নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

১২ রবিউল আউয়ালঃ নবীকুলের শিরোমণি, বিশ্বমানবতার আশীর্বাদ হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্মও মৃত্যু দিবস নিয়ে বিভ্রান্তির অবসান হোক

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৯


আজ ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী এবং একই সাথে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর ওফাত দিবস দিবসটি একই সঙ্গে আনন্দের এবং দুঃখেরও। এই দিনেই আমাদের প্রিয় নবী, শেষ নবী, নবীকুলের শিরোমণি, বিশ্বমানবতার আশীর্বাদ হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জন্মও মৃত্যু দিবস। ১২ রবিউল আউয়ালকে মুসলিম বিশ্ব মহানবীর জন্ম ও ওফাতের দিবস হিসেবে পালন করে থাকেন। পবিত্র এই দিনটিকে কেউ ঈদে মিলাদুন্নবী আবার কেউ কেউ সিরাতুন্নবী হিসেবে পালন করেন। মিলাদ ও সিরাত দুটি আরবি শব্দ। মিলাদ অর্থ জন্ম আর সিরাত শব্দের অর্থ জীবনচরিত। সুতরাং মিলাদুন্নবী (সাঃ) অর্থ নবীজির জন্ম আর সিরাতুন্নবী (সাঃ) এর অর্থ নবীজির জীবনচরিত। নবীজির শুভ জন্মকে স্মরণ করে যে অনুষ্ঠান হয় তাকে মিলাদুন্নবী (সাঃ) আর নবীজির সমগ্র জীবনচরিত আলোচনার জন্য যে অনুষ্ঠান তাকে সিরাতুন্নবী (সাঃ) মাহফিল বলা হয়। মিলাদুন্নবী (সাঃ) শিরোনামে যে মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় সেখানে রাসূলে পাক (সাঃ) এর জন্মবৃত্তান্ত অর্থাৎ তার জন্মদিনটাকে প্রধান্য দিয়ে আলোচনা হয়। অন্যদিকে সিরাতুন্নবী (সাঃ) শিরোনামে যে মাহফিল হয় সেখানে রাসূলে পাক (সাঃ) এর জন্ম থেকে শুরু করে পুরো জীবনীই আলোচনা করা হয়।

ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) জন্মগ্রহণ করেন ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে। তবে তার জন্মের সুনির্দিষ্ট তারিখ কোনটি সে সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। ঐতিহাসিক ও হাদিস বর্ণনাকারীদের সিংহভাগের মতে, তিনি রবিউল আউয়াল মাসে জন্মগ্রহণ করেন। এ মাসের কোন তারিখে মহানবীর (সাঃ) জন্ম তা নিয়ে ইসলামের দুটি প্রধান সম্প্রদায় সুন্নী ও শিয়াদের মত ভিন্নতা লক্ষণীয়। সুন্নী মতাবলম্বীদের সিংহভাগ ১২ রবিউল আউয়াল সোমবারকে মহানবীর জন্মদিন বলে ভাবেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম ও ওফাতের তারিখ কোনোটিই নিশ্চিতভাবে ১২ রবিউল আওয়াল বলা ঠিক নয়। অনেক গবেষকের মতে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) জন্ম হিজরী পূর্ব ৫৩ সালের ৯ই রবিউল আউয়াল সোমবার ও ওফাতের তারিখ ২ রবিউল আউয়াল সোমবার-কে সহীহ বলেছেন)। সধর্মীদের অজ্ঞতা আর বিধর্মীদের চক্রান্তের কবলে পড়ে হয়ত কোন এক ভাবে এই সঠিক ইতিহাসটির বিকৃতি ঘটেছে।
ইসলামী ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত “সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ” এর ২য় খণ্ডে বর্ণিত আছে যে “ হযরত রাসূল (সাঃ) ৬৩ বছর বয়সে ১লা রবিউল আওয়াল, সোমবারের সূর্যাস্তের কিছু পূর্বে ইন্তিকাল করেন ।” এই তথ্য দূর-দূরান্তে পৌছাতে সূর্য অস্তমিত হয়ে যায়। যেহেতু চন্দ্র মাসের তারিখ গণনা শুরু হয় সূর্যাস্তের পর থেকে। তাই দূর-দুরান্তে যখন রাসুল (সাঃ) এর ওফাত লাভের সংবাদ গিয়ে পৌছায় ততক্ষণে ২রা রবিউল আওয়াল পরে গেছে। তাই কেও কেও বর্ণনা করেছেন যে রাসুল (সাঃ) ২রা রবিউল আওয়াল ওফাত লাভ করেছেন। যার ফলে রাসূল (সাঃ) এর ওফাতের তারিখ ১/২ রবিউল আওয়াল হিসেবে প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে চক্রান্তকারীরা ১/২ এর মাঝ থেকে “/” চিহ্নটি তুলে দিয়ে এই তারিখটিকে ১২ তে পরিণত করে।
অন্যদিকে সিংহভাগ শিয়া ইতিহাসবিদ ও জীবনীকারের মতে, হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জন্ম ১৭ রবিউল আউয়াল শুক্রবার। শিয়া জীবনীকারদের মধ্যে একমাত্র আল কুলাইনী মনে করেন, ১২ রবিউল আউয়ালেই মহানবী (সাঃ)-এর জন্ম। মহানবী (সাঃ)-এর জন্মদিন সম্পর্কে মতভিন্নতার কারণ হলো তিনি যে সময় জন্ম নেন সে সময় আরবদের মধ্যে দিন ও পঞ্জিকা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা ছিল না। মহানবী (সাঃ)-এর জীবনীকার তের শতকের ইতিহাসবিদ আল-ইরবিলি এ ধারণাই দিয়েছেন। স্মর্তব্য, শুধু মহানবী (সাঃ) নয়, খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক হজরত ঈশা (আঃ) বা যিশুখ্রিস্টের জন্ম তারিখ নিয়েও রয়েছে একই ধরনের বিভ্রান্তি। ২৫ ডিসেম্বরকে যিশুর জন্মদিন হিসেবে পালন করা হলেও এর পক্ষে কোনো গ্রহণযোগ্য দলিল নেই। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম তারিখ সম্পর্কে ঐতিহাসিক এবং সীরাতকারগণের মধ্যে যদিও মতভেদ রয়েছে, তথাপি তারা এ বিষয়ে একমত যে, মহানবী (সাঃ) রবিউল আউয়াল মাসের প্রথম পক্ষে সোমবার জন্মগ্রহণ করেছেন এবং তা ৮ থেকে ১২ তারিখের মধ্যকার কোনো একদিন ছিল। সাইয়েদ সোলাইমান নদভী, সালমান মনসুরপুরী এবং মোহাম্মদ পাশা ফালাকির গবেষণায় এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তবে শেষোক্ত মতই ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে বেশী নির্ভরযোগ্য। যাই হোক, নবীর জন্মের বছরেই হস্তী যুদ্ধের ঘটনা ঘটে এবং সে সময় সম্রাট নরশেরওয়ার সিংহাসনে আরোহনের ৪০ বছর পূর্তি ছিল এ নিয়ে কারো মাঝে দ্বিমত নেই।

অপর দিকে রসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মৃত্যু দিবস হল ১২ রবিউল আউয়াল সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত। বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পর হিজরী ১১ সালের সফর মাসে মুহাম্মদ (সাঃ) জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বরের তাপমাত্রা প্রচন্ড হওয়ার কারণে পাগড়ির ওপর থেকেও উষ্ণতা অনুভূত হচ্ছিল। অসুস্থ অবস্থাতেও তিনি এগারো দিন নামাজের ইমামতি করেন। অসুস্থতা তীব্র হওয়ার পর তিনি সকল স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আয়েশা (রাঃ)এর কামরায় অবস্থান করতে থাকেন। তাঁর কাছে সাত কিংবা আট দিনার ছিল, মৃত্যুর একদিন পূর্বে তিনি এগুলোও দান করে দেন। বলা হয়, এই অসুস্থতা ছিল খাইবারের এক ইহুদি নারীর তৈরি বিষ মেশানো খাবার গ্রহণের কারণে। অবশেষে ১১ হিজরী সালের রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে তিনি মৃত্যবরণ করেন। এ সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। আলী (রাঃ) তাকেঁ গোসল দেন এবং কাফন পরান। আয়েশ (রাঃ)এর কামরার যে স্থানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন, জানাযার পর সেখানেই তাকেঁ দাফন করা হয়। এ থেকে প্রতিয়মান হয় যে দিনটিতে আমাদের প্রিয় নাবীর জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয় সে দিনটি তাঁর মৃত্যু দিবস ও। সুতরাং এদিনটি পালন করতে হলে একই সাথে উৎসব ও দুঃখ প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু আমরা দুঃখ প্রকাশ না করে ঈদে মিলাদুন্নবী অর্থাৎ খুশিকেই বেশী গুরুত্ব দিয়ে থাকি। প্রকারন্তে যা দুঃখের দিনে খুশি হওয়ার সামিল।

বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী, সারওয়ারে কাওনাইন, রাহমাতুল্ লিল আলামীন, শাহানশাহে আরব ও আজম বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পৃথিবীতে শুভাগমন নিঃসন্দেহে ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা। রূহানী দুনিয়া থেকে বস্তুজগতে মহানবীর (সাঃ) আবির্ভাব সত্যি সত্যিই বিশ্বস্রষ্টা মহান রাব্বুল আলামীনের এক অপরূপ করুণা। তাঁর আগমনে শিরক, পৌত্তলিকতা, জাহেলিয়াত ও বর্বরতা দূরীভূত হয়। তাঁর শুভাগমনে বিশ্বের সৌভাগ্যের দ্বার উন্মুক্ত হয়। এমন মহামানবের জীবনচরিত আলোচনা একটি বড় এবাদত। তাঁর পবিত্র জীবনের প্রতিটি ঘটনা মানুষের হেদায়েতের জন্য উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা।
মিলাদুন্নবী রসুল পাক হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) জন্মদিন। অর্থাৎ খুশির দিন। তবে এদিন তো তাঁর ওফাত দিবসও যা শোকের বা দুঃখের। মুসলমান হিসেবে রবিউল আউয়ালে সবাই আন্দোলিত হই। প্রিয়নবীর প্রতি আমাদের ব্যাকুল অন্তরের আকুল অনুভূতির প্রকাশ ঘটে। মহব্বতে রাসূলের নতুন হাওয়া বইতে থাকে চারদিকে। তবে আমাদের মহব্বতের প্রকাশভঙ্গিটা যথার্থ কি-না তা বিবেচনার দাবি রাখে। অনুষ্ঠানের হিড়িক, চোখ ধাঁধানো চাকচিক্য এবং মহব্বতে রাসূলের সস্তা প্রয়োগের কারণে মাহে রবিউল আউয়াল আমাদের জীবনধারায় কোনোই পরিবর্তন আনতে পারে না। গতানুগতিক বহমান স্রোতে পণ্ড হয়ে যায় রবিউল আউয়ালের প্রকৃত চেতনা ও দাবি। রবিউল আউয়ালের পয়গাম ও দাবি কী, সেগুলোও আমাদের কাছে আজ স্পষ্ট নয়। আনুষ্ঠানিকতার সব আয়োজনই আমরা সম্পন্ন করি, কিন্তু এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ও শিক্ষা, বাস্তবজীবনে নবীজির আদর্শের কোনো ছাপ রাখতে পারি না। তাছাড়া হযরত মোহাম্মদ (সা.) তার জিবদ্দশায় তাঁর জন্মদিন পালন করেছেন এমন কোন ঐতিহাসিক দলিল নেই বলে শুনেছি এমনকি তাঁর সাহাবারাও তাঁর জন্মদিন পালন করেছেন এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। সম্ভবতঃ হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর ওফাতের ৬০০ বছর পরে তাঁর জন্মদিন পালনের প্রচলন হয়। সুতরাং ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন শরিয়ত মতে কতটুকু যুক্তিযুক্ত! তাছাড়া হযরত মোহাম্মদ (সা.) তার জিবদ্দশায় তাঁর জন্মদিন পালন করেছেন এমন কোন ঐতিহাসিক দলিল নেই বলে শুনেছি এমনকি তাঁর সাহাবারাও তাঁর জন্মদিন পালন করেছেন এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। সম্ভবতঃ হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর ওফাতের ৬০০ বছর পরে তাঁর জন্মদিন পালনের প্রচলন হয়। সুতরাং ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন শরিয়ত মতে কতটুকু যুক্তিযুক্ত! তাছাড়া হযরত মোহাম্মদ (সা.) তার জিবদ্দশায় তাঁর জন্মদিন পালন করেছেন এমন কোন ঐতিহাসিক দলিল নেই বলে শুনেছি এমনকি তাঁর সাহাবারাও তাঁর জন্মদিন পালন করেছেন এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। সম্ভবতঃ হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর ওফাতের ৬০০ বছর পরে তাঁর জন্মদিন পালনের প্রচলন হয়। সুতরাং ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন শরিয়ত মতে কতটুকু যুক্তিযুক্ত! এ জন্য সিরাতুন্নবীর যথার্থ দাবি আদায়ের প্রতি মনোযোগী হওয়া ইমানদীপ্ত চেতনার সর্বপ্রধান দায়িত্ব।

একজন মুসলমানের ঈমানের দাবি হলো প্রিয়নবী (সা.) এর স্মরণে তাঁর গোটা জীবনকে ভরিয়ে রাখা। নবীজির স্মরণকে বিশেষ কোনো পদ্ধতির মধ্যে সীমিত করা সঙ্কীর্ণ মানসিকতার পরিচায়ক। তবে বিশ্বমানবতার আশীর্বাদ হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জন্মও মৃত্যু দিবসকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে আমরা সিরাতুন্নবী হিসেবে এই দিনকে অথবা বছরের যে কোন একটি দিনকে পালন করতে পারি। কারণ হজরত মোহাম্মদ (সা.) এর জীবনে একটি দিবসে গন্ডিতে না থেকে তার ৬২ বছরের জীবনের আলোচনা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া তাঁর জন্মদিনের আদর্শ বাস্তবায়ন না করে তার সমগ্র জীবনের আদর্শ বাস্তবায়ন করা বা করার চেষ্টা করা বা করতে উদ্বুদ্ধ করা হজরত মোহাম্মদ (সা.) এর উম্মত হিসেবে আমাদের নৈতিক দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য। বিশেষ করে এই পবিত্র দিনে আমরা মহানবী (সা.)-এর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও সালাম জানাই। হানাহানি ও অশান্তিতে ভরা এই বিশ্বে শান্তি স্থাপনে তার রেখে যাওয়া আদর্শ মানব জাতিকে সঠিক পথ দেখাতে পারে। মানব জাতির জন্য যার প্রয়োজন আজ সবচেয়ে বেশি।

সে যাই হোক ইসলামে জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালন করার কোনো অনুমতি নেই। কোনো সাহাবী, তাবেয়ী, ইমাম, উলামায়ে উম্মাহ কেউ এমনটি করেন নি; বরং করাকে বিদআত বলেছেন। সুতরাং তা পরিত্যাজ্য।
রাসূলে পাক (সাঃ) এর স্মরণ, তার মিলাদুন্নবী (সাঃ) অনুষ্ঠান আর সিরাতুন্নবী (সাঃ) অনুষ্ঠান যেভাবেই হোক না কেন তা যেন মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত না করে সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। মিলাদুন্নবী বা সিরাতুন্নবী (সাঃ) যে নামেই হোক না কেন, আমাদের লক্ষ্য থাকতে হবে দুটি। একটি হচ্ছে রাসূল (সাঃ) এর ভালোবাসায় আমাদের ঈমান তেজোদ্দীপ্ত করা এবং অন্তর আলোকিত করা। অপরটি রাসূল (সাঃ) এর আদর্শ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুসরণের জ্ঞান আহরণ এবং তা বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত করা। রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেছেন, 'তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ আমি (রাসূল) তার কাছে তার বাবা-মা, সন্তান-সন্ততি ও দুনিয়ার সবকিছুর চেয়ে প্রিয়তর না হই।' নবীজির ভালোবাসা লাভ করতে হলে তাঁকে ভালোভাবে জানতে হবে। তিনি যে মহান আদর্শ নিয়ে বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন, তা হৃদয়ঙ্গম করতে হবে। তবেই তাঁকে ভালোভাবে জানতে পারব এবং তখনই তাঁর প্রতি আমাদের ভালোবাসা যথার্থ হবে। এজন্যই প্রয়োজন তার জীবনী বা সিরাত নিয়ে আলোচনা। এ বিষয়ে আমি ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে অভিজ্ঞ বন্ধুদের কাছ থেকে সুচিন্তিত মতামত আশা করছি যা আমাদের সঠিক ভাবে হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্মদিন বা তার সারা জীবনের আদর্শ অর্থাৎ সিরাতুন্নবী পালনে উদ্বুদ্ধ করবে। আল্লাহ আমাদের সকল প্রকার রসম-রেওয়াজ ও বিদআত থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি বলছেন যে, এক ইহুদী নারীর তৈরি করা বিষ মাখানো খাবার রসুল (স: ) খেয়েছেন?

প্রথমত: তখন উনার আশেপাশে ইহুদীরা ছিলো না; ইহুদীদের সাথে সম্পর্ক ছিল ভয়ানক; উনি ইহুদী মহিলার তৈরি খেতে পারেন বলে মনে হয় না।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মানুষের মন, গোলক ধাধা, বুঝবার সাধ্য কার। এই এখানে আমি অথচ কয়েক লক্ষ গতিতে সেকেণ্ডে ঘুরে আসছি পরিচিত বিশ্ব।
সেই মনে কখন কি মনে হবে আর কখন কি মনে হবেনা তার হিসাব কে রাখে? আপনার কি মনে হলো, আর কি মনে হলোনা
তার গবেষণার দ্বায়িত্ব আপনার।

২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৩

তার ছিড়া আমি বলেছেন: ধন্যবাদ, অসংখ্য ধন্যবাদ।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ তার ছিড়া,
ভালো থাকবেন।
রসুল (সঃ) মৃত্যু সম্পর্কে আপনাকে বলছিঃ
বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পর হিজরী ১১ সালের সফর মাসে মুহাম্মদ (সাঃ) জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বরের তাপমাত্রা প্রচন্ড হওয়ার কারণে পাগড়ির ওপর থেকেও উষ্ণতা অনুভূত হচ্ছিল। বলা হয়, এই অসুস্থতা ছিল খাইবারের এক ইহুদি নারীর তৈরি বিষ মেশানো খাবার গ্রহণের কারণে। জায়নাব বিনতে আল হারিস নামে এক ইহুদী নারী নবী এবং তার সাহাবীদের দাওয়াত করে। কিন্তু তার মনে ছিল নবী (স) কে হত্যা করার মতলব। সে বিশেষ উপায়ে খোজ নিয়ে জানতে পারল, নবী (স) এর প্রিয় খাবার মেষশাবকের কাঁধের গোশত। তাই সে মেষশাবক মেরে রান্না করল। কিন্তু, তার সাথে মিশিয়ে দিল খুবই শক্তিশালী প্রাণঘাতী বিষ। অবশেষে ১১ হিজরী সালের রবিউল আউয়াল মাসের ১ তারিখ সন্ধায় তিনি মৃত্যবরণ করেন। এ সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। আলী (রাঃ) তাকেঁ গোসল দেন এবং কাফন পরান। আয়েশ (রাঃ)এর কামরার যে স্থানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন,জানাযার পর সেখানেই তাকেঁ দাফন করা হয়।


৩| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৯

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আজকের দিনে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। তিনি আদর্শ মানব সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। তিনি একমাত্র অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আনোয়ার ভাই
আমরা যেন ধোকায় পরে কোন বিদআ ‘এ জড়িয়ে না পরি
সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি এমন আমল করবে যার ব্যাপারে আমার শরীতের নির্দেশনা নেই, উহা প্রত্যাখ্যাত।” (মুসলিম হা/৩২৪৩)
"রাসুল (সাঃ) আরো বলেছেন-যে আমার সুন্নাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে সে আমার দলভুক্ত নয়। [বুখারীঃ ৫০৬৩]
অর্থাৎ যে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর পদ্ধতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে নতুন নতুন ইবাদাত আবিষ্কার করবে অথবা আল্লাহ্‌র নৈকট্যের জন্য নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করবে সে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর পদ্ধতিকে তুচ্ছ মনে করল।

৪| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: আজ দয়াল নদীর জন্মদিনে মুসুল্লিদের কারনে রাস্তায় বেশ জ্যাম হয়েছে।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:১৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমাদের ধর্মে যেহেতু জন্ম-মৃত্যুদিবস পালনের কোন অনুমতি নাই,
তাই “যে ব্যক্তি এমন আমল করবে যার ব্যাপারে আমার শরীতের
নির্দেশনা নেই, উহা প্রত্যাখ্যাত।” (মুসলিম হা/৩২৪৩)

৫| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৫১

তারেক ফাহিম বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অসংখ্য ধন্যবাদ ফাহিম ভাই,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৬| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১২

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: শিরোনাম দেখে ভেবেছিলাম সমালোচনা করব। কিন্তু মূল বক্তব্য দেখে আর করলাম না। যেহেতু, আপনি আপনার লেখাতেও এনেছেন এই তারিখ নিয়ে মতভেদ আছে এবং এটা পালন করাটাও বিদআ'ত সেহেতু, আপনার শিরোনামে 'জন্ম ও মৃত্যু দিবস' কথাটা লেখা ঠিক হয়নি। শুধু ওফাত দিবস হিসেবে ঠিক আছে। ধন্যবাদ...

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:০২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গঠনমূলক সমালোচনা লেখকের প্রত্যাশা।
শিরোণাম নিয়ে বিভ্রান্ত হবার কোন কারণ নাই জনাব,
পাঠক শুধু শিরোণাম দেখে মন্তব্য করলে লেখার আসল
উদ্দেশ্যই মাটি হয়ে যায়। ধর‌্যবাদ আপনাকে আসল লেখাটি
পড়ে যথার্থ মন্তব্য প্রদানের জন্য।

৭| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৩৪

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: রবিউল আউয়াল মাসের ১ তারিখ সন্ধায় তিনি মৃত্যবরণ করেন। সামান্য ভুল বোধহয়।। ১ না ১২ হবে?? হয়তো আমারই ভুল!!

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ সচেতনহ্যাপী আপনার মন্তব্যের জন্য।
তবে আপনার একটু অসচেতনতার কারণে আপনি মূল বক্তব্য তেকে সরে এসেছেন। আসলে আমাদের দয়াল নবী (সাঃ) রবিউল আউয়াল মাসের ১ তারিখ সন্ধায় তিনি মৃত্যবরণ করেন। এই তথ্য দূর-দূরান্তে পৌছাতে সূর্য অস্তমিত হয়ে যায়। যেহেতু চন্দ্র মাসের তারিখ গণনা শুরু হয় সূর্যাস্তের পর থেকে। তাই দূর-দুরান্তে যখন রাসুল (সাঃ) এর ওফাত লাভের সংবাদ গিয়ে পৌছায় ততক্ষণে ২রা রবিউল আওয়াল পরে গেছে। তাই কেও কেও বর্ণনা করেছেন যে রাসুল (সাঃ) ২রা রবিউল আওয়াল ওফাত লাভ করেছেন। যার ফলে রাসূল (সাঃ) এর ওফাতের তারিখ ১/২ রবিউল আওয়াল হিসেবে প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে চক্রান্তকারীরা ১/২ এর মাঝ থেকে “/” চিহ্নটি তুলে দিয়ে এই তারিখটিকে ১২ তে পরিণত করে।
আসা করি বুঝতে পেরেছেন।

৮| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:১৭

কামরুননাহার কলি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর তথ্য দেওয়ার জন্য। সত্যিই অসাধারণ।

ভাইয়া আমার একটি কথা ছিলো আমি একটি লেখা দিয়েছি যদি প্রথম পেজে লেখাটি আসতো তাহলে একটু ভালো লাগতো আমার। আপনি দেখতে পারেন আপনি। আর এই পেজের কারা মডরেটর তাদের আমি কাউকেই চিনি না। তবে আমার মনো হলো আপনিও একজন মডরেটর হতে পারেন তাই আপনাকে বললাম।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কলি আপু, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
তবে আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে আমি মডারেটরদের
কেউ নই। আমিও আপনার মতো একজন সাধারণ ব্লগার,লেখক ও পাঠক।
তবে কাভা ভাইকে লিখে জানালে আপনার সমস্যার সমাধান হতেও পারে।
আমিও কাভা ভাইকে আপনার ব্যাপারটা দেখার জন্য অনুরোধ জানালাম।
ভালো থাকবেন।

৯| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৭

কামরুননাহার কলি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। কাভা ভাইয়া তাকে তো চিনি না । ব্লগেও দেখিনা। হয়তো হারিয়ে গেছে আকাশে।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে আপু
নতুন আপনি, মাত্র ৩ মাস বয়স
কাভা ভাইকে না চিনবারই কথা।
তবে তি্নি নিয়মিত আছেন ব্লগে
সব কিছু ওয়াচ করছেন। আমাদের সবার প্রিয়
মডারেটর কাল্পনিক ভালোবাসা (কাভা) তার নিক
আশা করি চিনতে পেরেছেন। এছাড়া
টাইটেল বারে সহযোগীতা নামে
একটা অপসন আছে ক্লিক করে দেখতে পারেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.