নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাঠক ছিলাম, লেখক হলাম। পড়ব বেশী, লিখব কম। পছন্দের বিষয় প্রকৃতি, জীবন ও দর্শন। ভালোলাগে প্রবন্ধ ও সম্পাদকীয়। প্রতীক্ষায় আছি একদল বিচক্ষণ লেখকের। যারা সমাজের সমস্যাগুলো বুঝবে, তা নিয়ে ভাববে ও লিখবে। যে লেখায় মানুষ হবে সচেতন, দেশের হবে উন্নয়ন।।জয় বাংলা।।

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল

এই নিকে আর লিখি না

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল › বিস্তারিত পোস্টঃ

★ ৭ই মার্চের ভাষণ। (ইউটিউব থেকে(ICT Division) অনুদিত, Length- 11:54)

১৫ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:২৩



৭ই মার্চ ১৯৭১। সকাল থেকে হাজার হাজার জনতা স্লোগান দিতে দিতে জড়ো হয় সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে(তৎকালিন রেসকোর্স ময়দান)। সবার বুকে একটাই স্বপ্ন, স্বাধীনতা। দেশ মাকে মুক্ত করা। বেলা ৩টা দিকে মঞ্চে আসেন বাঙালীর প্রাণের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। ভিডিওটি তখন থেকেই শুরু হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ICT DIVISION ভিডিওটি তৈরী করেছে। ওটাই আমি টাইপ করে দিলাম:

"জয় বাংলা।"
"স্বাধীন কর, স্বাধীন কর। বাংলাদেশ স্বাধীন কর।"
"বীর বাঙালী অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।"
"স্বাধীন বাংলার জাতীর পিতা। শেখ মুজিব, শেখ মুজিব।"
"শেখ মুজিবের পথ ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।"
মুজিব ভাই এসে গেছেন। তাকে আপনার স্লোগান দিয়ে একটু অভিবাদন দেন...
"শেখ মুজিবের পথ ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।"
"মুজিব ভাইয়ের পথ ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।"
"বাঁশের লাঠি তৈরী কর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।"
"বীর বাঙালী অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।" .....
আপনারা জোরে স্লোগান ধরেন...
"আমার দেশ, তোমার দেশ। বাংলাদেশ, বাংলাদেশ।"(২)
"স্বাধীন কর, স্বাধীন কর। বাংলাদেশ স্বাধীন কর।"


মূল ভাষণঃ
ভাইয়েরা আমার, আজ
দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি।(কেউ একজন বলে, "ক্যামেরা স্টপ") আপনারা, সবই জানেন এবং বোঝেন। আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি।...
কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়,
বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তারা আজ তার অধিকার চায়।...::::...
কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, ২৩ বৎসরের করুণ ইতিহাস, বাংলার অত্যাচারের, বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস। ২৩ বৎসরের ইতিহাস, মুমূর্ষু নর-নারীর আর্তনাদের ইতিহাস। বাংলার ইতিহাস, এদেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস। ১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি। ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান মার্শাল-ল জারী করে ১০ বৎসর পর্যন্ত আমাদের গোলাম করে রেখেছে। ১৯৬৬ সালে ৬ দফার আন্দোলনে ৭-ওই জুনে আমার ছেলেদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ১৯৬৯-এ আন্দোলনে আইয়ুব খানের পতন হওয়ার পরে যখন ইয়াহিয়া খান সাহেব সরকার নিলেন তিনি বললেন, দেশে শাসনতন্ত্র দেবেন- গণতন্ত্র দেবেন, আমরা মেনে নিলাম।

তারপরে অনেক ইতিহাস হয়ে গেল, নির্বাচন হলো। আপনারা জানেন, দোষ কি আমাদের?(এই সময় অ্যামপ্লিফায়ারে নয়েজ সৃষ্টি হবে) আজকে তিনি, আমি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সাহেবের সঙ্গে দেখা করেছি, আপনারা জানেন, আলাপ-আলোচনা করেছি। আমি পাক, শুধু বাংলার নয়, পাকিস্তানের মেজরিটি পার্টির নেতা হিসাবে তাকে অনুরোধ করলাম, ১৫ই ফেব্রুয়ারি তারিখে আপনি জাতীয় পরিষদের অধিবেশন দ্যান। তিনি আমার কথা রাখলেন না, তিনি রাখলেন ভুট্টো সাহেবের কথা। তিনি বললেন, প্রথম সপ্তাহে মার্চ মাসে হবে, তিনি ম্যান্যা নিলেন। ...::::...

আমরা বললাম ঠিক আছে, আমরা এসেম্বলিতে বসবো। আমরা আলাপ(অস্পষ্ট) আলোচনা করবো। আমি বললাম, বক্তৃতার মধ্যে, এসেম্বলির মধ্যে আলোচনা করবো। এমনকি আমি এ পর্যন্তও বললাম, যদি কেউ নেয্য কথা বলে, আমরা সংখ্যায় বেশি হলেও, একজন যদিও সে হয় তার নেয্য কথা আমরা মেনে নেব।....


আসুন বসি, আমরা আলাপ করে শাসনতন্ত্র তৈয়ার করি। তিনি বললেন, "পশ্চিম পাকিস্তানের মেম্বাররা যদি এখানে আসে, তাহলে কসাইখানা হবে এসেম্বলি। যদি কেউ এসেম্বলিতে আসে, তাহলে পেশোয়ার থেকে করাচী পর্যন্ত দোকান জোর করে বন্ধ করা হবে। তারপরেও যদি কেউ আসে, তাকে ছান-নাছার করা হবে।" আমি বললাম, এসেম্বলি চলবে। তারপরে হঠাৎ ১ তারিখে এসেম্বলি বন্ধ করে দেওয়া হল।...::::...

কি পেলাম আমরা? যে, আমার পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছি বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য। আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে, আমার দেশের
গরীব-দুঃখী নিরস্ত্র(অস্পষ্ট) মানুষের বিরুদ্ধে, তার বুকের উপরে হচ্ছে গুলি। আমরা পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু, আমরা পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু, আমরা বাংগালীরা যখনই ক্ষমতায় যাবার চেষ্টা করেছি, যখনই এ দেশের মালিক হবার চেষ্টা করেছি, তখনই তারা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
তারা আমাদের ভাই, আমি বলেছি তাদের কাছে একথা যে, আপনারা কেন আপনার ভায়ের বুকে গুলি মারবেন? আপনাদের রাখা হয়েছে যদি বহিঃশত্রু আক্রমণ করে তার থেকে দেশটাকে রক্ষা করার জন্য।

তারপরে উনি বললেন, যে আমার নামে বলেছেন, আমি নাকি বলে, স্বীকার করেছি যে দশোই তারিখে রাউন্ড-টেবল কনফারেন্স হবে। আমি উনাকে একথা বলে দিবার চাই, আমি তাকে তা বলি নাই। টেলিফোনে আমার সঙ্গে তাঁর কথা হয়। তাঁকে আমি বলেছিলাম, "জনাব ইয়াহিয়া খান সাহেব, আপনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট। দেখে যান, ঢাকায় আসেন, কিভাবে আমার গরীবের উপরে, আমার বাংলার মানুষের বুকের উপর গুলি করা হয়েছে! কি করে আমার মায়ের কোল খালি করা হয়েছে, কি করে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে! আপনি আসুন, দেখুন, বিচার করুন। তারপরে আপনি ঠিক করুন" আমি এই কথা বলেছিলাম।...


হঠাৎ আমার সঙ্গে পরামর্শ না করে বা আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে, পাঁচ ঘণ্টা গোপনে বৈঠক করে যে বক্তৃতা তিনি করেছেন এবং যে বক্তৃতা করে এসেম্বলি করেছেন সমস্ত দোষ তিনি আমার উপরে দিয়েছেন, বাংলার মানুষের উপরে দিয়েছেন। আমি পরিষ্কার মিটিংএ বলেছি...
যে, "এবারের সংগ্রাম আমার মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।"


ভায়েরা আমার,
২৫ তারিখে এসেম্বলি কল করেছে। রক্তের দাগ শুকায় নাই। আমি ১০ তারিখে বলে দিয়েছি ঐ শহীদের রক্তের উপর দিয়ে পাড়া দিয়ে আর.টি.সি- তে মুজিবুর রহমান যোগদান করতে পারে না। ....


এসেম্বলি কল করেছেন, আমার দাবী মানতে হবে। প্রথম। মিলি, সামরিক আইন মার্শাল-ল উইথ-ড্র করতে হবে।...
সমস্ত সামরিক বাহিনীর লোকদের ব্যারাকে ফেরত দিতে হবে।...
যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত করতে হবে।...
আর, জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তারপরে বিবেচনা করে দেখবো, আমরা এসেম্বলিতে বসতে পারবো কি পারবো না। এর পূর্বে, এর পূর্বে এসেম্বলিতে বসা, আমরা, এসেম্বলিতে বসতে আমরা পারি না। ...
জনগণ সে অধিকার আমাকে দ্যায় নাই। ভায়েরা আমার, তোমরা, আমার উপর বিশ্বাস আছে? (উত্তরে জনতা হাত উঠিয়ে বলে আছে)...
আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না। আমরা এদেশের মানুষের অধিকার চাই।...::::...

আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোকদের উপর হত্যা করা হয়। তোমাদের উপর কাছে আমার অনুরোধ রইল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু- আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে।

তোমরা আমার ভাই, তোমরা ব্যারাকে থাকো, কেউ তোমাদের কিছু বলবে না। কিন্তু আর আমার বুকের উপর গুলি চালাবার চেষ্টা কোরো না। ভাল হবে না। সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবাতে পারবে না। ...
যে পর্যন্ত আমার এই দেশের মুক্তি না হবে, খাজনা ট্যাক্স বন্ধ করে দেওয়া হল, কেউ দেবে না।...::::...


তবে আমি অনুরোধ করছি, আপনারা আমাদের ভাই।...
আপনারা দেশকে একেবারে জাহান্নামে ধ্বংস করে দিয়েন না। জীবনে আর কোনদিন আপনাদের মুখ দেখাদেখি হবে না। যদি আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ফায়সালা করতে পারি, তাহলে অন্ততপক্ষে ভাই-ভাই হিসাবে বাস করার সম্ভাবনা আছে। সেইজন্য আপনাদের অনুরোধ করছি, আমার এই দেশে আপনারা মিলিটারি শাসন চালাবার চেষ্টা আর করবেন না।
দ্বিতীয় কথা; প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, প্রত্যেক ইউনিয়নে, প্রত্যেক সাব-ডিবি-সনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোল। ....
এবং তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেবো। এই দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ্‌। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।....::::...


আপনারা আমার উপরে বিশ্বাস নিশ্চয়ই রাখেন, জীবনে আমার রক্তের বিনিময়েও আপনাদের সংগে বেঈমানি করি নাই। প্রধানমন্ত্রীত্ব দিয়ে আমাকে নিতে পারে নাই, ফাঁসি-কাষ্টের আসামি দিয়ে আমাকে নিতে পারে নাই। যে রক্ত দিয়ে আপনারা আমায় একদিন আমাকে জেলে থেকে ব্যার করে নিয়ে এসেছিলেন, এই রেসকোর্স ময়দানে আমি বলেছিলাম, আমার রক্ত দিয়ে, আমি রক্তের ঋণ শোধ করবো। মনে আছে? আমি রক্ত দেবার জন্য প্রস্তুত, আমাদের মিটিং এখানেই শেষ। আসসালামু অালাইকুম।

জয় বাংলা।
(শেষে কিছু শ্লোগান দেয়া হয়েছিল।)

পুনশ্চঃ মূল ভাষণটি ১৮-১৯মিনিট, কিন্তু এটা ১১:৫৪। মানে, এই ভাষণে বেশ কিছু কথা বাদ পড়েছে। তবে, যেসব কথা এসেছে তা মোটামুটি নির্ভূল। বোল্ড করা অংশে বঙ্গবন্ধুর মুখ পুরপুরি দেখা যায়। (...) ও (...::::...) দেয়া স্থানে দুটো ভিডিও অ্যাড করা/এর বাইরেও কিছু কথা থাকতে পারে।।

তথ্যসূত্রঃ
১। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ।(Zunaid AhmedPalak) Publish on 8 Mar 2016
২। ⏩৭ই মার্চের ভাষণ প্রথম বারের মত সম্পূর্ণ রঙ্গিন সংস্করণ HD।(Bangladesh Awami league)
Courtesy - ICT Division

বি.দ্রঃ লেখাটি একান্ত ব্যক্তিগত। অনুমতি ছাড়া কপি-পেস্ট করবেন না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.