নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষাব্রতী ও সমাজসেবক দানবীর হাজী মোহাম্মদ মোহসীনের ২০৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:০৭


শিক্ষাব্রতী ও সমাজসেবক দানবীর হাজী মোহাম্মদ মোহসীন। শুধু দানশীলতা নয়, আরবি ফরাসি-উর্দু ও ইংরেজি ভাষায় এবং ইতিহাস বীজগণিতে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত ছিল। অনাড়ম্বর জীবনযাপনের অধিকারী হাজী মোহাম্মদ মেহসীনের মনোবৃত্তি আমাদের আজকের ভোগবাদী সমাজে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করছে।বিশাল সম্পত্তির আয় চিরকুমার মোহসিন নিজের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য ব্যয় না করে দীন-দুঃখীর দুঃখ মোচনের জন্য ব্যয় করেছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে বিশেষ করে কলকাতার সীমানাবর্তি এলাকাগুলোতে তিনি অনেক সম্পতি আহলে বাইতের অনুসারী শীয়াদের নামে ওয়াক্বফ করে গেছেন। হুগলী-ঢাকা-চট্টগ্রাম-যশোর প্রভৃতি স্থানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহু অর্থ দান করেছেন। মৃত্যুর ছয় বছর পূর্বে ১৮০৬ সালে একটি তহবিল গঠন করে ধর্ম ও জনহিতকর কার্যে সম্পত্তি দান করেন। মোহসীন তহবিলের অর্থে ‘হুগলী মোহসিন কলেজ’ (১৮৩৬), হুগলী দাতব্য চিকিৎসালয় (১৮৩৬) এবং হুগলরি নতুন ইমামবাড়া (১৮৪৫) স্থাপিত হয়। মোহসিন তহবিলের বৃত্তির অর্থ দিয়ে হাজার হাজার ছাত্রের উচ্চশিক্ষালাভের প্রসার ঘটে। আজ দানবীর হাজী মোহাম্মদ মোহসীনের ২০৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮১২ সালের আজকের দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শিক্ষাব্রতী ও সমাজসেবক দানবীর হাজী মোহাম্মদ মোহসীনের জন্ম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি। 

মোহাম্মদ মোহসীন ১৭৩২ সালের ৩ জানুয়ারী ভারতের পশ্চিম বাংলার হুগলীতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলীম ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ইরানের ইসপাহান প্রদেশের মানুষ এবং শীয়া সম্প্রদায়ের লোক । তার পিতার নাম হাজী ফাইজুল্লাহ এবং মাতার নাম জয়নাব খানম। এটি ছিলো জয়নব খানমের দ্বিতীয় বিবাহ। তার প্রথম স্বামী আগা মোতাহার বিশাল ধন সম্পত্তির মালিক ছিলেন পরে যার মালিক হন তার একমাত্র কন্যা মন্নুজান খানম। মন্নুজান ও মোহসীন পারিবারিকভাবে ক্বোরআন, হাদিস সম্পর্কে বিষদ জ্ঞান লাভ করেন। পরে উচ্চ শিক্ষার জন্য মোহসীন মুর্শিদাবাদ গমন করেন। ইতি মধ্যে মোহসীনের পিতার মৃত্যু হলে তিনি তার সৎবোন মন্নুজান যত্নে বড় হন। ১৭৬৭ সালে মন্নুজানের বিয়ে হলে মোহসীন বিভিন্ন দেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। তিনি এশিয়ার বিভিন্ন দেশ যেমন ইরাণ, ইরাক, তুর্কি ভ্রমন করেন। তিনি মক্কা, মদিনা, কারবালার প্রান্তর ও কুফাসহ অনেক পবিত্র নগরী ভ্রমন করেন। হ্জব্রত পালন করার পরে তিনি হাজী মোহাম্মদ মোহসীন নামে পরিচিতি লাভ করেন।

(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও হাজী মুহাম্মাদ মহসীন হল)
ভ্রমন শেষে হাজী মহসীন দেশে ফিরে আসেন। ইতিমধ্যে মন্নুজান বিধবা হন। মহসীন তখন সৎ বোন মন্নুজানের সাথে থাকতেন এবং তার নবাব স্টেট দেখাশুনা করতেন। উল্লেখ্য হাজী মোহাম্মদ মোহসীনের মাতা জয়নব খানমের প্রথম স্বামী আগা মোতাহার হুগলি, যশোহর, মুর্শিদাবাদ ও নদীয়াতে বিশাল স্থাবর ও অস্থাবর ধনসম্পত্তি রেখে যান। ১৮০৩ সালে সৎ বোন মন্নুজান পরলোক গমন করেন। এরপর সংসার ধর্মে চির উদাসীন মহসীন আরো বৈরাগী হয়ে যান। এই সময় মুলত দান করেই তিনি সময় কাটাতেন। তার মৃত সৎ বোন মন্নুজানের বিশাল সম্পত্তি জনগনের সেবার জন্য উইল করে দেন। তাঁর দানের টাকায় বহু পরিবার চলত। তার আর্থিক সহয়তায় ইমামবারা, মহসীন কলেজ তৈরি হয়। এখনও হুগলিতে মহসীন ফান্ড আছে। সেখান থেকে ছাত্রছাত্রীরা সাহায্য পেয়ে থাকনে। শিক্ষাব্রতী সমাজসেবক হাজী মোহাম্মদ মোহসীন ১৮১২ খৃষ্টাব্দের ২৯ নভেম্বর পরলোক গমন করেন। বাংলার একজন দানবীর মানুষ হিসাবে খ্যাত হাজি মুহাম্মদ মহসীন মানুষের কল্যাণে বহু কাজ করেছেন। এখনও মহসীনের নামে বহু শিক্ষালয় আছে। খুলনার হাজী মহসীন কলেজও ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও হাজী মুহাম্মাদ মোহসীনের নামে ছাত্রাবাস আছে। 

অনাড়ম্বর জীবনযাপনের অধিকারী হাজী মোহাম্মদ মোহসীনের ২০৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। শিক্ষাব্রতী ও সমাজসেবক দানবীর হাজী মোহাম্মদ মোহসীনের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:২৯

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা এই মহামানবের প্রতি।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনেকে সাইয়িদ রফিকুল হক।
ভালো থাকবেন।

২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৩৪

হাবিব বলেছেন: স্যালুট বস...........

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও ধন্যবাদ
মন্তব্য প্রদানের জন্য।

৩| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৪৭

জুল ভার্ন বলেছেন: গুড পোস্ট।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গুড মানুষ তাই
তাদের সম্পর্কে লেখাও গুড হয়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৪| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: আমার এই দানবীরের মতো হতে ইচ্ছা করে।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তা হলে আজই শুরু করে দিন।
বেশী সম্পদ থাকার দরকার নাই
যা আছে তাই দিয়েই শুরু করুন।

৫| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৪১

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ১৯৬৭ সালে মুহসীন ফাণ্ডের টাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে দানবীর হাজী মুহাম্মদ মহসিন এর "মহসিন ফান্ড" এর অর্থায়নে একটি মাদ্রাসা ( চট্টগ্রাম মাদ্রাসা) হিসেবে এ কলেজ প্রতিষ্ঠিত করা হয়।তখন থেকেই এটি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে "চট্টগ্রাম মাদ্রাসা"কে "চট্টগ্রাম ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ" নামকরণ করে এর কার্যক্রম উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত উন্নীত করা হয় এবং পরে ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে জুলাই "চট্টগ্রাম ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ" ও "চট্টগ্রাম সরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজ"কে একত্রিত করে "হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ" নামে নামকরণ করা হয়।

এ ছাড়া খুলনার খালিশপুরে এবং জয়পুরহাট জেলা পাঁচবিবি উপজেলার সহীপুরে হাজী মুহসীনের নামে দুটি সরকারী কলেজ আছে।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ কামাল ভা্ই,
হাজী মুহম্মদ মুহসীন সম্পর্কে
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংযোজন করার জন্য।

৬| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:০১

জগতারন বলেছেন:
এখানে অনেক ব্লগারই হাজী মুহাম্মদ মোহসীন-এর অনেক গুন গান করিলেন ! কিন্তু
আমার এই ভদ্র লোক সমন্ধে অন্য কিছু বলার আছে;
এই ভদ্র লোক সমন্ধে আমি প্রথম জানিয়াছিলাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তৃতীয় শ্রেনীতে তাহার সমন্ধে আমাদের একটি প্রবন্ধ পড়ানো হইয়াছিল তখন। পরে পরিনত বয়সে তাহার সমন্ধে আরও অনেক জানিয়াছি। ইনি যে অগাধ সম্পত্তির মালিক হইয়াছিলেন তা তাহার কষ্ট করিয়া অর্জন করা সম্পত্তি ছিল না। ইহা তিনি প্রাপ্ত হইয়ায়াছিলেন সে অনেক কথা এখানে তা উল্লেখ করিলে মন্তব্যের গতি অন্য দিকে চলিয়া যাইবে। তাই থাক ও সমস্ত কথা। সৎ পথে থাকিয়া কষ্ট করিয়া অর্জন করা সম্পত্তির মালিক হওয়া এবং সে সম্পতি থেকে দান করা, ধর্মিয় ৠতি পালন করা, হজে যাওয়া এক কথা ও যে ছোয়াপ পাওয়া এক কথা আর অন্যের দেওয়া সম্পত্তি ভোগ করা, তা থেকে দান করা বা ধর্মীয় পথে থাকে বা হজে যাওয়া অন্য কথা এবং অন্য ছোয়াপ পাওয়ার কথা।

আর এই ভদ্র লোক জীবনে বিবাহই করিলেন না। এত বড় ধনি মানুষ; কিন্তু বিবাহ করিলেন না (!) কেন (?)
বিবাহ না করা মানুষ আমার কাছে কিছুটা অস্বাভাবিক বলিয়াই মনে হইয়া থাকে। কারন
আল্লাহ মানুষ জাতি সৃষ্টি করিয়াছেন নারী ও পুরুষ রূপে; যাহারা একে অপরের পরিপূরক।

আজ এই পর্যন্তই; আশা করি ব্লগার নূরু সাহেব বা অনয কোন ব্লগার আমার এ মন্তব্যের সুন্দর একটি উত্তর দিবেন।

৭| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:৪২

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: দেখুন ভাই,

হাজী মোহাম্মদ মহসীন ছিলেন সুফীমানুষ। আর সুফীদের অনেকেই বিবাহ করেননি। যেমন, রাসুলুল্লাহ সা.-এর খুব কাছের মানুষ, তাঁর প্রিয় সাহাবী আব্দুর রহমান ওরফে আবু হুরাইরা রা.ও বিবাহ করেননি। আরও অনেকে...। যেমন, বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ওলী হজরত শাহজালাল রহ. শ্রদ্ধাভাজও বিবাহ করেননি।

তাই, বিবাহ না-করাটা অস্বাভাবিক নয়। কেউ বিবাহ না-করে থাকতে পারলে কোনো অসুবিধা নাই। আর এটা ইসলামে বৈধ ও সম্পূর্ণ জায়েজ।

মহসীন তাঁর প্রাপ্ত ধনসম্পদ নিজে ভোগ করেননি। তার সবটাই মানবসেবায় ব্যয় করেছেন।

এখন বলুন তাঁর অপরাধটা কী?

ধন্যবাদ আপনাকে।

৮| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৪৬

জগতারন বলেছেন:
প্রিয়া ব্লগার সাইয়িদ রফিকুল হক; ধন্যবাদ, আপনি আমার মন্তব্যের সম্মানজ্জনক একটি উত্তর দিয়াছেন। লক্ষ করুন;
আমি কিন্তু বলি নাই জ্বনাব হাজী মুহাম্মদ মহসীন কোনও অপরাধ করিয়াছেন। আমি শুধু তাহার সমালোচনা করিয়াছি ও তাহাকে সমাজের আদর্শ হিসাবে নেওয়ায় আমার কিছুটা খটকা লাগিয়াছিল।

ইসলাম ধর্মে কিন্তু বিবাহ না করিয়া থাকার কোন নির্দেশ নাই;
বরং বিবাহ করা ধর্মে পালনে সহায়ক ও সৃষ্টি কর্তার ইবাদতেরই একটি অংশ হিসাবে বলা হইয়াছে।
(দুঃখিত এখানে আমি সেই রেফারেন্স দিতে পারিলাম না।)
যাইহোক; আপনি ও নূরু সাহেব অন্যান্য ব্লগাররা সবাই ভালো থাকিবেন, কামনা করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.