![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের বায়ো লিখতে গেলে সর্বপ্রথম যে বাক্যটি মাথায় আসে তা মহান দার্শনিক সক্রেটিসের একটি কালজয়ী উক্তি ,"নিজেকে জানো ।" বাস্তব জীবনে আমার নিজের কাছেও কথাটি অতি মূল্যবান । আসলে নিজেকে যে ব্যক্তি সম্পূর্ণরূপে জানে একমাত্র সেই নিজেকে জয় করতে পারে । আর নিজেকে যে ব্যক্তি জয় করতে পারবে তার কাছে বিশ্ব জয় করাটাও খুব একটা দুরূহ কাজ মনে হবার কথা না । তাই আমিও অনবরত নিজেকে জানার চেষ্টা করে যাচ্ছি । তবে খুব একটা সফল এখনো হতে পেরেছি বলে মনে হয় না । মনটাকেই এখনো স্থিরই করতে পারলাম না । নিজের চরিত্রটাই আমার কাছে সব থেকে রহস্যময় । এই যে দেখেছেন প্যাঁচাল শুরু করে দিলাম । আপনি আমার কোন কাজে সন্তুষ্ট অথবা বিরক্ত হয়ে আমার সম্পর্কে জানতে এসেছেন আর আমি আপনাকে কি সব আবোল তাবোল বলা শুরু করে দিয়েছি । আসলে আমি মানুষটাই এমন । আগেই বলেছি আমি নিজের সম্পর্কে খুব একটা জানি না । যাহোক প্যাঁচাল বন্ধ করে আপনাকে নিজের সম্পর্কে যতটুকু জানি ততটুকু বলা উচিত । এগুলোকে আপনি আমার দোষ নাকি গুণের তালিকায় ফেলবেন তা একান্তই আপনার নিজস্ব অভিমত । প্রথমত একজন মুসলিম হিসেবে আমার ধর্মকে আমি ভালবাসি, শ্রদ্ধা করি এবং ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয়ে আমি অত্যন্ত গর্বিত । মহান আল্লাহ রাব্বুল আ'লামিন এবং প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর প্রতি পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস আমার রয়েছে । নাস্তিকদের সাথে আমার কোন দ্বন্দ্ব নেই । তারা স্বেচ্ছায় তাদের ধর্মত্যাগ করেছে । করতেই পারে তাতে আমার কি? তবে তাদের সংস্পর্শ থেকে আমি নিজেকে যথাসম্ভব দূরে রাখি । গোঁড়া ধর্মান্ধ লোকজনকে আমি অপছন্দ করি । আর যারা ধর্ম নিয়ে ব্যবসায় করে, অপব্যাখ্যা দেয়, অন্য ধর্মের প্রতি অবজ্ঞা, অশ্রদ্ধা করে তাদেরকে প্রচণ্ডভাবে ঘৃণা করি । প্রত্যেক ধর্মানুসারীই আমার কাছে মানুষ হিসেবে সমান অধিকার পাবে । এবার আসি নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারগুলোতে । আত্মসম্মান বজায় রাখা এবং ভাব মারা এই দুটোর মাঝে পার্থক্য আছে, এটা জানেন? আমি সবসময় নিজের আত্মসম্মানটুকু বজায় রাখার চেষ্টা করি । এটাকে যদি আপনার কাছে 'ভাব মারা' মনে হয় তবে আপনার উদ্দেশ্যে আমার কিছুই বলার নেই । "সেন্স অফ হিউমার" অর্থাৎ রসিকতাবোধ আমার অতি উচ্চ পর্যায়ের । তবে আমার ধর্ম, পরিবার এবং নিকট বন্ধুদের নিয়ে বিকৃত মানসিকতার রসিকতা আমি বরদাস্ত করব না । এক্ষেত্রে ৫৬ নিউটন বলের চড় কিংবা ৮০ মণ ওজনের ঘুষি রসিকতাকারীর উপর পড়তে পারে এবং তার কোন অঙ্গের বিকৃতি সাধন হলে আমি দায়ী থাকব না । কথাগুলোয় কি আমাকে খুব রাগী রাগী মনে হচ্ছে? আমি মোটেও রাগী না । "রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন"-কথাটি আমি মানি এবং এজন্যই কালেভদ্রে আমার রাগ উঠে । অবশ্য রাগ উঠলে আমি স্রেফ পশুর ন্যায় আচরণ করি । হিতায়িতজ্ঞান শূন্য হয়ে যাই এবং বড়-ছোট সম্পর্ক ভুলে যাই । বেশ গুরুগম্ভীর কথা বলা ফেললাম বলে মনে হচ্ছে । আপনি এসেছেন আমার সম্পর্কে জানতে আর মনে হচ্ছে আমি আপনাকে হুমকি দিচ্ছি । হা হা হা রোদেলা, মেঘলা কিংবা কুয়াশাচ্ছন্ন সব ধরণের আকাশই আমার ভাল লাগে । ভোরে, পড়ন্ত বিকালে কিংবা রাতে হাঁটতে খুব একটা খারাপ লাগে না বরং কিছু কিছু সময় খুব বেশি ভাল লাগে । বন্ধুদের খুব ভালবাসি । বন্ধুদের ছাড়া একটা দিনও আমি থাকতে পারি না । কারও উপকার করতে না পারি আমার দুঃখ নাই তবে জেনে শুনে কারও অপকার আমি করি না । প্রতিদানের আশায় আমি কারও উপকার করি না । মানুষ হিসেবে আমি খুবই সাধারণ, সাদামাটা পর্যায়ের । যুগসচেতন তবে অতটা ফ্যাশনসচেতন নই । অগোছালো তবে নোংরা নই । যাকে ভাল লাগে না তাকে এড়িয়ে চলি । আর আমি স্পষ্টবাদী অর্থাৎ খাঁটি বাংলায় যাকে বলে ঠোঁট কাঁটা । এতে অনেকে দুঃখ পায় আবার অনেকে খুশি হয় । তবে আমি নিজের প্রয়োজনে এভাবে কথা বলি । অর্ধেক কথা পেটে আর অর্ধেক কথা মুখে এইরকম আচরণ আমি করি না । এইতো...নিজের সম্পর্কে যা জানি তার সবটুকু বললাম...:)
ঢাকা শহরের পার্শ্ববর্তী একটা জেলা থেকে ঢাকায় আসবো । তুমুল বৃষ্টির মাঝে বাসের জন্য অপেক্ষা করার পর অবশেষে দ্বিগুণেরও একটু বেশি ভাড়া দিয়ে অনেক হুড়োহুড়ি করে বাসে উঠলাম । বাসের চিত্র এককথায় খুবই ভয়াবহ । কাদাপানিতে ডুব দিয়ে এসে বোধহয় লোকে বাসে চড়েছে । কিছুদূর চলার পর হেলপার সাহেব সম্মান করে জানালার পাশে আমাকে একটা আসন দিলো । আহ!!! যাক এবার বাহিরে তাকিয়ে হাওয়া খেতে খেতে যাওয়া যাবে । কিন্তু আমার সে আশায় যেনো গুঁড়েবালি । পাশে বসা লোকটির দিকে তাকিয়ে আমি জাস্ট চুপষানো বেলুনের মতো হয়ে গেলাম । এই বর্ষায় লোকটি একটি পাটের বস্তার মতো মোটা শাল গায়ে জড়িয়ে বসে আছেন আর একটু পর পর যক্ষ্মা রোগীর মতো কাশছেন । ব্যাপারটা এতটুকু পর্যন্ত হলে ঠিক ছিল কিন্তু যখন দেখলাম তিনি যতবার কাশছেন ততবার আমার উপর দিয়ে গিয়ে জানালায় থু থু করে একগাদা কফ ফেলছেন তখন নিজের ভিতরটা কেমন যেনো শিরশির করে উঠলো । এমনিতেই চলন্ত বাসে থুথু ফেললে তা চারিদিকে ছড়িয়ে যায় তাই এই ভয়ে আমি বেশ ভীত ছিলাম কখন না জানি আমার গায়ে এসে পড়ে!! অগত্যা আর কোন উপায় না পেয়ে জানালার পাশের আসনের মায়া ত্যাগ করতে হলো । কানে চুপচাপ এয়ারফোন গুঁজে বাকি রাস্তাটুকু কাটিয়ে দিবো এই সিদ্ধান্ত নিলাম । কিন্তু প্রবাদে আছে অভাগা যেদিকে যায় সাগর শুকিয়ে যায় । বীজগণিতের নিয়মানুযায়ী মনে করি আজকের অভাগা হলাম আমি । আর প্রবাদের সত্যতা প্রমাণ করতেই যেনো পাশের আসনের বাচ্চা মেয়েটা গাড়ির মধ্যে গড়গড় করে বমি করা শুরু করে দিলো । ভুলে একবার সেই বমির দিকে চেয়েছিলাম আর ঐ ভুলের মাশুল আমাকে গুণতে হলো নিজের মাথা চক্কর দেওয়ার মধ্য দিয়ে । বাসের হেলপার বমি পরিষ্কার করার আগ পর্যন্ত আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল । এরপর বেশ কিছুটা পথ কোনরকম ধকল ছাড়াই কেটে গেলো । কিন্তু কপালে বোধহয় আজ আমার সুখ লিখা ছিল না । সামনের আসনের লোকটা তার জুতোজোড়া খুলে পা’দুটো ভাঁজ করে উঠে বসলেন । খুব স্বাভাবিক একটা ঘটনা বলতেই পারেন যদি না আপনি সেখানে তার মোজা থেকে আসা গন্ধ নাকে পেতেন । পুরো বাসের মধ্যে অতি দ্রুত ব্যাপন প্রক্রিয়ায় সেই চিকামরা গন্ধ ছড়িয়ে পড়লো । আমি পারলে বাস থেকে লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে যেতাম কিন্তু তার আগেই এক সাহসী ভদ্রলোক ঐ মোজাওয়ালা লোকটিকে জুতো পড়ার অনুরোধ করেন দেখে বেঁচে গেলাম । এক দিনে এত ধকল নেওয়ার মতো সহ্যক্ষমতা কীভাবে আমার হলো তাই বুঝতে পারছিলাম না । বেশ ক্লান্ত হয়ে যখন ঢাকায় প্রবেশ করলাম তখন ঢাকার চিরচেনা ট্রাফিক জ্যাম আমাকে তার প্রেমে সাড়া দিতে বললো । প্রেম হবে আর তার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক থাকবে না এ কি করে হয় বলুন? আবার আসি পাশের সেই লোকটির কাছে । জ্যামে বদ্ধ বাসে বসে বোধহয় তিনি বেশ অশান্ত হয়ে গিয়েছিলেন । তাই বুকপকেট থেকে একটা বড় চায়নিজ মোবাইল বের করলেন । ভাবলাম বাড়িতে বউ-বাচ্চা রেখে এসেছেন তাদের সাথে বোধহয় কথা বলবেন । কিন্তু তিনি নিজ দায়িত্বে পুরো বাসের বিনোদনের জন্য যে কাজটি করলেন তা হচ্ছে লাউডস্পিকারে যাত্রাপালার গান ছেড়ে দিলেন । আহা সে কি লাইন রে বাবা... অবচেতন মনে এখন পর্যন্ত গানের লাইন বেজেই চলছে-
“মনের দহনে হইলাম পুইড়া ছাড়খার,
ও বন্ধু তুমি ফুঁ দিয়া নিভাইয়া যাও এ আগুন ।”
শেষ পর্যন্ত আর কোন অঘটন না ঘটিয়ে বাস স্টেশনে পৌঁছালো । যাবজ্জ্বীবন কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার স্বাদ আমি পাই নি, নির্বাসনের পর আপন গৃহে আসার আনন্দও আমি পাই নি কিন্তু আমি আজ বাস থেকে নেমে যে সুখ পেয়েছি তা এগুলোর থেকে কোন অংশে কম নয় বলে আমি দাবি করতে দ্বিধাবোধ করবো না ।
আমরা সাধারণ জনগন নিয়মিতই পাবলিক বাসে চলাচল করি । তাই নূন্যতম মানবিক এবং সাধারণ জ্ঞান থেকে যদি আমরা অন্যদের ডিস্টার্ব হয় এমন কাজ না করি তাহলে হয়তো বাস ভ্রমণের অভিজ্ঞতাগুলো এত ভয়াবহ হতো না ।
২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৫১
সুমন কর বলেছেন: আহা হে...বেশ দুর্ভোগেই পড়েছিলেন
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:০৯
নূরতাজ নূর বলেছেন: হ রে ভাই
৩| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৪২
সালাহউদ্দীন আহমদ বলেছেন:
যতদিন যাচ্ছে অবস্থা ততই শোচনীয় হয়ে উঠছে। এভাবে চলতে থাকলে মনে হয় ভবিষ্যতে অক্ষতদেহে বাস থেকে বের হওয়া যাবেনা।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১০
নূরতাজ নূর বলেছেন: ভয় পাইয়ে দিলেন তো
৪| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:১৭
ঢাকাবাসী বলেছেন: রাস্তাঘাটে আমাদের চাইতে অসভ্য অভদ্র নীচু মনের জাতি পৃথিবীতে আর নেই! অভিজ্ঞতা থেকেই বললুম।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৫
নূরতাজ নূর বলেছেন: বিশেষ কোরে পাবলিক বাসে রে ভাই
জীবনটা ত্যানা ত্যানা কইরা ফালাইসে
৫| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:০৩
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে হাসিও পেল খারাপও লাগলো। হাসি কারণ যথেষ্ট রসময় বর্ণনা । কিন্ত খারাপ লাগছে কারণ শিক্ষার হার দেশে বেড়েছে কিন্তু আমরা একটি অসভ্য জাতিই রয়ে গেলাম।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৪
নূরতাজ নূর বলেছেন: রস মিশিয়ে না লিখলে তো পড়তেন না...
হা হা হা...
৬| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪১
দাড়ঁ কাক বলেছেন: খারাপ লাগসে আবার চমৎকার লেখার কারনে মজাও পাইসি।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৬
নূরতাজ নূর বলেছেন: ধন্যবাদ
৭| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:২০
মেহবুবা বলেছেন: আপনার এমন জটিল অবস্থা অবসান!
আগে জেরীর একটা পোষ্ট দেখেছিলাম এমন।
৮| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৭
ভিটামিন সি বলেছেন: আপনার অভিজ্ঞতার ১৫ কলা পূর্ণ হয়েছে। ১৬ কলা হয় নি। একটু বাকি আছে। বাসটা রাস্তায় খারাপ হতো, তারপর ৩০ মিনিট ধরে ড্রাইভার-হেল্পারের নিরলস প্রচেষ্টায় ঠিক হলেও যাত্রীরা বাসের পেছনে ধাক্কা দিয়ে বাস চালু করতো। রাস্তার মাঝের পাংগাসের খামারে বাস পড়ে গিয়ে আপনার মাথা টু বাসের ছাদের আর্শ্চয্য মিলন ঘটতো, বাসের ডেরাইভার আপনাদের সার্বক্ষনিক বিনোদেনের জন্য সুর স+ম+্র+জ্ঞী মমতাজের গান ছেড়ে দিতো তাহলে আপনার ১৬ কলা পূর্ণ হতো।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৭
নূরতাজ নূর বলেছেন: পিলিগ
এভাবে বলবেন না । ১৫ কলা দেখেই তো আমি ফিট হয়ে পড়ে যেতাম
৯| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:১৭
ক্রিবিণ বলেছেন: নিত্য চিত্র... ধকলটা বেশী হলো বলেই লেখাটা এলো...
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৮
নূরতাজ নূর বলেছেন: তা অবশ্য খারাপ বলেন নি । এরকম ধকল গিয়েছে বলেই তো লেখাটা এলো ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৪৩
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: যাবজ্জ্বীবন কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার স্বাদ আমি পাই নি, নির্বাসনের পর আপন গৃহে আসার আনন্দও আমি পাই নি কিন্তু আমি আজ বাস থেকে নেমে যে সুখ পেয়েছি তা এগুলোর থেকে কোন অংশে কম নয় বলে আমি দাবি করতে দ্বিধাবোধ করবো না ।
নূন্যতম মানবিক এবং সাধারণ জ্ঞান থেকে যদি আমরা অন্যদের ডিস্টার্ব হয় এমন কাজ না করাই উচিত সকলেরই।