![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কে জিতল, কে হারল — প্রশ্ন perception-এর
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক মানেই “ধারণা”র খেলা। আপনি যুদ্ধ হারালেও জিতবেন, যদি বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ মনে করে আপনি জিতেছেন।
ভাগ্যক্রমে, এখন মনে হচ্ছে দুই সপ্তাহের এই যুদ্ধ শেষের পথে। উপর থেকে যতটা বিশৃঙ্খল মনে হয়েছে, ভিতরে ছিল সুপরিকল্পিত চালের খেলা যেখানে সবাই কিছু না কিছু জিতেছে, আর কিছু না কিছু হারিয়েছে।
ইরান
ইরানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিশাল, পরমাণু অবকাঠামো গুঁড়িয়ে গেছে, আকাশ প্রতিরক্ষা ধ্বংসপ্রাপ্ত, সামরিক ও বেসামরিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। শীর্ষ নেতারা নিহত। এমনকি কারাগারগুলোও আক্রমণের শিকার ফলে অপরাধীরা রাস্তায়, পুলিশ ব্যস্ত।
“ইরানে হামলা করো না, খেসারত ভয়ঙ্কর” সেই অদৃশ্য লাল দাগটিও আর নেই।
ইরান অতীতে হামলার আগে কখনো কখনো যুক্তরাষ্ট্রকে তথ্য দিত। এবার ট্রাম্প সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করে দেয়, ফলে ইরানের ভাবমূর্তি ও অভ্যন্তরীণ সমর্থনে ধাক্কা লাগে।
তবুও, তারা বিশ্বব্যাপী একটা সহানুভূতি পায়। যেসব রাষ্ট্র ইরানের কড়া সমালোচক ছিল, তারাও এখন অনেক নরম। ভেতরের বিভক্ত জনগণও ক্ষণিকের জন্য ঐক্যবদ্ধ। তারা বিশ্বের সামনে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি ও প্রযুক্তির সক্ষমতা দেখিয়েছে। তারা তাদের ৪৫০ কেজি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম হারায়নি, যা অত্যন্ত দামী ও কৌশলগত।
ইসরায়েল
গাজা যুদ্ধের পর ইসরায়েলের ভাবমূর্তি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক সময় বিশ্বের সেরা বলা হতো তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে এবার সেই ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে।
এরপর রয়েছে জনগন সমস্যা, অধিকাংশ নাগরিক দ্বৈত নাগরিকত্বধারী, শুধু রুশভাষীরা কিছুটা স্থিতিশীল। জনমনে ভীতি তৈরি হয়েছে, সরকারকে আবারও নিরাপত্তার বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে।
তবুও, ইসরায়েলের মূল কৌশলগত লক্ষ্য পূরণ হয়েছে ফিলিস্তিনে নিয়ন্ত্রণ, আরব অঞ্চলজুড়ে আকাশ দখল: সিরিয়া, লেবানন, জর্ডান, ইরাক, ইরান, ইয়েমেন সব জায়গায় শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা।
আর তারা দেখিয়ে দিয়েছে, পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো তাদের সরকারকে ১০০% সমর্থন করে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র তার নৈতিক অবস্থান থেকে কিছুটা পড়ে গেছে। এই মুহূর্তে, যখন আরেকটি পরাশক্তি (চীন) উঠে আসছে, এটা ভালো সংকেত নয়।
কিন্তু তারা আবারও বিশ্বকে দেখিয়েছে ভয় পাওয়ার মতো শক্তি এখনো তারাই। তারা যা চায়, যেভাবে চায়, সেটাই করতে পারে এবং করেও।
ট্রাম্প বেশ কিছু কৌশলগত চাল খেলেন:
– নিজেকে “শান্তির দূত” হিসেবে তুলে ধরেন (ভারত-পাকিস্তান, ইসরায়েল-ইরান, রাশিয়া-ইউক্রেন)
– ইরান যখন হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার হুমকি দেয়, তখন চীনের কাছে সাহায্য চান
– রাশিয়ার কথা উল্লেখই করেন না যেন তারা কেউই না
– সোশ্যাল মিডিয়ায় ইরানকে একপ্রকার উন্মোচিত করে দেন
রাশিয়া
রাশিয়ার ভাবমূর্তি দুর্বল ও সুবিধাবাদী হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
ইরান রাশিয়ার পাশে ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের সময়, এবার রাশিয়া চুপ।
পুতিন প্রথমে বলেন, ইসরায়েলে রুশভাষী ইহুদি রয়েছে তাই তাদের বিষয়েও ভাবতে হবে।
শেষ দিনে গিয়ে হঠাৎ বলে উঠলেন রাশিয়া ইরানের পাশে?
ফলাফল? নেতিবাচক।
চীন
চীন ছিল নিরব দর্শক।
যেভাবে তারা ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ভূমিকা রেখেছিল, এবার তা করেনি।
যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে বাধা দিতে চীনকে অনুরোধ করে, চীনকে একটি শান্তিপূর্ণ, ব্যবসায়িক ভাবমূর্তির দিকে ঠেলে দেয়।
চীনও সম্ভবত ঠিক সেটাই চায়| এখন তারা নিজেদের আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং সীমান্তে মনোযোগী।
ভারত
এই যুদ্ধে ভারতের নাম উঠে আসে শুরুতেই।
গুজব ছড়ায়, মোসাদের হয়ে কাজ করা ভারতীয় নাগরিকদের সহায়তায় ইরানে হামলা হয়। ৩৭ জন ভারতীয় আটক হয়, কিছুজন নাকি ফাঁসি পায়। সত্য-মিথ্যা যাচাই কঠিন, কিন্তু ধাক্কা লেগে গেছে।
সোনিয়া গান্ধীর খোলা চিঠির পর কংগ্রেস সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
মোদি সরকারের জন্য ভাবমূর্তির ক্ষতি।
বাংলাদেশ
এই যুদ্ধ বাংলাদেশকে স্পষ্ট একটা বার্তা দেয়, শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতি গঠন করুন।
আর প্রতিরোধ গড়ুন।
সীমিত বাজেটের মধ্যেও সম্ভব: আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ড্রোন প্রযুক্তি, মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র — ২,৫০০ থেকে ৩,০০০ কিলোমিটার রেঞ্জে বিনিয়োগ করুন।
শেষ কথা:
এই যুদ্ধের সবচেয়ে বড় লাভবান? বিশ্ব সামরিক শিল্প।
এই যুদ্ধ স্পষ্ট করে দিয়েছে; কে কোথায় দাঁড়িয়ে, কী দুর্বলতা কোথায়।
বড় বা ছোট, ধনী বা গরিব; সবার জন্য বার্তা একটাই:
শান্তির পথ শক্তিশালী হওয়ার মধ্যেই নিহিত।
চাইলে শান্তি পাওয়া যায় না, তার যোগ্যতা অর্জন করতে হয়।
২৬ শে জুন, ২০২৫ রাত ১২:১৬
নুর-এ-আলম বলেছেন: আপনার মতামতকে সম্মান করি, তবে ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় বিচক্ষণ পররাষ্ট্রনীতি ও প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি সব দেশের জন্যই জরুরি
২| ২৪ শে জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৩
খাঁজা বাবা বলেছেন: এই যুদ্ধে আমরা দেখতে পেয়েছি প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি কোন দিকে যাচ্ছে।
২৬ শে জুন, ২০২৫ রাত ১২:১৭
নুর-এ-আলম বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন। AI, ড্রোন, এবং ব্যালিস্টিক সিস্টেমে আগামী প্রজন্মের প্রতিরক্ষা কৌশল তৈরি হচ্ছে এটা শুধু অস্ত্র নয়, আধিপত্যের প্রযুক্তি।
৩| ২৪ শে জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৩
রানার ব্লগ বলেছেন: কি মনে হয়?
কে জিতলো??
ইরান নাকি ইজরায়েল।
২৬ শে জুন, ২০২৫ রাত ১২:১৮
নুর-এ-আলম বলেছেন: জয়-পরাজয়ের নির্ধারণ এখন আর শুধু মাটিতে নয়
৪| ২৪ শে জুন, ২০২৫ রাত ৮:৩১
কামাল১৮ বলেছেন: আমি আধিপত্যবাদের অবসান চাই।
২৬ শে জুন, ২০২৫ রাত ১২:১৯
নুর-এ-আলম বলেছেন: এই কামনা সর্বজনীন কিন্তু ইতিহাস বলছে, দখলদারির অবসান কেবল শক্তির ন্যায়ভিত্তিক ব্যবহারে সম্ভব।
৫| ২৫ শে জুন, ২০২৫ ভোর ৫:১০
এইচ এন নার্গিস বলেছেন: যুদ্ধের অবসান চাই
২৬ শে জুন, ২০২৫ রাত ১২:১৯
নুর-এ-আলম বলেছেন: শান্তির পথে যাওয়া সম্ভব, যদি বিশ্বরাজনীতি শুধু শক্তির নয়, বিবেকের উপরও দাঁড়ায়।
৬| ২৫ শে জুন, ২০২৫ সকাল ১০:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: হাসাহাসি করা সঠিক কাজ হবে না।
২৬ শে জুন, ২০২৫ রাত ১২:২০
নুর-এ-আলম বলেছেন: সত্যিই, যুদ্ধ কখনো কৌতুক নয় "হাসতেও পারেন, কাঁদতেও পারেন" ছিল আমাদের বাস্তবতার করুণ দ্বৈততা তুলে ধরার প্রচেষ্টা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১২
ফারমার২ বলেছেন:
এই যুদ্ধ নিয়ে বাংলাদেশকে টেনেছেন অকারণে; বাংলাদেশ হচ্ছে ফিল্ড মার্শাল ও জেনারেলদের দেশ, যুদ্ধ করেছেন বাংগালীরা; বাংগালীরা ( মানুষ ) ইরানের পক্ষে থাকাতে ৪০০ কেজি ইউরিনিয়াম রক্ষা পেয়েছে; বাংলাদেশে সরকার ট্রাম্পের পাশে আছে।