লাখ টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন হিমাগার তৈরি করতে সর্বোচ্চ ৩৫০ কোটি টাকা লাগবে। সে হিসেবে কমপক্ষে ৫০০টি হিমাগার তৈরি করতে সর্বোচ্চ মাত্র ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। ৫০০টি হিমাগারে ১০ কোটি টন খাদ্য সংরক্ষণ সম্ভব।
বাংলাদেশে আপাতত খাদ্যের চাহিদা মাত্র ৫ কোটি টন। ১০ কোটি টন খাদ্যসামগ্রী যদি সংরক্ষণ সম্ভব হয়; তাহলে আশা করা যায় দেশে আর কোন খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হবে না এবং খাদ্যাভাবও কোনদিন হবেনা ইনশাআল্লাহ। আর ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা একটা দেশের জন্য খুব বেশি নয়। কারণ অভিযোগ উঠেছে জোট সরকারের আমলে এক ব্যক্তিই দুর্নীতি করেছে দুই লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা। দেশে যদি টাকা না থাকে তাহলে তারা দুর্নীতি করে কীভাবে? তারপরেও উল্লেখ্য এ টাকাটা এক বৎসরেই প্রয়োজন হবে তা নয়। কারণ, এতগুলো হিমাগার তৈরি করতে কয়েক বৎসর প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে হিমাগার তৈরির ক্ষেত্রে এদেশের অনেক লোকের কর্মসংস্থানও হবে ইনশাআল্লাহ।
এতদ্বপ্রেক্ষিতে সরকারের উচিত, অবিলম্বে প্রায় প্রত্যেক থানায় কমপক্ষে একটি বা সর্বমোট ৫০০টি সরকারি হিমাগার করে কৃষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করা এবং না-খাওয়া মানুষ তথা সাধারণ মানুষের জন্য কমমূল্যে খাদ্য কেনার ব্যবস্থা করা; যা ইহকাল ও পরকালে কামিয়াবীর কারণ হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:২৩
নদীর তীরে বলেছেন: পরিকল্পনা না থাকার কারনেই এই অবস্তা আমাদের ।