নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও অবিভক্ত ঢাকার প্রথম মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ত্রয়োদশ মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১৫


ঢাকাবাসীর গর্ব, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ ও স্নেহভাজন, অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত সফল মেয়র এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ। তিনি ১৯৯৪ সালের ১২ মার্চ থেকে ২০০২ সালের ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ৮ বছর ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মোহাম্মদ হানিফ ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে তার রাজনীতির হাতেখড়ি। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিজয়ের পর পাকিস্তান সরকার যখন প্রাদেশিক সরকার ভেঙে দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার করে এবং ২৪ ঘণ্টার নোটিসে শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে মন্ত্রীপাড়ার বাসা ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়, সেসময় কেন্দ্রীয় সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মোহাম্মদ হানিফের পুরান ঢাকার নাজিরা বাজারের বাসায় অবস্থান নেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিব ও তার পরিবার। বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মোহাম্মদ হানিফকে খুব স্নেহ ও বিশ্বাস করতেন। ১৯৬৫ সালে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব হন তিনি।বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব হিসেবে ছয় দফা আন্দোলনের প্রস্তুতি, ছয় দফা মুক্তি সনদ প্রণয়ন ও প্রচারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর জাতীয় নির্বাচন, একাত্তরে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সব আন্দোলনে তিনি রাজপথে প্রথম কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৯৬ এর মার্চের শেষ সপ্তাহে স্বৈরাচার বিরোধী গণআন্দো লনে মোহাম্মদ হানিফ তার বলিষ্ঠ ও গতিশীল নেতৃত্বে ”জনতার মঞ্চ” তৈরী করেন, যা তৎকালীন বিএনপি সরকারের পতনসহ আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য টানির্ং পয়েন্ট তৈরী করে। ফলশ্রুতিতে ’৯৬-এর ১২জুন দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করে এবং মোহাম্মদ হানিফের প্রাণপ্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগের নিরংকুশ বিজয় অর্জন করে। ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশের ট্রাক মঞ্চে শেখ হাসিনার ওপর বর্বর ও ঘৃণ্যতম গ্রেনেড হামলার সময় নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানবঢাল রচনা করে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে রক্ষা করেন মোহাম্মদ হানিফ। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রাণে রক্ষা পেলেও তিনি মস্তিষ্কসহ দেহের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য স্পিন্টারের আঘাতে গুরুতরভাবে আহত হন। ২০০৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তাঙ্গণে এক সমাবেশে বক্তৃতা দেয়ার সময় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। মাথায় বিদ্ধ স্পিন্টার প্রতিক্রিয়ায় পরবর্তী সময়ে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে এবং ২০০৬ সালের ২৮ নবেম্বর রাতে এপোলো হাসপাতালে তিনি ইন্তিকাল করেন। আজ এই নেতার ত্রয়োদশ মৃত্যুবাষির্কী। অবিভক্ত ঢাকার প্রথম মেয়র মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

মোহাম্মদ হানিফ ১৯৪৪ সালের ১লা এপ্রিল ঢাকার সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা আবদুল আজিজ আর মাতা মুন্নি বেগম। হানিফ তাদের কনিষ্ঠ সন্তান। আদর করে সবাই তাকে ‘ধনী’ নামে ডাকত। হানিফ ছোটবেলায় মাকে হারান। মায়ের মৃত্যুর পর ফুফু আছিয়া খাতুনের কাছে বেড়ে উঠেন তিনি। ১৯৬০ সালে পুরান ঢাকার ইসলামিয়া হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে পরবর্তীতে তৎকালীন কায়েদে আযম কলেজে (বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ) উচ্চ মাধ্যমিক এবং বিএ পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়ে কিছুদিন আইন বিষয়ে লেখাপড়া করেন। মোহাম্মদ হানিফ ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৫ সালে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পান। এসময় ছয়দফা মুক্তি সনদ প্রণয়ন ও প্রচারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। তিনি ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া ঢাকা ১২ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। ’৭৬ সালে তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।ঢাকা নগরের উন্নয়নে তিনি ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। ফোয়ারা নির্মাণ, মাতৃসদন নির্মাণ, বনায়ন কর্মসূচি, ছিন্নমূল শিশু-কিশোরদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ, পৌর শিশুপার্ক নির্মাণ ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য কাজ। নারী শিক্ষা বিস্তারে লক্ষ্মীবাজারে ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন ।

ব্যক্তিগত জীবনে মোহাম্মদ হানিফ ১৯৬৭ সালে ঢাকার প্রখ্যাত পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ঢাকার শেষ সরদার আলহাজ্ব মাজদ সরদারের কন্যা ফাতেমা খাতুনকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির একজন পুত্র ও দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। তারা হলেন, সাঈদ খোকন, ইভা, খুকি। ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশের ট্রাক মঞ্চে শেখ হাসিনার ওপর বর্বর ও ঘৃণ্যতম গ্রেনেড হামলার সময় নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানবঢাল রচনা করে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে রক্ষা করেন মোহাম্মদ হানিফ। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রাণে রক্ষা পেলেও তিনি মস্তিষ্কসহ দেহের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য স্পিন্টারের আঘাতে গুরুতরভাবে আহত হন। ২০০৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তাঙ্গণে এক সমাবেশে বক্তৃতা দেয়ার সময় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। মাথায় বিদ্ধ স্পিন্টার প্রক্রিয়ায় পরবর্তী সময়ে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে এবং ২০০৬ সালের ২৮ নবেম্বর রাতে এপোলো হাসপাতালে তিনি ইন্তিকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়ে ছিলো ৬২ বছর ।তার একমাত্র পুত্র ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। একজন সফল রাজনীতিক জনেনতা হিসেবে মোহাম্মদ হানিফ তার কর্মের মাধ্যমে চিরদিন জনগেণের মাঝে বেঁচে থাকবেন। ঢাকাবাসীর গর্ব মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেনেড হামলায় উনি শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৩৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জ্বি, তার মতো আরো অনেকে
এগিয়ে এসেছিলেন সে দিন।

২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৭

হাবিব বলেছেন: কীর্তিমানের মৃত্যু নেই.....বেঁচে থাকে মানুষের মাঝে

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৩৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
যথার্থ বলেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.