নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি হচ্ছে প্রেমে পড়ার মতন একটা ব্যাপার, কোনো ধরনের কর্তৃত্ব জাহির করা নয়।
নুশরাত জাহান নোহা (৯) আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের খাজুরিয়া দারুল ফালাহ প্রি ক্যাডেট একাডেমির ছাত্রী ছিল। গত ৫ সেপ্টেম্বর দারুল ফালাহ প্রি ক্যাডেট একাডেমিতে মাসিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে অকৃতকার্য হয় নোহা। একারণে বুধবার ৯সেপ্টেম্বর সহপাঠীদের সামনে তাকে মারধর করেন শিক্ষক শফিকুল ইসলাম। রাতে তাদের বাড়ির ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে নোহা। বিডিনিউজ২৪ডটকম এ উক্ত ঘটনাটি ঠিক এভাবেই উঠে এসেছে। পরীক্ষায় অকৃতকার্যের ঘটনায় আত্মহত্যার ঘটনা গণমাধ্যম মারফত জানা যায়, তবে তৃতীয় শ্রেনীর একটা শিশুর আত্মহত্যার ঘটনা এই সমাজের মুখে একটা সজোর চপেটাঘাত!
নোহার আত্মহত্যার দুটো কারণ হতে পারে, প্রথমত সবার সামনে মারধোর করার সে লজ্জা পেয়েছে। আর দ্বিতীয়ত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় বাবা-মায়ের বকা খাওয়ার ভয়ও পেতে পারে। শিশুদের জীবন এখন বৈচিত্রপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে আমরা হাসির ছলে বলি, শিশুদের এখন স্বর্ণযুগ চলছে। প্রযুক্তি’র কল্যাণে তাদের বায়না কিংবা দাবী একটু বেশিই থাকে। অনেক অভিভাবকরাও অনেক ক্ষেত্রে নিজের সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে বাচ্চাদের চাহিদা পূরনও করেন। এবং শর্ত জুড়ে দেন ক্লাসে পরীক্ষায় প্রথম হতে হবে। বাচ্চাকে ক্লাসে মেধাতালিকায় রাখতে অভিভাবকদের মধ্যে চলে এক অসম প্রতিযোগীতা।
শিশুর সামাজিকীকরণ এবং মনঃস্তত্ত্ব বিকাশে যে এজেন্টগুলো সমাজে কাজ করে তাতে পিতা-মাতার পরেই বিদ্যালয়-শিক্ষক-সহপাঠীদের অবস্থান। সেই বিদ্যালয়ের এই মাসিক পরীক্ষার ফলাফল পরবর্তীতে শিশুর আত্মহত্যা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো কতটা অন্তঃসার শূন্য হয়ে গেছি। আমরা সন্তানদের সংশোধন করিনা, অভিযুক্ত করে লজ্জিত করি, ছোট করি আর অপরাধীর মতো আচরণ করি। যা অনেক ক্ষেত্রেই শিশুদের হিতাহিত জ্ঞানশূন্য করে দেয়। শিশুদের তো মৃত্যু ভীতি থাকে না, তবে সেই মৃত্যুকেই সমাধানের পথ হিসেবে বেছে নেয়া কেন? এদেশে শিক্ষা ব্যবস্থা কি তবে শিশুদের মানসিক কারাগার হয়ে গেল!
বাচ্চাদের স্কুলের রিপোর্ট কার্ডের প্রতি থাকে আমাদের অহেতুক কৌতুহল আর অযাচিত উপদেশ। প্রায়শ বড়রা অভিভাকত্ব নয় বরং বাচ্চাদের উপর কর্তৃ্ত্ব জাহির করে ফেলে। প্রতিনিয়ত কর্তৃত্ব জাহির করতে থাকলে ভালো বাসতে বাসতে শিশুরা একসময় নিজেদের অজান্তেই চারপাশটাকে ঘৃণা করতে শুরু করে। নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। প্রত্যাশার চাপ শিশুদের শৈশবকে বিপন্ন করে তোলে। শিশুদের মনের উপর বাবা-মায়ের জীবনাচরনের একটা প্রভাব পড়ে। বাবা-মায়েরা শিশুদেরকে বলেন, ‘বাচ্চারা এগুলো করে না (মিথ্যে কথা বলে না)’, অথচ নিজেরা সেটা করেন প্রতিনিয়ত। শিশুদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে ,তাহলে কী বড়রা মিথ্যে বলতে পারে’। বাচ্চারা তো স্কুলে লেখাপড়া শিখছে, কোচিংয়ে নাচ-গান- আর্ট-অভিনয় শিখছে। নৈতিকতা তারা শিখছে কোথায়?
শিশুরা যদি ভাল-মন্দ, আসল-নকলের পার্থক্য বুঝতো তাহলে তাদেরকে আর শিশু বলা হতো না। শিক্ষকের তো ভুল ধরার কথা নয়। সর্বসম্মুখে শারীরিক নির্যাতন করে লজ্জিত করার কথা নয়, বরং ভুল শুধরে দেয়ার কথা। শিশুদের নিরন্তর ভালোবাসা, অপার আগ্রহ, একাগ্রতা, সৌজন্যতা, আর আত্মসচেতনহীন মনোভাব আমাকে মুগ্ধ করে। নয় বছরের এক শিশুর আত্মহত্যার ঘটনায় আমি হৃৎপিণ্ডে ব্যথা অনুভব করছি। শিশুদের প্রতি বন্ধুসুলভ হোন প্লিজ।
এই ঘটনাটা প্রথম আলো রিপোর্টে এসেছে ' শিক্ষার্থীর মৃত্যু: বাবার দাবি আত্মহত্যা, মা বলছেন হত্যা' শিরোনামে।
মূল বক্তব্য এমন যে, মেয়েটির দাদা তাঁর সব সম্পত্তি নাতনীর নামে লিখে দিবেন এই মনোভাব ব্যক্ত করার পর বাবা য় সৎ মা মিলে শিশুটিকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে। পৈত্রিক সম্পত্তি এক্ষেত্রে হত্যার কারণ। মেয়েটির বাবা সুমন মিয়া এবং মা তানিয়া আক্তারের ছাড়াছাড়ির পর মেয়েটি তার বাবা এবং সৎ মা ঝুমুর বেগমের কাছেই থাকতো।
শিশুদের প্রতি এই ধরণের পারিবারিক সহিংসতা আমাদেরকে অন্ধকার আগামীর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শিশুদের প্রতি পারিবারিক সহিংসতা নিতে এই ব্লগে আগেই একটা পোষ্ট দেয়া আছে। তাই আর পুনঃউক্তি করছি নয়া। ছোট্ট করে একটা প্রত্যাশাই করবো, শিশুদের নিরাপদ শৈশব এবং পারিবারিক আবহ নিশ্চিত হোক।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:১৮
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ওহ, ঘটনা এমন হলে তো সেটাও উদ্বেগের বিষয়।
২| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:২৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
এই বয়সে শিক্ষা হতে হবে আনন্দের।
প্রতিযোগিতা বা পাশ ফেলের নয়।
বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
আমি মর্মাহত।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০১
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: বাচ্চাদের কোনো শৈশব নাই, তাদের জন্য দিগন্ত জোড়া একটা মাঠ নাই, নিরাপদ পরিবার নাই।
এসবকথা ভাবলেই আমার চোখে পানি চলে আসে।
৩| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৪৩
রামিসা রোজা বলেছেন:
https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/শিক্ষার্থীর-মৃত্যু-বাবার-দাবি-আত্মহত্যা-মা-বলছেন-হত্যা
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০২
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ রামিসা রোজা, এটা পড়ার পর মতামত কলাম সংশোধন করে দিচ্ছি।
অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৪| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৩৩
নতুন বলেছেন: ৩য় শ্রেনী ছাত্রী আত্নহত্যার কি বোঝে? এবং কিভাবে কাজটা করতে পারলো এটাই একটা প্রশ্ন?
আরেকটা জিনিস আলোচনায় আসেনি সেটা হলো ২য় দফা অপমান এবং মারধোর যেটা তার পরিবার করেছে।
মানুষ খুব কাছের মানুষের থেকে আঘাত পেলে অনেক সময় এমন সিদ্ধান্ত নেয়।
বিষয়টা খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। কেন একটা ৩য় শ্রেনীর মেয়ে এমন ভাবলো।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৬
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: বাচ্চারা এখন অনেক বেশি তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যাচ্ছে। তাদের সাথে কথা বললে বোঝা যায় তাদের মানসিক বোঝা-পড়াকে কি এক ভ্যাকুয়াম গ্রাস করে ফেলছে। বড়দের সম্পর্কে কত নেতিবাচক ধারণা নিয়ে বড় হচ্ছে।
আগামী ১০বছর পরে কি হবে ভাবা যাচ্ছে না।
৫| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৪৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সম্ভবত শিশুটি পারিবারিক কোন ষড়যন্ত্রের শিকার !!
বিষয়টি আত্মহত্যা না হত্যা, তা তদন্তের দাবী রাখে।
নুসরাতের বাবা আত্মহত্যা বললেও মা তানিয়া বেগম আত্মহত্যা না
হত্যা সে বিষয়টি তদন্ত করার দাবী জানিয়েছেন। একইসঙ্গে ঘটনাটি হত্যা
হলে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারও দাবী করেছেন তিনি। তানিয়া জানান,
নুসরাতের বাবা সুমনের মোট চারটি বিয়ে। নুসরাত সৎ মায়ের সঙ্গে থাকতো।
তানিয়া চাইলেও তার কাছে দেয়া হয়নি। এমনকি মোবাইলে কথা বলতে দেয়া
হতো না। ডিভোর্সের পর তানিয়া বিয়ে করে ঢাকায় থাকেন।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৯
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: একটা শিশু আত্মহত্যা করুক কিংবা হত্যাকান্ডের শিকার হোক, ঘটনার দুটো দিকই সমান গুরুত্বের দাবি রাখে।
ধন্যবাদ নূর মোহাম্মদ।
৬| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৮
রানার ব্লগ বলেছেন: বাংলাদেশে শিক্ষা জিনিসটাই হোল শাস্তি স্বরুপ। আপনি পূর্ববর্তি কোন শিক্ষক কে জিজ্ঞাসা করুন, দেখবেন তাদের প্রাথমিক ধারনা হোল ছাত্র হোল সব বদ এদের লাঠির মাথায় না রাখলে এরা শিক্ষিত হবে না। শিক্ষার্তি কে মারধর অপমান করাটা আমাদের দেশের শিক্ষকেরা নৈতিক দায়িত্ব মনে করে, এটা তাদের পাঠদানের অঙ্গ মনে করে। অবশ্য এর জন্য আমাদের অভিভাবকরা ও দায়ী, প্রাই শুনি অভিভাবক শিক্ষক কে অনুরধ করছে, মেরে হাড্ডি গুড্ডি ভেঙ্গে দিতে, এমন শুনেছি যে শুধু হাড় কয়টা ফেরত দিলেই চলবে। আসলে আগে আমাদের ভেতর অন্তরনিহিত ধারনা পরিবর্তন করতে হবে তার পর শিক্ষা ব্যাবস্থার পরিবর্তন কামনা করতে পারি।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১১
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: অথচ শিক্ষকদের জন্য কর্মশালার আয়োজন করে তাদের প্রশিক্ষিত করা যে, বাচ্চাদের মানসিক অবস্থাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
কে শোনে কার কথা!
ধন্যবাদ রানা।
৭| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৯
বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: বাহ চমৎকার লেখা। মনস্তাত্বিকতা আছে লেখার শরীরে।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৯
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ বিএম বরকতউল্লাহ ।
৮| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: এরকম ঘটনা আমি সহ্য করতে পারি না। আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। খুব কষ্ট হয়।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১২
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: এইসব ঘটনা সহ্য করার মতোও নয়।
৯| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৩
নেওয়াজ আলি বলেছেন: বেকুব মা বাবার বেকুব সন্তান । পড়ার জন্য গরুর মত মারে।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৪
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: শুধু পড়ার জন্য গরুর মতো মারে না, নিজেদের স্বার্থে মেরে ফেলতেও দ্বিধা করা না।
১০| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪২
চাঁদগাজী বলেছেন:
কিছু জানার দরকার নেই, বুঝার দরকার নেই, চিন্তার দরকার নেই; শুনেই লিখে দিতে হবে!
১১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫২
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: কি দুঃখের কথা, কেন যে মানুষ এমন করে!
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:১০
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: এমন অনেক 'কেন'র উত্তর সম্ভবত কারোর-ই জানা নাই ভাই।
১২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৮
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এটা হত্যাও হতে পারে
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:১২
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: দেখা যাক তদন্ত প্রতিবেদনে কি আসে... হত্যা নাকি আত্মহত্যা।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:১২
রামিসা রোজা বলেছেন:
সেনসিটিভিটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
একটু আগেই আমি অনলাইন নিউজে পড়লাম, মেয়েটিকে
সৎ মা এবং বাবা মিলে হত্যা করেছে। কারণ কিছুদিন আগে
ওর দাদা ঘোষণা দিয়েছেন সম্পত্তি ওকে দান করবেন।
মেয়েটির মায়ের সাথে ওর বাবার ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল
এবং সৎ মার বাবার কাছে মেয়েটি থাকতো । মেয়ের মা
মামলা করেছে । বিশ্বস্ত অনলাইন নিউজ এ পড়লাম আমি লিংকটা খুঁজছি ।