নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাংরি আন্দোলনের জনক ও কৃত্তিবাস গোষ্ঠীর অন্যতম সেরা কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ৮৫তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৫০


জীবনানন্দ-উত্তর যুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়। বাঙ্গালী-ভারতীয় এই কবি বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে বিশেষভাবে পরিচিত এবং আলোচিত ছিলেন। প্রথম জীবনে গল্প রচনা করতেন স্ফুলিঙ্গ সমাদ্দার ছদ্দ নামে। কবিতা পত্রিকায় তার প্রথম কবিতা ছাপা হয়। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় কৃ্ত্তিবাস পত্রিকাকে দিয়ে তার খ্যাতি লাভ। সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার সহ তিনি একাধিক পুরস্কারে সন্মানিত হয়েছিলেন। ১৯৩৪ সালের আজকের দিনে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্র্হণ করেন। আজ কবির ৮৫তম জন্মবার্ষিকী। জন্মবার্ষিকীতে কবির জন্য ফুলেল শুভেচ্ছা

শক্তি চট্টোপাধ্যায় ১৯৩৪ সালের ২৫ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের জয়নগর - মজিলপুরের দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দারিদ্রের কারণে তিনি স্নাতক পাঠ অর্ধসমাপ্ত রেখে প্রেসিডেন্সি কলেজ ছাড়েন, এবং সাহিত্যকে জীবিকা করার উদ্দৈশ্যে উপন্যাস লেখা আরম্ভ করেন। প্রথম উপন্যাস লেখেন কুয়োতলা। কিন্তু কলেজ - জীবনের বন্ধু সমীর রায়চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর বনাঞ্চল - কুটির চাইবাসায় আড়াই বছর থাকার সময়ে শক্তি চট্টোপাধ্যায় একজন সফল লিরিকাল কবিতে পরিণত হন। একই দিনে বেশ কয়েকটি কবিতা লিখে ফেলার অভ্যাস গড়ে ফেলেন তিনি। শক্তি চট্টোপাধ্যায় নিজের কবিতাকে বলতেন পদ্য । তার প্রথম পর্বের কবিতায় নিয়ম শাসিত জীবনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, নিয়ম ভঙ্গ জীবন যাপনের গৌরবায়ণ দেখা যায়। এই সময় কবিকে হাংরি জেনারেমন বা হিংরিয়ালিস্ট আন্দোলন এর নেতৃত্বে দেখা যায়।

(শক্তি চট্টোপাধ্যায়, দেবী রায়, সমীর রায় চৌধুরী এবং মলয় রায় চৌধুরী)
১৯৬১ সালের নভেম্বরে ইশতাহার প্রকাশের মাধ্যমে যে চারজন কবিকে হাংরি আন্দোলন - এর জনক মনে করা হয় তাঁদের মধ্যে শক্তি চট্টোপাধ্যায় অন্যতম । অন্য তিনজন হলেন সমীর রায়চৌধুরী, দেবী রায় এবং মলয় রায়চৌধুরী। শেষোক্ত তিনজনের সঙ্গে সাহিত্যিক মতান্তরের জন্য ১৯৬৩ সালে তিনি হাংরি আন্দোলন ত্যাগ করে কৃত্তিবাস গোষ্ঠীতে যোগ দেন। তিনি প্রায় ৫০টি হাংরি বুলেটিন প্রকাশ করে ছিলেন। পরবর্তী পর্বে এই উত্তেজনা স্তিমিত হয়ে আসে। বন্ধুত্ব, নারী, মানব সংসর্গ, জীবনের আনন্দ ও ব্যর্থতা রোধ নিয়ে তার কবিতা। প্রকৃতির প্রতি তীব্র আকর্ষণ, নারীর ভালোবাসা প্রভৃতি তার কাব্য জগতে প্রধান উপকরণ হয়ে দাড়ায়। তার নিজস্ব ছন্দ এবং বলিষ্ঠ ভাষা তাকে বিশিষ্ঠতা দান করেছিলো। সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য শক্তি চট্টোপাধ্যায় ১৯৭৫ সালে আনন্দ পুরস্কার এবং ১৯৮৪ সালে সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের প্রকাশিত গ্রন্থসমূহঃ

১। এ প্রেম হে নৈঃশব্দ্য (১৯৬২), ২। ধর্মে আছো জিরাফেও আছো (১৯৬৭), ৩। সোণার মাছি খুন করেছি (১৯৬৮), ৩। অন্ধকার নক্ষত্রবীথি তুমি অন্ধকার (১৯৬৮), ৪। হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান (১৯৬৯). ৫। চতুর্দশপদী কবিতাবলী (১৯৭০), ৬। পাড়ের কাঁথা মাটির বাড়ি (১৯৭১), ৭। প্রভু নষ্ট হয়ে যাই (১৯৭২), ৮। সুখে আছি (১৯৭৪), ৯। ঈশ্বর থাকেন জলে (১৯৭৫), ১০। অস্ত্রের গৌরবহীন একা (১৯৭৫), ১১। জ্বলন্ত রুমাল (১৯৭৫), ১২। ছিন্নবিচ্ছিন্ন (১৯৭৫), ১৩। সুন্দর এখানে একা নয় (১৯৭৬), ১৪। কবিতায় তুলো ওড়ে (১৯৭৬), ১৫। ভাত নেই পাথর রয়েছে (১৯৭৯), ১৬। আঙ্গুরী তোর হিরণ্য জল (১৯৮০), ১৭। প্রচ্ছন্ন স্বদেশ (১৯৮১), ১৮। যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো (১৯৮৩),
যেতে পারি, কিন্তু কেন যাবো?
শক্তি চট্টোপাধ্যায়ঃ
....................
ভাবছি, ঘুরে দাঁড়ানোই ভালো।
এতো কালো মেখেছি দু হাতে
এতোকাল ধরে!
কখনো তোমার ক’রে, তোমাকে ভাবিনি।

এখন খাদের পাশে রাত্তিরে দাঁড়ালে
চাঁদ ডাকে : আয় আয় আয়
এখন গঙ্গার তীরে ঘুমন্ত দাঁড়ালে
চিতাকাঠ ডাকে : আয় আয়
যেতে পারি
যে-কোন দিকেই আমি চলে যেতে পারি
কিন্তু, কেন যাবো?
সন্তানের মুখ ধরে একটি চুমো খাবো

যাবো
কিন্তু, এখনি যাবো না
একাকী যাবো না অসময়ে।


১৯। কক্সবাজারে সন্ধ্যা (১৯৮৫), ২০। চির - প্রণম্য অগ্নি (১৯৮৫), ২১। মিষ্টি কথায়, বিষ্টিতে নয় (১৯৮৫), ২২। সন্ধ্যার সে শান্ত উপহার (১৯৮৬), ২৩। এই তো মর্মর মুর্তি (১৯৮৭), ২৪। বিষের মধ্যে সমস্ত শোক (১৯৮৮), ২৫। আমাকে জাগাও (১৯৮৯), ২৬। ছবি আঁকে ছিঁড়ে ফ্যালে (১৯৯১), ২৭। জঙ্গলে বিষাদ আছে (১৯৯৪), ২৮। বড়োর ছড়া (১৯৯৪), ২৯। সেরা ছড়া (১৯৯৪), ৩০। টরে টক্কা (১৯৯৬), ৩১। কিছু মায়া রয়ে গেল (১৯৯৭), ৩২। সকলে প্রত্যেকে একা (১৯৯৯), ৩৩। পদ্যসমগ্র - ১ম থেকে ৭ম খণ্ড ইত্যাদি।

১৯৯৫ সালের ২৩ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন কবি বাংলার শক্তিমান কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়। আজ কবির ৮৫তম জন্মবার্ষিকী। জন্মদিনে হাংরি আন্দোলন জনক, কৃত্তিবাস গোষ্ঠীর অন্যতম সেরা কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে রইল আমাদের ফুেলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: একজন গ্রেট কবি।
একজন খাটি কবি।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৪৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ রাজীব নূর
কেমন আছেন আপনি আর আপনার বস !!

২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:১৩

শখের চাওয়ালা বলেছেন: ছেলেটা খুব ভূল করেছে শক্ত পাথর ভেঙ্গে
মানুষ ছিল নরম, কেটে ছড়িয়ে দিলে পারতো!


খুব পছন্দের একজন কবি B:-/
আর মৃত্যুবার্ষিকীতে(!) কবির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি লেখাটা ভূল মনে হচ্ছে। আজ তো জন্মবার্ষিকী।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৫৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ চাওয়ালা ভাই।
মৃত্যুতে কি আসে যায়
জনম যদি ভালো হয়!
শিরোনাাম যা বলে
তা মেনে নিতে হয়।

৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:৫৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ৮৫ তম জন্মবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।


ধন্যবাদ নূর মোহাম্মদ ভাই।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৫৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ আবুহেনা ভাই।
আপনার নেক হায়াত কামনা করছি।

৪| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:৪৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


আজকে কবির "জন্ম বার্ষিকী" ও "মৃত্যু বার্ষিকী" ? আপনাকে নিয়ে আর পারা গেলো না; আমি হতাশ ! কতজন জীবন্ত বিখ্যাত মানুষ আপনার পোষ্টে মৃ্ত্যুবরণ করেছেন, সেটার হিসেবে বের করার দরকার।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
হতাশাগ্রস্থ মানুষ জীবন হতাশা নিয়েই কালাতিপাত করে।
কি করেছি, কি করতে পারতাম, কি পেলামনা, ইত্যাদির
মাঝে আবর্তিত হতে থাকে। এরা না ঘরকা, না ঘটকা!!
আপনার জন্য করুনা হয়। ভালো থাকার চেষ্টা করুন।

৫| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ রাজীব নূর
কেমন আছেন আপনি আর আপনার বস !!

আল্লাহর রহমতে বেশ ভালো আছি।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জ্বি ভাই! আপনি যেখানে
আপনার বসও সেখানে!
ভালো থাকুন, দোয়া রইলো।

৬| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৪২

সাইন বোর্ড বলেছেন: আমার প্রিয় কবিদের একজন, ধন্যবাদ উনার উপর পোষ্ট দেয়ার জন্য ।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৫৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ সাইন বোর্ড ভাই
কবিকে শুভেচছা জানানোর জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.