নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

২ ডিসেম্বর; আন্তর্জাতিক দাসপ্রথা বিলোপ দিবস আজঃ দাসপ্রথার জঞ্জাল দূরীকরণের শপথ নেই সবাই

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:০৬


আজ ২ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক দাসপ্রথা বিলুপ্ত দিবস। ১৯৪৯ সালের ২ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ব্যক্তি কেনা-বেচা এবং শোষণ দমনের বিষয়ে কনভেনশন গৃহীত হয় (সিদ্ধান্ত ৩১৭/৪)। উক্ত কনভেনশন গৃহীত হওয়ার দিনটি স্মরণে প্রতি বছর ২ ডিসেম্বর পালিত হয় ‘আর্ন্তজাতিক দাস প্রথা বিলুপ্ত দিবস’। বিশ্ব থেকে সব ধরনের দাসত্বের বিলুপ্তির দিন আজ। ইউনেস্কোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি বছর দিনটি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক দাসত্ব বিলুপ্তি দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। মানব পাচার, যৌন দাস, জবরদস্তিমূলক শিশু শ্রম, বলপ্রয়োগে বিয়ে, যুদ্ধে শিশুদের ব্যবহার বন্ধে সচেতনতা বাড়ানো এই দিবসের মূল উদ্দেশ্য। দাসপ্রথার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি আজ পালিত হচ্ছে। ১৯৪৯ সালের আজকের এই দিনে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ব্যক্তি বেচাকেনা এবং শোষণ দমনের বিষয়ে কনভেনশন গৃহীত হয়। এই দিনটি স্মরণে প্রতি বছর পালিত হয় আন্তর্জাতিক দাসত্ব বিলোপ দিবস। এই কনভেনশন গৃহীত হওয়ার প্রায় আশি বছর চলে গেলেও দাসপ্রথা একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে সারা বিশ্বে এমনটি বলা যায় না। বরং নতুন রূপে নতুন আঙ্গিকে দাসত্ব বা ক্রীতদাস প্রথাকে জিইয়ে রাখা হয়েছে। উন্নত অনুন্নত সব দেশেই দৃষ্টির আড়ালে দেখা যায় আজও ক্রীতদাস; বিশেষ করে আমাদের এই দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, আরব ও আফ্রিকা অঞ্চলে। আর তাই আজকের এই দিনটি পালনের প্রাসঙ্গিকতা এখনও বিদ্যমান। ১৭৯১ সালের ২২ ও ২৩ আগস্ট বর্তমান হাইতি ও ডমিনিকান রিপাবলিক অঞ্চলে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরবর্তীতে ব্রিটেন ১৮০৭ সালে ও যুক্তরাষ্ট্র ১৮০৮ সালে তাদের আফ্রিকান দাসদের মুক্তি দেয়। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র যথাক্রমে ১৮৩৩, ১৮৪৮ ও ১৮৬৫ সালে আইন করে দাসপ্রথা নিষিদ্ধ করে। এ্ছাড়া সুইডেন ১৮৪৬, আর্জেন্টিনা ১৮৫৩, মেক্সিকো ১৮২৯, ডেনমার্ক ১৮৪৮, কিউবা ১৮৮৬, ব্রাজিল ১৮৮৮, মাদাগাস্কার ১৮৯৬, চীন ১৯১০, আফগানিস্তান ১৯২৩, ইরাক ১৯২৪, ইরান ১৯২৮, মিয়ানমার ১৯২৯, সৌদি আরব ১৯৬২, সংযুক্ত আরব আমিরাত ১৯৬৩, নেপাল ১৯২৬ তাদের দেশ থেকে দাসপ্রথা বিলোপ করে।

আদিম মানুষ নব্য প্রস্তরযুগে প্রবেশের সময় থেকেই অর্থাৎ কৃষিকাজ শুরুর সময় থেকেই দাসব্যবস্থার শুরু। ১৭৬০ সালে হাম্বুরাবি নামের ব্যাবিলনের এক শাসক আইন করে দাস প্রথা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই আইনে গৃহনির্মাণ, শস্য উত্পাদনসহ নানা কাজে জোর করে শ্রমিক নিয়োগের নিদর্শন পাওয়া যায়। এরপর বিশ্বের প্রায় প্রতিটি সভ্যতাতেই দাসব্যবস্থার প্রচলন ছিল। বিশেষত গ্রিক সভ্যতায় এর ভয়াবহতা ছিল ব্যাপক। অ্যারিস্টটলসহ অনেক বোদ্ধাই তখন বলেছিলেন, দাসত্ব একটি প্রাকৃতিক বিষয়। প্রকৃতিগতভাবেই কেউ কেউ দাস হয়ে জন্মগ্রহণ করে। ১৪৭২ সালে পর্তুগিজ বণিকেরা প্রথম দাস চুক্তি করে। ১৬৬৩ সালে ভার্জিনিয়ার আদালত রায় ঘোষণা করেন, যে মা যদি দাস হয় তাঁর সন্তানও দাস বলে বিবেচিত হবে। বাইজেনটাইন সাম্রাজ্য ও মুসলিম সভ্যতার সময়েও দাসব্যবসা ব্যাপকতা লাভ করেছিল। আফ্রিকায় দাস ব্যবসা ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। ঘানা, মালিসহ এমন কিছু দেশের প্রায় ৩ শতাংশ জনগণই ছিল দাস। এশিয়াতেও দাসব্যবস্থার প্রচলন ছিল, তবে তা অনেক পরে এই মহাদেশে প্রবেশ করে। এক তথ্যে উল্লেখ আছে, ১৮৪১ সালে ভারত উপমহাদেশে প্রায় নয় মিলিয়ন মানুষ দাস হিসেবে চিহ্নিত ছিল। সোনা, হীরা বা অন্য মূল্যবান বস্তু দাসদের মূল্য হিসেবে বিবেচিত হতো। শরীরে বেশি শক্তি রাখে এমন দাসদের বিক্রি করা হতো উচ্চ মূল্যে। বেশির ভাগ দাস বিক্রি হতো নিলামে। মূলত ইউরোপীয়রা ক্যারিবীয় অঞ্চলে কালোদের আখ চাষসহ নানা কাজে দাস হিসেবে ব্যবহার করত। কিছু সমাজে নিজের দাসকে হত্যা করা আইনসঙ্গত, এবং অন্যান্য স্থানে এটি একটি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। দাসীদের সাধারণত রাখা হতে যৌন লোভ লালসা পূরণ করার জন্য। তাদের উপপত্নি করে রাখা হত এবং তাদের সন্তানদেরও দাস রুপে রাখা হত বা বিক্রি করা হত। এসব অমানবিক দাসব্যবস্থার বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে বিক্ষোভ-বিদ্রোহ দানা বাঁধতে থাকে পরবর্তীতে। অষ্টাদশ শতকেই সংগঠিতভাবে দাসেরা বিদ্রোহ শুরু করে আমেরিকা ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতে। দাস কিংবদন্তি হিসেবে স্পার্টাকাস যেমন কিংবদন্তি হয়ে আছেন, তেমনি অনেক নাম না-জানা দাসও বিদ্রোহ করে প্রাণ দিয়েছে।

আমেরিকান লেখিকা হ্যারিয়েট বিচার স্টো তার উপন্যাস ‘আংকল টম’স কেবিন’-এর কেন্দ্রীয় এই চরিত্রের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত মর্মস্পর্শীভাবে দাস জীবনের করুণ কাহিনী তুলে ধরেছেন। কালো মানুষদের ওপরে সাদা মানুষদের নির্মম, অমানবিক অত্যাচারের কাহিনী এসব। আমরা জানতে পারি, কী অসহনীয় জীবন শতাব্দীর পর শতাব্দী তারা পার করেছেন। এসব দাসের ছিল না কোনো স্বাধীনতা। প্রভুর ইচ্ছার বাইরে গিয়ে বিয়েও করতে পারত না তারা। নিদারুণ পরাধীনতার মধ্যে থেকেও এ দাসরা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে অত্যন্ত উঁচু মানের তুলা উত্পাদন করত। দাস প্রভুরাও তুলা চাষের জন্য ফ্রি লেবারের পরিবর্তে ক্যাপটিভ লেবারই পছন্দ করত। দাস প্রথাকে তারা জিইয়ে রাখতে চেয়েছিল নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থে। তাদের ধারণা ছিল, দাস শ্রমিকদের কাছ থেকে শ্রমশক্তির পুরোটাই নিংড়ে নেয়া সম্ভব।দাসত্ব বলতে বোঝায় কোন মানুষকে জোর করে শ্রম দিতে বাধ্য করা এবং এক্ষেত্রে কোন মানুষকে অন্য মানুষের ‘অস্থাবর সম্পত্তি’ হিসেবে গণ্য করা। এই দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ ব্যক্তিদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই স্থান বা মালিকানা পরিবর্তন হয়ে যায়। তাদের শ্রমের কোন মজুরীও নেই। অতীতে কোন কোন সমাজে নিজের দাসকে হত্যা করাও আইনসঙ্গত ছিলো। সেইসব বর্বরতা থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি, এটা ঠিক। তবে ক্রীতদাস প্রথার যে আধুনিক রূপান্তর, তার থেকে মুক্তির উপায় বের করতে হবে। মানব ইতিহাসের একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় দাস প্রথার বিলোপ্তি হলেও, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার হিসাব অনুযায়ী এখনো বিশ্বের ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ জোরপূর্বক শ্রম, দাসত্ব, ও দাসত্ব সংশ্লিষ্ট প্রথার কাছে বন্দী রয়েছে। সমাজবিদরা বলছেন, দাসপ্রথার ভয়াবহতা এখন না থাকলেও এর রূপান্তর ঘটেছে কিন্তু তা সমাজে আজও বিদ্যমান। সংশ্লিষ্টরা জানান, আধুনিক বিশ্বে আগের মতো সরাসরি দাস ব্যবসা না থাকলেও মানব পাচার অব্যাহত রয়েছে। সমাজবিজ্ঞানীদের অভিমত হচ্ছে- দাসপ্রথার ভয়াবহতা এখন না থাকলেও এর রূপান্তর ঘটেছে, কিন্তু সমাজে তা এখনও বিদ্যমান। তাদের মতে, প্রত্যেকের ঘরে ঘরে দাস রয়েছে। তারা হচ্ছে, আমরা যাদের কাজের লোক বলি। তারা আমরা ঘুম থেকে ওঠার আগে বিছানা থেকে ওঠে, শুতে যায় আমরা শুতে যাওয়ার পরে। তাদেও কোন কর্ম ঘণ্টা নেই, নেই নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো। ছুটি নেই। অনেক বাড়িতে তাদেও ভালোমত খাবার দেয়া হয় না। অনেকে নিজেদের জন্য ভালোটা আর কাজের মানুষদেও জন্য কমদামের চাল বরাদ্দ করেন। এসব কিছুই তো প্রকারান্তরে দাসপ্রথার কথাই মনে করিয়ে দেয়। আমরা কথাকথিত শিক্ষিত শ্রেণী এ নিয়ে কোন প্রতিবাদ করি না। কারণ তাহলে আমরা সুবিধাবঞ্চিত হবো। তাই এই প্রথা বজায় থাকছে। তাছাড়া, সম্পদশালী ভূমি মালিকের জমি চাষে ‘কৃষক ক্রীতদাস’ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়। রয়েছে শিশুশ্রম বিশ্বের অনেক দেশেই। বাংলাদেশে ১৪ বছর বয়সী শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৬৩ লাখের ওপরে। ৮০ লাখ ১৭ বছরের নীচে শিশু শ্রমিক। আছে পতিতাবৃত্তি ও জোরপূর্বক বিয়ের প্রবণতা। এগুলো দাসত্ব প্রথার আওতায় পড়ে। তাই বলাই যায় দাস প্রথা সমাজ থেকে বিলুপ্ত হয়নি।

আন্তর্জাতিক দাসপ্রথা বিলোপ দিবসের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- মানবপাচার, যৌনদাস, জবরদস্তিমূলক শিশুশ্রম, বলপ্রয়োগে বিয়ে ও যুদ্ধে শিশুদের ব্যবহার বন্ধে সচেতনতা বাড়ানো। সবচেয়ে বড় কথা, মানবপাচার হয়ে গেছে এখন আধুনিক বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। একে ক্রীতদাস প্রথার নতুন রূপ বলেই অভিহিত করেছেন বিশেষজ্ঞগণ। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, ১৭৯১ সালে বর্তমান হাইতি ও ডমিনিকান রিপাবলিকান অঞ্চলে প্রথমে দাসপ্রথার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরবর্তীতে বৃটেন ১৮০৭ সালে এবং যুক্তরাষ্ট্র ১৮০৮ সালে তাদের আফ্রিকান দাসদের মুক্তি দেয়। পরবর্তীতে যুক্তরাজ্য ১৮৩৩ সালে, ফ্রান্স ১৮৪৮ সালে এবং যুক্তরাষ্ট্র ১৮৬৫ সালে আইন করে দাসপ্রথা নিষিদ্ধ করে। তারপরেও এখনও বিশ্বের এক কোটি ২০ লাখ মানুষ জোর পূর্বক শ্রম, দাসত্ব ও দাসত্ব সংশ্লিষ্ট প্রথার কাছে বন্দী রয়েছে। তবে ধীরে ধীরে মুক্ত শ্রমের ব্যবহার বৃদ্ধি, শিল্পায়নে ক্রমিক অগ্রগতি, এবং উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ হতে মানবতাবাদী আন্দোলনসমূহ দাস প্রথাকে ধীরে ধীরে জনগণের নিকট অপ্রিয় ও সমাজে অগ্রহণযোগ্য করে তোলে। বিশ শতকের গোড়ার দিকে বাংলা দাস প্রথা হতে মুক্ত হয়।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) দাসদের মুক্ত করে দিলে যে সওয়াব পাওয়া যায়, সে কথা অনেকবারই বলেছেন। তার বিদায় হজের ভাষণেও দাসদের মুক্ত করে দেয়ার আহ্বান ছিল। তার অতি ঘনিষ্ঠ সাহাবা হজরত বেলাল (রা.) ছিলেন একজন হাবশি ক্রীতদাস। তিনি মধুর কণ্ঠে আজান দিতে পারতেন। সুদূর আবিসিনিয়া থেকে ইসলামের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি মক্কায় এসেছিলেন।মানব-সভ্যতা এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের ‘তথাকথিত’ সুসভ্য জাতিগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোও সেই অগ্রযাত্রায় পিছিয়ে নেই। এই প্রেক্ষাপটে যেকোন ধরনের দাসপ্রথাই যাতে আমাদের সেই অগ্রযাত্রার পথকে কলংকিত না করে সেটাই প্রত্যাশা। এই দিনে, আসুন আমরা দাস-প্রথার শিকার মানুষদের সম্মান করতে ও তাদের মর্যাদা পুনরুদ্ধারে এবং পৃথিবী থেকে দাসপ্রথার জঞ্জাল দূরীকরণের প্রচেষ্টা জোরদার করতে শপথ গ্রহণ করি।

নূর মোহাম্মদ নুরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৩১

জাহিদ হাসান বলেছেন: দাস মুক্ত করা আর দাসপ্রথা বিলোপ করা দুইটা কি এক হল?

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:২৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দাস মুক্ত করা আর
দাসপ্রথা বিলোপ করা
দুটো আলাদা শব্দ আলাদা
অর্থ বহন করে।
দাসপ্রথাঃ একটি অনুমোদিত সামাজিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা। আর
দাস শব্দের অর্থ চাকর, ক্রীতদাস, অনুগত জন, অধীন ইত্যাদি
এর স্ত্রীবাচক শব্দ দাসী।
দাসকে মুক্ত করাঃ ইসলাম ধর্ম দাসত্বের বাস্তবতাকে সরাসরি
অস্বীকার না করে, এর অস্তিত্বকে স্বীকারের মাধ্যমে দাস-দাসীদের
তাঁদের প্রাপ্য মানুষের অধিকার প্রদানে উৎসাহ দেয়।
আর যদি দাস-দাসীর সাথে খারাপ আচরণ করা হয়,
তাহলে ইসলাম নির্দেশ প্রদান করে যে, কাফফারা স্বরুপ
উক্ত দাস বা দাসীকে মুক্ত করে দিতে হবে।

২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১১

রাজীব নুর বলেছেন: এই আধুনিক যুগে এসেও বহু দাস আছে।
ধনীলোকেরা বহুলোককে একেবারে কিনে নেয়। তাদের দাসের মতো ব্যবহার করে।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দাসপ্রথা পৃথিবীর একটি প্রাচীন ও নিন্দনীয় প্রথা।
১৯ শতকের পর ধারণা করা হয়েছিল, অভিশপ্ত এই প্রথা আর ফিরে আসবে না।
বর্তমানে আফ্রিকা থেকে জাহাজ ভরে দাস ধরে ধরে আনা হচ্ছে না।
তবে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, নতুন আঙ্গিকে, নতুন চেহারায় দাসপ্রথা
আবারও যেন ফিরে আসছে। বা বলা যায়, এ প্রথা অব্যাহতই ছিল।
এখন স্বরূপে পুনরুদ্ভাসিত হচ্ছে। নয়া উদারবাদ রাজনৈতিক ও
অর্থনৈতিক কাঠামো দাসপ্রথাকে এক নতুন রূপ দিয়েছে।
এই নতুন রূপ হচ্ছে শ্রমবাজার ও দাসের পারস্পরিক
নির্ভরশীলতার দাসপ্রথা। নব্য দাসরা যেমন বাজারের
ওপর নির্ভরশীল। আবার বাজারও দাসদের ওপর নির্ভরশীল।
সুবিধাবঞ্চিত নিম্ন আয়ের শ্রমিকেরা কর্মক্ষেত্রে নয়া উদারবাদ
কাঠামোয় আধুনিক দাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই এই নয়া
উদারবাদ অর্থনৈতিক কাঠামোর আড়ালে কোটি কোটি
আধুনিক দাস তৈরি হচ্ছে; এদিকে কেউ নজর দিচ্ছে না।
২১ শতকের অন্যতম বড় অভিশাপ হচ্ছে আধুনিক
দাসত্ববাদ। এটা সব জায়গাতেই ছড়িয়ে পড়ছে।
উন্নত আধুনিক যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ বা যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া
বা ইরাক, ঝুঁকিপূর্ণ পাকিস্তান বা জলবায়ুজনিত ঝুঁকিপূর্ণ
বাংলাদেশ; সবাই কমবেশি নয়া দাসত্ববাদের শিকার হচ্ছে।
তাই নয়া উদারবাদের দুই সংখ্যার প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি,
উন্নয়নের ফাঁদে পড়লেই হবে না। একই সঙ্গে মানবাধিকার,
শ্রমিকাধিকারও নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে এসব উন্নয়ন,
আয়বৃদ্ধি কেবলই স্বল্প কিছু গোষ্ঠীর কাছে কুক্ষিগত হয়ে থাকবে।
নয়া দাসত্ববাদের আড়ালে ঢেকে যাবে সভ্যতার সব গৌরবময় সৌধ।

৩| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৪৮

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: পড়লাম এবং অনেক কিছু জানলাম।
এটা শুধু তথ্যবহুল গুরুত্বপূর্ণ লেখাই নয়;ঐতিহাসিকো বটে।
লেখককে ধন্যবাদ এমন একটি চমৎকার লেখা পোষ্ট করার জন্য।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বরকতউল্লাহ ভাই
অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার
মন্তব্য করে উৎসাহ দেবার জন্য।
সবসময় ভালো থাকবেন। সালাম জানবেন।

৪| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:০৯

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: সালমা নিবেন নূরু দা
কেমন আছেন অনেক দিন পর

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:০১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লিটন ভাই আপনাকে ধন্যবাদ মন্তব্য প্রদানের জন্য।
কোন সালমাকে নিতে অনুরোধ করলেন (!) জীবনের
শেষ প্রান্তে এসে কোন এক সালমাকে নেয় কি সমীচীন হবে?
(মজা করলাম) এখন তো মজা করার সুযোগই থাকেনা।
আপনিও কিন্তু অনেকদিন পরে আসলেন।
ভালো থাকবেন।

৫| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:১৩

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: আসলে নূরু দা
সালাম হবে কিন্তু আ টা হয়ে গেছে ম সাথে
ভীষণ ভাবে দুঃখিত --------

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মজা করেছি লিটন ভাই ব্যাপার না।
দুঃখিত হবার কিছু নাই। দেখা হবে
ইনসাআল্লাহ ব্লগ-ডেতে

৬| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২২

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ব্রিটেন ১৮০৭ সালে ও যুক্তরাষ্ট্র ১৮০৮ সালে তাদের আফ্রিকান দাসদের মুক্তি দিয়ে দাশপ্রথা বাতিল করে।
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র যথাক্রমে ১৮৩৩, ১৮৪৮ ও ১৮৬৫ সালে পাকা আইন করে দাসপ্রথা নিষিদ্ধ করে।
কিন্তু অসভ্য সৌদি আরব ও আরব আমিরাত ১৯৬২ পর্যন্ত দাশপ্রথা বহাল রেখে চলছিল। ৬২-৬৩ তে অবশেষে বাতিল করে।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কাগজে কলমে হয়তো বাতিল হয়েছে কিন্তু দুঃখ জনক হলেও
দাশপ্রথা এখনও বহাল তবিয়তেই আছে। নয়া উদারবাদ
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো দাসপ্রথাকে এক নতুন রূপ দিয়েছে।
এই নতুন রূপ হচ্ছে শ্রমবাজার ও দাসের পারস্পরিক
নির্ভরশীলতার দাসপ্রথা। নব্য দাসরা যেমন বাজারের
ওপর নির্ভরশীল। আবার বাজারও দাসদের ওপর নির্ভরশীল।
সুবিধাবঞ্চিত নিম্ন আয়ের শ্রমিকেরা কর্মক্ষেত্রে নয়া উদারবাদ
কাঠামোয় আধুনিক দাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই এই নয়া
উদারবাদ অর্থনৈতিক কাঠামোর আড়ালে কোটি কোটি
আধুনিক দাস তৈরি হচ্ছে; এদিকে কেউ নজর দিচ্ছে না।

৭| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৪৫

ST COVER SONG বলেছেন: সুন্দর । আপনাকে কি দাদু বলে ডাকতে পারি।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৩০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দাদু, নানা যে কোন নামেই ডাকতে পারো
কোন সমস্যা নাই। আমার নাতি নাতনিরা
তোমার খেকে উচ্চ শ্রেণিতে লেখা পড়া করে।

৮| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:১৩

চোরাবালি- বলেছেন: তথ্যবহুল সুন্দর পোষ্ট।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ
মন্তব্য প্রদানের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.