![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০২৫ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি রপ্তানিপণ্যের ওপর ৩৭% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়, যা পরে কিছুটা কমিয়ে ৩৫% নির্ধারণ করা হয়। এই নতুন শুল্ক ১ আগস্ট ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে এবং তা পূর্বের ১৫–১৬% শুল্কের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মোট শুল্কহার ৫০% ছাড়িয়ে যাবে। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ৮.৪ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি বাজারে, বিশেষত তৈরি পোশাক খাতে, যা দেশের মোট রপ্তানির ৮০% এবং ৪ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের ৬.২ বিলিয়ন ডলারের ট্রেড সারপ্লাস সংশোধন করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে
তবে ঠিক একই সময়ে, প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছে গেছে, যেখানে তারা ২০% শুল্কে সুবিধা আদায় করতে পেরেছে। বাংলাদেশ যেখানে ধাক্কা খাচ্ছে, ভিয়েতনাম সেখানে কৌশলে জিতে যাচ্ছে। কীভাবে?
ভিয়েতনামের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল তাদের আগেভাগে প্রস্তুতি নেওয়া। ২০২৪ সালেই তারা একটি খসড়া চুক্তির পথে অগ্রসর হয়, যেখানে তারা স্পষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে কৃষি, প্রযুক্তি এবং প্রতিরক্ষা খাতে সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এর বিনিময়ে তারা রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য শুল্ক ছাড় নিশ্চিত করে। তারা জানত, কেবল দাবি করলেই শুল্ক কমবে না যুক্তরাষ্ট্রকে কিছু দিতে হবে। তাই তারা মার্কিন কৃষিপণ্যের জন্য তাদের বাজার খুলে দেয়। গম, সয়াবিন, ভুট্টার মতো পণ্যে আমদানির সুযোগ বাড়িয়ে দেয়। এটা কোনো সাধারণ সিদ্ধান্ত ছিল না কারণ মার্কিন কৃষিখাত হল যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শক্তিশালী লবিগুলোর একটি। ভিয়েতনাম তাদের ভাষায় কথা বলেছে, তাই তারা ফলও পেয়েছে।
শুধু তাই নয়, ভিয়েতনাম ব্যবসার বাইরে গিয়েও যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দিয়েছে “আমরা দায়িত্বশীল।” তারা শ্রম অধিকার নিয়ে সংস্কার করেছে, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (ILO) মানদণ্ড মেনে নিয়েছে এবং পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়ে কঠোর কিছু নীতি গ্রহণ করেছে। এর সবই যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের কানে গেছে। তবে সবচেয়ে কার্যকরী ছিল তাদের কূটনৈতিক পদক্ষেপ। ভিয়েতনামের শীর্ষ নেতৃত্ব সরাসরি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। তারা হোয়াইট হাউজে গিয়ে কথা বলে, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনে এবং প্রতিটি আলোচনায় নিজেদের পার্টনার হিসেবে উপস্থাপন করে। ফলাফল, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ছাড় দিয়েছে।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠতেই পারে, বাংলাদেশ কি পারবে ভিয়েতনামের পথ অনুসরণ করতে?
অবশ্যই পারে, কিন্তু এর জন্য চাই সময়োপযোগী, সাহসী ও বাস্তববাদী পদক্ষেপ। আপাতদৃষ্টিতে বাংলাদেশের কূটনীতির দুর্বলতা স্পষ্ট। ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিঃসন্দেহে একজন আন্তর্জাতিক মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি, কিন্তু তাঁর অন্তর্বর্তী সরকার এখনো ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়তে ব্যর্থ। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়নি, চীনের সঙ্গে সম্পর্কও স্থবির অবস্থায়। “সবার বন্ধু” হয়ে চললে, শেষ পর্যন্ত কেউ প্রকৃত বন্ধু হয় না। পররাষ্ট্রনীতিতে প্রয়োজন স্পষ্টতা, কে বন্ধু, কে প্রতিপক্ষ, কোথায় সংযোগ, কোথায় দূরত্ব। এই স্পষ্টতা ছাড়া আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।
যদি বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে, কৃষিপণ্য ও প্রযুক্তিপণ্য আমদানিতে অগ্রাধিকার দেয়, শ্রম ও পরিবেশ নীতিতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে এবং আমদানি বাধা কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে বাস্তব সুবিধা দিতে পারে, তাহলে সাফল্য আসতেই পারে। ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী, তাঁকে কূটনৈতিক বুলি নয়, সোজাসাপ্টা লাভ-ক্ষতির হিসাব দেখাতে হবে। লাভ দেখালে তিনি কথা শুনবেন, সেই সুযোগ এখনো বাংলাদেশ হারায়নি।
এছাড়া Walmart, GAP, VF Corp-এর মতো মার্কিন রিটেইলারদের সঙ্গে যৌথভাবে লবিং করতে হবে। National Retail Federation এবং American Apparel & Footwear Association-এর মতো প্রভাবশালী সংগঠনের সহায়তায় এই লড়াইকে কৌশলগত রূপ দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারা যদি দেখেন যে এই শুল্কের কারণে বাংলাদেশে নারীর চাকরি হারাচ্ছে, দারিদ্র্য বাড়ছে, তখন সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেও মার্কিন ব্র্যান্ডগুলো সরকারের ওপর চাপ তৈরি করবে।
ভিয়েতনাম দেখিয়েছে, সঠিক কৌশল, সময়োপযোগী কূটনীতি এবং বাস্তববাদী অর্থনৈতিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে একটি উন্নয়নশীল দেশও যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তির সঙ্গে সফলভাবে দরকষাকষি করতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশ কি সেই সাহস দেখাবে? সময় কম, কিন্তু সুযোগ এখনো শেষ হয়নি। কৌশল নিতে হবে, সাহসিকতা দেখাতে হবে, এবং কূটনৈতিক ব্যর্থতাকে কাটিয়ে উঠতে হবে।
২| ০৯ ই জুলাই, ২০২৫ ভোর ৬:৩৩
কামাল১৮ বলেছেন: ভারতের উপর শুল্ক ১৬% আর আমাদের উপর এতো বেশি কেন।আমাদের। বার্গেনিং ক্ষমতা কম।
০৯ ই জুলাই, ২০২৫ ভোর ৬:৩৭
নুর-এ-আলম বলেছেন: India deal is not yet finalised
৩| ০৯ ই জুলাই, ২০২৫ ভোর ৬:৩৫
নুর-এ-আলম বলেছেন: in trump letter he mentioned,
“Starting on August 1, 2025, we will charge Bangladesh a Tariff of only 35% on any and all Bangladeshi products sent into the United States, separate from all Sectoral Tariffs.”
i am reading it
current = 10-15%, sectoral tariff
New tariff = 35% +10-15%
৪| ০৯ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৭:০৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বাংলাদেশের সব চেয়ে বড় বাধা এখানে কোন বৈধ ও নির্বাচিত সরকার নেই।
৫| ০৯ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের আসল সমস্যা হচ্ছে- দেশে যোগ্য ও দক্ষ লোক নেই।
৬| ০৯ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:০৫
অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: দালাল শ্রেণি খুশিতে ডগমগ। এদের দেশপ্রেম নেই।
৭| ০৯ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:১৪
কাঁউটাল বলেছেন: পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ছাগল জসিম এবং বেইমান তৌহিদ টাইপের লোক নিয়ে ভিয়েতনামের মত সাফল্য আশা করেন? আগে সমস্ত আওয়ামী এবং ভঁড়ৎীয় দালালদেরকে সরকার থেকে খেদাতে হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জুলাই, ২০২৫ ভোর ৬:৩১
নূর আলম হিরণ বলেছেন: আগের ১৬% শুল্ক কি এই নতুন ৩৫% শুল্কের সাথে যোগ হবে এটা কি আপনি শিউর?