নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

২৭ নভেম্বরঃ শহীদ ডা. মিলন দিবস। শ্রদ্ধায় স্মরণ

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:০৩


আজ ২৭ নভেম্বর, শহীদ ডা. মিলন দিবস। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে নভেম্বর স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলনের সময় তৎকালীন সরকারের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীদের গুলিতে ডা: শামসুল আলম খান মিলন নিহত হন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসীদের গুলীতে ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর প্রাণ হারান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুণ চিকিৎসক শামসুল আলম খান মিলন। তার আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয় এবং ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে এরশাদের পতন ঘটে। সেই থেকে এই শোকাবহ ঘটনার স্মরনে ডা. মিলনের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে প্রতিবছর ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশে শহীদ ডা. মিলন দিবস পালিত হয়।গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব ডা. শামসুল আলম খান মিলনকে সচরাচর শহীদ ডা. মিলন হিসেবে অভিহিত করা হয়। তার মৃত্যুকে মহান আত্মত্যাগ হিসেবে গণ্য করা হয়। মৃত্যুকালে পেশায় চিকিৎসক শামসুল আলম খান মিলন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। এ ছাড়া ওই সময় তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) যুগ্ম-মহাসচিব ছিলেন। ১৯৯০ সালের ২৭ নবেম্বর স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলনের সময় তৎকালীন সরকারের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীদের গুলীতে ডা. শামসুল আলম খান মিলন নিহত হন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই সংগ্রামে যুবলীগ নেতা নূর হোসেন, নূরুল হুদা, বাবুল, ফাত্তাহসহ অগণিত গণতন্ত্রকামী মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা।’ এই শোকাবহ ঘটনার স্মরণে ১৯৯১ সাল থেকে প্রতি বছর শহীদ ডা. মিলন দিবস উদযাপিত হয়ে আসছে। ডা. মিলনের মধ্য দিয়ে তখনকার স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয় এবং অল্প কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এরশাদ সরকারের পতন ঘটে। ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সব শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘স্বৈরশাসকের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় ভোট ও ভাতের অধিকার।’আজ শহীদ ডা. মিলনের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। শহীদ ডা. মিলন দিবসে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ডা. মিলনের জন্ম ১৯৫৭ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে। ১৯৭৩ সালে তিনি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে শিল্পকলা (ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্টস) বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি এইচএসসি পাস করেন নটরডেম কলেজের ছাত্র হিসেবে। এরপর চিকিৎসক হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন (ব্যাচ কে-৩৪)। ১৯৮৩ সালে তিনি এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন ও ডাক্তারি পেশায় যোগ দেন। উল্লেখ্য, ডা. মিলন পেশাগত সততা, দক্ষতা ও সাংগঠনিক কর্মতৎপরতায় ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তিনি তৎকালীন বিএমএর নির্বাচিত যুগ্ম সম্পাদক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ এবং কলেজের বায়োকেমিস্ট বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। তিনি পেশাজীবী ও রাজনৈতিক নেতাদের প্রিয়জন ও প্রিয়মুখ ছিলেন। ঘটনার বিবরণে জানাযায় তখন এরশাদ হটাও আন্দোলনে দেশব্যাপী রাজপথ-রেলপথ অবরোধ আন্দোলন চলছিল। ঘটনার দিন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের একটি সভায় যোগ দিতে রিকশাযোগে পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) যাচ্ছিলেন ডা. মিলন। এ সময় একই রিকশায় তার সহযাত্রী ছিলেন ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি এলাকা অতিক্রমকালে সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনী তার ওপর গুলী চালায়। তাৎক্ষণিকভাবে তার মৃত্যু হয়। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে দাফন করা হয়। ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ডা. মিলন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে স্বৈরশাসনের উত্থান ঘটে। শহীদ ডা. মিলনের মতো আরো অনেকের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৯০ সালে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে। দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী মানুষ এসব বীর শহিদদের অবদান চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’ যে চেতনা ধারণ করে ডা. মিলন প্রাণ দিয়েছিল, আগামী প্রজন্মকে সেই চেতনায় অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যেতে হবে। স্বৈরাচারের ভয়াল থাবা থেকে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার অকুতোভয় সৈনিক ডা. মিলনের শহীদের দিন আজ। অনেক আগেই ‘২৭ নভেম্বর’ তারিখটি ডা. মিলন দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আজকের দিন তাই চিরস্মরণীয়। এদিনে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ডা. মিলনকে।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: ড. মিলনের জন্য শ্রদ্ধা।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
শুভ সকাল।
আপনার জন্য শুভেচ্ছা।
তাও ভালো আজ বলেন নি
ডা.মিলনকে চিনেন না!!
মজা করলাম। তবে আপনার বস(!)
ঠিকই পেজগী লাগাবে !!

২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১১

জগতারন বলেছেন:
ডাঃ মিলনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি।
নূরু ভাইয়ের প্রতি সুভেচ্ছা।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ জাগতারন ভাই
ডা.মিলনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.