![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আপনি কি জানেন এই ব্যাক্তিটি কে?
ইনি হচ্ছে আব্দুস সাত্তার ইধি। বাংলাদেশের শত্রু দেশ পাকিস্তানের একজন অতি সাধারণ ব্যাক্তি। ইনি কোনো মন্ত্রী মিনিস্টার নন, কোনো সাহিত্যিক নন, বিজ্ঞানী নন, তার জ্ঞানের জাহাজও নেই, অথবা নেই অনেক দৌলত সম্পত্তি। হ্যাঁ তিনি অতি সাধারণ, আপনার আমার মতই। তবে, আমরা যে হিরো বলি না? ইনি হচ্ছেন তেমন একজন হিরো। ঝলমলে কোনো সিনেমার নায়ক নন, বাস্তবের নায়ক, সত্যিকারের নায়ক।
তিনি প্রথম জীবনে একটি পাইকারি দোকানে কাজ করতেন। কিন্তু জীবন শেষে তার অর্জন তাকে মানুষের মনে বাঁচিয়ে রেখেছে।
এবার জানা যাক কি তার অর্জন?
দরিদ্রদের সহায়তার জন্য আব্দুস সাত্তার ইধি তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। পাকিস্তানে তিনি সেবামূলক কর্মকাণ্ডের দৃশ্য বদলে দেন। তিনি ইধি ফাউন্ডেশন গঠন করেন। পাশাপাশি তিনি ৫,০০০ রুপি দিয়ে ইধি ট্রাস্ট নামে একটি কল্যাণমূলক ট্রাস্ট চালু করেন। পরে এর নাম বদলে বিলকিস ইধি ট্রাস্ট রাখা হয়। অন্যান্যদের কাছ থেকে তিনি অনেক অর্থ সহায়তা পান। ফলে তার কাজের ব্যপ্তি বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে এটি পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ কল্যাণমূলক সংগঠন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ পর্যন্ত ইধি ফাউন্ডেশন ২০,০০০ এর বেশি পরিত্যক্ত শিশুকে উদ্ধার, ৫০,০০০ এর বেশি এতিমকে পুনর্বাসন ও ৪০,০০০ এর বেশি নার্সকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। এছাড়াও এই সংগঠন শহর ও গ্রাম এলাকায় ৩৩০টি সেবামূলক কেন্দ্র চালিয়ে থাকে। এসব কেন্দ্র থেকে রান্নার স্থান, পুনর্বাসন স্থল, অসহায় নারী ও শিশুদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র এবং মানসিক ভারসাম্যহীনদের জন্য ক্লিনিক পরিচালনা করা হয়।
তার এই সেবামূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল কিছু মানুষের সহায়তায় একটি বিনামূল্যের ডিসপেনসারি চালু করার মাধ্যমে। আব্দুস সাত্তার ইধির ১১ বছর বয়সে তার মা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্থ হন এবং ১৯ বছর বয়সে মারা যান। পরবর্তী জীবনে দুস্থদের সহায়তামূলক কাজের ক্ষেত্রে তার মায়ের অসুস্থতাকালীন সময়টি ভূমিকা রেখেছে।
ইধি ফাউন্ডেশন বিশ্বের সর্ববৃহৎ এম্বুলেন্স সার্ভিস পরিচালনা করে। এছাড়াও তারা ২৪ ঘন্টার জরুরি সেবা দিয়ে থাকে। ফাউন্ডেশন বিনামূল্যে নার্সিং হোম, এতিমখানা, ক্লিনিক, নারীদের আশ্রয়কেন্দ্র, মাদকাসক্ত ও মানসিক ভারসাম্যহীনদের জন্য পুনর্বাসনকেন্দ্র চালায়। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ককেসাস অঞ্চল, পূর্ব ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে এটি ত্রাণমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে। ২০০৫ সালে হারিকেন ক্যাটরিনার পর যুক্তরাষ্ট্রে সহায়তা প্রদান করা হয়। তার অসুস্থতাকালে তার স্ত্রী, পুত্র ও কন্যারা সংগঠনের দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা করেছে। বিবিসির বর্ণনায় তাকে পাকিস্তানের সবচেয়ে সম্মানিত এবং অনেকের দৃষ্টিতে প্রায় সুফির সমতুল্য ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আবদুস সাত্তার ইধি ১৯৬৫ সালে ইধি ডিসপেনসারির নার্স বিলকিস ইধিকে বিয়ে করেছে। এই দম্পতি নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন মানুষের কল্যাণে। ইধি তার সহজসরল জীবনযাপনের জন্যও পরিচিত। তার শুধু দুইটি কাপড় ছিল। সংগঠন থেকে তিনি কোনো বেতন নিতেন না এবং অফিসের পাশে একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন।
তাকে দয়ার ফেরেশতা নামে ডাকা হত এবং পাকিস্তানের সবচেয়ে সম্মানিত ও কিংবদন্তিতুল্য ব্যক্তি বিবেচিত হতেন। ২০১৩ সালে হাফিংটন পোস্ট তাকে "শ্রেষ্ঠ জীবিত মানবতাবাদি" বলে উল্লেখ করে।
তার পুরস্কার আর সম্মাননার তালিকাও অনেক দীর্ঘ।
তার সম্পর্কে বিখ্যাত ও ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের উক্তি/মন্তব্যগুলো উল্লেখ করলে সেটাও অনেক দীর্ঘ হবে। সেদিকে যাবো না।
আব্দুস সাত্তার ইধি ২০১৬ সালের ৮ জুলাই মারা যান। মৃত্যুর কয়েক মাস আগে আবদুস সাত্তারকে বিদেশে চিকিৎসার অনুরোধ জানিয়েছিল সরকার। তবে ইধি জানিয়েছিলেন, তিনি কেবল পাকিস্তানের সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা নেবেন, অন্য কোথাও নয়।
এই অতি সাধারণ মানুষটির মৃত্যুর পরেরদিন জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়। তাকে গার্ড অব অনার ও ১৯টি গান স্যালুট প্রদান করা হয়। পাকিস্তানিদের মধ্যে ইতিপূর্বে শুধু মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ ও জিয়াউল হক এরূপ সম্মান লাভ করেছিলেন।
তার কিছু ছবি সংগ্রহে আছে তাই এড করে দিলাম
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৪৮
মেঘনা পাড়ের ছেলে বলেছেন: "বলকি তোমার ক্ষতি জীবনের অথৈ নদী পারহয় তোমাকে ধরে দুর্বল মানুষ যদি.........."