নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযুদ্ধের অকুতভয় বীর সেনানী এবং জাসদের প্রতিষ্ঠাতা মেজর এম,এ জলিলের ৭৫তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪৫


মুক্তিযুদ্ধের অকুতভয় বীর সেনানী ৯নং সেক্টর কমান্ডার এবং জাসদের প্রতিষ্ঠাতা মেজর এম,এ জলিল। তিনি ছিলেন একজন রাজনীতিক ও সামরিক কর্মকর্তা। দেশের একজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই এম এ জলিলের রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। তিনি ছিলেন একমাত্র ব্যক্তি যিনি আমৃত্যু কেবল দেশের স্বার্থকে ঊর্ধ্বে রেখে কাজ করে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থাত্ পূর্ণ মেয়াদে সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বাইরেও লেখক হিসেবে মেজর জলিল উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। ছাত্রজীবনেই তাঁর লেখালেখির অভ্যাস ছিল। স্বাধীনতার পরে সরকারী বাহিনীর নিপীড়ন-নির্যাতন ও জেল-জুলুমের পরও অন্যায় আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে তাঁর প্রতিবাদী কন্ঠ ছিল সোচ্চার। সরকারবিরোধী রাজপথের নানা আন্দোলনে মেজর জলিল ছিলেন সম্মুখ সারির নেতা। অন্যায় আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন আপোষহীন নেতা।১৯৪২ সালের আজকের দিনে বরিশাল জেলার উজিরপুরে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ আব্দুল জলিল। মুক্তিযুদ্ধের এই বীর সেনানীর ৭৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। মুক্তিযুদ্ধের অকুতভয় বীর সেনানীর জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।

১৯৪২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলার উজিরপুরে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ আব্দুল জলিল। যিনি মেজর এম এ জলিল নামেই সমাধিক পরিচিত। তাঁর পিতা জোনাব আলী চৌধুরী ও মা রাবেয়া খাতুন। তার জন্মের তিন মাস আগেই তার পিতা জোনাব আলী মৃত্যুবরণ করেন। এম এ জলিলের শৈশব ও কৈশোর কাটে উজিরপুরে। তিনি উজিরপুর ডব্লিউবি ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন থেকে ১৯৫৯ সালে কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ফিশারিজ ডিপার্টমেন্টে কিছুদিন চাকরি করেন। কিছুদিন পর চাকরি ছেড়ে পড়াশুনা করতে পশ্চিম পাকিস্তানে যান তিনি। ১৯৬১ সালে সেখানকার মারি ইয়ং ক্যাডেট ইনস্টিটিউশন থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। পাশাপাশি গ্রহণ করেন সামরিক শিক্ষা। এরপরই আব্দুল জলিল ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে ট্রেনি অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। সামরিক বাহিনীতে চাকরিরত অবস্থায় তিনি বি.এ. পাস করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি কমিশন প্রাপ্ত হন এবং ১২নং ট্যাঙ্ক ক্যাভারলি রেজিমেন্টের অফিসার হিসেবে তত্কালীন পাক-ভারত যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে যুদ্ধবিরতির পর পাকিস্তান একাডেমি থেকে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেন। পরে মুলতানে কর্মরত থাকাকালে তিনি ইতিহাসে এম. এ. ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭০ সালে তিনি মেজর পদে উন্নীত হন। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুর হলে তিনি ১৯৭১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মায়ের অসুস্থতার জন্য এক মাসের ছুটি নিয়ে বরিশালে আসেন এবং মার্চে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ইতিপূর্বে কুষ্টিয়ার মেহেরপুরের ভবেরপাড়ার আম্রকাননে মুজিব নগর সরকার গঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন এম এ জি ওসমানী। মুক্তিযুদ্ধের হাইকমান্ড থেকে সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে বৃহত্তর বরিশাল, খুলনা, ফরিদপুরের একাংশ, পটুয়াখালী-বরগুনাসহ ৯নং সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত করে মেজর জলিলকে ওই সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই সেক্টরের হেডকোয়ার্টার স্থাপিত হয় টরকির হাসনাবাদে। হিঙ্গলগঞ্জে ক্যাপ্টেন হুদার নেতৃত্বে সেক্টর অপারেশন ক্যাম্প এবং শমসের নগরে একটা নজরদারি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এরপরই শুরু হয় পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ। ১৮ এপ্রিলের পর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মেজর জলিল একটি বড় বাহিনী গড়ে তোলেন।

গেরিলা বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও মেজর জলিলের আরেক সৈনিকের নাম 'বিপ্লবী বাংলাদেশ'। সাপ্তাহিক এ পত্রিকাটি ৯নং সেক্টরের কলম সৈনিক হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এর প্রথম প্রকাশ ৪ আগস্ট ১৯৭১। সম্পাদক নুরুল আলম ফরিদ। ৯নং সেক্টর হেড কোয়ার্টারের আনুকূল্যে ও সহায়তায় বসিরহাটের হাসনাবাদ থেকে সাপ্তাহিক পত্রিকা হিসেবে এটি নিয়মিত প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটি মুজিবনগর হেড কোয়ার্টার, ৯নং সেক্টরের মুক্ত এলাকাসহ সেক্টরভূক্ত সকল ক্যাম্প ও স্থাপনায় অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাসহ মুক্তিকামী মানুষগুলোর জন্য একটা প্রেরণার উত্স ছিল। মুক্তিযুদ্ধকালে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থানরত সকল এমএনএ ও এমসিএসহ সকল স্তরের জনগণ এ পত্রিকার পাঠক ছিলেন। শত আর্থিক অসুবিধার মধ্যেও ফরিদসহ সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকগণ বহু শ্রম ব্যয়ে মুক্তিযুদ্ধের কলমসৈনিক হিসেবে ৯নং সেক্টরের মুখপত্র 'বিপ্লবী বাংলাদেশ' নিয়মিত প্রকাশ করেছেন। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখ থেকে 'বিপ্লবী বাংলাদেশ' বরিশাল থেকে প্রথমে সাপ্তাহিক হিসেবে এবং পরে ১৯৯৬ সালে এটি দৈনিক হিসেবে প্রকাশিত হয়। 'বিপ্লবী বাংলাদেশ' তখন একটি সাব সেক্টরের মতো ভূমিকা পালন করে। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় সূচিত হলে স্থানীয় লোকজন তখন বিজয়ের আনন্দে আত্মহারা। লোকজন নানাভাবে আতিথ্য দেখিয়ে জলিল ও তাঁর বাহিনীকে মুগ্ধ করল। তবে দেশ স্বাধীন হলেও ব্যক্তি জলিল ভোগ করতে পারেননি স্বাধীনতার স্বাদ। ১৯৭১ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেজর জলিলকে গ্রেফতার করা হয়। ভারতীয় সেনাদের লুটপাট ও খুলনা সীমান্ত এলাকা দিয়ে দেশের সম্পদ পাচারের তীব্র প্রতিবাদ করাই ছিল তাঁর অপরাধ। তাঁকে ধরে প্রথমে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে অবস্থিত সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে কার্যত নজরবন্দি করে রাখা হয়। মেজর জলিল ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাজবন্দি। ১৯৭২ সালের ২ সেপ্টেম্বর তিনি মুক্ত হন এ বন্দিদশা থেকে। এর পরে ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ দলীয় কর্মীদের নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন ঘেরাও অভিযানকালে তিনি পুনরায় গ্রেফতার হন। পরে ১৯৭৫ সালের ৮ নভেম্বর মুক্তি লাভ করেন। তত্কালীন সামরিক সরকার তাঁর বিরদ্ধে সরকার উত্খাতের ষড়যন্ত্র এবং অবৈধ পন্থায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল প্রচেষ্টার অভিযোগ আনে। তত্কালীন সামরিক সরকার কর্তৃক ২৫ নভেম্বর পুনরায় তিনি গ্রেফতার হন। বিশেষ সামরিক ট্রাইব্যুনালে তাঁর বিচার করা হয়। ১৯৭৬ সালের ১৮ জুলাই আদালতের দেয়া রায়ে তিনি যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হন। তবে ১৯৮০ সালের ২৪ মার্চ তিনি মুক্তি লাভ করেন। বন্দিদশা থেকে মুক্তি লাভের পর মেজর জলিল রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েন। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক পরিক্রমায় দেখা গেছে, ১৯৭২ সালের অক্টোবর মাসে তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। তিনি ছিলেন এ দলেন যুগ্ম আহ্বায়ক। ২৬ ডিসেম্বর দলের কাউন্সিল অধিবেশনে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তিনিই ছিলেন জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তাঁর নেতৃত্বে জাসদ দেশে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। সরকার বিরোধী রাজনীতিতে তিনি ছিলেন সক্রিয়। মেজর জলিল ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এ নির্বাচনে সাতটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। কিন্তু কোনো আসনেই তিনি জয়লাভ করতে পারেননি। এছাড়াও জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কৃষক শ্রমিক সমাজবাদী দলের সমন্বয়ে গঠিত ত্রিদলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মেজর জলিল ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

(মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানীর সাথে মেজর এম এ জলিল)
১৯৮২ সালে ঘাটাইলের (টাঙ্গাইল) আখতারুজ্জামান খান ও মাহমুদা আখতারের তনয়া সায়মার সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন মেজর জলিল। মেজর জলিলের দুই মেয়ে সারাহ জলিল ও ফারাহ জলিল। সারাহ আইন পেশায় নিয়োজিত। ফারাহ জলিলও আইন বিষয়ে পড়াশুনা করেছেন। মেজর জলিলের স্ত্রী সায়মা জলিল রাজনীতির সাথে জড়িত। মেজর জলিল ১৯৮৪ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করে জাতীয় মুক্তি আন্দোলন নামে একটি দল গঠন করেন এবং এই দলের মাধ্যমে ইসলামী আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করেন। লিবিয়া, ইরান, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে ইসলামিক সম্মেলনে তিনি যোগ দেন। লেখক হিসেবে মেজর জলিল উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। স্কুল জীবনে তিনি 'পথের কাঙ্গাল' ও 'রীতি' নামে দুটি উপন্যাস লেখেন। কিন্তু পরে এ পান্ডুলিপি দুটি হারিয়ে যায়। একটু অবসর পেলেই তিনি বই পড়তেন। স্ত্রী ও সন্তানদের সর্বদা বই পড়ার উপদেশ দিতেন। পরবর্তীতে তিনি মূলত রাজনৈতিক বিষয়েই লেখালেখি করেন। মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা তাঁর বইগুলো ছিল প্রামাণ্য রচনা। তাঁর রচিত রাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ :১। সীমাহীন সমর (১৯৭৬), ২। দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবনদর্শন, সূর্যোদয় (১৯৮২), ৩। অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা (১৯৮৯), ৪। Bangladesh Nationalist Movement for Unity: A Historical Necessity। এছাড়া তিনি বেশকিছু কবিতাও লিখেছেন।

অকুতভয় এই বীর মুক্তি যোদ্ধা ১৯৮৯ সালের ১৯ নভেম্বর রাত ১০টা ৩০ মিনিটে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে মৃত্যুবরণ করেন৷ ১৯৮৯ সালের ৫ নভেম্বর একটি ইসলামিক কনফারেন্সে যোগ দিতে মেজর জলিল পাকিস্তান যান। ১০, ১১ ও ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯ নভেম্বর পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অবস্থানকালেই তিনি হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। পরে ২২ নভেম্বর তাঁর মৃতদেহ ঢাকায় আনা হয় এবং সামরিক মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন করা হয়। ঝাঁকড়া চুলের টকবগে সেই মুক্তিযুদ্ধের নেতা মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। উল্লেখ্য, মেজর (অবঃ) জলিলই সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তি যার লাশ দাফনের মাধ্যমেই মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন শুরু হয়েছে।

সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত মেজর এম এ জলিল সব সময় পাজামা-পাঞ্জাবি পড়তেন। ধনদৌলতের প্রতি তাঁর ছিল না কোনো মোহ। দেশ, দেশের মাটি ও দেশের জনগণই ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় সম্পদ। মেজর জলিল তাঁর জীবদ্দশায় রাষ্ট্রীয় কোনো পুরস্কার বা সম্মাননা পাননি। এমনকি রাষ্ট্র কর্তৃক তাঁকে মুক্তিযোদ্ধার খেতাবটি পর্যন্ত দেয়া হয়নি। তবে তাঁর মৃত্যুর পরে স্বাধীনতা যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ন অবদানের জন্য মেজর এম এ জলিলের নামে ঢাকা মহানগরীর একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও বরিশালের উজিরপুরের শিকারপুর ব্রিজটি মেজর জলিলের নামে করা হয়েছে।এ ছাড়া নগরীর কাঁটাবন মোড় থেকে ফুলবাড়িয়া পর্যন্ত সড়কটি এখন থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জলিল সড়ক নামে পরিচিত হচ্ছে। বরিশাল শহরেও তাঁর নামে একটি সড়কের নামকরণ করা ছাড়াও বরিশালে একটি অডিটোরিয়াম ও তাঁর একটি ভাস্কর্য রয়েছে।

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজবন্ধি, শোষীত মানুষের পক্ষের প্রথম দল জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম এ জলিলের ৭৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। মুক্তিযুদ্ধের অকুতভয় বীর সেনানী, ৯নং সেক্টর কমান্ডার এবং জাসদের প্রতিষ্ঠাতা মেজর এম,এ জলিলের জন্ম দিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।

সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১০

শাহিন-৯৯ বলেছেন: শেষের দিকে মনে হয় ইসলামী চেতনায় বিশ্বাসী হয়েছিলেন।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অন্তত মানুষের শেষ জীবনে
ইসলামী চেতনায় বিশ্বাসী হওয়া
আবশ্যক।

২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩১

ফেরদাউস আল আমিন বলেছেন: এই বীর সেনাপতিকে সশ্রদ্ধ সালাম।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৪০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধন্যবাদ আপনােকে আমিন ভাই
ভালো থাকবেন।

৩| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০৫

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: ওসমানী মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ছিলেন না, মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক কে ছিলেন, এটা আপনি জানেন না; বোধগম্য হলো না। স্বাধীনতা পরবর্তীতে জাসদের কর্মকান্ড সম্পর্কে আপনার ধারণা না থাকার কথা না। খালেদ-হায়দার-হুদা হত্যায়ও উনার সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করায় তাঁর অনুতাপ হয়েছিলো শেষ সময়ে। সারাজীবন বামরাজনীতির সমর্থক হলেও শেষ দিকে কট্টরপন্থী ইসলামিক রাজনীতির দিকে ঝুঁকেন এর কাফফারা হিসেবে।

আরও কিছু বিষয় আছে, যেগুলো এড়িয়ে গিয়ে কিছু মুখস্ত বুলি আওড়েছেন। যাহোক, একটা লিঙ্ক শেয়ার দিচ্ছি।
http://www.somewhereinblog.net/blog/aniketboiragitorza/30128154

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

দেখুন উইকিপিডিয়াঃ
১৯৭১ সালের ১১ই জুলাই মন্ত্রীসভার এক বৈঠকে কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, লেফটেনেন্ট কর্নেল আব্দুর রবকে সেনা বাহিনী প্রধান ও ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারকে বিমান বাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রয়োজেনে ইতিহাস দেখে নিবেন।

৪| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:



যুদ্ধ কয়েক হাজার যোদ্ধার উপর ভয়ংকর ,মানসিক প্রভাব রেখে গেছে; মেজর জলিল যুদ্ধোত্তর মানসিক সমস্যায় ভুগেছেন বলে মনে হয়, যুদ্ধের পর উনার চালচলন ও পদক্ষেপগুলো ভুল ছিলো।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
হয়তোবা, তবে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তার অবদানকে
অস্বীকার করার কোন সুযোগ নাই। ধন্যবাদ চাঁদগাজী

৫| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: জেনারেল ওসমানী ছিলেন মুক্তি যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি। বঙ্গবন্ধু ছিলেন সর্বাধিনায়ক।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: মুক্তিবাহিনীঃ উইকিপিডিয়া
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরবিন্যাস
মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টর
মূল নিবন্ধ: মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরসমূহ
মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের পরপরই তা পাকবাহিনীর সাথে লড়াইয়ের দিকে মনোনিবেশ করে। ১১ই জুলাই ১৯৭১ মন্ত্রীসভার এক বৈঠকে কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, লেফটেনেন্ট কর্নেল আব্দুর রবকে সেনা বাহিনী প্রধান ও ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারকে বিমান বাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ দেয়া হয়।

এই বৈঠকে বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে [১৫] ভাগ করা হয় এবং প্রত্যেকটি সেক্টরের জন্য একজন সেক্টর কমাণ্ডার নিয়োগ দেয়া হয়। ১০নং সেক্টরকে সর্বাধিনায়কের সরাসরি তত্ত্বাবধানে দেয়া হয় এবং এতে নৌ-সেনা ও সর্বাধিনায়কের নিজস্ব বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

পাকিস্তান আর্মি থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়া সেনা কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সেক্টরের দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়। এইসব প্রশিক্ষিত সেনা কর্মকর্তারা গেরিলা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিতেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে অপ্রশিক্ষিতদের প্রশিক্ষন দিতেন। এই প্রশিক্ষনকেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগই সীমান্তের নিকটবর্তী এলাকায় ছিলো এবং ভারত সরকারের সরাসরি সহায়তায় পরিচালিত হতো।

যুদ্ধে সামর্থ্য বাড়ানোর জন্য প্রতিটি সেক্টরকে আবার কয়েকটি উপ-সেক্টরে ভাগ করা হয়। নিচের ছকে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরগুলোকে তাদের সেক্টর কমাণ্ডারের নামসহ তালিকাভুক্ত করা হলোঃ

৬| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩৪

শিখণ্ডী বলেছেন: বুড়ো কালে পচে গিয়েছিলেন।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ, একটা মানুষের জীবনে সব কালেে
একই রকম যোগ্যতা থাকেনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.