নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'শিক্ষকদের শিক্ষক\' হিসেবে খ্যাত জ্ঞানতাপস প্রফেসর আবদুর রাজ্জাকের ২০তম মুত্যুদিবসে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৩৮


বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী জাতীয় অধ্যাপক জ্ঞানতাপস আবদুর রাজ্জাক। কেউ তাকে বলেন বাংলার সক্রেটিস, কেউবা বলেন চলমান বিশ্বকোষ। তিনি শিক্ষকের শিক্ষক, দার্শনিকদের দার্শনিক। অর্থনীতি, রাজনীতি, সাহিত্য, সংস্কৃতি, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, বিজ্ঞান, ধর্ম সব বিষয়েই তার অগাধ পান্ডিত্য ছিল। তাঁর জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত ছিল বিশেষত প্রাশ্চ্যতত্ত্ব, ইতিহাস ও রাজনীতিতে। তিনি ‘শিক্ষকদের শিক্ষক’ হিসেবে অভিহিত হতেন। তাঁর অনুগামীদের মধ্যে শুধু বুদ্ধিজীবী নয়, শেখ মুজিবুর রহমান সহ অনেক রাজনৈতিক নেতাও ছিলেন। পল্লীবাংলার আলোছায়ায় বেড়ে ওঠা একটি বিদগ্ধ প-িত খুবই সাদাসিধে জীবনযাপন করেছেন, বাঙালিয়ানা ছেড়ে কখনও সাহেব হওয়ার প্রবণতা তার মধ্যে ছিল না। অসংখ্য মানুষ তার সান্নিধ্যে এসে আলোকিত হয়েছেন, তার কাছে লেখার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। প্রফেসর আবদুর রাজ্জাক অল্প কিছু প্রবন্ধ ছাড়া কিছুই রচনা না করলেও তার অসাধারণ জ্ঞান ও প্রজ্ঞার কারণে কিংবদন্তির খ্যাতি অর্জন করেন।তিনি নিজে কিছু না লিখলেও তাকে নিয়ে লেখা হয়েছে অনেক। আহমদ ছফা তাকে নিয়ে ‘যদ্যপি আমার গুরু’ নামে একটি বই রচনা করেছেন। এছাড়া সরদার ফজলুল করিম তার সঙ্গে আলাপচারিতার ওপর ভিত্তি করে একটি বই লিখেছেন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পূর্ববঙ্গীয় সমাজ : অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের আলাপচারিতা।’ সলিমুল্লাহ খান তার বক্তৃতা নিয়ে সমালোচনামূলক একটি বই লিখেছেন। তার ‘বাংলাদেশ : জাতির অবস্থা’ বক্তৃতাটি বাঙালি জাতির সত্তার আত্মানুসন্ধানীর অনন্য পাঠ হিসেবে বিবেচনাযোগ্য। ১৯৭৩ সালের প্রথমদিকে ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে পিএইচডি প্রদান করে। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে মনোনীত করে। কিংবদন্তিতুল্য এ মনীষীর আজ ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৯ সালের আজকের দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শিক্ষকদের শিক্ষক' হিসেবে খ্যাত জ্ঞানতাপস প্রফেসর আবদুর রাজ্জাকের মুত্যুদিবসে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

আবদুর রাজ্জাক ১৯১৪ সালে (তারিখ অজ্ঞাত) ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার পারাগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আব্দুল আলি একজন পুলিস অফিসার ছিলেন। আবদুর রাজ্জাক ঢাকার মুসলিম গভার্নমেন্ট হাই স্কুল থেকে মেট্রিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ১৯৩১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৩৬ সালে প্রথম শ্রেণীতে মাস্টার্স পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স এ প্রফেসর হ্যারল্ড লাস্কির অধীনে পিএইচডি করতে লন্ডন গমন করেন ; তবে হ্যারল্ড লাস্কি পরলোকগমন করায় তাঁর থিসিসি মূল্যায়ন করার মত কেউ নেই এইবিবেচনায় থিসিস জমা না-দিয়েই (অর্থাৎ কোনো ডিগ্রী ছাড়াই) দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং বুদ্ধিজীবী যিনি 'শিক্ষকদের শিক্ষক' হিসাবে অভিহিত হতেন। প্রফেসর আবদুর রাজ্জাক একজন অকৃতদার মানুষ ছিলেন। তিনি সবাইকে জ্ঞানের কথা বলে আকৃষ্ট করতেন। এটা প্রফেসর রাজ্জাকের একটা বিশেষ গুণ। খুব ভালো রান্না করতে পারতেন। পারতেন ভালো দাবা খেলতে। সব সময় পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। প্রফেসর রাজ্জাক ছিলেন জ্ঞানী মানুষ। তিনি মনে করতেন, ফিলোসফি না বুঝলে, মাথা ক্লিয়ার না হলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াবে কীভাবে? তাঁর বইয়ের অভাব ছিল না। তাঁর বইয়ের একটা পারসোনাল লাইব্রেরি ছিল। যখন যেটা প্রয়োজন সেটা নিয়ে পড়তে পারতেন। অন্যদের পড়ার জন্য নিজের লাইব্রেরি থেকে বই বের করে দিতেন। লাইব্রেরিটার তখনও ক্যাটালগ হয়নি। তবে কোন বই কোনখানে আছে, সেটা তাঁর মুখস্থ। যেটা দরকার বের করে দিতেন।

আব্দুর রাজ্জাক (বায়ে) এবং আহমদ ছফা (ডানে)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো শিক্ষক সংগ্রহ করা ছিল তাঁর কাজের অন্যতম অংশ। আবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি পড়াতেন না। “রাজ্জাক স্যারের কল্লা চাই” বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিলও হয়েছে। রাজ্জাক সাহেব তখন বলতেন, আমি কি বলেছি যে, আমার কল্লা এত শক্ত, যে ওটা কাটা যায় না। আবার তিনি এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় অধ্যাপকও হয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালে সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে মনোনীত করে। অবশ্য এ বছরই তিনি ( ১৯৭৫ সালে) অবসর গ্রহণ করেন। তিনি খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন। বাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব সাধারণ পোশাক পরতেন। বাসায় তিনি লুঙ্গির সাথে শার্ট পরতেন। গামছা ব্যবহার করতেন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাজামা-পাঞ্জাবি পরে আসতেন। তিনি সরল জীবনযাপন করতেন। তাঁর ঘরে একটি মাত্র চকি ছিল, চকির ওপর শুধু একটা চাদর ব্যবহার করতেন। কোনো তোশক ছিল না। প্রফেসর আবদুর রাজ্জাক অল্প কিছু প্রবন্ধ ছাড়া কিছুই রচনা না করলেও তার অসাধারণ জ্ঞান ও প্রজ্ঞার কারণে কিংবদন্তির খ্যাতি অর্জন করেন। অধ্যাপক রাজ্জাকের মোট তিনটি সাক্ষাৎকার গৃহীত হয়েছে। যার একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সর্দার ফজলুল করিম।সর্দার ফজলুল করিম তাঁর সাথে আলাপচারিতার ওপর ভিত্তি করে একটি বই লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পূর্ববঙ্গীয় সমাজঃ অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের আলাপচারিতা। অন্য দুটি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হুমায়ুন আজাদ ও সেলিনা শিরীন সিকদার। তাঁর একমাত্র বক্তৃতা লিখিত আকারে প্রকাশিত হয়েছে, এখনো অপ্রকাশিত রয়েছে তাঁর অসম্পূর্ণ পিএইচডি থিসিস। তাছাড়া আহমদ ছফা তাঁকে নিয়ে একটি বই লিখেছেন, বইটির নাম যদ্যপি আমার গুরু। সলিমুল্লাহ খান তাঁর বক্তৃতা নিয়ে সমালোচনামূলক একটি বই লিখেছেন। এ ছাড়া তাঁকে মূল্যায়ন করার মতো তেমন কিছু হাতের কাছে পাওয়া যায় না। তিনি এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ লেখা লিখে যান নি, যা দিয়ে তাঁকে মূল্যায়ন করা যায়। রাজ্জাক সাহেব সাহিত্যিক ছিলেন না। সাহিত্যিকদের নিয়ে আলোচনা করাও তাঁর অভ্যাস ছিল না। তিনি মাষ্টারির চাকরি করতেন, তিনি একজন মাষ্টার ছিলেন। তিনি নিজেই বলতেন, ‘আমি একজন মাষ্টোর মানুষ।’ উনি কখনো ক্লাস নিতেন না, আমরা যে অর্থে ক্লাস নেওয়া বলি। পড়াতেন না এমন একজন মাষ্টার ছিলেন প্রফেসর আবদুর রাজ্জাক।

তিনি সব ধরনের মানুষের উপকার করার চেষ্টা করেছেন। এটা ছিল তাঁর চরিত্রের প্রধানতম গুণ। তাই তিনি হয়ে উঠেছিলেন অধ্যাপক রাজ্জাক। গুণী যেই হোক তাঁকে সম্মান দেওয়া, কদর করা তাঁর অভ্যাস ও নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সূর্যের আলোর যেমন ডিসক্রিমিনেশন নেই, সবার ওপরে পড়ে, প্রফেসর রাজ্জাকও সে রকম একজন।রাজ্জাক স্যারের স্নেহ সূর্যের মতো, সবখানেই পড়ে। যেখানে পড়া উচিত সেখানে পড়ে, যেখানে পড়া উচিত নয়, সেখানেও পড়ে। তাঁর চরিত্রের মেইন দিক হচ্ছে, জ্ঞান তাঁর কাছে খুব প্রিয় ছিল। জ্ঞানীকে নানানভাবে সমাদর করতেন। তাঁর জীবনে আর কোনো কাজ ছিল না। তিনি এ সব নিয়েই থাকতেন। প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক মুসলিম লীগের রাজনীতি করতেন। প্রফেসর রাজ্জাক মুসলিম লীগের ডিপুটেড লোক ছিলেন। তিনি মুসলিম লীগের পলিটিকসটাকে এক নাম্বার করার চেষ্টা করেছেন। মুসলিম লীগের পলিটিকসটাকে প্রফেসর রাজ্জাক এগিয়ে নেবার চেষ্টা করতেন। তাই তিনি জিন্নাহকেই বেশি গুরুত্ব দিতেন। তিনি নেহেরুকে কখনো জিন্নাহর সমকক্ষ বলে মনে করতেন না। “অনেক সময় উৎকৃষ্ট বীজও পাথরের নিচে পড়ে নষ্ট হয়।প্রফেসর রাজ্জাক সাহেবের ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটেছে।” বলে মনে করেন তার ঘনিষ্ঠজনেরা। অকৃতদার এ মানুষটি মেধা-মননে, নীতি-আদর্শে, জ্ঞানে-গরিমায় ছিলেন আপনভুবনে ভাস্বর। স্রোতের বিপরীতেও একা দাঁড়িয়ে থাকার দৃঢ় অঙ্গীকার ছিল তার ব্যতিক্রমী চরিত্রে। তার নিজস্ব ভাষা, বাচনভঙ্গি, একগোছা দাড়ি ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য তাকে অপর দশজন শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী থেকে অদ্যাবধি আলাদা করে রেখেছে। প্রফেসর রাজ্জাক সম্পর্কে চমকপ্রদ অনেক গল্প ও জনশ্রুতি আছে। তার মুখের শ্মশ্রুর গোছাটি সম্পর্কে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় নয় মাস তাকে কেরানীগঞ্জের নানা জায়গায় পালিয়ে বেড়াতে হয়েছিল এবং ওই সময় গজিয়ে ওঠা দাড়ি তিনি আর কখনো বর্জন করেননি। কিংবদন্তিতুল্য এ মনীষীর ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯৯ সালের ২৮ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। জাতীয় অধ্যাপক জ্ঞাণতাপস,'শিক্ষকদের শিক্ষক' হিসেবে খ্যাত প্রফেসর আবদুর রাজ্জাকের মুত্যুদিবসে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২২

আসোয়াদ লোদি বলেছেন: অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারলাম।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ লোদি ভাই।
আমার ব্লগে স্বাগতম। আবার আসবেন

২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২০

রাজীব নুর বলেছেন: পন্ডিত। অনেক পড়াশোনা তার।
জ্ঞানের পাহাড়।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সেই জন্যই তিনি
জ্ঞানতাপস হিসেবে খ্যাত !!

৩| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩১

জগতারন বলেছেন:
জাতীয় অধ্যাপক জ্ঞাণতাপস,'শিক্ষকদের শিক্ষক' হিসেবে খ্যাত প্রফেসর আবদুর রাজ্জাকের মুত্যুদিবসে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

সহমত।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:০৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংথ্য ধন্যবাদ জাগতারন দাদা,
জাতীয় অধ্যাপক জ্ঞাণতাপস,'শিক্ষকদের শিক্ষক'
হিসেবে খ্যাত প্রফেসর আবদুর রাজ্জাকের মুত্যুদিবসে
শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.