নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সর্বজন শ্রদ্ধেয় কথাসাহিত্যিক সরদার জয়্নে উদ্দীনের ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫০


বাংলাদেশের খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক হিসেবে সর্বজন শ্রদ্ধেয় সরদার জয়্নে উদ্দীন। পেশাগত জীবনে যিনি ছিেলেন একাধারে সেনাবাহিনীর কেরানি সাংবাদিক, সম্পাদক ও সরকারী চাকুরে । তবে এসব পরিচয় ছাপিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য একজন কথাসাহিত্যিক। সমকালীন সমাজের সংকট, মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, গ্রামীণ সমাজের অবহেলিত মানুষের দুঃখ-বেদনায় এবং জমিদার জোতদার ও মহাজনদের শোষণ-পীড়নের চিত্র তাঁর লেখায় নিষ্ঠার সাথে অংকিত হয়েছে। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি বাংলাদেশের সাংবাদিকতায়ও তিনি বিশেষ অবদান রেখেছেন। সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত থাকার কারণে সমকালীন আর্থ-সামাজিক প্রসঙ্গগুলো সরদার জয়েনউদ্দীন নিবিড়ভাবে অবলোকনের সুযোগ পেয়েছেন। সাম্প্রতিক বিষয়াবলিকে সহজেই স্থাপিত করতে পারতেন নিজের সাহিত্যকর্মের মধ্যেও। তাই তার লেখায় গণমানুষের কল্যাণ ও মুক্তচিন্তার পাশাপাশি সমাজ ও রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রামাণ্য চিত্রও উঠে এসেছে সাবলীলভাবে। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমী পুরস্কার, আদমজি পুরস্কার এবং একুশে পদক লাভ করেন সরদার জয়্নে উদ্দীন। আজ খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক সরদার জয়েন উদ্দীনের ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮৬ সালের আজকের দিনে তি্নি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। খ্যাতনামা কথাসাহিত্যিক সরদার জয়্নে উদ্দীনরে মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

(১৯৫৫ সালে ঢাকায় সঙ্গীত সম্মেলনে আগত ওস্তাদ আলাউদ্দিন খানের সঙ্গে (বাম থেকে) বর্ধমান হাউজ প্রাঙ্গণে শিল্পী কামরুল হাসান, ওস্তাদ খাদেম হোসেন খান, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, সাহিত্যিক সরদার জয়েনউদ্দিন প্রমুখ)
সরদার জয়েন উদ্দীন ১৯১৮ সালে (জন্মতারিখ অজ্ঞাত) পাবনা জেলার কামারহাটি গ্রামের এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম মুহম্মদ জয়েনউদ্দীন বিশ্বাস। ১৯৩৯ সালে তিনি খলিলপুর হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে আইএ পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। লেখালেখি ও সাংবাদিকতার কারণে খ্যাতিমান সরদার জয়েনউদ্দীন ১৯৪২ সালে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন সেনাবাহিনীর কেরানি হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি সাংবাদিকতায় যুক্ত হন দৈনিক পাকিস্তানের সঙ্গে। দৈনিক সংবাদ, ইত্তেফাক ও অবজারভার পত্রিকায়ও বিভিন্ন সময়ে কাজ করেছেন জয়েনউদ্দীন। কাজ করেছেন বাংলা একাডেমি ও ন্যাশনাল বুক সেন্টার (বর্তমানে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র) ও বাংলাদেশ টেক্সট বুক বোর্ডসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে। কিছুদিন পাকিস্তান কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটির শিশু-কিশোর ম্যাগাজিন সেতারা ও শাহীন সম্পাদনার কাজও করেছেন তিনি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে ১৯৫১ সালের প্রেক্ষাপট নিয়ে ‘অনেক সূর্যের আশা’ নামের উপন্যাসটি লেখেন সরদার জয়েনউদ্দীন। উপন্যাসের বৃহত্ পরিসরে দেশভাগ ও দেশবিভাগোত্তর পূর্ববাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতি উন্মোচিত হয়েছে। দেশভাগের পর পাকিস্তান রাষ্ট্রে বাঙালি মুসলমানের স্বপ্নকল্পনা ও ভাবাবেগ কীভাবে বারবার বিচ্যুত হয়েছে তার অনন্য দলিলও বলা চলে এই উপন্যাসটিকে। ‘অনেক সূর্যের আশা’ লিখেই মূলত খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৫২ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘নয়ন ঢুলি’। এই বইটিই তাকে সাহিত্যজগতে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। তার গল্পের বইগুলোর মধ্যে বীর কণ্ঠীর বিয়ে (১৯৫৫), খরস্রোত (১৯৫৫), বেলা ব্যানার্জীর প্রেম (১৯৬৮), ও অষ্টপ্রহর (১৯৭৩) উল্লেখযোগ্য। বেশকিছু পাঠকপ্রিয় উপন্যাসও লিখেছেন সরদার জয়েনউদ্দীন। নীল রং রক্ত (১৯৫৬), পান্নামতি (১৯৬৪), আদিগন্ত (১৯৬৫), অনেক সূর্যের আশা (১৯৬৬), বেগম শেফালী মির্জা (১৯৬৮) ও বিধ্বস্ত রোদের ঢেউ (১৯৭৫) তার অন্যতম সেরা উপন্যাস। ‘উল্টো রাজার দেশ’ ও ‘অবাক অভিযান’ নামের দুটি বই লিখে শিশুসাহিত্যেও অবদান রেখে গেছেন এই গুণী গদ্যকার। ১৯৮০ সালে কর্মজীবন থেকে অবসরে যান সরদার জয়েনউদ্দীন।

সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৬৭ সালে তাকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়। একই বছর তিনি কথাসাহিত্যে আদমজী সাহিত্য পুরস্কারও লাভ করেন। প্রতি বছর অমর একুশের বইমেলায় স্টল ও অঙ্গসজ্জার জন্য ‘সরদার জয়েনউদ্দীন স্মৃতি পুরস্কার’ দিয়ে থাকে বাংলা একাডেমি। ১৯৮৬ সালের ২২ ডিসেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন সরদার জয়েন উদ্দীন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিরো ৬৮ বছর। আজ তার ৩২তম মৃত্যুৃবার্ষিকী। খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক সরদার জয়্নে উদ্দীনরে মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৪

যোখার সারনায়েভ বলেছেন: জানলাম!

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে জানার জন্য।

ভাই আপনি কি রাশিয়ান !! (মজা করলাম)

২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৮

রেজওয়ান তানিম বলেছেন: কদিন আগে সরদার জয়েনউদ্দিনের একটা উপন্যাস 'বিদ্ধস্ত রোদের ঢেউ' পেলাম নীলখেতে পুরানো বইয়ের দোকানে। ওনাকে যেভাবে ফেলে রাখা হয়েছে এর চেয়ে বড় অসভ্যতার আর নাই। আপনার লেখাটির জন্যে ধন্যবাদ।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
হীরের কদর জহুরী জানে
আমাদের কাছে যা মূল্যহীন।

ধন্যবাদ তানিম ভাই
চমৎকার মন্তব্য প্রদানের জন্য।

৩| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৭

সনেট কবি বলেছেন: তাঁর জন্য শ্রদ্ধা।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনার জন্য শুভেচ্ছা
ও শুভকামনা।

৪| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৩

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: শ্রদ্ধা

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আর্কিওপটেরিক্স
কথাসাহিত্যিক সরদার জয়্নে উদ্দীনের
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।

৫| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৪

যোখার সারনায়েভ বলেছেন: নাহ । আমি ১০০% বাঙালি ।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ সারনােয়েভ
১০০% বাঙ্গালীয়ানার জন্য।
তবে নামটা কিন্তু ১০০% রাশিয়ান !

৬| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০১

রাজীব নুর বলেছেন: উনাকে চিনি না।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এখনতো আর সে কথা খাটেনা,
জানলেন যখন চিনতে কতক্ষন!!

৭| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৩

হাবিব বলেছেন: আপনার কারণে অনেকের বিষয়ে জানতে পারি।
ধন্যবাদ নূর মোহাম্মদ ভাই

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ হাবিব ভাই
উৎসাহিত হলাম।

৮| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১

হাবিব বলেছেন: নূর মোহাম্মদ ভাই আপনাকে ব্লগ ডের গেট টুগেদারের ছবিতে খুঁজলাম, আপনি কি ক্যামেরার বাইরে ছিলেন ? নাকি অনুষ্ঠানের বাইরে ছিলেন?

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

হাবিব ভাই দুঃখিত গেট টুগেদারে আমি শুধু
হা-পিত্যেস করেছি
ধন্যবাদ আমাকে সন্ধান করার জন্য।

৯| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০৯

জগতারন বলেছেন:
অনেক দিন যাবত দেশের বাহিরে।
তাই মনে হয় খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক সর্বজন শ্রদ্ধেয় সরদার জয়্নে উদ্দীন-এর
সমন্ধে জানা হইয়া উঠে নাই, তাহার কোন লিখাও পড়িয়াছি বলে মনে পড়ে না।
দৈনিক পাকিস্তান পড়িয়াছি! না! তেমন মনে পড়ে না।
তবে 'দৈনিক বাংলা' ও 'সপ্তাহিক বিচিত্রা' 'দৈনিক ইত্তেফাক' ও 'সপ্তাহিক রোববার' পড়িয়াছিলাম যখন দেশে থাকিতাম।
হয়তো তখন তাহার কিছু লিখা পড়িয়াছি।
তবে আপনার কল্যানে তাহার সমন্ধে সম্যক জানিতে পারিলাম।

লেখক ও সাহিত্যিক মানুষের সুখ-দুঃখ, কষ্ট-বেদনা, আশা-আকাংখ্যা, যাহা সুন্দর,
যাহা মানবিক, যাহা সৃষ্টি কর্তার সুন্দরকে লিখার মাধ্যমে প্রকাশ করিয়া লিখেন তাহাই সাহিত্য।

আপনি তাহার (সর্বজন শ্রদ্ধেয় সরদার জয়্নে উদ্দীন) সমন্ধে লিখিয়াছেনঃ
সমকালীন সমাজের সংকট, মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, গ্রামীণ সমাজের অবহেলিত মানুষের দুঃখ-বেদনায় এবং জমিদার জোতদার ও মহাজনদের শোষণ-পীড়নের চিত্র তাঁর লেখায় নিষ্ঠার সাথে অংকিত হয়েছে।

এই সমস্ত লেখক ও সাহিত্যিক বর্তমান সমাজে খুবই বিড়ল।
অনেকের লিখাই আমি এখন পড়িয়া থাকি কিন্তু তেমন উচ্চমানের সাহিত্য আমার সামনে পড়ে না।

সর্বজন শ্রদ্ধেয় সরদার জয়্নে উদ্দীন-এর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি এবং
তাহার সমন্ধে এইখানে তুলিয়া দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি সুভেচ্ছা জানাইলাম।




২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ জগতারন ভাই,
চমৎকার কথামালায় সর্বজন শ্রদ্ধেয়
কথাসাহিত্যিক সরদার জয়্নে উদ্দীনের
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.