নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একটি স্বাধীন বাংলাদেশ চাই যেখানে মুক্তচিন্তার অধিকারীদের কারাগারে যেতে হবে না.... :)

নূরতাজ নূর

নিজের বায়ো লিখতে গেলে সর্বপ্রথম যে বাক্যটি মাথায় আসে তা মহান দার্শনিক সক্রেটিসের একটি কালজয়ী উক্তি ,"নিজেকে জানো ।" বাস্তব জীবনে আমার নিজের কাছেও কথাটি অতি মূল্যবান । আসলে নিজেকে যে ব্যক্তি সম্পূর্ণরূপে জানে একমাত্র সেই নিজেকে জয় করতে পারে । আর নিজেকে যে ব্যক্তি জয় করতে পারবে তার কাছে বিশ্ব জয় করাটাও খুব একটা দুরূহ কাজ মনে হবার কথা না । তাই আমিও অনবরত নিজেকে জানার চেষ্টা করে যাচ্ছি । তবে খুব একটা সফল এখনো হতে পেরেছি বলে মনে হয় না । মনটাকেই এখনো স্থিরই করতে পারলাম না । নিজের চরিত্রটাই আমার কাছে সব থেকে রহস্যময় । এই যে দেখেছেন প্যাঁচাল শুরু করে দিলাম । আপনি আমার কোন কাজে সন্তুষ্ট অথবা বিরক্ত হয়ে আমার সম্পর্কে জানতে এসেছেন আর আমি আপনাকে কি সব আবোল তাবোল বলা শুরু করে দিয়েছি । আসলে আমি মানুষটাই এমন । আগেই বলেছি আমি নিজের সম্পর্কে খুব একটা জানি না । যাহোক প্যাঁচাল বন্ধ করে আপনাকে নিজের সম্পর্কে যতটুকু জানি ততটুকু বলা উচিত । এগুলোকে আপনি আমার দোষ নাকি গুণের তালিকায় ফেলবেন তা একান্তই আপনার নিজস্ব অভিমত । প্রথমত একজন মুসলিম হিসেবে আমার ধর্মকে আমি ভালবাসি, শ্রদ্ধা করি এবং ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয়ে আমি অত্যন্ত গর্বিত । মহান আল্লাহ রাব্বুল আ'লামিন এবং প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর প্রতি পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস আমার রয়েছে । নাস্তিকদের সাথে আমার কোন দ্বন্দ্ব নেই । তারা স্বেচ্ছায় তাদের ধর্মত্যাগ করেছে । করতেই পারে তাতে আমার কি? তবে তাদের সংস্পর্শ থেকে আমি নিজেকে যথাসম্ভব দূরে রাখি । গোঁড়া ধর্মান্ধ লোকজনকে আমি অপছন্দ করি । আর যারা ধর্ম নিয়ে ব্যবসায় করে, অপব্যাখ্যা দেয়, অন্য ধর্মের প্রতি অবজ্ঞা, অশ্রদ্ধা করে তাদেরকে প্রচণ্ডভাবে ঘৃণা করি । প্রত্যেক ধর্মানুসারীই আমার কাছে মানুষ হিসেবে সমান অধিকার পাবে । এবার আসি নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারগুলোতে । আত্মসম্মান বজায় রাখা এবং ভাব মারা এই দুটোর মাঝে পার্থক্য আছে, এটা জানেন? আমি সবসময় নিজের আত্মসম্মানটুকু বজায় রাখার চেষ্টা করি । এটাকে যদি আপনার কাছে 'ভাব মারা' মনে হয় তবে আপনার উদ্দেশ্যে আমার কিছুই বলার নেই । "সেন্স অফ হিউমার" অর্থাৎ রসিকতাবোধ আমার অতি উচ্চ পর্যায়ের । তবে আমার ধর্ম, পরিবার এবং নিকট বন্ধুদের নিয়ে বিকৃত মানসিকতার রসিকতা আমি বরদাস্ত করব না । এক্ষেত্রে ৫৬ নিউটন বলের চড় কিংবা ৮০ মণ ওজনের ঘুষি রসিকতাকারীর উপর পড়তে পারে এবং তার কোন অঙ্গের বিকৃতি সাধন হলে আমি দায়ী থাকব না । কথাগুলোয় কি আমাকে খুব রাগী রাগী মনে হচ্ছে? আমি মোটেও রাগী না । "রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন"-কথাটি আমি মানি এবং এজন্যই কালেভদ্রে আমার রাগ উঠে । অবশ্য রাগ উঠলে আমি স্রেফ পশুর ন্যায় আচরণ করি । হিতায়িতজ্ঞান শূন্য হয়ে যাই এবং বড়-ছোট সম্পর্ক ভুলে যাই । বেশ গুরুগম্ভীর কথা বলা ফেললাম বলে মনে হচ্ছে । আপনি এসেছেন আমার সম্পর্কে জানতে আর মনে হচ্ছে আমি আপনাকে হুমকি দিচ্ছি । হা হা হা রোদেলা, মেঘলা কিংবা কুয়াশাচ্ছন্ন সব ধরণের আকাশই আমার ভাল লাগে । ভোরে, পড়ন্ত বিকালে কিংবা রাতে হাঁটতে খুব একটা খারাপ লাগে না বরং কিছু কিছু সময় খুব বেশি ভাল লাগে । বন্ধুদের খুব ভালবাসি । বন্ধুদের ছাড়া একটা দিনও আমি থাকতে পারি না । কারও উপকার করতে না পারি আমার দুঃখ নাই তবে জেনে শুনে কারও অপকার আমি করি না । প্রতিদানের আশায় আমি কারও উপকার করি না । মানুষ হিসেবে আমি খুবই সাধারণ, সাদামাটা পর্যায়ের । যুগসচেতন তবে অতটা ফ্যাশনসচেতন নই । অগোছালো তবে নোংরা নই । যাকে ভাল লাগে না তাকে এড়িয়ে চলি । আর আমি স্পষ্টবাদী অর্থাৎ খাঁটি বাংলায় যাকে বলে ঠোঁট কাঁটা । এতে অনেকে দুঃখ পায় আবার অনেকে খুশি হয় । তবে আমি নিজের প্রয়োজনে এভাবে কথা বলি । অর্ধেক কথা পেটে আর অর্ধেক কথা মুখে এইরকম আচরণ আমি করি না । এইতো...নিজের সম্পর্কে যা জানি তার সবটুকু বললাম...:)

নূরতাজ নূর › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প লিখবো বলে...

১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯

একটা গল্প লিখবো বলে জমাট স্তূপ করে রাখা বইয়ের তাক থেকে ধুলোর আস্তরণ জমে থাকা লাল মলাট করা ভারী খাতাটা টেনে নিলাম । কলমের মাথাটা দাঁত দিয়ে চিবোতে চিবোতে ভাবছিলাম কি লিখবো । হঠাৎই মনে পড়ে গেল আজিজের কথা । তেজগাঁও রেললাইনের পাশের বস্তিতে থাকা সেই ছেলেটি কি এখনো সেখানেই আছে নাকি ট্রেনে করে সে নিরুদ্দেশ যাত্রা করেছে আমি জানি না! তার ইচ্ছে ছিল এই রেল পথের শেষ সীমান্ত দেখা । আমি তাকে বলেছিলাম এর কোন শেষ নেই কারণ পথের শেষে আবার শুরুতেই ফিরে আসবে! কিন্তু একরোখা ছেলেটি আমার কথা মানতে নারাজ!!! সে এই পথের শেষ দেখেই ছাড়বে!!! তার বড্ড ঘুড়ি উড়ানোর শখ ছিল... উড়ন্ত ঘুড়ির দিকে চোখ রেখে রেলের পাতের উপর দিয়ে তার অভিজ্ঞ পদযুগলের যাত্রা ছিল অনেকটা সার্কাস দেখার মতো! ছোট ছোট পায়ে সে হেঁটে যেত মাইলের পর মাইল ।
আমি তার লাশ দেখতে গিয়েছিলাম । একদিন ঘুড়ি উড়াতে গিয়েই সে রেলে কাটা পড়েছিল । আজিজের ছোট্ট নিথর দ্বিখণ্ডিত দেহ আমাকে কাঁদাতে পারে নি কারণ আমি কাপুরুষের মতো লুকিয়ে সেখান থেকে চলে এসেছিলাম । তার আর রেললাইনের শেষটা দেখা হয় নি । হয়তো আজিজ বেঁচে থাকলে একদিন রেলের শেষ সীমান্ত বের করে আমার যুক্তিকে হারিয়ে দিত...

আমি ১৪ বছরের সেই কিশোরীর কথা বলবো । টিনের দরজা দিয়ে চেহারাটা একটু বের করে আমার দিকে অসহায়ের দৃষ্টিতে চেয়ে থাকা ফরিদা বোধহয় আমাকে সেদিন কিছু বলতে চেয়েছিল! তার অসহায়ের মতো সেই চাহনিতে আমি সম্মোহিত হয়ে গিয়েছিলাম । নির্বাক হয়ে, অপলক দৃষ্টিতে আমি তার চোখে চোখ রেখে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম । সে কি আমাকে কিছু বোঝাতে চেয়েছিল? বোঝাতে চাইলেও এখন আর তা বোঝানো সম্ভব নয় । সেদিন তার মা বললো ফরিদার পেটের বাচ্চাটি উল্টে গিয়েছে! পাষণ্ড স্বামীর অমানসিক নির্যাতনে হয়তো তার খুব ক্ষোভ এই পৃথিবীর প্রতি! আমার একবার খুব ইচ্ছে করে মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দিতে কিন্তু পরক্ষনেই আমি নিজেকে সেই ভাবনা থেকে দূরে সরিয়ে আনি । থাকুক না যে যার মতো আছে সেখানেই...


আমার রুদ্র নামের সেই যুবকটির কথা মনে পড়ে গেল যার ঝাঁকড়া চুল আর পাঞ্জাবিতে এক বিদ্রোহী ভাব ফুটে উঠতো । কিন্তু সে বলত চুল কাটার পয়সা নেই বলেই তার চুলের এই দশা, নাহয় মাথায় কে এই উটকো জঙ্গলের বোঝা নিয়ে ঘুরে! তার ডান কাঁধে ঝোলানো পাটের থলেতে কি আছে তা আমি কখনো দেখতে পারি নি । একবার টঙে বসে আমরা রংধনু দেখছিলাম । রুদ্র আমাকে বলেছিল সৃষ্টিকর্তা নিজে রংধনু সেজে পৃথিবীর মানুষগুলোকে দেখতে আসে । আর তাই তার সৃষ্ট মানুষগুলো রংধনুর মতো বর্ণিল এবং বৈচিত্রময় । আমি তার কথার কোন প্রত্যুত্তর দেই নি, কারণ আমি তখন রংধনুর সৌন্দর্য্য অবলোকনে ব্যস্ত ছিলাম । অনেকদিন রুদ্রর কোন দেখা নেই । তবে ভাবছি তার দেখা পেলে রংধনু নিয়ে তার সাথে আবার কথা বলবো । দারিদ্রের নির্মম কষাঘাতে রুদ্র হয়তো তার অদ্ভুত যুক্তি দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে কিন্তু...


ভেবেছিলাম গল্প লিখবো কিন্তু এসব কি শুরু করে দিলাম! জীবন আমার দিকে তার মধ্যাঙ্গুলি দেখিয়ে অট্টিহাসি হাসছে । নির্মম বাস্তব আর জাগতিক নানা অসংগতি আমাকে গল্প লিখতে বাধা দিচ্ছে আর সেই সুযোগে প্রকৃতি নিজেই আমাকে নিয়ে গদ্য লিখায় মেতে উঠেছে! আমি হেরে যাচ্ছি, হারিয়ে যাচ্ছি.....

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.