নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

২৫ নভেম্বর, আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ দিবসঃ “নারী-পুরুষ সমতা রুখতে পারে সহিংসতা"

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৪

আজ ২৫ নভেম্বর, ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর দ্য এলিমিনেশন অব ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন’ বা আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ দিবস

নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ও নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটিতে এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়- “নারী-পুরুষ সমতা রুখতে পারে সহিংসতা”। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, পরিবর্তিত হচ্ছে সমাজ কাঠামো, বিকশিত হচ্ছে সভ্যতা। পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে মানুষের জীবনযাত্রায়। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য, বন্ধ হয়নি নারী নির্যাতন। নারী ও শিশুর উপর ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। যার ধরণ প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ঘটেছে । তারা ঘরে বাইরে, রাস্তাঘাটে,যানবাহনে,কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানা ধরণের হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাই যেকোন ধরণের নির্যাতন ও সহিংসতা বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ ও সোচ্চার হতে হবে। পাশাপাশি নির্যাতনকারী ও ধর্ষণকারীকে সামাজিক ভাবে বয়কট করতে হবে । বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠনের জরিপ ও গবেষণায় দেখা গেছে, পারিবারিক নির্যাতন বাড়ছে।মানবতার বিপর্যয়ে, মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শিকার হয় নারী ও শিশু। ঘরে-বাইরে যৌন নির্যাতনসহ নানা নির্যাতনের শিকার হয় নারীরা। নারীরা নিজ নিজ পেশা ও কাজের প্রয়োজনে ব্যপকহারে গণপরিবহণ ব্যবহার করতো। কিন্তু বর্তমানে গণপরিবহনে যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার কারণে নারীর চলাচলে নতুন করে হুমকি ও ঝুকির মধ্যে পড়েছে। একটি অনাগত ভয় নিয়ে প্রতিদিন নারীদের রাস্তায়, ঘরে-বা্ইরে উদ্বিঘ্নের মধ্যে জীবন কাটাতে হয় নারীকে। নিরাপত্তাহীনতা ও ঝুঁকির কারণে তাদের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। নির্যাতনের কারণে নারীর স্বাভাবিক বিকাশও ব্যাহত হয়। দেশে ধর্ষণ, হত্যাসহ নির্যাতনের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ ছাড়া নানাভাবে সাইবার অপরাধের শিকার প্রায় ৭০ ভাগ নারী। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালে ৬৯৭ নারীকে ধর্ষণ, ১৮২ জনকে গণধর্ষণ ও ধর্ষণ শেষে ৬৩ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ৩৯১ নারীকে ধর্ষণ, ১৯৬ জনকে গণধর্ষণ ও ধর্ষণ শেষে ৬৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আইনের দুর্বলতায় পার পেয়ে যায় ধর্ষণ-নির্যাতনের আসামিরা। এ কারণে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হচ্ছে না। বেসরকারি সংগঠন অ্যাকশন এইডের একটি জরিপে দেখা যায়, দেশের বড় শহরগুলোতে দিনের বেলায়ই যৌন হয়রানি থেকে শুরু করে নানারকম হেনস্তার শিকার হন নারী যাত্রীদের একটা বড় অংশ। গণপরিবহনে যৌন হয়রানি নিয়ে ব্র্যাকের গবেষণায় উঠে এসেছে, গণপরিবহনে ৯৪ ভাগ নারী যৌন হয়রানির শিকার হন। এই যৌন হয়রানির জন্য যারা দায়ী তাদের বড় অংশ ৪১ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষ, শতকরা হিসাবে তারা ৬৬ ভাগ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ জরিপে দেখা যায়, ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই দেশের ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বিবাহিত জীবনে কোনো না কোনো সময়ে আর্থিক, শারীরিক কিম্বা যৌন নির্যাতনের শিকার ৮০ দশমিক ২ ভাগ নারী।এই প্রবণতা শুধু দুঃখজনকই নয়, ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের মোট নারীর ৭ শতাংশের জীবনে যে কোনো সময় পুরুষ কর্তৃক শারীরিক সহিংসতার শিকার হতে হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীরা গৃহ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জোরপূর্বক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।সম্প্রতি নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা আর্ত-সামাজিক সাংস্কৃতিক সমস্যায় পরিগণিত হয়েছে। বিবাহিত জীবনে ৮৭ শতাংশ নারী জীবনে কোনো না কোনো সময়ে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক বা যৌন নির্যাতন। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ধর্ষণসহ বিভিন্ন সামাজিক অপরাধের শিকার হয়েছে ৪৪৫ জন কন্যাশিশু। এদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয় বছরের নিচে ১০৫ এবং ১০২ জনের বয়স সাত থেকে ১২ বছরের মধ্যে। নারী ধর্ষণের বিষয়টি আরও উদ্বেগজনক। বছরের প্রথম ১০ মাসে ধর্ষিত হয়েছেন ৬৬২ নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৫৭ জনকে, ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে ৯৩ জনকে। ধর্ষণের চেষ্টা থেকে রেহাই পেতে ও অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন পাঁচজন। আসক বলছে, গত বছর ৩৯৪ জন নারী পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। যার মধ্যে স্বামীর হাতে নিহত ১৯১ জন। আর একই সময়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৭২৪ জন, আর ধর্ষণ চেষ্টা হয়েছে আরও ৬৫ জনের ওপর। তবে এর বাইরেও বহু নারী আরও নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে।নারীর প্রতি সহিংসতা বিষয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)-এর ২০১৩ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ চিত্র পাওয়া যায়। ২০১৬ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) 'নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ-২০১৫' প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, দশ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই দেশের ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বিবাহিত জীবনে কোনো না কোনো সময়ে আর্থিক, শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে দেশে এমন নারীদের সংখ্যা ৮০.২ ভাগ। ২০১১ সালে এ হার ছিল ৮৭ ভাগ। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬ সালে যৌতুকের কারণে ১২৬ জন নারীকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়৷ ১০৮ জন নির্যাতনের শিকার হয়ে বেঁচে আছেন৷ যৌতুকের মামলা হয়েছে মোট ৯৫টি। এদিকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালের প্রথম চার মাসে ধর্ষণ, গণধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, নারী ও শিশু পাচার, যৌন নিপীড়ন, আত্মহত্যা, বাল্যবিবাহ, অপহরণ ছাড়াও বিভিন্নভাবে ১৫৬৬টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। পাঁচ বছরে হত্যার শিকার হয়েছেন ১১৫১ জন নারী।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচি দেশের ৫৬টি জেলা থেকে নির্যাতনের ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করে রিপোর্ট তৈরি করে। রিপোর্টের ২০১৬ ও ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলছে। প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০১৬ সালে অক্টোবর মাস পর্যন্ত নারী নির্যাতনের সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৮২৫টি; যা ২০১৭ সালের একই সময়ে ৫৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৯ হাজার ১৯৬টি। রিপোর্টে দেখা যায়, ২০১৭ সালের শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫ হাজার ৫৮৩ জন, আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন ৭৫৭ জন, মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৬২৮ জন ও অন্যান্য ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৮৮৮ জন। ব্র্যাক মনে করে, বাস্তবে এ সংখ্যাটা আরও বেশি কারণ নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলোতে ভুক্তভোগী ও তার পরিবার সামাজিক মর্যাদাহানির ভয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকাশ করেন না। ব্র্যাক ও ইউএনডিপি’র উদ্যোগে দেশের ৪৪টি ইউনিয়নে পরিচালিত এক মাঠ পর্যায়ের জরিপে দেখা গেছে, নারীর প্রতি সহিংস ঘটনার ৬৮ শতাংশই নথিভুক্ত হয় না। আন্তর্জাতিকভাবেও নারীর প্রতি সহিংসতাকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কেননা এ লঙ্ঘন বারবার মানবতা, অর্থনীতি, সমাজ সর্বোপরি দেশের যাবতীয় উন্নয়নকেই বাধাগ্রস্ত করে। যা কোনো ভাবেই প্রত্যাশিত নয়। নারীর উপর সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ১৯৮১ সালে ল্যাটিন আমেরিকার নারীদের সম্মেলনে ২৫ নভেম্বর ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস’ ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৩ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলনে এ দিবসটি স্বীকৃতি পায়। তখন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘে নারীর প্রতি সহিংসতা বিলোপ-সংক্রান্ত ঘোষণায় বলা হয়েছে, এমন কোনও কাজ যা নারীর দৈহিক, যৌন কিংবা মানসিক ক্ষতির কারণ হয় কিংবা সামাজিক ও ব্যক্তিজীবনে নারীর স্বাধীনতাকে জোরপূর্বক হরণ করে, তাকেই নারীর প্রতি সহিংসতা বলা যায়। ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের খসড়া অনুমোদন করে প্রতিবছর ২৫ নভেম্বরকে আনুষ্ঠানিকভাবে 'আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন দূরীকরণ দিবস' হিসেবে গ্রহণ করেছে। তবে বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস উদ্যাপন কমিটি ১৯৯৭ সাল থেকে এই দিবস ও পক্ষ পালন করছে।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী এবং সমাজের উন্নয়নে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। উন্নয়নের যে কোনো ধারাকে গতিশীল করতে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ জরুরি। আর এই পরিপ্রেক্ষিতে নারীর শিক্ষা থেকে শুরু করে যাবতীয় নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব। যদি কোনোভাবে নারীর এসব অধিকার ক্ষুণ্ন হয় এবং নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়তে থাকে তবে তা যেমন দুঃখজনক, অন্যদিকে জাতীয় জীবনে উন্নতির ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধক। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ব্যক্তি থেকে সমাজ, প্রাতিষ্ঠানিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। এ ক্ষেত্রে নিজে নির্যাতন থেকে দূরে থাকলেই চলবে না, সেই সঙ্গে আমাদের আশপাশে ঘটে যাওয়া যেকোনো নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে হবে। সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। আর এ জন্য পরিবর্তন প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির। ইংরেজীতে একটি প্রবাদ রয়েছে – “ Prevention is better than Cure” প্রবাদটি একেবারেই মিথ্যে নয়। প্রতিকারের আগে প্রতিরোধ করা উত্তম। নারীর ওপর সহিংসতা প্রতিরোধে সোচ্চার থাকা যেমন জরুরি, তেমন সামাজিক পরিবর্তনের জন্য যে নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন দরকার, সেটি অব্যাহত রাখতে হবে। এ বিষয়ে ‘রাষ্ট্রের দায় অনেক। সেখান থেকে মূল উদ্যোগটি আসলে নারীর প্রতি সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করা সম্ভব তাই আসুন, আমরা সহমর্মী ও সমব্যথি হয়ে সহিংসতার শিকার নারীর পাশে দাঁড়াই, নারীর উপর সহিংসতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি, সহিংসতার ঘটনা লুকিয়ে না রেখে দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে এবং বিচার পেতে সহিংসতার শিকার নারীকে সহযোগিতা করি। নারী-পুরুষ সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারলেই “নারীরা তাদের স্বাধীন চলাফেরায় নিরাপত্তা পাবে" এবং নারী ও শিশু পাবে নির্যাতনমুক্ত জীবন।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২০

হাবিব বলেছেন: সমতা নয় ন্যায্য অধিকার চাই........

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সমতা হলেই যার যার প্রাপ্য সে পেয়ে যাবে উদ্বঘ্ন হবার কিছু নাই।
আর যার যা প্রাপ্য তা পেলে সহিংসতার অবকাশ থাকবেনা।

২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৯

নেংমিনজা বাপন বলেছেন: সংস্কার একটি বড় জিনিস। সমাজ, দেশ, পরিবার, ধর্ম, আচার, রীতিনীতি ইত্যাদিতে সংস্কার না এলে সভ্যতা বদলায়না। যার কারনে নারীর প্রতি সহিংসতারও অবসান সম্ভব নয় । সমস্যা হল সংস্কার করতে গেলেই আমাদের কিছু শ্রেণীর মানুষ থামিয়ে দেয় । আর আমরাও থেমে যাই ।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ নেংমিনজা ভাই
আসল কথা হলো প্রায় সব ক্ষেত্রে পরিবারই নারী নির্যাতনের অন্যতম ক্ষেত্র।
পারিবারিক অঙ্গনেই নির্যাতন ও নিপীড়নের প্রায় সব ঘটনা ঘটে থাকে।
নির্যাতনবিরোধী আইন কাঠামোও নারীদের জন্য সহায়ক নয়। তাই
নিজ গৃহ কিংবা কর্মক্ষেত্রে তাদের প্রতি শ্র্রদ্ধাশীল আচরণ প্রদর্শন করতে হবে।
নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সকল নারীকে প্রতিদ্বন্দী না ভেবে সহযোগি ভাবার
প্রবণতা সৃষ্টি করতে হবে। আমরা যে যেই ধর্মের অনুসারী হই না কেন,
আমরা যদি প্রত্যেকে প্রত্যেক ধর্মের অনুশাসন মেনে চলি তাহলে নারী নির্যাতন
অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব। কারণ, প্রত্যেক ধর্মেই নারী নির্যাতন প্রতিরোধ এবং
নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে ইসলাম ধর্মে নারীর
মর্যাদাকে অনেক উচ্চ আসনে স্থান দেওয়া করেছে। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার
মধ্যদিয়ে নারী নির্যাতনের অভিশাপ দূর করা সম্ভব। যে কোন পরিস্থিতিতে নিরাপদে
থাকা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রথমত ব্যক্তির নিজের।নারী নির্যাতন প্রতিরোধে
সকল নারীকে প্রতিদ্বন্দী না ভেবে সহযোগি ভাবার প্রবণতা সৃষ্টি করতে হবে।
আমরা যে যেই ধর্মের অনুসারী হই না কেন, আমরা যদি প্রত্যেকে প্রত্যেক ধর্মের
অনুশাসন মেনে চলি তাহলে নারী নির্যাতন অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব। কারণ,
প্রত্যেক ধর্মেই নারী নির্যাতন প্রতিরোধ এবং নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে।
বিশেষ করে ইসলাম ধর্মে নারীর মর্যাদাকে অনেক উচ্চ আসনে স্থান দেওয়া করেছে।
ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার মধ্যদিয়ে নারী নির্যাতনের অভিশাপ দূর করা সম্ভব।
যে কোন পরিস্থিতিতে নিরাপদে থাকা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রথমত ব্যক্তির নিজের।
আমাদের পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা যদিও কর্তৃত্বের সুযোগ থেকে পিছিয়ে আছে তথাপি এ
গন্ডি থেকে নারীদের নিজে থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে নারীদের
কেই কার্যকরী ভূমিকা রাখতে হবে। পরিবারে বোঝা না হয়ে নিজেকে শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী করতে হবে।

৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০২

নেংমিনজা বাপন বলেছেন: সংস্কার বলতে মূলত আঙুল বা মাথা কেটে ফেলা নয় । আমাদের সকল ধর্মীয় অনুশাসনেই নারীকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে । কিন্তু "মর্যাদা" শব্দকে যারা ভেঙ্গে ভেঙ্গে, গুড়ো করে, বিশ্লেষণ করে সকলের মাঝে বিতরন করেন তাদের কিঞ্চিত পরিবর্তন বা নিজস্ব অবস্থানের ত্রুতি সমূহকে ঝালাই-মাড়াই করে উপযুক্ত কৌশলে উপযুক্ত সময়ে পরিবেশন করাকেই বোঝাতে চেয়েছি । আমরা চাইছি এক করছি আরেক । আমাদের বড় বড় ভাষনে নারীদের জন্য বড় বড় আসন থাকে ঠিকই কিন্তু সমাজ, দেশ, জাতির উন্নয়নে উনাদের আসনটাকে আমরা ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় পেছনেই ফেলে রাখি । খুব ছোট ছোট জায়গা থেকে নারীদের প্রতি সন্মানের জায়গাটা তৈরি করতে হবে । আর সেই ছোট জায়গা চিহ্নিত করতেই আমাদের হিমসিম খেতে হয় ।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৩৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধর্ষণ, শ্লীনতাহানি, ইভটিজ়িংয়ের ঘটনাগুলি দেখে এবং খবরেরকাগজে তার ফলাও বর্ণনা পড়ে এটাই মনে হয়, এ পৃথিবীতে নারীর সবচেয়ে বড় শত্রু তারই বিপরীত লিঙ্গ “পুরুষ”। এই ধারণা পোষণ করে অনেক নারীই পুরুষবিদ্বেষী। কোনও পুরুষকেই তাঁরা সহ্য করতে পারেন না। তবে সত্যি বলতে কী, শত্রুতা বিষয়টি লিঙ্গগত নয়। নারী পুরুষের চির শত্রু, পুরুষ-পুরুষ কিংবা নারী-নারী চিরমিত্র, বিষয়টি ঠিক তেমন নয়। বিষয়টি মনুষ্যগত। সেই নিয়মকে ধরেই বলা যায়, একজন নারীও আরেক নারীর
হতে পারে। এক নারীও অন্য নারীর চরম ক্ষতি করতে পারে।

যেমনঃ পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সম্পর্ক মায়ের সঙ্গে তাঁর সন্তানের সম্পর্ক। এই নাড়ির টানকে কেউ আলাদা করতে পারে না। স্বয়ং ঈশ্বরও না। কিন্তু বাস্তব পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে কখনও সখনও মা-ও হয়ে ওঠেন তাঁর কন্যার সবচেয়ে বড় শত্রু। এর কারণ ইগো কিংবা অতি স্নেহ। ইগো বা অহংবোধ মানুষকে অনেক নীচে নামাতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় চিরকাল কর্তৃত্ব করে আসা মা মেয়েকে কর্তৃত্ব করতে দিতে পছন্দ করেন না। তিনি সেখানেও কর্তা। মেয়ের জীবন তিনিই স্থির করেন। দায়িত্ব নিয়ে মেয়ের সম্পর্কে আগুন ধরান। নিজের পছন্দ করা পাত্রের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন। বিয়ের পরও কিন্তু মেয়েকে মুক্ত জীবন কাটাতে দেন না। সেখানেও তিনিই কর্তা। মেয়ের সংসারে বারংবারং হস্তক্ষেপ করে তাঁর সংসারটাই রসাতলে পাঠিয়ে দেন।
এছাড়াও এক মেয়েই আরেক মেয়ের সংসার ভাঙে
পরকীয়ার কাহিনি নতুন কিছু নয়। বিবাহিত নারী ও পুরুষের পুণরায় সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার ঘটনা কেবলই মুচমুচে সাহিত্যবদ্ধ নয় আর। একজন বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই নারী ভুলে যেতে থাকে পুরুষটির সামাজিক অবস্থান। তার ঘরে যে আগে থেকেই একজন স্ত্রী বর্তমান সেটা সে গ্রাহ্যের বাইরে ধরে নেয়। পুরুষটিকে বিয়ে ভাঙার জন্য চাপ দিতে শুরু করে। সেখানেই বাঁধে গোল। পূর্ব অঙ্গীকারবদ্ধ পুরুষের পক্ষে দায়মুক্ত হওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়ে তখন। সেই নারী পুরুষের উপরই আঙুল তোলে। কালো হুমকি ছুড়ে দেয়। চাপে পড়ে বিবাহবিচ্ছেদও হয় কারও কারও, কিন্তু এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় সেই মেয়েটির যাঁর কোনও দোষই নেই। যে বিনাদোষেই স্বামীর ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়।

৪| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩১

জুল ভার্ন বলেছেন: সৃষ্টিতেই যেখানে বিভাজন সেখানে সম অধিকার প্রত্যাশা করার চাইতেও বেশী প্রত্যাশা হোক অধিকতর শ্রদ্ধা ও সম্মানের।
আপনার অনেকগুলো পোস্ট পড়েছি। আপনি ভালো লিখেন কিন্তু আমি আপনার সহ কারোরই লেখায় মনের মতো করে মন্ত করতে পারিনা সেল ফোনে লিখতে হচ্ছে তাই। আমি সেল ফোনে লিখতে অভ্যস্ত নই কিন্তু বর্তমানে বাধ্য হয়েই সেলফোন নির্ভর।

শুভ কামনা।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৩১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
হীনমন্যতায় ভূগবেন না।
মন্তব্য বড় কথা নয়।
পাঠকই লেখকের প্রাণ।
খুশী হলাম আপনার অকপট
স্বীকারোক্তিতে। ভালো থাকবেন।

৫| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৯

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: নারী তার যথাযথ সম্মান অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকুক।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৪৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সমান অধিকারের অর্থ হচ্ছে যোগ্যতা অনুযায়ী অধিকার বা যোগ্যাধিকার। কোনো কিছু করার বা পাওয়ার যোগ্যতা সমান হলে অধিকার সমান হওয়া আবশ্যক। যোগ্যতার অসমতার যুক্তিযুক্ত কারণেই সব ক্ষেত্রে সবার অধিকার সমান নয়। এই কঠিন সত্যটি শুধু নারী-পুরুষের মধ্যে নয়; পুরুষ-পুরুষ, নারী-নারী তথা সবার জন্যই প্রযোজ্য। তাই কোনো নির্দিষ্ট যোগ্যতা সমান হওয়া সত্ত্বেও যেই যোগ্যতার প্রাপ্যধিকার সমান না হলে আন্দোলন অপরিহার্য।

৬| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: নারী নির্যাতন দুষ্টলোকদের কাজ।
ভালো মানুষ নারীদের সম্মান করে।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৪৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
রাজীব ভাই ‘মেয়েদের সবচেয়ে বড় শত্রু মেয়েরাই। মা মেয়েকে দেন মুরগির ডানা, আর ছেলেকে দেন রান। নির্যাতনের শিকার নারী স্বামীকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে চান না।’ তাছাড়া রাষ্ট্র নারীর প্রতি মোটেই সংবেদনশীল নয়। রাষ্ট্র নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। নারীর সমান অধিকারের ক্ষেত্রে অসমাঞ্জস্যপূর্ণ বহু আইন বহাল তবিয়তে আছে। নতুন আইন করার ক্ষেত্রেও সংবিধানের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না।

৭| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৪

আরজু পনি বলেছেন: আসলে সমতার চেয়ে সংবেদনশীল হওয়া বেশি জরুরি। বেশি জরুরি ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৪০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ দেরীতে হলেও
লেখাটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
শুভ কামনা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.