নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

খ্যাতিমান ইংরেজ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৩


খ্যাতিমান কিংবদন্তি ইংরেজ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ন। শুধু হলিউড নয়, গোটা বিশ্বের কোটি কোটি দর্শকের হৃদয় কেড়ে নিয়েছিলেন অড্রে হেপবার্ন তাঁর রূপ এবং গুণ দিয়ে৷ দুর্দান্ত অভিনয় দিয়ে যেমন হলিউড মাত করে দিয়েছিলেন, পাশাপাশি বিশ্বের অন্যতম ফ্যাশন আইকন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ২০১০ সালের একটি জরিপে গত শতাব্দীর সবচেয়ে সুন্দরী নারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। হেপবার্ন ছিলেন একজন ফ্যাশন আইকন, যার ছবি ছিল 'ভোগ' এবং 'হারপার বাজার'-এর প্রচ্ছদের পরিচিত মুখ। যেমন ছিল তাঁর সরলতায় ভরা মায়াভরা মুখ, তেমনি ছিলো মমতায় ভরা একটি সুন্দর মন৷ তাইতো শরীরে ক্যান্সার নিয়েও তিনি ছুটে বেড়িয়েছিলেন আফ্রিকার বিভিন্ন জনপদে৷ পরম মমতায় কোলে তুলে নিয়েছিলেন অনাথ ও আশ্রয়হীন শিশুদের৷ প্রয়াত এই মহান অভিনেত্রী ১৯৯৩ সালের আজকের দিনে ৬৩ বছর বয়সে সুইজারল্যান্ডের টলোচেনাজ ভডে মৃত্যুবরণ করেন। আজ তার ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। কিংবদন্তি ইংরেজ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

অড্রে হেপবার্ন (Audrey Hepburn) ১৯২৯ সালের ৪ঠা মে বেলজিয়ামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম এডা ভ্যান হেমেস্ট্রা অড্রে ক্যাথলিন হেপবার্ন রাস্টন। হেপবার্ন এর পিতার নাম জোসেফ এন্থনি রাস্টন আর মার নাম ব্যারোনেস এলা। হেপবার্নের শৈশবের অধিকাংশ সময় কাটান বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ড এই তিন দেশে। তাঁর পিতার চাকরীর সুবাদে তিনি তিন দেশে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানদের দখলে থাকা নেদারল্যান্ডের আর্নহেম শহরেও তিনি অবস্থান করেছিলেন। আমস্টারডামে থাকাকালীন, তিনি সোনিয়া গাস্কেলের সাথে ব্যালে নিয়ে পড়াশুনা করতেন। তিনি কয়েকটি ভাষায় দক্ষ ছিলেন, এর মধ্যে ইংরেজি, ফরাসি, ডাচ, ইতালীয়, স্প্যানিশ ও জার্মান অন্তর্ভুক্ত। তিনি ইংরেজি, ডাচ , ফ্রেঞ্চ ইটালিয়ান ভাষায় কথা বলতে পারতেন। ১৯৪৪ সালের মাঝে তিনি দক্ষ ব্যালে ডান্সার হয়ে ওঠেন । একটি খারাপ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অড্রের মা বাবার বিচ্ছেদ হয়। ১৯৪৮ সালে তিনি লন্ডনে চলে আসেন ম্যারি রেমবার্টের সাথে ব্যালে প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখেতে এবং সমবেত সঙ্গীতদলের একজন হিসেবে ওয়েস্ট এন্ড মিউজিকাল প্রোডাকশনে কাজ করার সুযোগ পান। তার পর ১৯৬০ সালে রেড ক্রস এর মাধ্যমে ডাব্লিনে তিনি তাঁর বাবার দেখা পান এমং মারা যাওয়ার আগ অব্দি আর্থিক ভাবে সাহায্য করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুধের সময় অড্রের মা তাঁকে নিয়ে নেদারল্যান্ড এ চলে আসেন। সেই সময় তিনি এনিমিয়া এবং অপুষ্টির শিকার হন। বিশ্ব যুদ্ধ তাঁর মনে এত টাই প্রভাব ফেলে যে তিনি ইউনিসেফ এর সাথে একাত্ম হয়ে কাজ করেন। তিনি ইউনিসেফ এর শুভেচ্ছা দূত হয়ে কিছুদিন কাজ করেন। ১৯৯০ সালে তিনি ভিয়েতনাম ভ্রমন করেন। তিনি ইথিওপিয়ার এক এতিম খানায় যান এবং খাবার এর ব্যবস্থা করেন ।

অর্ডে হেপবার্ন প্রথম অভিনেত্রী যিনি একই সিনেমায় (রোমান হলিডে, ১৯৫৩) অভিনয়ের জন্য অস্কার, গোল্ডেন গ্লোব ও বাফটা পুরস্কার অর্জন করেন (১৯৫৪)। বিখ্যাত রোমান হলিডে ছবিতে তিনি প্রিন্সেস অ্যান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন৷ রোমান হলিডের সাফল্যের পর তিনি ১৯৫৪ সালে Sabrina ছবিটি করেন এবং একি সাথে Academy Award for best Actress এবং Bafta Award এর জন্য মনোনীত হন। 'সাবরিনা' কেবল তাকে খ্যাতির শীর্ষেই পেঁৗছে দেয়নি, তাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে তার প্রিয় ডিজাইনার এবং তখনকার সফলতম ডিজাইনার ব্র্যান্ড 'গিভেঞ্চি'র কর্ণধার হিউবার্ট ডি গিভেঞ্চির সঙ্গেও। এর পর থেকে গিভেঞ্চি হেপবার্নের ব্যক্তিগত স্টাইলিস্ট হিসেবে কাজ করা শুরু করেন। তার পোশাক, অনুষঙ্গ সবকিছুর দায়িত্বেই ছিলেন গিভেঞ্চি। হলিউডের রূপালি পর্দার অন্যতম স্টাইল আইকন অড্রে হেপবার্ন কেবল একজন সফল অভিনেত্রীই নন, বরং শত পুরুষের স্বপ্নের নারীও বটে। শুধু তার অভিনয় বা পোশাকই নয়, তার হেয়ার স্টাইলও ছিল দারুণ আকর্ষণীয়। হোক তা কোনো ছবির দৃশ্যের হেপবার্ন অথবা সদ্য প্লেন থেকে নামা এক ক্লান্ত যাত্রী হেপবার্ন। তার চুলের স্টাইল সব সময়ই ফিটফাট, যাকে বলে 'পারফেক্ট'। কিউভিসি নামে সবচেয়ে বড় বিপণি চ্যানেলের এক জরিপে গত শতাব্দীর সবচেয়ে সুন্দরী নারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ন । দ্বিতীয় সেরা হয়েছেন চেরিল কোল। তিনি মেরিলিন মনরোকে পেছনে ফেলেছেন। মেরিলিন মনরো হয়েছেন তৃতীয়। জরিপে এ তিনজনের পরে সেরা সুন্দরীরা হলেনঃ অ্যানজেলিনা জোলি, গ্রেস কেলি, স্কারলেট জোহানসন, হেলি বেরি, প্রিন্সেস ডায়ানা, কেলি ব্রুক ও জেনিফার এনিস্টোন।

১৯৯৩ সালের ২০ জানুয়ারি এপেন্ডিক্স ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সুইজারল্যান্ডে নিজ বাসায় ৬৩ বছর বয়সে ঘুমের মাঝে মারা যান কিংবদন্তি এই অভিনেত্রী। তার মৃত্যুর খবর শুনে অভিনেতা গ্রেগ্রি পেক ক্যামেরার সামনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। প্রসঙ্গতঃ মারা যাবার চার মাস আগে সোমালিয়া এবং বাংলাদেশ ভ্রমন করেন এই অভিনেত্রী। এম্পায়ার ম্যাগাজিনের তালিকা অনুযায়ী বিশ্বের 'টপ ১০০' তালিকায় থাকা এই ফ্যাশন আইকনের শারীরিক মৃত্যুহলেও বিশ্বজুড়ে তার নাম যুগ যুগ ধরে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি, ফ্যাশনবোদ্ধা তথা ফ্যাশন সচেতনদের স্মরণে থাকবে নিঃসন্দেহে। খ্যাতিমান এই অভিনেত্রীর ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। কিংবদন্তি ইংরেজ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৬

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ছোট বেলায় বিটিভিতে শুক্রবার বিকেলে মুভি অফ দ্যা উইক এ অড্রে হেপবার্ন এর ছবি দেখতাম, অন্যন্য এই অভিনেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা।

২| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪৮

মলাসইলমুইনা বলেছেন: এখন মুভি দেখা হয় না একদম | তবুও আমাকে চুপ চাপ কোনো শান্ত দুপুরে হলিউডের একটা মুভি বেঁচে নেবার সুযোগ দিলে আমি দেখতে চাইবো গ্রেগরি পেক আর হেপবার্নের রোমান হলিডে | দুই নাম্বার মুভিটা হবে রিওয়াইন করে দেখা আবার রোমান হলিডে | এখন আমেরিকার আসলে পশ্চিমের মেয়েদেরই লং ব্ল্যাক গাউন, লং ব্ল্যাক গ্লোভস, ব্ল্যাক হিল, ব্ল্যাক গগলস -অল ব্ল্যাক যে ফ্যাশন সব সময়ের জন্য প্রিয় হয়ে গেছে, সেটা হয়েছে অড্রে হেপবার্নের ১৯৬১ সালের বিখ্যাত সিনেমা ব্রেকফার্স্ট এট টিফেনি-র Holly Golightly ক্যারেকটারের পড়া ব্ল্যাক ড্রেসের কারণেই | ১৯৯৩ সালে হেপবার্ন যখন বাংলাদেশে যান, তখন আমার কাজিন কবিতা আপা (উনি তখন দেশের বিখ্যাত সাপ্তাহিক বিচিত্রায় কাজ করতেন) হেপবার্নের একটা ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন কিছু সাংবাদিকের সাথে মাইল | অনেক দিন আমেরিকা প্রবাসী কবিতা অপার থেকে আমি আমি কতবার যে হেপবার্ন কে কাছে থেকে দেখার আর সেদিনের সাক্ষাৎকারের কথা শুনতে চেয়েছি যখন ওয়াশিংটন ডিসিতে এক বছর ছিলাম !! UNESCO-র ব্র্যান্ড এম্বাসেডর স্ক্যান্ডাল বর্জিত অসাধারণ অভিনয়ের কুশলী অড্রে হেপবার্ন হলিউডের সব সময়ের সেরা এক্ট্রেসদের মধ্যেই একজন |

৩| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:০৯

জগতারন বলেছেন:
সৃষ্টি কর্তা কিছু কিছু মানুষকে বিশেষ গুন দিয়ে সৃষ্টি করেন।
'অর্ডে হেপবার্ন'কে অসাধারন শারীরিক রূপ ও গুন দিয়ে সৃষ্টি করেছিলেন।
কিংবদন্তি ইংরেজ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করি।

৪| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১৩

মো: নিজাম গাজী বলেছেন: খ্যাতিমান ইংরেজ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।

অনেক তথ্য জানলাম আপনার সুন্দর লেখনীর মাধ্যেমে। অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় লেখক। শুভকামনা শতত।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.