নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
ষাটের দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম নায়ক খলিল উল্লাহ খান। নায়কোচিত অভিনয়জীবন তার। অভিনয়শিল্পী হতে চাননি কখনও তাই নায়কের খেতাব অর্জন করেছিলেন তিনি। ১৯৫৯ সালে কলিম শরাফী ও জহির রায়হান পরিচালিত 'সোনার কাজল' চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। ১৯৬৬ সালে এসএম পারভেজ পরিচালিত 'বেগানা' সিনেমায় প্রথমবারের মতো খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এরপর বহু সিনেমায় তাকে খলচরিত্রে দেখা গেছে। ইতিহাসনির্ভর 'ফকির মজনু শাহ' সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেও তিনি ভূয়সী প্রশংসা পান। ২০১২ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন তিনি। বড় পর্দার এই অভিনেতা বেশ কয়েকটি টিভি নাটকেও অভিনয় করেছেন। শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ধারাবাহিক সংশপ্তক এ মিয়ার বেটা চরিত্রে অভিনয় করে দর্শক নন্দিত হন। বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান অভিনেতা খলিল উল্লাহ খানের আজ তার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৪ সালের আজকের দিনে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। দর্শক নন্দিত জনপ্রিয় অভিনেতা খলিল উল্লাহ খান খলিলের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
খলিল উল্লাহ খান ১৯৩৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের মেদিনিপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক বাড়ি সিলেটের কুমারপাড়ায়। বাবার চাকরিসূত্রে দুই বছর বয়সে সিলেটে চলে আসেন তিনি। সেখানেই তার শৈশব কাটে। তার পিতা মরহুম শফিউল হক খান ও মা মেহেরুন্নেছা। তার বাবা পুলিশ অফিসার ছিলেন বলে তাকে মেদিনিপুর, কৃষ্ণনগর, বগুড়া, বর্ধমান, নোয়াখালী যেতে হয়। খলিলের শৈশব জীবন কেটেছিল এসব জেলাতেই। ১৯৪৮ সালে সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন খলিল। এরপর ১৯৫১ সালে মদনমোহন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেন। ১৯৫১ সালে সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য পরীক্ষা দিলেও শেষ পর্যন্ত চাকরি করার সৌভাগ্য হয়নি খলিলের। তবে ১৯৫৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর তৎকালীন আনসার বাহিনীতে অ্যাডজুটেন্ট হিসেবে যোগ দেন। দীর্ঘদিন আনসার ডিপার্টমেন্টে চাকরী করার পর বয়সের কারণে ১৯৯২ সালে তিনি চাকরী থেকে রিটায়ার করেন। খলিল তার ৫৪ বছরের ক্যারিয়ারে প্রায় আট শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৫৯ সালে জহির রায়হান পরিচালিত সোনার কাজল ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রের অঙ্গনে প্রবেশ করেন। তার অভিনীত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে সোনার কাজল, আলোর মিছিল, অশান্ত ঢেউ, কাজল, জংলী ফুল, ভাওয়াল সন্ন্যাসী, বেগানা, সমাপ্তি, তানসেন, নদের চাঁদ, মাটির ঘর, পাগলা রাজা, অলংকার, মিন্টু আমার নাম, ফকির মজনু শাহ, কন্যাবদল, সঙ্গম, সোনার চেয়ে দামি, বদলা, মেঘের পর মেঘ, আয়না, মধুমতি, ওয়াদা, বিনি সুতোর মালা, মাটির পুতুল, গুণ্ডা, বউ কথা কও, দিদার, আওয়াজ, নবাব, যৌতুক উল্লেখযোগ্য। বাংলার পাশাপাশি তিনি উর্দু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ক্যায়সে কহু, পুনম কি রাত, উলঝন প্রভৃতি। প্রতিটি ছবিতেই তার অনবদ্য অভিনয় দর্শককে মুগ্ধ করেছে। খলিল চলচ্চিত্র মাধ্যম ছাড়াও টেলিভিশনেও অভিনয়েও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। আশির দশকে টেলিভিশন পর্দা আসেন খলিল। তার অভিনীত বিশেষ নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- আব্দুল্লাহ আল মামুনের ধারাবাহিক নাটক সংশপ্তক। অভিনয় ছাড়াও সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।
(পরিবারের সদস্যদের সাথে খলিলউল্লাহ খান)
অভিনয়ের পাশাপাশি ১৯৬৫ সালে ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে খলিল পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ‘সিপাহী’ ও ‘এই ঘর এই সংসার’ নামে দুটি সিনেমার প্রযোজনাও করেছেন তিনি। প্রয়াত পরিচালক আলমগীর কুমকুম পরিচালিত ‘গুন্ডা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান খলিল। এ ছবিতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন সুমিতা দেবী ও সুলতানা জামান। প্রায় ৮০০ ছবিতে অভিনয় করেছেন এই গুণী অভিনেতা। খলিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রয়াত চলচ্চিত্র পরিচালক আলমগীর কুমকুমের গুন্ডা ছবিতে অভিনয় করে খলিল সর্বপ্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্যে ২০১২ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা লাভ করেন খলিল। তবে দুঃখ জনক ঘটনা এই যে, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অভিনেতা খলিল যখন আজীবন সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করছেন, তখন মোহাম্মদপুরের নিজ অফিসে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তার বড় ছেলে আল আমিন তারেক খান। উল্লেখ্য তার ছোট ছেলে বাবু ইন্তেকাল করেন ১৯৯৩ সালে।
২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন খলিল উল্লাহ খান খলিল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস, লিভার ও কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁর ছেলে খালেদ খান জানিয়েছিলেন মৃত্যুর তিন দিন আগে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হলে তাঁকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি চিকিৎসক খালেদ মোহসিনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর আগে ২০১১ সালে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮০ বছর। মৃত্যুর সময় তিনি তিন ছেলে ও তিন মেয়ে রেখে গিয়েছেন। তার মৃত্যুর আগে তার আরও দুই ছেলে মারা গেছে। ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা খলিল উল্লাহ খানের আজ প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। দর্শক নন্দিত জনপ্রিয় এই দাপুটে নায়ক, চলচ্চিত্রের মিয়াভাই খ্যাত খলিল উল্লাহ খান খলিলের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:২৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য :ধন্যবাদ বিজন'দা
বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম নায়ক
খলিল উল্লাহ খান খলিলের
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি
নিবেদনের জন্য।
২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:২২
চাঁদগাজী বলেছেন:
৮০ বছর বেঁচেছিলেন, ভালোই
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আলহামদুলিল্লাহ ।
সব প্রসংশা একমাত্র
মহান রাব্বুল আলআমিনের।
আপনিও দীর্ঘজীবি হোন।
৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: উনার নাটক সিনেমা আমি দেখেছি।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৩২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আবারো গুরু-শিষ্যের আগমন একই সময়ে।
আপনাদের মতো মানিক-জোড়কে দেখে
আবেগে চোখে পানি এসে যায়। ইচ্ছা করে
কাইন্দা ফালাই। বেঁচে থাকুন বহু দিন।
৪| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১২
সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: বাংলা চলচ্চিত্রের শক্তিমান অভিনেতা ছিলেন।
এরকম অভিনেতা সহজে তৈরি হয় না।
শ্রদ্ধা খলিল উল্লাহ খানের প্রতি।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ রফিক ভাই
ষাটের দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম নায়ক
খলিল উল্লাহ খান খলিলের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা
জানানোর জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:১৭
বিজন রয় বলেছেন: বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম নায়ক খলিল উল্লাহ খান খলিলের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ধন্যবাদ নূরি ভাই।
জাঁদরেল অভিনেতা।