| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আকাশের অনেক রং
ঘুড়ির মত উড়ে শঙ্খচিল, আকাশ ভেঙে যায় আমি ভাঙিনা বালিশ ঘুমে বেসামাল পতঙ্গরা প্রশ্ন রাখেনা
''এ জগতে হায় সেই বেশি চায়
আছে যার ভূরি ভূরি
রাজার হস্ত করে সমস্ত
কাঙালের ধন চুরি''
তখন আমি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি ।
রবিন্দ্রনাথের লিখা 'দু বিঘা জমি'
কবিতাটি আবৃতি করে প্রথম পুরস্কার
পাই স্কুলের রবিন্দ্রজয়ন্তি ও বার্ষিক
ক্রিড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে ।
কবিতা আবৃতি করে আরো অনেক পুরস্কার
পেয়েছিলাম স্কুল জীবনে । কিন্তু এই একটি কবিতা আমাকে খুব ভাবাতো ।
নিজেকে প্রতিনিয়ত কবিতার মুল চরিত্র
মনে করতাম ।
শাহাজান স্যার ইংরেজী পড়াতো । আব্বু
ভাল করে আমাকে চিনিয়ে দিয়েছিলো স্যারে
সাথে । স্যারের মাথা ছিলো প্রচন্ড রকমের গরম । পান থেকে চুন খসলেই
অনুভব করতাম পিঠের যন্ত্রনা । চোখ
গুলো লাল লাল, মোটা গোফ হালকা শরীরে স্যার ছিলো বেশ লম্বা ।
সেদিন মনে হয় বৃহস্পতিবার ছিলো । স্কুলে আসতে একটু দেরি হয়ে গেলো । পথে বাঁজিতে মারভেল খেলা দেখতে দেখতে । ক্লাসে এসে দেখি সবই পড়ছে । আমার
তখন সারা শরীরের কম্পন কে দেখে । মনের মধ্যে ভুমিকম্প চলে ।
স্যার : কিরে দাদার হাতের লাঠি,
দেরি হইলো কেন? (দাদার সাথে প্রায়
বাইরে যেতাম, স্যার জানতো সেটা, তাই
এই উপাধি)
হুট করে গুলিয়ে দিতে আমি পারতাম নাহ
। একটু ভাবতে হতো । তাই একটু চুপ থেকে বললাম,
আমি : স্যার দাদা বাজার
করতে নিয়ে গেছে ।
স্যার : আচ্ছা বাজার করা শেষ হইলে ক্লাসে আসিস ।
আমি অসহায়ের মত প্রায় ১০ মিনিট দাড়িয়ে ছিলাম বারান্দায় । আর মনে মনে ভাবছিলাম লম্বা লম্বা বেতের বাড়ির চাইতে দাড়িয়ে থাকাই ঢের শ্রেয় ।
অবশেষে স্যার আমার করুণ চেহারা দেখে ভিতরে আসতে ইশারা করে বলেন
'দু বিঘা জমি' শুনা ।
তার কয়েক দিন পরের ঘটনা । স্কুল পালিয়ে আমরা ৪ জন গেছি হলে বড় পর্দায় ছিনেমা দেখতে । নতুন কি যেন একটা রিয়াজের ছবি । প্রেমের তাজমহল হতে পারে । বাসায় এসে দেখি আব্বু
আমার লাঠি নিয়া তৈরি । স্কুল থেকে নাকি শাহাজান স্যার আব্বুর কাছে খবর পাঠাইছে ।
পরের দিন স্কুলে আমাদের ৪ জনের মধ্যে তিনজন কে ধরে.......... (একজন
আসেনি সেদিন)
আহা সেই মাইরের
কথা মনে পড়ে আমি শেষ......
আজ অনেকটা দিন পর এসব খুব মনে পড়ে ।
মাঝে মাঝে খুব নস্টলজিক হয়ে যাই ।
২০১১ সালে আমাদের স্কুলের প্রথম পূনমিলনী অনুষ্ঠান হয় । স্যার
নাকি তখন ইন্ডিয়াতে চিকিত্সা নিচ্ছে বড় কোন
হসপিটালে ।
স্যার এখন আরেকটা স্কুলের হেডমাষ্টার
। কয়েক দিন আগে অফিস থেকে ফেরার পথে স্যারের সাথে দেখা । শুকিয়ে একদম কাঠ হয়ে গেছেন । খুবই অসুস্থ স্যার । হার্টে কি যেন বড় অসুখ হইছে । মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
'ভালো আছিস? আমি আর বেশি দিন নাইরে.....
স্যার এখন আর আগের মত নেই । কেমন যেন হয়ে গেছেন । হয়তো জীবন বাধ্য করেছে এমন হতে । সেই গরম মেজাজ,
লাল লাল চোখ কিছু নেই এখন স্যারের । কথা বলতেও খুব কষ্ট হয় । স্যারের সাথে কাটানো স্কুলের সেই দিন গুলো নিমিষেই চোখের সামনে ভাসে উঠলো....
'' মানুষেরো যে আকাশের মত হৃদয় থাকতে পারে,
তাকে না দেখলে হয়তো আমার জানাই হতো নাহ,
রুপকথারই বাইরে যে এক বিশাল আকাশ আছে,
তার কাছে না শুনলে বোধ হয় শুনাই হতো নাহ,
আজকে আমার এ পৃথিবীর অনেক কিছু চেনা,
ব্যাক বোর্ডের ঐ কালো আকাশ আমায় এনে দেনা,
এনে দেনা বয়সটা সেই ছয় কিংবা শাত,
হয়তো আবার ফিরে পেতাম স্যারের কোমল হাত,
সালাম জানাই সহস্রবার
আমার তিনি গুরু,
যার কাছেতে হয়েছিলো
শিক্ষা জীবন শুরু''
২|
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২৭
আকাশের অনেক রং বলেছেন: হ্যা ভাই । ধন্যবাদ পড়ার জন্য...
৩|
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৫১
নীল সুমন বলেছেন: চমৎকার। ভাল লাগল।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৪৮
বংশী নদীর পাড়ে বলেছেন: স্মৃতিচারণ.... হ্যা....দিন গুলো আর ফিরে আসবে না.........