নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
এসো হে বৈশাখ এসো এসো্,
তাপসনিশ্বসবায়ে, মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক।
এসো, এসো হে বৈশাখ এসো এসো্।
চিরায়ত এই আহ্বানের মধ্য দিয়ে শুরু হলো পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ ১৪২৫ বঙ্গাব্দ। পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম মাসের প্রথম দিন, তথা বাংলা নববর্ষ। দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়। ত্রিপুরায় বসবাসরত বাঙালিরাও এই উৎসবে অংশ নেয়। সে হিসেবে এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন উৎসব। হিন্দু সৌর পঞ্জিকা অনুসারে বাংলা বারটি মাস অনেক আগে থেকেই পালিত হত। এই সৌর পঞ্জিকার শুরু হত গ্রেগরীয় পঞ্জিকায় এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় হতে। হিন্দু সৌর বছরের প্রথম দিন আসাম, বঙ্গ, কেরল, মনিপুর, নেপাল, উড়িষ্যা, পাঞ্জাব, তামিল নাড়ু এবং ত্রিপুরার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অনেক আগে থেকেই পালিত হত।
এখন যেমন নববর্ষ নতুন বছরের সূচনার নিমিত্তে পালিত একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে, এক সময় এমনটি ছিল না। তখন নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ আর্তব উৎসব তথা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে পালিত হত। তখন এর মূল তাৎপর্য ছিল কৃষিকাজ। প্রাযুক্তিক প্রয়োগের যুগ শুরু না হওয়ায় কৃষকদের ঋতুর উপরই নির্ভর করতে হত। ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করত। খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় (৫ই নভেম্বর, ১৫৫৬) থেকে। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়। আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হত। এর পর দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হত। এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয় যার রুপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে।
আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে। প্রথম মহাযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্ত্তণ ও পূজার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ১৯৩৮ সালেও অনুরূপ কর্মকান্ডের উল্লেখ পাওযা যায়। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৭ সনের আগে ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালনের রীতি তেমন একটা জনপ্রিয় হয় নি। বাংলা দিনপঞ্জীর সঙ্গে হিজরী ও খ্রিস্টীয় সনের মৌলিক পার্থক্য হলো হিজরী সন চাঁদের হিসাবে এবং খ্রিস্টীয় সন ঘড়ির হিসাবে চলে। এ কারণে হিজরী সনে নতুন তারিখ শুরু হয় সন্ধ্যায় নতুন চাঁদের আগমনে। ইংরেজি দিন শুর হয় মধ্যরাতে। আর বাংলা সনের দিন শুরু হয় ভোরে, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে। কাজেই সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শুর হয় বাঙালির পহেলা বৈশাখের উৎসব।নতুন বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্টীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। গ্রামে মানুষ ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, নতুন জামাকাপড় পড়ে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বাড়িঘর পরিষ্কার করা হয় এবং মোটমুটি সুন্দর করে সাজানো হয়। বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকে।
(পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে পান্তা ভাতের সাথে ইলিশ মাছ পরিবেশন)
কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকায়, কোন খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। মেলাতে থাকে নানা রকম কুঠির শিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন, থাকে নানারকম পিঠা পুলির আয়োজন। অনেক স্থানে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। তবে এই পান্তা ইলিশ বা মঙ্গল শেভাযাত্রা, বাংলাদেশের শেকড়ের সংস্কৃতি কিনা তা গবেষণার বিষয়। এই দিনের একটি পুরনো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন। এর মধ্যে থাকে নৌকাবাইচ, লাঠি খেলা কিংবা কুস্তির। বাংলাদেশে এরকম কুস্তির সবচেয়ে বড় আসরটি হয় ১২ বৈশাখ, চট্টগ্রাম-এর লালদিঘী ময়দান-এ। এটি জব্বারের বলি খেলা নামে পরিচিত। বিশ্বের সকল প্রান্তের সকল বাঙালি এ দিনে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়, ভুলে যাবার চেষ্টা করে অতীত বছরের সকল দুঃখ-গ্লানি। সবার কামনা থাকে যেন নতুন বছরটি সমৃদ্ধ ও সুখময় হয়। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা একে নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করার উপলক্ষ্য হিসেবে বরণ করে নেয়। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ই এপ্রিল অথবা ১৫ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালিত হয়। আধুনিক বা প্রাচীন যে কোন পঞ্জিকাতেই এই বিষয়ে মিল রয়েছে। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়। বাংলা একাডেমী কর্তৃক নির্ধারিত আধুনিক পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে।তবে প্রতিবেশী দেশ ভারতের পশ্চিম বঙ্গে আমাদের একদিন পর অর্থাৎ ১৫ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উৎযাপন করা হয়। নতুন বছরের প্রথম দিন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে।
নিশি অবসান প্রায় ঐ পুরাতন বর্ষ হয় গত,
আমি আজি ধূলিতলে জীর্ণ জীবন করিলাম নত।
বন্ধু হও শত্রু হও যেখানে যে রও, ক্ষমা কর আজিকার মত,
পুরাতন বরষের সাথে পুরাতা অপরাধ যত।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে শুরু হোক পয়লা বৈশাখ বা পহেলা বৈশাখ।
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ও নববর্ষের শুভেচছা,
১৪২৫শের প্রতিটি দিন কাটুক আনন্দ গানে।
ভালো থাকবেন।
২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৪১
ফয়েজ উল্লাহ রবি বলেছেন: ১৪২৫ হবে সাল !
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৩১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তাই নাকি ??
সবাই ভুল ধরার ওস্তাদ !!
একটু ভুল না হলে কি আপনাকে পেতাম ?
নববর্ষের শুভেচ্ছা জানবেন।
৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৪২
শাহ আজিজ বলেছেন: নুরু ভাই , মাথা মোথা কি আউলাইয়া গেছে?? ১৪২২ কইত্থনে আইলো???
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আজিজ ভাই নববর্ষের শুভেচ্ছা।
১৪২২ এর পরে ১৪২৫ আইলো
মাঝ খানে ২ বছর কালের গর্ভে
কিন্তু আমরা যেই তিমিরে সেই তিমিরেই আছি!
৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:১৩
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: আপনার মাথা তো চন্দ্র সাহেবের চাইতেও মোটা।
সাল টা-----
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৩৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
স্বীকার করলেনতো !! চন্দ্র সাহেবের মাথা মোটা !!
৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:২২
সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: বৈশাখ আসে বৈশাখ যায়। কিন্তু বৈশাখের সেই ঐতিহ্য আর আসে না।
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অসংখ্য ধন্যবাদআপনাকে সাকিব
সবাই সালের হিসাব করে কিন্তু
কিন্তু বৈশাখের সেই ঐতিহ্য আর আসে না।
দারুন উপলব্ধি !! শুভেচ্ছা জানবেন
৬| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৪৬
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কিছু টাইপো চোখে পড়ে ছেলে।
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
টাইপো শব্দের অস্তিত্ব যখন আছে
তখন চোখে পড়তে দোষ কি ?
ধন্যবাদ আনোয়ার ভাই
শুভেচছা জানবেন।
৭| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:১৮
এম আর তালুকদার বলেছেন: স্বাগত ১৪২২ বঙ্গাব্দ !!!!!
১৪২৫ হবে সাল l
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তালুকদার সাহেব
১৪২২ আর ১৪২৫ ব্যবধান ২ বছর।
এই দুই বছরে পরিবর্তন কি এসেছে
আমাদের জীবনে? শুধু সংখ্যার হিসেবে
মিলবেনা জীবনের অংক !!
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৩৭
আবু আফিয়া বলেছেন: নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইল