নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী মোহাম্মদ রফির ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

৩১ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:২৭


উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী মোহাম্মদ রফি। ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে একসময় সমগ্র উপমহাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। সঙ্গীত কলায় অসামান্য অবদান রাখায় শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে জাতীয় পদক এবং ৬-বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন মোহাম্মদ রফি। প্রায় চল্লিশ বছর সময়কাল ধরে সঙ্গীত জগতে থাকাকালীন তিনি ছাব্বিশ হাজারেরও অধিক চলচ্চিত্রের গানে নেপথ্য গায়ক হিসেবে সম্পৃক্ত ছিলেন মোহাম্মদ রফি। তিনি বহুবিধ গানে অংশ নেয়ার বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তন্মধ্যে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, দেশাত্মবোধক গান, বিরহ-বিচ্ছেদ, উচ্চ মার্গের প্রেম-ভালবাসা, কাওয়ালী, ভজন, গজল-সহ বিভিন্ন গোত্রের গানে দক্ষতা ও পারদর্শীতা দেখিয়েছেন সমানভাবে। বিশেষ করে হিন্দী এবং উর্দু ভাষায় সমান দক্ষতা থাকায় তার গানগুলোতে বৈচিত্র্যতা এসেছে সমধিক সঙ্গীত ভুবনে সুদীর্ঘ চার দশক সময়কাল অত্যন্ত জনপ্রিয়তায় অতিবাহিত করেন। উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী মোহাম্মদ রফির ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮০ সালের আজকের দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কিংবদন্তি এই সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

মোহাম্মদ রফি ১৯২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর তদানীন্তন ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব এলাকার অমৃতসর গ্রামের কাছাকাছি কোটলার সুলতান সিংয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। সঙ্গীত শিল্পী মোহাম্মদ রফি'র ডাক নাম ছিল ফিকো। তাঁর পিতার নাম হাজী আলী মোহাম্মদ। অমৃতসর গ্রামের সুলতান সিংয়ের অধিবাসী হাজী আলী মোহাম্মদের ৬ষ্ঠ সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ রফি। ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে একসময় সমগ্র উপমহাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি সঙ্গীত ভুবনে সুদীর্ঘ চার দশক সময়কাল অতিবাহিত করেন। মোহাম্মদ রফি তাঁর নিজ গ্রামে এক ফকিরের ভজন গানকে অনুকরণ করে গান গাওয়া শুরু করেন। জীবিকার সন্ধানে তার বাবা হাজী আলী মোহাম্মদ ১৯২০ সালে লাহোরে চলে যান এবং ভাট্টি গেটের নূর মহল্লায় একটি স্যালুনের মালিক হন। তার বড় ভাই মোহাম্মদ দ্বীনের বন্ধু আবদুল হামিদ লাহোরে অবস্থানকালীন সময়ে রফি'র প্রতিভা দেখে তাকে গান গাইতে সাহস জুগিয়েছিলেন। ১৩ বছর বয়সে রফি লাহোরের প্রথিতযশা শিল্পী কে. এল. সাইগলের (কুন্দনলাল সায়গল) সাথে জীবনের প্রথম দর্শক-শ্রোতাদের মুখোমুখি হয়ে কনসার্টে গান পরিবেশন করেন। ১৯৪১ সালে শ্যাম সুন্দরের পরিচালনায় গুল বালোচ ছবির মাধ্যমে সঙ্গীতে পেশাগতভাবে অভিষেক ঘটান রফি। পরের বছর বোম্বের চলচ্চিত্র গাও কি গৌরী ছবিতে নৈপথ্য গায়ক হিসেবে অভিষেক ঘটান। ১৯৪৪ সালে মোহাম্মদ রফি বোম্বেতে (বর্তমান মুম্বাই) চলে আসেন। সেখানে তিনি উস্তাদ বড়ে গোলাম আলী খান, উস্তাদ আব্দুল ওয়াহিদ খান, পণ্ডিত জীবনলাল মত্তো এবং ফিরোজ নিজামী'র মতো প্রথিতযশা শিল্পীদের কাছ থেকে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নেন।

তিনি হিন্দীসহ কোনকানি, উর্দু, ভোজপুরী, উড়িয়া, পাঞ্জাবী, বাংলা, মারাঠী, সিন্ধী, কানাড়া, গুজরাটি, তেলেগু, মাঘী, মৈথিলী, অহমীয়া ইত্যাদি ভাষায় তিনি গান গেয়েছেন। এছাড়াও তিনি গান গেয়েছেন - ইংরেজী, ফার্সী, স্প্যানিশ এবং ডাচ ভাষায়। পাঞ্জাবী ভাষায় নির্মিত গুল বালুচ (১৯৪৪ সালে মুক্তি পায়) চলচ্চিত্রে জিনাত বেগমের সঙ্গে দ্বৈত সঙ্গীত "সোনিয়ে নি, হেরিয়ে নি" গানটি গান। একই বছরে মোহাম্মদ রফি অল ইন্ডিয়া রেডিও'র লাহোর সম্প্রচার কেন্দ্রে গান পরিবেশনের জন্য আমন্ত্রণ পান। এছাড়াও রফি লায়লা-মজনু (১৯৪৫) এবং জুগনু চলচ্চিত্রে সংক্ষিপ্তভাবে, অতিথি শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। লায়লা-মজনু চলচ্চিত্রে 'তেরা জ্বালা' কোরাস গানে তাকে অন্যান্য শিল্পীদের সাথে গাইতে দেখা যায়। প্রায় চার দশকের গানের ভুবনে অসাধারণ অবদানের জন্য মোহাম্মদ রফি সকল সময়ের, সকল কালের ও সকল বিষয়ের শিল্পী হিসেবে পরিগণিত হয়ে আছেন। ১৯৪৬ সালে মোহাম্মদ রফি দ্বৈত সঙ্গীতরূপে আনমল ঘড়িতে গান রেকর্ড করেন। বৈজু বাওরা (১৯৫২) ছবির গান হিসেবে - ও দুনিয়া কে রাখওয়ালে এবং মন তারপাত হরি দর্শন কো আজ রফি'র কণ্ঠকে অবিসংবাদিত তারকা খ্যাতি এনে দেয়। মোহাম্মদ রফি তার সুদীর্ঘ সঙ্গীত জীবনে অনেক নামকরা সঙ্গীত পরিচালকের দিক-নির্দেশনায় বিভিন্ন ধরণের গান গেয়েছেন। তন্মধ্যে অমর সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে নওশাদের পরিচালনায়ই গান গেয়েছেন বেশী। এছাড়াও, ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকে মোহাম্মদ রফি ও.পি. নায়ার, শঙ্কর জয়কিষাণ এবং এস.ডি.বর্মনের সুরেও অনেক গান গেয়েছেন। তিনি নওশাদের সহযোগিতায় অনেকগুলো গান গেয়েছেন। ১৯৪৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত শাহজাহান চলচ্চিত্রে কুন্দনলাল সায়গলের সাথে মেরে স্বপ্ন কি রানি, রুহী রুহী নামের কোরাসে অংশ নেন। মেহবুব খানের আনমল ঘড়ি (১৯৪৬)-তে তেরা খিলোনা তোতা বালক এবং জুগনু (১৯৪৭) চলচ্চিত্রে ইয়াহান বাদলা ওয়াফা কা গানে নূর জাহানের সাথে দ্বৈত সঙ্গীতে কণ্ঠ দেন।

নওশাদের দিক-নির্দেশনায় সর্বমোট ১৪৯টি সঙ্গীত পরিবেশন করেন রফি। তন্মধ্যে তার সলো বা একক সঙ্গীত ছিল ৮১টি। ১৯৪৮ সালে মহাত্মা গান্ধী নিহত হবার পর হুসনলাল ভগতরাম-রাজেন্দ্র কৃষাণ-রফি ত্রয়ী একরাত্রিতেই কালজয়ী শুনো শুনো এই দুনিয়াওয়ালো, বাপুজী কি অমর কাহিনী গান রচনা করে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এরপর তিনি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহ্‌রু'র আমন্ত্রণে গানটি পুণরায় পরিবেশন করে উপস্থিত সকলকে শোনান। ১৯৪৮ সালে ভারতের স্বাধীনতা দিবসে নেহরু'র কাছ থেকে রৌপ্য পদক গ্রহণ করেন মোহাম্মদ রফি। ১৯৪৯ সালে নওশাদ (চাদনী রাত, দিল্লাগী, দুলারী); শ্যাম সুন্দর (বাজার); হুসনলাল ভগতরামের (মীনা বাজার) প্রমূখ সঙ্গীত পরিচালকদের নির্দেশনায় একক সঙ্গীতে অংশ নেন। নওশাদের নির্দেশনায় শ্যাম কুমার, আলাউদ্দীন এবং অন্যান্যদের সঙ্গে রফি'র প্রথম গান ছিল ১৯৪৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত পেহলে আপ ছবির হিন্দুস্তান কি হাম হ্যায় গানটি। এভাবেই তিনি হিন্দী ভাষায় তার প্রথম গান রেকর্ড করেন। এছাড়াও রফি দু'টি হিন্দী ছবিতে অভিনয় করেন। ১৯৪৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত লায়লা মজনু চলচ্চিত্রের তেরা জ্বালা জিস নে দেখা গানের দৃশ্যে অতিথি শিল্পী হিসেবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৫০ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে বলিউডে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য গায়কদের তুলনায় রফিকেই দেখা গিয়েছিল সবচেয়ে বেশী। এছাড়াও, হিন্দী ছবিতে তিনি অনেক খ্যাতনামা চলচ্চিত্র তারকার জন্যে গান গেয়েছেন। ১৯৬৫ সালে সঙ্গীত কলায় অসামান্য অবদান রাখায় ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে। ১৯৬০ এর দশকে মৌরিতাস ভ্রমণের সময় তিনি ক্রিয়োল ভাষায় একটি গান গেয়েছিলেন। এছাড়াও, রফি দু'টি ইংরেজী এ্যালবামের গানে অংশ নেন। তাদের মধ্যে একটি হলো পপ হিটস্‌। ১৯৬৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত নীল কমল ছবিতে "বাবুল কি দোয়ায়েন লেটি জা" গানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৭০ এর দশকের শুরুতে মোহাম্মদ রফি লক্ষ্মীকান্ত-পিয়ারেলাল, মদন মোহন, আর. ডি. বর্মণ এবং এস. ডি. বর্মণের ন্যায় জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালকদের গানে কণ্ঠ দেন। তাদের পরিচালনায় - তুম মুঝে ইউ ভুলা না পাওগে (পাগলা কাহিন কা, ১৯৭১); ইয়ে দুনিয়া ইয়ে মেহফিল (হীর রানঝা, ১৯৭০); লতা মঙ্গেশকরের সাথে - ঝিলমিল সিতারো কা (জীবন মৃত্যু, ১৯৭০); গুলাবি আঁখে (দ্য ট্রেন, ১৯৭০)। মোহাম্মদ রফি ১৯৭০ এর দশকের শুরুর দিকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৯৭‌১ - ১৯৭৩ সময়কালের মধ্যে মোহাম্মদ রফি'র সঙ্গীত ভুবনে অংশগ্রহণ কমতে থাকে। ফলে ঐ দশকের প্রথম কয়েক বছরে খুব কমসংখ্যক গানই রেকর্ড করতে পেরেছিলেন তিনি। তবে ১৯৭০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে রফি শীর্ষস্থানীয় কণ্ঠশিল্পী হিসেবে সঙ্গীত জগতে নিজের স্থান পুণরায় দখলে রাখেন।

১৯৭০ দশকের শেষ দিক থেকে ১৯৮০ দশকের শুরুর দিকে কণ্ঠসঙ্গীতে রফি'র স্মরণীয় অংশগ্রহণ ছিল। প্রাপ্ত তথ্য ও পরিসংখ্যান মোতাবেক ১৯৪৫ থেকে ১৯৮০ সময়কালের মধ্যে মোহাম্মদ রফি ৪,৫১৬টি হিন্দী ছবির গান, ১১২টি অন্যান্য চলচ্চিত্রের গান এবং ৩২৮টি অন্যান্য গান রেকর্ড করেছেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ঊষা খান্না'র গীত রচনায় হাওয়াস ছবিতে তেরী গালিওন মে না রাখেঙ্গে কদম আজ কে বাদ গান গেয়ে ফিল্ম ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে সেরা গায়কের পুরস্কার পান।১৯৭৭ সালে হাম কিসি সে কাম নেহি শিরোনামের হিন্দী চলচ্চিত্রে আর. ডি. বর্মনের (রাহুল দেব বর্মন) সঙ্গীত রচনায় ক্যায়া হুয়া তেরা ওয়াদা গানের জন্য ভারতের জাতীয় পদক এবং ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন। শুরুর দিকে ফিল্মফেয়ার কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র একজন কণ্ঠশিল্পীকে বছরের সেরা গায়ক নির্বাচিত করতো। ষাটের দশকে কিশোর কুমারকে টপকিয়ে তিনি সবচেয়ে বেশী (৬বার) এ পদক পেয়ে শীর্ষস্থানে ছিলেন। এ ছাড়াও মোহাম্মদ রফি ১৯৪৮ সালে প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহরু'র কাছ থেকে ভারতের ১ম স্বাধীনতা দিবসে রৌপ্য পদক, ১৯৬৭সালে ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মশ্রী পুরস্কার, ১৯৭৪ সালে তেরী গালিও ম্যা না রাখেঙ্গে কদম আজ কে বাদ গানের জন্য ফিল্ম ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে সেরা গায়কের পুরস্কার এবং ২০০১সালে হিরো হোণ্ডা-স্টারডাস্ট ম্যাগাজিনের যৌথ উদ্যোগে ৭ জানুয়ারি, ২০০১ তারিখে অংশগ্রহণকারী পাঠকদের ৭০ শতাংশ ভোট পেয়ে তিনি শতাব্দীর সেরা গায়ক হিসেবে পুরস্কৃত হন। ব্যাক্তিগত জীবনে চল্লিশের দশকে রফি বোম্বেতে অবস্থানকালীন সময়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। রফি পূর্বে তার চাচাতো বোনকে বিয়ে করেছিলেন কিন্তু অভিবাসন আইনের দরুণ তাকে ভারতে আনতে পারেননি। দেশ বিভক্তির ফলে তার স্ত্রী পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থান করেন। প্রথম সংসারে তার একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বোম্বেতে অবস্থানকালীন তিনি বিলকিস নাম্নী এক রমণীকে ২য় বারের মতো বিয়ে করেন। তাদের ২য় সংসারে ৩ পুত্র ও ৩ কন্যা আছে। তিনি মদপান করতেন না। একজন ধার্মিক ও বিনয়ী ব্যক্তি হিসেবে সর্বত্র সকলের কাছে পরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। রফি'র ছোট ভাই মোহাম্মদ সাদ্দিকী এখনও বেঁচে আছেন এবং পরিবার নিয়ে পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থান করছেন।

১৯৮০ সালের ৩১ জুলাই বৃহস্পতিবার রাত ১০:৫০ ঘটিকায় উপমহাদেশের অমর এই সঙ্গীত শিল্পীর মহাপ্রয়াণ ঘটে। আকস্মিকভাবে মাইওকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বা হৃদজনিত সমস্যায় ভুগে যখন রফি'র মৃত্যু ঘটে, তখন তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তাঁর শেষ গানটি ছিল আস পাস ছবির শ্যাম ফির কিউ উদাস হ্যায় দোস্ত। লক্ষ্মীকান্ত-পিয়ারেলালের রচনায় এ গানটি রেকর্ড করার কয়েক ঘন্টা পরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রফি। মৃত্যু পরবর্তী সময়ে মোহাম্মদ রফি'কে জুহু মুসলিম গোরস্থানে কবর দেয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে মুম্বাইয়ের সর্ববৃহৎ শবযাত্রা হিসেবে রফি'র শবযাত্রায় দশ সহস্রাধিক ব্যক্তি অংশ নিয়েছিল। ২০১০ সালে তার কবরস্থানটি ভেঙ্গে ফেলা হয় নতুন মৃতদেহ সমাধি দেয়ার জন্য। মূল সমাধি ভেঙ্গে ফেলার দরুণ এর সন্নিকটে একটি নির্দিষ্ট নারিকেল গাছকে তার প্রতীকি সমাধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ভারত সরকার মোহাম্মদ রফি'র মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করে ও তার প্রতি সম্মান জানিয়ে দুই দিনের সরকারী ছুটি ঘোষণা করেছিল। মুম্বাইয়ের বন্দ্রা এবং পুনেতে মোহাম্মদ রফি অবিস্মরণীয় করে রাখতে "পদ্মশ্রী মোহাম্মদ রফি চক" নামে রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই সঙ্গীত শিল্পীর ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। কিংবদন্তি সঙ্গীশিল্পী মোহাম্মদ রফির মৃত্যুদিনে আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গনমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:৪১

বিজন রয় বলেছেন: শ্রদ্ধাঞ্জলি।

৩১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ বিজন দা
ভালো লাগলো সাথে থাকার জন্য।

২| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেট মিউজিসিয়াম।

৩১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ রাজীব ভাই
শুভেচ্ছা জানবেন

৩| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: অমর শিল্পীকে মৃত্যুদিনে জানাই অন্তরের শ্রদ্ধাঞ্জলি ।

শুভকামনা রইল প্রিয় নূরভাইকে।

৩১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চৌধুরী ভাই ধন্যবাদ আপনাকে
চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।
ভালো থাকবেন।

৪| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:০২

জসীম অসীম বলেছেন: মোহাম্মদ রফির গান অনেক বেশিই আকুলিত করে। হিন্দী তো বটেই। এমনকি তাঁর গাওয়া বাংলা নজরুল গীতিও। আপনার সকল পোস্টই বিশেষত্বে ভরপুর। অনেক শুভেচ্ছা এমন প্রাসঙ্গিক বিষয়ে নিয়মিত লিখে আমাদের কল্যাণ সাধনের জন্য।

৩১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: আমারে তুমি অশেষ করেছ, এমনি লীলা তব–.
ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ জীবন নব নব।


ধন্যবাদ অসীম ভাই চমৎকার মন্তব্য করে
উৎসাহ দেবার জন্য।

৫| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:০১

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

শ্রদ্ধাঞ্জলি গুণী শিল্পীর প্রতি...

৩১ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ ভ্রমরের ডানা
শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।

৬| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:১১

মো: নিজাম গাজী বলেছেন: শ্রদ্ধাঞ্জলি। ধন্যবাদ বিষয়টি জানানোর জন্য।

৩১ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ গাজী ভাই
শিল্পীকে তার মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধা নিবেদন
করার জন্য।

৭| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:১৮

জগতারন বলেছেন:
বাংলাদেশ ও বাংলাদেশীদের অকৃত্তিম বন্ধু মুহাম্মাদ রফি !
১৯৭১ সালে বাংলাদেশর স্বাধিনতা যুদ্ধের সময়ে ব্যাক্তিগত ভাবে
উনি যে অর্থ দান করেছিলেন মুজিব নগর সরকারকে দান করেছিলেন,
এর আগে এত বড় অনুদান আর কেহ করে নি।
উইনি আমাদের বাংলাদেশের ও বাংলাদেশীদের নিদান কালের অকৃত্তিম এবং আন্তরীক বন্ধু।
পরকালে উনার আত্মা শান্তিতে থাক প্রাথরনা করি।

৩১ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে জগতারন,
চমৎকার মন্তব্যে শিল্পীকে শ্রদ্ধাজানোর
সাথে সাথে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।

৮| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৩১

চাঁদগাজী বলেছেন:



উনার জন্য শ্রদ্ধা রলো, আমি উনার গান শুনি

৩১ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বাহ আজ সূর্য কোন দিকে উদিত হয়েছে?
কি কথা শুনি আজ মন্থরার মূখে !!
পজেটিভ মন্তব্যতো আপনার কুষ্ঠিতে নাই,
তবে কি স্মৃতিভ্রম !!

৯| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:৪৩

জোবাইর বলেছেন: মোহাম্মদ রফি সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। ছোটবেলায় মোহাম্মদ রফির কালজয়ী একটি গানের জন্য বেজু বাউরা হিন্দী ছায়াছবিটি কয়েকবার দেখেছিলাম। সেই গানটির লিঙ্ক এখানে সবার সাথে শেয়ার করলাম।
O Duniya Ke Rakhwale - Mohammed Rafi

১০| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:১১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: মুহম্মদ রফির ৩৮ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।


একটা ব্যাপারে আমার খুব আক্ষেপ হয়। মুহম্মদ রফির মতো একজন অদ্বিতীয় কণ্ঠশিল্পীকে ভারত সরকার 'ভারতরত্ন' উপাধী দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যা শুধু ব্যর্থতাই নয়, অন্যায়ও বটে। সারা উপমহাদেশ চষে বেড়ালেও এমন একজন গুনী ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। অথচ ভারত সরকার রফি সাহেবের যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারেনি। আফসোস!

ধন্যবাদ নূর মোহাম্মদ ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.