নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আআত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর, বিশ্বাসঘাতক এবং চরমভাবে বদমেজাজি টাইপের একটা প্রাণী। নিরাপদ দূরত্বে থাকুন।
টম আলোটা নিভিয়ে দিয়েছে আমি ভেবেছিলাম, আমি নিশ্চুপ – টমও নিশ্চুপ।
গভীর রাত, ফ্যানের শব্দে ঝিঁঝিঁপোকার বিরক্তিকর শব্দগুলোও আমাদের কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হচ্ছিল।
অবশ্য আমার ব্যাড আর টমের ব্যাড আলাদা। হটাত একটা চাপা দীর্ঘশ্বাসের আওয়াজ ফ্যানের শব্দকে ছাড়িয়ে আমার কানে এসে অনুভূতি জাগালো।
একি, টম কি কোন কারনে কষ্টে আছে? এতো ভারি নিঃশ্বাস তো টমের ফেলার কথা না।
ও টম হল আমার পরিচিত একটা সদা হাস্যোউজ্জল একটা ছেলে, যে মরা বাড়িতেও হাসির কারন হতে পারে অনায়েসেই। আর অনেক মেধাবী, সদা ক্লাসের ফার্স্ট বয়।
ইচ্ছে করছিল বিছানা থেকে উটে টমের কি হয়েছে জানতে চাইব। এমন সময় মনে হল আমি যখন শুয়েছিলাম টমতো তখন তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছিল, তাহলে কি টম তার প্রেমিকাকে কনভিয়েন্স করার জন্য অভিনয় করছে ?
এইসব ভাবতে ভাবতে আমি ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি টম বিছানায় নাই। আমি একটু দেড়িতে বিছানা ছাড়ি, টম হয়ত বেরিয়ে গেছে।
আমি বাড়ি যাব , টম রুমের চাবি নিয়ে বেড়িয়েছে কিনা জানার জন্য অরে কল দিলাম। মোবাইল টা বন্ধ, হয়ত চার্জ নাই।
বিরক্ত হলাম কিছুটা , ছেলেটা এমন কেন? ওত জানত আমি আজ সকালে বাড়ি যাব। ধ্যাত্তেরিকা ...... কি যে করি?
অর গারলফ্রেন্ডের নাম্বারটা আমার কাছে ছিল বাধ্য হয়ে ওইটাতে ডায়াল করলাম। নো আন্সার , অতঃপর একটা এসএমএস । “Sorry vaia…….., valo thakben”।
হয়ত মেয়েটা বাসায় তাই কলটা ধরতে পারেনি, কত ভাল মেয়ে (!) সরি বলছে।
আসলেই মেয়েটা অনেক ভাল , যাক অর কথা বাদ।
এইভাবে দুপুর ২ টায় টম আসলো , ঝাড়ি দিব ভেবে এগিয়ে গেলাম। অর মুখের দিকে তাকিয়ে কিচ্ছু বলতে পারলামনা। শুধু বললাম , কি হল তর টম?
কিছুনা।
খাস নাই সকালে?
না।
চল তাইলে খেয়ে নেই , আমিত বারি যাব।
তুই খেয়ে যা, আমি পরে খাব।
আস্তে করে বললাম, তর নাম্বার বন্দ তাই নিধিরে কল দিছিলাম, কিছু বলছে তরে?
না।
অবশ্য কল ধরেনি।
তুই না বাড়ি যাবি, যাসনা কেন?
অকে, তাহলে আমি যাইরে। চাবিটা রাখ, আমার আসতে কিছুদিন দেরি হবে।
কতদিন?
১৫-২০ দিন।
আমিত এক তারিখ চলে যাব, তাইলে তর সাথে আর দেখা হবেনা। চাবিটা টনির কাছে রেখে যাব।
আচ্ছা।
এই কথাগুলো আজ থেকে চার বছর আগের।
আজ সেই টমের সাথে আবার দেখা,
না সেই টম না। এ হল টমের ধ্বংসাবশেষ। যেন শতবছর আগে মাটিচাপা পড়া বিশাল বৃক্ষের কয়লা।
নেসাশক্ত, মাতাল, আধাপাগল, সাইকো আরও অনেকগুলো বিশেষণের অধিকারী আজ সে।
বিশ্বাস হচ্ছিলো না, কিন্ত ও যখন আমকে বলল কি খবর, কেমন আছ?
তখন সিউর হলাম এই সেই টম।
কথাপ্রসঙ্গে জানতে চাইলাম নিধির কি খবর?
কথাটি এড়িয়ে গেল টম।
পরে কথা হবে, বলে ও চলে গেল।
অর পাশে থাকা বন্ধুটিকে জিগ্যাস করলাম, অর অবস্থা এমন ,আমি কি ভুল দেখেছি?
নাহ, সেই ২০১০ সালের ২৭ আগস্ট হতেই ও এইপথে পা বাড়িয়েছিল ভাই।
বুকটা ধুক করে ঊটল , এতো সেই তারিখ যেদিন আমি টমকে রেখে বাড়ি গিয়েছিলাম। কিছুটা বুজলাম যে অই রাত্রে আমি যা ভেবেছিলাম হয়ত সবি ভুল ছিল, আরও একটু পরিষ্কার হউয়ার জন্য জানতে চাইলাম নিধির কথা।
ছেলেটির উত্তরটা ছিল এমন, .........টার কথা আমি কিছু জানিনা।
শূন্যস্থানের একটি শব্দই আমাকে সব বুঝিয়ে দিল।
হায়রে টম বুঝলিনা, কিন্ত কেন ?
আর নিধিদের জানাই হাজারো বাহবা।
পরে জানলাম টমের ভুলটা ছিল, নিধির ফেমিলির সাথে কন্টাক্ট করার চেষ্টা করা।
আজও কিন্ত আমার মত শত শত মানুষ নিধিকে ভাল জানে আর টম নষ্ট ।
হাইরে সমাজ!
তামাকের কোম্পানিকে জাতীয় স্বীকৃতি দিলেও ধুমপান কারিদের কে সমাজে উঠানো নিষেধ ।
(বাস্তব কাহিনী অবলম্বনে লিখা )
©somewhere in net ltd.